হলে সিট পেতে হলে by মোঃ আরিফুর রহমান
আর কিছু দিনের মধ্যেই স্বপ্নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকেই ভর্তি হবেন। পড়তে আসবেন দূর-দূরান্ত থেকে। তাই সবার আগে আপনাকে চিন্তা করতে হবে আবাসস্থল নিয়ে। হয়ত ভাবছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৭টি হল আছে, নিশ্চিন্তে যে কোন একটি হলে উঠে যাবেন এবং নির্বিঘেœ আপনার উচ্চ শিক্ষা লাভের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবেন।
বাস্তবটা কিন্তু এত সোজা নয়। হলে ওঠার জন্য আপনাকে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৩৫ হাজার ছাত্রছাত্রী আছে, কিন্তু তাদের জন্য যে হলগুলো আছে তা নিতান্তই অপ্রতুল। যদিও নতুন আরেকটি হল তৈরি হচ্ছে। তবে তা কতটুকু আবাসন সঙ্কট দূর করবে তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। হলে উঠতে হলে সর্বাগ্রে আপনাকে বিশেষ রাজনৈতিক আদর্শের ছাত্র নেতাদের শরণাপন্ন হতে হবে। সেই ছাত্র নেতারা হলে ওঠার জন্য আপনাকে রাজনীতি করার শর্ত জুড়ে দেবে। আপনি যদি এ শর্তে রাজি হন তখন আপনার কপালে জুটবে গণরুম নামক ভয়াবহ কারাগার। নিয়মিত গেস্ট রুম, পলিটিক্স, মধুর ক্যান্টিন পলিটিক্স ও মিছিল মিটিংয়ে যদি আপনি ভাল পারফরম্যান্স দেখতে পারেন, তবে আপনাকে আর গণরুমগুলোতে থাকতে হবে না। আপনিও ছাত্র নেতা হয়ে পেয়ে যাবেন সিঙ্গেল বেড। তবে সে ক্ষেত্রে আপনার আজীবনের লালিত স্বপ্ন অধরা থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে হতাশ হওয়ার কারণ নেই, আপনি এই প্রক্রিয়ার বিকল্প হিসেবে আরেকটি পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। সেটি হলো প্রথমেই নিজের এলাকা বা অঞ্চলের কোন বড় ভাইকে খুঁজে বের করুন। সেই ভাই যদি প্রভাবশালী ছাত্র নেতা বা নেতার বন্ধু হয়, তবে আপনি মনে করবেন আপনার কপাল খুলে গেছে। থাকা নিয়ে আর চিন্তার কোন কারণ নেই। অনেকেই ভাবেন হলে থাকা আমার অধিকার, প্রশাসনই আমাকে হলে থাকার ব্যবস্থা করে দেবেÑযদি এটা ভেবে থাকেন তবে আপনার আশায় গুড়েবালি। কেননা প্রশাসনিক উপায়ে হলে বরাদ্দ পেতে প্রায় ২-৩ বছর লেগে যায়। তাই আপনাকে হলে থাকতে হলে বিকল্প পথেই যেতে হবে।
অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আপনি গণরুমে স্থান পেলেন। কিন্তু এবার শুনুন গণরুমের কাহিনী। একটি চার বেডের রুমে অপনাদের প্রায় ২৫-৩০ জনকে থাকতে হবে। অপেক্ষাকৃত রাজনীতিতে এ্যাকটিভ ছাত্ররা বেডে থাকার অধিকার পাবেন আর বাকিদের ঢালাওভাবে কমলাপুর রেল স্টেশনে যেমনভাবে মানুষ শুয়ে থাকে সেভাবেই থাকতে হবে। একবার শুয়ে পড়লে যতই প্রাকৃতিক ডাক আসুক আপনাকে শুয়েই থাকতে হবে, কেননা জায়গা দখল হয়ে যাওয়ার ভয় রয়েছে। এর ওপর আছে ছারপোকার অসহ্য কামড়। আপনার জিনিসপত্রেরও তেমন নিরাপত্তা নাও থাকতে পারে। এত গেল থাকার কষ্টের কথা। এরপর খাওয়ার কথা যদি বলতে হয়, তবে হলের ক্যান্টিন ও মেসগুলোর কথা উল্লেখ করতে হবে। ক্যান্টিনগুলোতে আপনি স্বল্পমূল্যে খাবার পাবেন, কিন্তু খাবারের মান ও স্বাদ অত্যন্তই নিম্নমানের। আর মেসগুলোর খাবার তুলনামূলকভাবে ভাল। এতক্ষণ শুধু হতাশার কথাই বলা হলো, কিন্তু হল জীবনের মজাও অন্য রকম। আপনি যদি প্রথম কয়েক মাস একটু কষ্ট করে গণরুমে থাকতে পারেন, তবে আঞ্চলিক ভাই, ডিপার্টমেন্টের ভাইয়ের সঙ্গে যোগসাজশে ভাল রুমে উঠে যেতে পারেন এবং চালিয়ে যেতে পারেন আপনার উচ্চ শিক্ষা। তাছাড়া আপনি যদি হলের গণরুমের কষ্ট সহ্য করতে না পারেন, তবে আজিমপুর, হাতিরপুল, চাঁনখারপুল, আজিজ সুপার মার্কেট ইত্যাদি জায়গায় মেসভাড়া নিতে পারেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ আবাসন সঙ্কট ও প্রক্রিয়া দীর্ঘদিনের হলেও এ কষ্ট ও প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই অনেক কৃতীমান মানুষ তৈরি হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তাই হতাশ না হয়ে বিকল্প উপায়গুলোর যে কোন একটি বেছে নিন হলে থাকার সুযোগ পাওয়ার জন্য। পরিচিত ভাই-বোনের সাহায্য নেয়াই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে। এতে আপনি রাজনীতি না করে নির্বিঘেœ হলে থাকতে পারবেন এবং চালিয়ে যেতে পারবেন আপনার অধ্যয়ন।
অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আপনি গণরুমে স্থান পেলেন। কিন্তু এবার শুনুন গণরুমের কাহিনী। একটি চার বেডের রুমে অপনাদের প্রায় ২৫-৩০ জনকে থাকতে হবে। অপেক্ষাকৃত রাজনীতিতে এ্যাকটিভ ছাত্ররা বেডে থাকার অধিকার পাবেন আর বাকিদের ঢালাওভাবে কমলাপুর রেল স্টেশনে যেমনভাবে মানুষ শুয়ে থাকে সেভাবেই থাকতে হবে। একবার শুয়ে পড়লে যতই প্রাকৃতিক ডাক আসুক আপনাকে শুয়েই থাকতে হবে, কেননা জায়গা দখল হয়ে যাওয়ার ভয় রয়েছে। এর ওপর আছে ছারপোকার অসহ্য কামড়। আপনার জিনিসপত্রেরও তেমন নিরাপত্তা নাও থাকতে পারে। এত গেল থাকার কষ্টের কথা। এরপর খাওয়ার কথা যদি বলতে হয়, তবে হলের ক্যান্টিন ও মেসগুলোর কথা উল্লেখ করতে হবে। ক্যান্টিনগুলোতে আপনি স্বল্পমূল্যে খাবার পাবেন, কিন্তু খাবারের মান ও স্বাদ অত্যন্তই নিম্নমানের। আর মেসগুলোর খাবার তুলনামূলকভাবে ভাল। এতক্ষণ শুধু হতাশার কথাই বলা হলো, কিন্তু হল জীবনের মজাও অন্য রকম। আপনি যদি প্রথম কয়েক মাস একটু কষ্ট করে গণরুমে থাকতে পারেন, তবে আঞ্চলিক ভাই, ডিপার্টমেন্টের ভাইয়ের সঙ্গে যোগসাজশে ভাল রুমে উঠে যেতে পারেন এবং চালিয়ে যেতে পারেন আপনার উচ্চ শিক্ষা। তাছাড়া আপনি যদি হলের গণরুমের কষ্ট সহ্য করতে না পারেন, তবে আজিমপুর, হাতিরপুল, চাঁনখারপুল, আজিজ সুপার মার্কেট ইত্যাদি জায়গায় মেসভাড়া নিতে পারেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ আবাসন সঙ্কট ও প্রক্রিয়া দীর্ঘদিনের হলেও এ কষ্ট ও প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই অনেক কৃতীমান মানুষ তৈরি হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তাই হতাশ না হয়ে বিকল্প উপায়গুলোর যে কোন একটি বেছে নিন হলে থাকার সুযোগ পাওয়ার জন্য। পরিচিত ভাই-বোনের সাহায্য নেয়াই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে। এতে আপনি রাজনীতি না করে নির্বিঘেœ হলে থাকতে পারবেন এবং চালিয়ে যেতে পারবেন আপনার অধ্যয়ন।
No comments