মাতৃত্ব হোক নিরাপদ
২৮ মে ছিল নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস। এ বছরের স্লোগান 'স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রসব করাবো, মা ও শিশুর জীবন বাঁচাবো। বিষয়টির গুরুত্ব এবং মাতৃমৃত্যুহার কতটা কমেছে ও মানুষ কতটা সচেতন হয়েছে তা নিয়ে প্রতিবেদন এবং সাক্ষাৎকারটি লিখেছেন
আ হ ম ফয়সল , মাশরেখা মনা কুকাদাইর গ্রামের বাসিন্দা মুক্তা বেগম। টাঙ্গাইল জেলার ভুয়াপুর উপজেলার গবিন্দাসী ইউনিয়নে এটি অবস্থিত। দরিদ্র পরিবারের সদস্য হলেও শিক্ষার প্রতি তার আগ্রহ ছিল প্রচুর। দশম শ্রেণী পর্যন্ত তার লেখাপড়া করার সুযোগ হয়েছে। পাশের গ্রামের সম্পর্কে চাচাতো ভাই বাবলু তালুুকদারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সে এখন থেকে ১৬-১৭ বছর আগের কথা। বিয়ের পরপর মুক্তা বেগম সন্তান নেবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন। চার বছর পর প্রথম সন্তান পেটে আসে। সন্তান পেটে থাকার দিনগুলো মুক্তা বেগম শ্বশুরবাড়িতেই কাটিয়েছেন নিরাপদে। সন্তান প্রসবের সময় স্বামীর সঙ্গে পরামর্শ করেই ব্যথা উঠলে ভুয়াপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলে আসেন। কোনো অপারেশন ছাড়াই হাসপাতালে তার সন্তান প্রসব হয়। মুক্তা বেগমের সেই সন্তান 'মিতু' এখন অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। এখন মুক্তা বেগমের আরও একটি সন্তান রয়েছে। সে এখন পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। প্রত্যন্ত গ্রামে থেকেও গ্রামের ধাত্রী দিয়ে সন্তান প্রসব না করিয়ে হাসপাতালে গেলেন কেন_ জানতে চাইতেই মুক্তা বেগম বলেন, মা-চাচিদের কাছ থেকে ও স্কুলে লেখাপড়া করার সময় শুনেছি, ধাত্রী দিয়ে প্রসব করালে যে কোনো ধরসের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সন্তান যখন পেটে আসে তখন নিজের মধ্যে খুশি খুশি লাগে, এ এক দারুণ অনুভূতি। স্বপ্ন ছিল মেয়ে হবে, মেয়েই হয়েছে। নিরাপদে প্রথম সন্তান জন্ম দেওয়ার আনন্দময় মুহূর্তের কথাগুলো মুক্তা বেগম এভাইে বলছিলেন।
এখনও আমাদের দেশে গ্রামের মায়েদের সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে ধাত্রীরাই বেশি জড়িত। এ বাস্তবতার চিত্রটি এখানেও। একই ইউনিয়নের বাকবাড়ি গ্রামের ধাত্রী মা ছায়েরা বেগম, এক নামে যাকে সবাই চেনে। দীর্ঘ ত্রিশ বছর ধরে ছায়েরা বেগম ধাত্রী হিসেবে কাজ করে আসছেন। কথা হয় তার সঙ্গে। ছায়েরা বেগমের দুই মেয়ে পাঁচ ছেলে। তার প্রথম সন্তান জন্মের পর থেকেই এই পেশার প্রতি তার আগ্রহ জন্মায়। আগ্রহ থেকে পরবর্তী সময়ে তার এই পেশায় জড়িয়ে পড়া। কীভাবে শিখলেন সন্তান প্রসব করানোর কাজগুলো_ জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিজে নিজেই শিখেছি। কাজ করার ১০ বছর পর হাসপাতাল থেকে একটি প্রশিক্ষণ পেয়েছি।
এখন পর্যন্ত ছায়েরা বেগমের হাতে সন্তান প্রসব করানোর সময় কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি জানান। বলেন, 'সাতটি উল্টো শিশুর প্রসব সম্পন্ন করেছি, জটিল কোনো সমস্যা দেখা দিলে নিজেই রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।'
এ পর্যন্ত তিনি ছয় থেকে সাতশ মায়ের সন্তান প্রসবের কাজটি সম্পন্ন করেছেন। প্রতিটি সন্তান প্রসবে কত টাকা পান জিজ্ঞেস করতেই তিনি বলে, 'আমার কোনো রেট নেই, খুশি মনে যে যা দেয়। চার-পাঁচটি বাড়ির সন্তান প্রসব করানোর পর দেখা গেল কেউ একটি শাড়ি উপহার দেয়, এতেই আমি খুশি।' পরিবারের সদস্যদের পাশাপশি নিজের কাছেও এ কাজটি করতে ভালোই লাগে তার। সবার সম্মান পাই, এটাই ভালো লাগে। রাত কী দিন, মহৎ একটি কাজ মনে করে ছুটে যান এ গ্রাম থেকে গ্রামে। ছায়েরা বেগম ধাত্রী পেশার কাজটির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দাবি করেন।
এখনও আমাদের দেশে গ্রামের মায়েদের সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে ধাত্রীরাই বেশি জড়িত। এ বাস্তবতার চিত্রটি এখানেও। একই ইউনিয়নের বাকবাড়ি গ্রামের ধাত্রী মা ছায়েরা বেগম, এক নামে যাকে সবাই চেনে। দীর্ঘ ত্রিশ বছর ধরে ছায়েরা বেগম ধাত্রী হিসেবে কাজ করে আসছেন। কথা হয় তার সঙ্গে। ছায়েরা বেগমের দুই মেয়ে পাঁচ ছেলে। তার প্রথম সন্তান জন্মের পর থেকেই এই পেশার প্রতি তার আগ্রহ জন্মায়। আগ্রহ থেকে পরবর্তী সময়ে তার এই পেশায় জড়িয়ে পড়া। কীভাবে শিখলেন সন্তান প্রসব করানোর কাজগুলো_ জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিজে নিজেই শিখেছি। কাজ করার ১০ বছর পর হাসপাতাল থেকে একটি প্রশিক্ষণ পেয়েছি।
এখন পর্যন্ত ছায়েরা বেগমের হাতে সন্তান প্রসব করানোর সময় কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি জানান। বলেন, 'সাতটি উল্টো শিশুর প্রসব সম্পন্ন করেছি, জটিল কোনো সমস্যা দেখা দিলে নিজেই রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।'
এ পর্যন্ত তিনি ছয় থেকে সাতশ মায়ের সন্তান প্রসবের কাজটি সম্পন্ন করেছেন। প্রতিটি সন্তান প্রসবে কত টাকা পান জিজ্ঞেস করতেই তিনি বলে, 'আমার কোনো রেট নেই, খুশি মনে যে যা দেয়। চার-পাঁচটি বাড়ির সন্তান প্রসব করানোর পর দেখা গেল কেউ একটি শাড়ি উপহার দেয়, এতেই আমি খুশি।' পরিবারের সদস্যদের পাশাপশি নিজের কাছেও এ কাজটি করতে ভালোই লাগে তার। সবার সম্মান পাই, এটাই ভালো লাগে। রাত কী দিন, মহৎ একটি কাজ মনে করে ছুটে যান এ গ্রাম থেকে গ্রামে। ছায়েরা বেগম ধাত্রী পেশার কাজটির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দাবি করেন।
No comments