নিজেরাই নিজেদের আউট করেছি :মুশফিক by সঞ্জয় সাহা পিয়াল
চিৎকারটা শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়েছিলেন মাত্র। মুশফিকের মুখটা সরিয়ে নিলেন নাঈম ইসলাম। কারণ ওদিকে তখন ট্রফি নিয়ে চলছে ক্যারিবীয়দের জয়োৎসব। দৃশ্যটা যে মুশফিকের মনকে আরও ব্যথিত করে তুলবে তা, বেশ জানতেন নাঈম। পুরস্কার মঞ্চ থেকে শুকনো মুখে চলে আসা মুশফিককে এরপর মাঠের মাঝেই থামিয়ে ছিলেন শিবনারায়ণ চন্দরপল। আটত্রিশ বছরের এ অভিজ্ঞজন হয়তো আর কখনোই মিরপুরের মাঠে খেলতে আসবেন না। যাওয়ার বেলায় তাই মুশফিকদের শুভেচ্ছাস্বরূপ বড়ভাইয়ের মতো কিছু টিপস দিয়ে গেলেন চন্দরপল। প্রায় আধঘণ্টার ওই প্রীতি ক্লাসের খুব মনোযোগী ছাত্র ছিলেন তামিম-ইমরুলদের সবাই।
আর ছাত্রদের আগ্রহ দেখে চন্দরপল বলে গেছেন, ঢাকা টেস্টে হারার জন্য একদম মন খারাপ করতে হবে না। 'তোমাদের তো আমরা আউট করিনি। তোমরা নিজেরাই আউট হয়েছ।' চন্দরপলের বলা এ কথাটি দাগ কেটে গেছে মুশফিকের মনে। তাই ম্যাচ শেষে অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বারবারই টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের দুর্বলতার কথাই স্বীকার করে নিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। মেনে নিলেন, ব্যাটিং মানসিকতার পরিবর্তন না আনলে ভবিষ্যতে এমনই বারবার ব্যথিত মনে সংবাদ সম্মেলনে আসতে হবে বাংলাদেশ অধিনায়ককে। 'আসলে লম্বা সময়ের জন্য ক্রিজে পড়ে থাকার মানসিকতায় ঘাটতি আছে আমাদের। টেম্পারমেন্টের ঘাটতিও আছে অনেক। সময় এসেছে এসব নিয়ে কাজ করার। এদিন আমাদের প্রথম পরিকল্পনা ছিল সেশন ধরে ধরে এগোনো। এমনও যদি হতো, একটি সেশনে একটি বা দুটি উইকেট পড়ে গেছে, তাহলে পরের বাকি সেশনে আমরা লড়ে যেতে পারতাম; কিন্তু সকালেই তামিম আউট হয়ে যায়। এরপর সাকিবের অমনভাবে চলে যাওয়ার পর আমারও শট নির্বাচন করতে ভুল হয়েছে। লাঞ্চের আগেই তিনটি উইকেট চলে যাওয়ার পর ম্যাচ থেকেই ছিটকে যাই আমরা।' তিনটি মস্তবড় ভুলের খেসারত যে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, তা লাঞ্চের পর মাত্র ৭.৩ ওভারের মধ্যেই অল আউট হয়ে যাওয়ায় বুঝেছেন মুশফিক।
তবে এ জন্য তার মিরপুরের পিচ নিয়ে যেমন কোনো অভিযোগ নেই, তেমনি সাকিবের ওভাবে বিলাসী শট খেলার প্রতিও অভিমান নেই। সব দায় নিজের কাঁধে নিয়ে অধিনায়ক এদিন নিশ্চিতভাবেই সাকিবকে একহাত নেওয়া থেকে বিরত থেকেছেন। 'আমার মনে হয়, এদিনের টার্নিং পয়েন্ট ছিল সাকিবের আউট হয়ে যাওয়া। চট্টগ্রাম টেস্ট থেকেই আমি বলে আসছিলাম, কোনো সেট ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব তার ইনিংসটা বড় করা। যেমন ওদের অ্যাডওয়ার্ড-ব্রাভোরা করেছেন। আমরা সবাই জানি কার কী করতে হবে, কিন্তু মাঠে গিয়ে তা পারি না। আমার মনে হয়, সাকিব তার ভুল বুঝতে পেরেছেন।' দলের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা যে নিজেরাই নিজেদের উইকেট বিসর্জন দিয়েছেন, তা নিয়ে অবশ্য একটা অভিমান পুঞ্জীভূত আছে মুশফিকের মনে। 'এই উইকেটে ওরা আমাদের যতটা না আউট করেছে, তারচেয়ে বেশি আমরা নিজেরাই নিজেদের আউট করেছি। চন্দরপলও তেমনই বলেছেন আমাকে, 'তোমাদের দেখে কখনোই মনে হয়নি তোমরা আউট হবে।' তারপরও হয়েছি। আসলে আমরা সবাই বুঝি, কিন্তু মাঠে গিয়ে তার প্রয়োগ ঘটাতে পারি না।'
এমন বুকফুলিয়ে সত্যি কথাটা কবে কোন অধিনায়ক বলেছেন তা নিয়ে ধাঁধাঁ হতে পারে। তবে মুশফিক তার প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে সবার কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাতে ভুল করেননি। 'জিম্বাবুয়েতে অমন একটা বাজে সিরিজের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এটা ছিল আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং একটা সিরিজ। যেখানে আমরা টি২০ জিতেছি, একটা ওয়ানডে জিতেছি। টেস্টেও চট্টগ্রামে ভালো করেছি। সব মিলিয়ে আমি বলব, সিরিজটা খুব খারাপ হয়নি। তবে এর চাইতে আরও ভালো হতে পারত। এ সিরিজ থেকে ইতিবাচক বলতে সাকিবের অলরাউন্ডার পারফরম্যান্স পেয়েছি। নাঈম ইসলামকে ফিরে পেয়েছি। সানির মতো বোলার পেয়েছি, আর নাসিরের কথা কী বলব! সুযোগ কাজে লাগিয়েছে সে।'
নাসিরের ওপর এ ভরসাটা ভীষণভাবে প্রকট মুশফিকের। আর সে কারণেই নাসিরকে বলে দিলেন। 'আমরা পারিনি ওদের হারতে, তোদের পারতেই হবে। ওদের মাটিতে গিয়ে ওদের হারিয়ে আসবি।' রাতেই 'এ' দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেতে হবে নাসিরের। ড্রেসিংরুমেই ব্যাগ গোছাতে থাকা নাসির মুশফিকের কথায় ঘুরে দাঁড়ালেন। 'দোয়া করবেন মুশফিক ভাই।'
তবে এ জন্য তার মিরপুরের পিচ নিয়ে যেমন কোনো অভিযোগ নেই, তেমনি সাকিবের ওভাবে বিলাসী শট খেলার প্রতিও অভিমান নেই। সব দায় নিজের কাঁধে নিয়ে অধিনায়ক এদিন নিশ্চিতভাবেই সাকিবকে একহাত নেওয়া থেকে বিরত থেকেছেন। 'আমার মনে হয়, এদিনের টার্নিং পয়েন্ট ছিল সাকিবের আউট হয়ে যাওয়া। চট্টগ্রাম টেস্ট থেকেই আমি বলে আসছিলাম, কোনো সেট ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব তার ইনিংসটা বড় করা। যেমন ওদের অ্যাডওয়ার্ড-ব্রাভোরা করেছেন। আমরা সবাই জানি কার কী করতে হবে, কিন্তু মাঠে গিয়ে তা পারি না। আমার মনে হয়, সাকিব তার ভুল বুঝতে পেরেছেন।' দলের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা যে নিজেরাই নিজেদের উইকেট বিসর্জন দিয়েছেন, তা নিয়ে অবশ্য একটা অভিমান পুঞ্জীভূত আছে মুশফিকের মনে। 'এই উইকেটে ওরা আমাদের যতটা না আউট করেছে, তারচেয়ে বেশি আমরা নিজেরাই নিজেদের আউট করেছি। চন্দরপলও তেমনই বলেছেন আমাকে, 'তোমাদের দেখে কখনোই মনে হয়নি তোমরা আউট হবে।' তারপরও হয়েছি। আসলে আমরা সবাই বুঝি, কিন্তু মাঠে গিয়ে তার প্রয়োগ ঘটাতে পারি না।'
এমন বুকফুলিয়ে সত্যি কথাটা কবে কোন অধিনায়ক বলেছেন তা নিয়ে ধাঁধাঁ হতে পারে। তবে মুশফিক তার প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে সবার কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাতে ভুল করেননি। 'জিম্বাবুয়েতে অমন একটা বাজে সিরিজের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এটা ছিল আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং একটা সিরিজ। যেখানে আমরা টি২০ জিতেছি, একটা ওয়ানডে জিতেছি। টেস্টেও চট্টগ্রামে ভালো করেছি। সব মিলিয়ে আমি বলব, সিরিজটা খুব খারাপ হয়নি। তবে এর চাইতে আরও ভালো হতে পারত। এ সিরিজ থেকে ইতিবাচক বলতে সাকিবের অলরাউন্ডার পারফরম্যান্স পেয়েছি। নাঈম ইসলামকে ফিরে পেয়েছি। সানির মতো বোলার পেয়েছি, আর নাসিরের কথা কী বলব! সুযোগ কাজে লাগিয়েছে সে।'
নাসিরের ওপর এ ভরসাটা ভীষণভাবে প্রকট মুশফিকের। আর সে কারণেই নাসিরকে বলে দিলেন। 'আমরা পারিনি ওদের হারতে, তোদের পারতেই হবে। ওদের মাটিতে গিয়ে ওদের হারিয়ে আসবি।' রাতেই 'এ' দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেতে হবে নাসিরের। ড্রেসিংরুমেই ব্যাগ গোছাতে থাকা নাসির মুশফিকের কথায় ঘুরে দাঁড়ালেন। 'দোয়া করবেন মুশফিক ভাই।'
No comments