দেশের মোট জনসংখ্যা ১৫ কোটি, রাজধানীতে বাস দেড় কোটির by হামিদ-উজ-জামান মামুন

দেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৫ কোটি। পঞ্চম আদমশুমারি ও গৃহগণনা ২০১১-এর চূড়ান্ত ফলে এ তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। আজ সোমবার রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান বঙ্গভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ শুমারির ফল ঘোষণা করবেন।


বিবিএস কর্তৃক পরিচালিত পঞ্চম আদমশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, দেশের মোট জনসংখ্যা ১৪ কোটি ২৩ লাখ ১৯ হাজার। এক বছর যাচাই-বাছাইয়ের পর তা ১৪ কোটি ৩৯ লাখ ৫৭ হাজার ৫৫১ জনে উন্নীত হয়। এর সঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) যাচাই-বাছাইয়ে শুমারি থেকে বাদ পড়া ৩.৯৭ শতাংশকে যোগ করা হয়েছে। যোগ করার পর দেশের মোট জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ৯৭ লাখে। এক্ষেত্রে বিবিএস বলছে, দেশের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ১৫ কোটি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সচিব রীতি ইব্রাহিম রবিবার জনকণ্ঠকে বলেন, এবারের আদমশুমারিতে তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। তাছাড়া এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আধুনিক কলাকৌশল। সবকিছুই করা হয়েছে সম্মিলিতভাবে সমন্বয়ের মাধ্যমে। তাই অতিদ্রুত সময়ে এবং সঠিকভাবে ফল প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে। তিনি জানান, বিবিএস শুধু একাই এ কাজ করেনি জেলা প্রশাসকদের নেতৃত্বে জেলায় জেলায় আদমশুমারি করা হয়েছে। তাই রাষ্ট্রপতি ফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে জেলা প্রশাসকরা স্ব স্ব জেলায় তাদের জেলার প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন। আদমশুমারির চূড়ান্ত ফলে দেখা গেছে, দেশে বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ১৫ কোটি। সে হিসেবে গত দশ বছরে দেশের জনসংখ্যা বেড়েছে এক কোটি ৪৫ লাখ। বিবিএসের নিজস্ব ওয়েবসাইটে এ ফল প্রকাশ করা হবে। চূড়ান্ত ফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, জেলা পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি মানুষ বসবাস করছে স্বাভাবিকভাবেই ঢাকায়। প্রায় দেড় কোটি মানুষ ঢাকা শহরে বসবাস করছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মানুষ বসবাস করছে চট্টগ্রামে। এ জেলায় বসবাস করছে প্রায় এক কোটি মানুষ। তৃতীয় সর্বোচ্চ মানুষ বসবাস করছে কুমিল্লা জেলায়। এরপরে রয়েছে যথাক্রমে ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, সিলেট, গাজীপুর ও নোয়াখালী জেলা। এছাড়া নারী ও পুরুষের আনুপাতিক হার প্রায় সমানে চলে এসেছে।
দেশের ইতিহাসে দ্রুততার সঙ্গে এ ফল চূড়ান্ত করা হয়েছে দাবি করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। আদমশুমারির ফল চূড়ান্ত করতে সময় লেগেছে মাত্র এক বছর তিন মাস। অথচ বিগত চারটি আদমশুমারির ফল চূড়ান্ত করতে সময় লেগেছিল প্রায় দুই থেকে তিন বছর।
সূত্র জানায়, গত বছরে ১৫ মার্চ পঞ্চম আদমশুমারি ও গৃহগণনার তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করে বিবিএস। দেশব্যাপী এ গণনার তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হয় ১৯ মার্চ। এরপর একই বছরের ১৬ জুলাই আদমশুমারি ও গৃহগণনা ২০১১-এর প্রাথমিক ফল প্রকাশ করে সংস্থাটি ।
প্রাথমিক ফলে দেখা গেছে, দেশের জনসংখ্যা ১৪ কোটি ২৩ লাখ ১৯ হাজার। জনসংখ্যা বৃদ্ধির বার্ষিক হার ১.৩৪ শতাংশ। দেশের প্রকৃত জনসংখ্যার সঙ্গে প্রকাশিত এ তথ্যের মিল নেই, সাংবাদিকদের প্রশ্নে পরিসংখ্যান বিভাগের সচিব রীতি ইব্রাহিম সে সময় বলেছিলেন, প্রকৃত গণনা ও শুমারিপরবর্তী যাচাইয়ের পর এ সংখ্যা আরও কিছু বাড়বে।

No comments

Powered by Blogger.