সিবিএ দৌরাত্ম্য-সদস্যদের অর্থ আত্মসাৎ!
শাপে বর হওয়ার কথা প্রবাদে রয়েছে; সিলেটের জালালাবাদ গ্যাসক্ষেত্রে উল্টো চিত্রই দেখছি আমরা। কর্মীদের সামষ্টিক স্বার্থ নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দরকষাকষির লক্ষ্যে গঠিত সিবিএ (কালেক্টিভ বারগেইনিং এজেন্ট) সেখানে কর্মীদের ন্যায্য প্রাপ্যেই ভাগ বসাচ্ছে।
রোববার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সংগঠনটির নেতাদের বিরুদ্ধে নিয়োগ-বাণিজ্য, ব্যক্তিগত কাজে অফিসের গাড়ি ব্যবহার, দাফতরিক নথিপত্র তৈরিতে প্রভাব খাটানোর যেসব অভিযোগ উঠেছে, তা কমবেশি সব প্রতিষ্ঠানেই রয়েছে। বিষয়গুলো অনেকটা ওপেন সিক্রেট। জাতীয় পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতার কারণেই যে প্রান্তিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে এ ধরনের অনিয়ম উৎসাহিত করেছে, সেটা সবাই জানে বলেই বোধহয় দেখেও দেখে না। কিন্তু ছোটখাটো দুর্নীতি পার পেলে তা যে বড় দুর্বৃত্তপনার জন্ম দেয়, জালালাবাদ গ্যাসক্ষেত্রে তা আরেকবার প্রমাণিত হলো। জানা যাচ্ছে, সেখানকার সিবিএ নেতারা কর্মচারীদের লভ্যাংশের জনপ্রতি ১০ হাজার থেকে ৪৫ হাজার টাকা বখরা রাখছে! ভাগ বসানোর জন্য তারা নিজেরাই ফান্ড থেকে টাকা উত্তোলন করে কর্মীর হাতে তুলে দিচ্ছে। অথচ নিয়ম হচ্ছে, তিন হাজার টাকার বেশি হলেই সেটা চেকের মাধ্যমে লেনদেন করা। সিবিএ নেতারা কি সেখানে মগের মুল্লুক তৈরি করেছেন? এই অনিয়ম আর চলতে পারে না। যার অর্থ তারই পকেটে যেতে হবে। ন্যায্য পিঠা ভাগাভাগীর জন্য দুষ্ট বানরের প্রয়োজন নেই। উল্লেখযোগ্য কর্মচারীর প্রাপ্য নগদ অর্থ অন্যের পকেটে যাওয়ার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা অমূলক নয়। তা গ্যাসক্ষেত্রের নিরাপত্তা এবং ওই এলাকার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলার জন্যও সুখকর হতে পারে না। আমরা আশা করি, কর্তৃপক্ষ সময় থাকতেই বিষয়টি আমলে নেবেন। দল, রঙ, মত নির্বিশেষে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই আমরা। একই সঙ্গে সিবিএ নতুন কমিটি গঠন এবং সেখানে সৎ, যোগ্য ও কর্মীর স্বার্থ রক্ষাকারী ব্যক্তিদের সমন্বয় ঘটাতেও সবাই আন্তরিক হবেন বলে প্রত্যাশা।
No comments