নারায়ণগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা গুরুতর জখম ২, আতঙ্ক

নারায়ণগঞ্জ ॥ শহরের জনাকীর্ণ আবাসিক এলাকায় পূর্বশত্রুতার জের ধরে প্রকাশ্যে এক ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এ সময় সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর জখম হয়েছে আরও দুই জন। তাদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

রবিবার দুপুর ২টায় শহরের জামতলা ধোপাপট্টি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছে তারা। তবে এলাকাবাসীর দাবি, হত্যাকারীরা রাজনৈতিক পরিচয়ে পুষ্ট হওয়ার কারণে প্রকাশ্যে এ রকম নৃশংস ঘটনা ঘটলেও পুলিশের তেমন তৎপরতা নেই।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, রবিবার দুপুরে শহরের মাসদাইর গাবতলী এলাকার ছাত্রলীগ নেতা শহিদুল আলম মিঠু (৩২), সবুর (৩১) ও সুমন (৩০) রিকশাযোগে জামতলা এলাকায় এলে পূর্ব বিরোধের জের ধরে ৩টি মোটরসাইকেলে একদল সন্ত্রাসী তাদের ওপর হামলা চালায়। ধারাল অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাদের রাস্তায় ফেলে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানোর উৎসবে মেতে ওঠে সন্ত্রাসীরা। আহতদের চিৎকারে ও সন্ত্রাসীদের নৃশংসতায় এলাকায় ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। দেয়ালে ও সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ। ভয়ে কেউ সাহস পায়নি তাদের রক্ষায় এগিয়ে আসতে। সন্ত্রাসীরা প্রায় প্রায় আধাঘণ্টা ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানোর পর বীরদর্পে এলাকা ত্যাগ করে। এ সময় আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। পথচারী ও আশপাশের লোকজন নিরাপদ দূরত্বে চলে যায়। গুরুতর জখম তিন যুবক দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকে রাস্তায়। পরে পরিচিত লোকজন খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করে শহরের খানপুরে ২শ’ শয্যাবিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে বিকেল ৫টার দিকে মৃত্যু হয় মিঠুর। নিহত মিঠু শহরের মাসদাইর এলাকার খুরশিদ আলমের ছেলে। খুরশিদ আলম জেলা শিক্ষা অফিসের সাবেক প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা। মিঠু শহরের চারাগোপ এলাকায় গাছের ব্যবসা ও এলজিইডির ঠিকাদার ছিল বলে তার বাবা জানিয়েছেন।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত মে মাসে শহরের গাবতলী টাগারপাড় এলাকায় ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে চাষাঢ়া এলাকার রামু সাহা, ইসদাইর এলাকার লম্বা খোকন, ইসদাইরের শ্যামা, মাসদাইর এলাকার জনি, উজ্জ্বল, রফিকের সঙ্গে মিঠুর বিরোধ দেখা দেয়। ওই সময় গাবতলী এলাকায় এসব সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে মিঠু। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। ওই ঘটনায় ফতুল্লা থানায় মিঠুর এক বন্ধু বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছিল।
নিহত মিঠুর বাবা খুরশীদুল আলম জানান, পূর্বশত্রুতার জের ধরে জেলা সড়ক পরিবহন ব্যবসায়ী জিলানীর ছেলে উজ্জ্বল, রফিক, খোকন ওরফে চাচা খোকন, চাষাঢ়া এলাকার হামিম বাহিনীপ্রধান হামিম ও ইসদাইর এলাকার শ্যামার নেতৃত্ব একদল সন্ত্রাসী তার ছেলে মিঠুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক নিপু জানান, নিহত মিঠু জেলা ছাত্রলীগের সাবেক কার্যকরী সদস্য ছিল।