নতুন গ্যাসক্ষেত্র-দ্রুত উঠিয়ে ফেলা উচিত শ্রীকাইলের গ্যাস by বদরূল ইমাম
বাংলাদেশের জাতীয় গ্যাস অনুসন্ধানী কোম্পানি বাপেক্স আবারও একটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করল। ইতিপূর্বে ২০১১ সালে নোয়াখালী জেলায় সুন্দলপুর গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের পর ১৩ জুলাই কুমিল্লা জেলার শ্রীকাইলে নতুন এই গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার জাতীয় প্রতিষ্ঠানটির কর্মদক্ষতাকে আবারও নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করে দিল।
গত দুই বছরে বাপেক্স যে তিনটি অনুসন্ধান কূপ খনন করে, তার মধ্যে দুটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের ফলে এ ক্ষেত্রে সাফল্যের অনুপাত দাঁড়ায় ৩ ঃ ২, অর্থাৎ তিনটি কূপে দুটি সাফল্য, যা কিনা বাংলাদেশের গড় সাফল্যের অনুপাতের (৩ ঃ ১) চেয়ে বেশি। বিশ্বের গড় সাফল্যের অনুপাতের চেয়ে বাংলাদেশের এই সাফল্যের অনুপাত (৩ ঃ ২) উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
নব আবিষ্কৃত শ্রীকাইল গ্যাসক্ষেত্রটিতে ভূপৃষ্ঠের প্রায় দুই হাজার ৯০০ মিটার থেকে তিন হাজার মিটার গভীরতার মধ্যে মূলত দুটি স্তরে গ্যাস পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে নিচের স্তর থেকে গ্যাসপ্রবাহ ঘটিয়ে তা উৎপাদনযোগ্য বলে প্রমাণ করা গেছে। শিগগিরই ওপরের স্তরটিতে অনুরূপ পরীক্ষা (ডিএসটি) চালিয়ে তার উৎপাদনযোগ্যতা প্রমাণ করার অপেক্ষায় আছে। প্রাথমিক জরিপে প্রাক্কলন করা হয়েছে যে গ্যাসক্ষেত্রটিতে আনুমানিক ২৫০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস রয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, এ বছরের শেষের দিকেই এ ক্ষেত্রটি থেকে দৈনিক ৩০ থেকে ৪০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করে জাতীয় পাইপলাইনে জোগান দেওয়া যাবে। গ্যাসক্ষেত্রটি গত বছর আবিষ্কৃত সুন্দলপুর গ্যাসক্ষেত্র থেকে অন্তত চার গুণ বৃহৎ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইতিপূর্বে ২০০৪ সালে শ্রীকাইলে একটি অনুসন্ধান কূপ খনন করে সেখানে গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের চেষ্টা সফল হয়নি বলে জানানো হয়। কিন্তু উক্ত কূপটির খনন-ফল নিয়ে একরকম ধূম্রজাল বিরাজ করে বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করে।
উল্লেখ্য, শ্রীকাইল ভূকাঠামোটি (যার ভেতরে বর্তমানে শ্রীকাইল গ্যাসক্ষেত্রটি আবিষ্কৃত হলো) তার সংলগ্ন বা পার্শ্ববর্তী ভূকাঠামো বাঙ্গুরার (যার ভেতর ইতিপূর্বে ২০০৪ সালে বিদেশি কোম্পানি দ্বারা বাঙ্গুরা গ্যাসক্ষেত্রটি আবিষ্কৃত হয়) সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অনেক ভূবিজ্ঞানীর মতে, শ্রীকাইল ও বাঙ্গুরা মূলত একই ভূকাঠামোর অংশবিশেষ। উভয় ক্ষেত্রেই এর তাৎপর্য হলো, বাপেক্স আবিষ্কৃত শ্রীকাইল গ্যাসক্ষেত্রে যে স্তর থেকে গ্যাস প্রবাহিত হয়েছে ও উৎপাদন-পরিকল্পনা করা হচ্ছে, ওই একই স্তরটি থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে বাঙ্গুরা গ্যাসক্ষেত্র থেকে বিদেশি কোম্পানি (তাল্লো ও নাইকো যৌথভাবে) কয়েক বছর ধরে গ্যাস উৎপাদন করে চলেছে। বিদেশি কোম্পানির কর্মকর্তারা এটি ভালো করেই জানেন যে বাংলাদেশের জাতীয় কোম্পানি যদি শ্রীকাইলে গ্যাসস্তরটি আবিষ্কার করতে পারে ও সেখান থেকে গ্যাস উৎপাদন শুরু করে, তবে তা তাদের উৎপাদনকে হ্রাস করবে বা বাধাগ্রস্ত করবে। আর এ কারণেই বিদেশি কোম্পানি কখনোই চায়নি যে বাংলাদেশের জাতীয় কোম্পানি শ্রীকাইলে গ্যাস আবিষ্কার করুক।
পর্যবেক্ষক মহলের অনেকেই মনে করেন, ২০০৪ সালে শ্রীকাইলে বাপেক্স কর্তৃক খননকৃত অনুসন্ধান কূপটিকে ব্যর্থ করার পেছনে একধরনের ষড়যন্ত্র জড়িত ছিল। এতে বিদেশি তেল কোম্পানির কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেশি কিছু অসৎ ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে। এভাবে ২০০৪ সালের ওই কূপটি ব্যর্থ দেখানোর ফলে বিদেশি কোম্পানির পক্ষে সহজভাবে ওপরে উল্লিখিত গ্যাসস্তর থেকে এককভাবে পুরো গ্যাস উত্তোলন করে যাওয়া সম্ভব হয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কী ছিল সেই চক্রান্ত, কারা ছিল এর সঙ্গে জড়িত। কেন ২০০৪ সালে শ্রীকাইল কূপটিতে গ্যাস পাওয়া গেছে বলে প্রথমে ঘোষণা দিয়ে আবার পরবর্তী সময়ে সে ঘোষণা প্রত্যাহার করা হয়? এমনকি এ কথাও শোনা যায় যে প্রথা অনুযায়ী কোনো গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হলে জাতীয় কোম্পানির কর্মচারীরা একটি বোনাস পেয়ে থাকেন। ২০০৪ সালে শ্রীকাইলের নামে সে বোনাসও দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে দেখা যায়, কূপটি অবস্থানগত দিক থেকে একটি ভুল জায়গায় খনন করা হয় (ভূতাত্ত্বিক ভাষায় যা চ্যানেল নামে পরিচিত)। তদুপরি গ্যাসপ্রবাহের ক্ষেত্রে দেখা যায়, গ্যাস সামান্য প্রবাহিত হয়ে বন্ধ হয়ে যায় ও কেবল অনিয়মিত প্রবাহ ঘটে। ওই সময় নাইকো কোম্পানিটি বাংলাদেশে গ্যাস দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মন্ত্রীকে উৎকোচ দিয়ে কাজ হাসিল করার অপরাধে পরে একসময় কানাডার কোর্ট নাইকোকে নয় মিলিয়ন ডলার জরিমানা করেন। সেই সময়কার জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নাইকোর ঘুষ গ্রহণ করে ধরা খেয়েছিলেন ও চাকরিচ্যুত হন। কিন্তু শ্রীকাইল ষড়যন্ত্রে নাইকোর কী ভূমিকা ছিল। কে বা কারা ২০০৪ সালের সম্ভাব্য শ্রীকাইল কূপ ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল, এ নিয়ে আর কোনো তথ্য জানা যায় না। এমনও শোনা যায় যে বর্তমানে আবিষ্কৃত এই কূপটি খনন না করার জন্য কোনো কোনো মহল সচেষ্ট ছিল।
বাপেক্সের বর্তমান আবিষ্কারের ফলে এখন উল্লিখিত স্তরটি থেকে দেশি ও বিদেশি কোম্পানি উভয়ই গ্যাস তুলবে, যার অর্থ গ্যাস এক অর্থে ভাগাভাগি হয়ে যাবে। বাংলাদেশ অবশেষে শ্রীকাইল গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে, এটাই এখন বাস্তব সত্য। বাংলাদেশের উচিত, শ্রীকাইলের গ্যাসস্তর থেকে এককভাবে দ্রুততম সময়ে ও যথাশিগগির সম্ভব সমূহ গ্যাস উত্তোলন করে ফেলা, যাতে করে বিদেশি কোম্পানির পক্ষে এই গ্যাসে অন্যায্য ভাগ বসানোর কোনো অবকাশ না থাকে।
বাংলাদেশে বিদেশি তেল কোম্পানির কোনো অবদান যে নেই, তা সম্ভবত বলা যায় না। কিন্তু এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে কোনো কোনো অসৎ বিদেশি তেল কোম্পানি ও তাদের কর্মকর্তারা সজ্ঞানে বাংলাদেশের গ্যাসসম্পদ নিয়ে নানা সময়ে নানারূপ ষড়যন্ত্র করে সম্পদ লুণ্ঠনে প্রবৃত্ত হয়েছেন। ছাতকে নাইকো কোম্পানির দুষ্কর্ম, হরিপুরে সিমিটার তেল কোম্পানির জাতীয় স্বার্থবিরোধী কার্যক্রমসমূহ তার সাক্ষ্য বহন করে। বিদেশি তেল কোম্পানি কর্তৃক বাংলাদেশের গ্যাস নিয়ে ছলচাতুরী করার একটি কারণ জাতীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের দুর্বলতা। বাপেক্স তার কর্মদক্ষতা দিয়ে প্রমাণ করতে উদ্যোগী হয়েছে যে সেদিন আর নেই। নিজস্ব লোকবল ও সামর্থ্য দিয়ে গ্যাসসম্পদ আহরণে সক্ষম হয়ে বাংলাদেশ আরও শক্ত অবস্থানে যেতে পারবে, বাপেক্সের কর্মকাণ্ড সে ইঙ্গিত দেয়।
ড. বদরূল ইমাম: অধ্যাপক, ভূতত্ত্ব বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
নব আবিষ্কৃত শ্রীকাইল গ্যাসক্ষেত্রটিতে ভূপৃষ্ঠের প্রায় দুই হাজার ৯০০ মিটার থেকে তিন হাজার মিটার গভীরতার মধ্যে মূলত দুটি স্তরে গ্যাস পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে নিচের স্তর থেকে গ্যাসপ্রবাহ ঘটিয়ে তা উৎপাদনযোগ্য বলে প্রমাণ করা গেছে। শিগগিরই ওপরের স্তরটিতে অনুরূপ পরীক্ষা (ডিএসটি) চালিয়ে তার উৎপাদনযোগ্যতা প্রমাণ করার অপেক্ষায় আছে। প্রাথমিক জরিপে প্রাক্কলন করা হয়েছে যে গ্যাসক্ষেত্রটিতে আনুমানিক ২৫০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস রয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, এ বছরের শেষের দিকেই এ ক্ষেত্রটি থেকে দৈনিক ৩০ থেকে ৪০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করে জাতীয় পাইপলাইনে জোগান দেওয়া যাবে। গ্যাসক্ষেত্রটি গত বছর আবিষ্কৃত সুন্দলপুর গ্যাসক্ষেত্র থেকে অন্তত চার গুণ বৃহৎ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইতিপূর্বে ২০০৪ সালে শ্রীকাইলে একটি অনুসন্ধান কূপ খনন করে সেখানে গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের চেষ্টা সফল হয়নি বলে জানানো হয়। কিন্তু উক্ত কূপটির খনন-ফল নিয়ে একরকম ধূম্রজাল বিরাজ করে বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করে।
উল্লেখ্য, শ্রীকাইল ভূকাঠামোটি (যার ভেতরে বর্তমানে শ্রীকাইল গ্যাসক্ষেত্রটি আবিষ্কৃত হলো) তার সংলগ্ন বা পার্শ্ববর্তী ভূকাঠামো বাঙ্গুরার (যার ভেতর ইতিপূর্বে ২০০৪ সালে বিদেশি কোম্পানি দ্বারা বাঙ্গুরা গ্যাসক্ষেত্রটি আবিষ্কৃত হয়) সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অনেক ভূবিজ্ঞানীর মতে, শ্রীকাইল ও বাঙ্গুরা মূলত একই ভূকাঠামোর অংশবিশেষ। উভয় ক্ষেত্রেই এর তাৎপর্য হলো, বাপেক্স আবিষ্কৃত শ্রীকাইল গ্যাসক্ষেত্রে যে স্তর থেকে গ্যাস প্রবাহিত হয়েছে ও উৎপাদন-পরিকল্পনা করা হচ্ছে, ওই একই স্তরটি থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে বাঙ্গুরা গ্যাসক্ষেত্র থেকে বিদেশি কোম্পানি (তাল্লো ও নাইকো যৌথভাবে) কয়েক বছর ধরে গ্যাস উৎপাদন করে চলেছে। বিদেশি কোম্পানির কর্মকর্তারা এটি ভালো করেই জানেন যে বাংলাদেশের জাতীয় কোম্পানি যদি শ্রীকাইলে গ্যাসস্তরটি আবিষ্কার করতে পারে ও সেখান থেকে গ্যাস উৎপাদন শুরু করে, তবে তা তাদের উৎপাদনকে হ্রাস করবে বা বাধাগ্রস্ত করবে। আর এ কারণেই বিদেশি কোম্পানি কখনোই চায়নি যে বাংলাদেশের জাতীয় কোম্পানি শ্রীকাইলে গ্যাস আবিষ্কার করুক।
পর্যবেক্ষক মহলের অনেকেই মনে করেন, ২০০৪ সালে শ্রীকাইলে বাপেক্স কর্তৃক খননকৃত অনুসন্ধান কূপটিকে ব্যর্থ করার পেছনে একধরনের ষড়যন্ত্র জড়িত ছিল। এতে বিদেশি তেল কোম্পানির কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেশি কিছু অসৎ ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে। এভাবে ২০০৪ সালের ওই কূপটি ব্যর্থ দেখানোর ফলে বিদেশি কোম্পানির পক্ষে সহজভাবে ওপরে উল্লিখিত গ্যাসস্তর থেকে এককভাবে পুরো গ্যাস উত্তোলন করে যাওয়া সম্ভব হয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কী ছিল সেই চক্রান্ত, কারা ছিল এর সঙ্গে জড়িত। কেন ২০০৪ সালে শ্রীকাইল কূপটিতে গ্যাস পাওয়া গেছে বলে প্রথমে ঘোষণা দিয়ে আবার পরবর্তী সময়ে সে ঘোষণা প্রত্যাহার করা হয়? এমনকি এ কথাও শোনা যায় যে প্রথা অনুযায়ী কোনো গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হলে জাতীয় কোম্পানির কর্মচারীরা একটি বোনাস পেয়ে থাকেন। ২০০৪ সালে শ্রীকাইলের নামে সে বোনাসও দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে দেখা যায়, কূপটি অবস্থানগত দিক থেকে একটি ভুল জায়গায় খনন করা হয় (ভূতাত্ত্বিক ভাষায় যা চ্যানেল নামে পরিচিত)। তদুপরি গ্যাসপ্রবাহের ক্ষেত্রে দেখা যায়, গ্যাস সামান্য প্রবাহিত হয়ে বন্ধ হয়ে যায় ও কেবল অনিয়মিত প্রবাহ ঘটে। ওই সময় নাইকো কোম্পানিটি বাংলাদেশে গ্যাস দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মন্ত্রীকে উৎকোচ দিয়ে কাজ হাসিল করার অপরাধে পরে একসময় কানাডার কোর্ট নাইকোকে নয় মিলিয়ন ডলার জরিমানা করেন। সেই সময়কার জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নাইকোর ঘুষ গ্রহণ করে ধরা খেয়েছিলেন ও চাকরিচ্যুত হন। কিন্তু শ্রীকাইল ষড়যন্ত্রে নাইকোর কী ভূমিকা ছিল। কে বা কারা ২০০৪ সালের সম্ভাব্য শ্রীকাইল কূপ ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল, এ নিয়ে আর কোনো তথ্য জানা যায় না। এমনও শোনা যায় যে বর্তমানে আবিষ্কৃত এই কূপটি খনন না করার জন্য কোনো কোনো মহল সচেষ্ট ছিল।
বাপেক্সের বর্তমান আবিষ্কারের ফলে এখন উল্লিখিত স্তরটি থেকে দেশি ও বিদেশি কোম্পানি উভয়ই গ্যাস তুলবে, যার অর্থ গ্যাস এক অর্থে ভাগাভাগি হয়ে যাবে। বাংলাদেশ অবশেষে শ্রীকাইল গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে, এটাই এখন বাস্তব সত্য। বাংলাদেশের উচিত, শ্রীকাইলের গ্যাসস্তর থেকে এককভাবে দ্রুততম সময়ে ও যথাশিগগির সম্ভব সমূহ গ্যাস উত্তোলন করে ফেলা, যাতে করে বিদেশি কোম্পানির পক্ষে এই গ্যাসে অন্যায্য ভাগ বসানোর কোনো অবকাশ না থাকে।
বাংলাদেশে বিদেশি তেল কোম্পানির কোনো অবদান যে নেই, তা সম্ভবত বলা যায় না। কিন্তু এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে কোনো কোনো অসৎ বিদেশি তেল কোম্পানি ও তাদের কর্মকর্তারা সজ্ঞানে বাংলাদেশের গ্যাসসম্পদ নিয়ে নানা সময়ে নানারূপ ষড়যন্ত্র করে সম্পদ লুণ্ঠনে প্রবৃত্ত হয়েছেন। ছাতকে নাইকো কোম্পানির দুষ্কর্ম, হরিপুরে সিমিটার তেল কোম্পানির জাতীয় স্বার্থবিরোধী কার্যক্রমসমূহ তার সাক্ষ্য বহন করে। বিদেশি তেল কোম্পানি কর্তৃক বাংলাদেশের গ্যাস নিয়ে ছলচাতুরী করার একটি কারণ জাতীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের দুর্বলতা। বাপেক্স তার কর্মদক্ষতা দিয়ে প্রমাণ করতে উদ্যোগী হয়েছে যে সেদিন আর নেই। নিজস্ব লোকবল ও সামর্থ্য দিয়ে গ্যাসসম্পদ আহরণে সক্ষম হয়ে বাংলাদেশ আরও শক্ত অবস্থানে যেতে পারবে, বাপেক্সের কর্মকাণ্ড সে ইঙ্গিত দেয়।
ড. বদরূল ইমাম: অধ্যাপক, ভূতত্ত্ব বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
No comments