৩ সিএ্যান্ডএফ এজেন্টকে ঢাকায় তলব ॥ আজ জিজ্ঞাসাবাদ-ভোমরা বন্দরে বিল অব এন্ট্রির ৩ হাজার ফাইল গায়েব by মিজানুর রহমান
সাতক্ষীরা ॥ গত আট মাস ধরে ভোমরা বন্দর দিয়ে আমদানি করা পণ্য খালাসের বিপুল পরিমাণ বিল অব এন্ট্রির ফাইল বন্দর কাস্টমস অফিস থেকে গায়েব হয়ে গেছে। গায়েব হওয়া এই ফাইলের পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার। বিভিন্ন প্রকার ফল আমদানিকরা বিল অব এন্ট্রির ফাইল প্রতি ৩ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা গড় রাজস্ব ধরা হলে
সরকারের শত কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে আশঙ্কা করছে রাজস্ব বিভাগ। আর এই ঘটনার তদন্তের জন্য ভোমরা সিএ্যান্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নেছার উদ্দিন, সহসভাপতি আরাফাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অহিদুল ইসলামকে আজ রবিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সিআই সেলে জিঙ্গাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ভোমরা বন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ১৪ জন সিএ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীকে ঐ সময়ে আমদানি করা পণ্যের বিল অব এন্ট্রির কাগজপত্র জমা দিতে নোটিস দিয়েছে। ভোমরা বন্দরের বর্তমান কাস্টমস সুপার মঞ্জুরুল হক ফাইল গায়েবের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে শনিবার বিকেলে জনকণ্ঠকে বলেন, নোটিস দেয়ার পর অনেক ব্যবসায়ী কিছু ফাইল জমা দিয়েছে। সিএ্যান্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি আরাফাত হোসেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে তাদের ডাকা হয়েছে স্বীকার করে শনিবার বিকেলে জনকণ্ঠকে বলেন, বন্দরে ভাড়া করা লাইসেন্স নিয়ে যারা কাজ করে এদেরই বেশিরভাগ বিল অব এন্ট্রির কাগজ জমা দেয়নি বলে তিনি স্বীকার করেন। প্রায় শতকোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির ঘটনা ঘটেছে দাবি করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিএ্যান্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনের সাবেক এক শীর্ষ কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, গত বছর আগস্টে দায়িত্বে থাকা কাস্টমস সুপার এম এম কামাল হোসেনের সময়ে এই অনিয়ম ও কারচুপির ঘটনা বেশি ঘটেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কাস্টমস কর্মকর্তা কামাল হোসেনের কাছে মোবাইলে তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।
২০১১ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই সময়ের মধ্যে আমদানিকৃত পণ্যের প্রায় ৩ হাজারটি ফাইল গায়েব হওয়ার ঘটনায় রাজস্ব বিভাগে তোলপাড় শুরু হয়েছে। বন্দরের বর্তমান রাজস্ব কর্মকর্তা ২১ জুন ১৪ জন সিএ্যাণ্ডএফ ব্যবসায়ীকে গায়েব হওয়া ফাইলের বিল অব এন্ট্রির কাগজসহ সমুদয় ডকুমেন্টস জমা দেয়ার নির্দেশ দেন। এর আগে মৌখিকভাবে কয়েকবার কাগজপত্র জমা দেয়ার কথা বলা হয়। এই নোটিস প্রদানের পূর্বে প্রস্তুতকৃত একটি খসড়া তালিকায় বিল অব এন্ট্রির কাগজ জমা না দেয়া কমপক্ষে ৪০ জন সিএ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীর নামের তালিকা চূড়ান্ত করা হলেও নোটিস দেয়া হয়েছে মাত্র ১৪ জন ব্যবসায়ীকে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের নোটিস দেয়া নিয়েও রাজস্ব কর্মকর্তার কারসাজি ও আর্থিক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। ভোমরা বন্দরের দায়িত্বশীল সূত্র জনকণ্ঠকে জানায়, বন্দরের মেসার্স শফিক এ্যান্ড ইসলাম এর স্বত্বাধিকারীকে বিগত বছরের ২৪ আগস্ট থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮৪টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল অফিসে না পাওয়ায় পুনরায় জমা দেয়ার জন্য তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি বিলে আনুমানিক ৩ লাখ টাকা করে রাজস্ব ধরা হলে ২ কোটি ৫২ লাখ টাকার রাজস্ব সরকারী খাতে জমা হয়নি বলে রাজস্ব বিভাগ মনে করছে। মেসার্স সিলেক্ট লাইনসের স্বত্বাধিকারীকে ৭শ’ ৫৪টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল জমা দিতে বলা হয়েছে। গড় হিসেবে যার রাজস্ব আসে ২২ কোটি ৬২ লাখ টাকা। মেসার্স হুদা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারীকে গায়েব হওয়া ১শ’ ৫১টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল জমা দিতে বলা হয়েছে। যার রাজস্ব প্রায় ৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। এই নোটিসে কোন স্মারক নং দেয়া হয়নি। মেসার্স শাওন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারিকে ৩৩টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল জমা দিতে বলা হয়। যার রাজস্ব আসে ৯৯ লাখ টাকা। মেসার্স রিয়াঙ্কা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারীকে ৩১টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যার রাজস্ব আসে ৯৩ লাখ টাকা। মেসার্স আযাদ ক্লিয়াফোর্ড এজেন্সির স্বত্বাধিকারীকে ৩৯টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল জমা দিতে বলা হয়। যার রাজস্ব আসে ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা। মেসার্স আহাদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারীকে ২শ’ ৩৭টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গড় হিসেবে রাজস্ব আসে ৭ কোটি ১১ লাখ টাকা। মেসার্স ওভারসিজ ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারীকে ১শ’ ৪৬টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল জমা দিতে বলা হয়। যার রাজস্ব আসে ৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারীকে ৪৪টি, মেসার্স শাহনাজ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারীকে, ২৯টি, মেসার্স তানভির এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারীকে ১শ’ ৫৫টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যার রাজস্ব আসে প্রায় ৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। মেসার্স শাওন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারীকে ২২টি, মেসার্স আল মদিনা ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারীকে ১শ’ ৫৪টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল জমা দিতে বলা হয়েছে। যার রাজস্ব আসে ৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। মেসার্স ই এ্যান্ড কে ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারীকে ২শ’ ৯১টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল হাজির করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যার রাজস্ব আসে ৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
২০১১ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই সময়ের মধ্যে আমদানিকৃত পণ্যের প্রায় ৩ হাজারটি ফাইল গায়েব হওয়ার ঘটনায় রাজস্ব বিভাগে তোলপাড় শুরু হয়েছে। বন্দরের বর্তমান রাজস্ব কর্মকর্তা ২১ জুন ১৪ জন সিএ্যাণ্ডএফ ব্যবসায়ীকে গায়েব হওয়া ফাইলের বিল অব এন্ট্রির কাগজসহ সমুদয় ডকুমেন্টস জমা দেয়ার নির্দেশ দেন। এর আগে মৌখিকভাবে কয়েকবার কাগজপত্র জমা দেয়ার কথা বলা হয়। এই নোটিস প্রদানের পূর্বে প্রস্তুতকৃত একটি খসড়া তালিকায় বিল অব এন্ট্রির কাগজ জমা না দেয়া কমপক্ষে ৪০ জন সিএ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীর নামের তালিকা চূড়ান্ত করা হলেও নোটিস দেয়া হয়েছে মাত্র ১৪ জন ব্যবসায়ীকে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের নোটিস দেয়া নিয়েও রাজস্ব কর্মকর্তার কারসাজি ও আর্থিক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। ভোমরা বন্দরের দায়িত্বশীল সূত্র জনকণ্ঠকে জানায়, বন্দরের মেসার্স শফিক এ্যান্ড ইসলাম এর স্বত্বাধিকারীকে বিগত বছরের ২৪ আগস্ট থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮৪টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল অফিসে না পাওয়ায় পুনরায় জমা দেয়ার জন্য তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি বিলে আনুমানিক ৩ লাখ টাকা করে রাজস্ব ধরা হলে ২ কোটি ৫২ লাখ টাকার রাজস্ব সরকারী খাতে জমা হয়নি বলে রাজস্ব বিভাগ মনে করছে। মেসার্স সিলেক্ট লাইনসের স্বত্বাধিকারীকে ৭শ’ ৫৪টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল জমা দিতে বলা হয়েছে। গড় হিসেবে যার রাজস্ব আসে ২২ কোটি ৬২ লাখ টাকা। মেসার্স হুদা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারীকে গায়েব হওয়া ১শ’ ৫১টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল জমা দিতে বলা হয়েছে। যার রাজস্ব প্রায় ৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। এই নোটিসে কোন স্মারক নং দেয়া হয়নি। মেসার্স শাওন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারিকে ৩৩টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল জমা দিতে বলা হয়। যার রাজস্ব আসে ৯৯ লাখ টাকা। মেসার্স রিয়াঙ্কা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারীকে ৩১টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যার রাজস্ব আসে ৯৩ লাখ টাকা। মেসার্স আযাদ ক্লিয়াফোর্ড এজেন্সির স্বত্বাধিকারীকে ৩৯টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল জমা দিতে বলা হয়। যার রাজস্ব আসে ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা। মেসার্স আহাদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারীকে ২শ’ ৩৭টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গড় হিসেবে রাজস্ব আসে ৭ কোটি ১১ লাখ টাকা। মেসার্স ওভারসিজ ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারীকে ১শ’ ৪৬টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল জমা দিতে বলা হয়। যার রাজস্ব আসে ৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। মেসার্স আহমেদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারীকে ৪৪টি, মেসার্স শাহনাজ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারীকে, ২৯টি, মেসার্স তানভির এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারীকে ১শ’ ৫৫টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যার রাজস্ব আসে প্রায় ৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। মেসার্স শাওন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারীকে ২২টি, মেসার্স আল মদিনা ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারীকে ১শ’ ৫৪টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল জমা দিতে বলা হয়েছে। যার রাজস্ব আসে ৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। মেসার্স ই এ্যান্ড কে ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারীকে ২শ’ ৯১টি বিল অব এন্ট্রি ফাইল হাজির করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যার রাজস্ব আসে ৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
No comments