আমাদের সেতু আমরাই গড়ব

কয়েক দিন ধরেই দেশে সেতু নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। ঐতিহাসিক পদ্মা নদীর ওপর সেতু বানানোর কথা। কিন্তু সমস্যা একটাই—টাকা নেই। কীভাবে টাকা সংগ্রহ করা যায়, তা নিয়েই ভাবছে সবাই। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে ফেসবুক—সব জায়গাতেই এখন একটাই বিষয়, পদ্মা সেতু।


ব্যাপারটা এত দূর গড়াবে জানলে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় নিশ্চয়ই তাঁর উপন্যাসের নাম পদ্মা নদীর মাঝি না দিয়ে নাম দিতেন ‘পদ্মা নদীর সেতু’। আসলে সেতু শব্দটা ছোট হতে পারে, কিন্তু এর তাৎপর্য বিশাল। অথচ কর্তৃপক্ষ সেতুর তাৎপর্যের কথা এত দিন চিন্তাই করেনি। নইলে কত আগে সেতু তৈরি হয়ে যেত। এখনো কর্তৃপক্ষ সেতুর সঠিক গুরুত্ব জনগণের সামনে তুলে ধরছে না। সেতু সম্পর্কে জনগণকে সচেতন না করলে কীভাবে টাকা আসবে? প্রত্যেকেরই উচিত সেতুর গুরুত্ব সবাইকে ভালোভাবে বুঝিয়ে দেওয়া। এতে সবাই সেতুর তহবিল গঠনে এগিয়ে আসবে। মানব এবং গবাদিপশু উভয় জীবনেই সেতুর গুরুত্ব অপরিসীম। পদ্মার ওপর একটা সেতু থাকলে মানুষ সহজে নদী পার হতে পারবে। এমনিতে কোরবানির সময় ঢাকায় গরু-ছাগল আনতে ব্যাপক সমস্যা হয়। সেতু হয়ে গেলে সে সমস্যাও কেটে যাবে। পারাপারের কথা না হয় বাদই দিলাম, বিনোদনকেন্দ্র হিসেবেও সেতুর ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে। দেশে এমনিতেই বেড়ানোর তেমন কোনো জায়গা নেই। প্রেমিক-প্রেমিকারা যে একান্তে কিছু সময় কাটাবে, সে উপায়ও নেই। জায়গার অভাবে অনেকেই ফুটওভারব্রিজ কিংবা ফ্লাইওভারে দাঁড়িয়ে উদাস ভঙ্গিতে বাসের ছাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। পদ্মার ওপর সেতু হলে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ সেই সেতু দেখতে আসবে। এতে দেশের পর্যটনশিল্পেরও ব্যাপক প্রসার হবে। তা ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষায় বঙ্গবন্ধু সেতু নিয়ে রচনা লিখে আসছে। পদ্মা সেতু হলে শিক্ষার্থীরা রচনা লেখার জন্য একটা নতুন বিষয় পাবে। অতএব, কর্তৃপক্ষের উচিত অবিলম্বে জনগণকে সেতুর গুরুত্ব বুঝিয়ে দিয়ে দ্রুত নির্মাণ তহবিল সংগ্রহ করা। ‘আমাদের সেতু আমরাই গড়ব’—এই হোক সবার মন ও ফেসবুকের স্ট্যাটাস!

No comments

Powered by Blogger.