যানজট ও শব্দদূষণ কমিয়ে আনা, ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং দেওয়ানহাট সেতুর বিকল্প হিসেবে এ উড়াল সেতু নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে-কদমতলীতে যানজট নিরসনে উড়ালসেতু

নগরের ক্রমবর্ধমান যানজট নিরসনে কদমতলীতে তৈরি হচ্ছে উড়ালসেতু। এটি পুরোনো রেলস্টেশনের প্রান্ত থেকে শুরু হয়ে কদমতলী রেলক্রসিং পার হয়ে ধনিয়ালাপাড়ায় গিয়ে শেষ হবে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।


প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মাস খানেকের মধ্যেই পুরোদমে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে।
সিডিএ সূত্রে জানা যায়, সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ৯৪০ মিটার (৩০৮৩ ফুট) ও প্রস্থ হবে ১৫ মিটার (৫০ ফুট)। চার লেন বিশিষ্ট উড়ালসেতুর নির্মাণ-ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। নির্মাণকাজের দায়িত্ব পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডেভেলপমেন্ট কনস্ট্রাকশন লিমিটেড (ডিসিএল)। কাজের মেয়াদ ধরা হয়েছে ১৫ মাস।
গত শুক্রবার সকালে কদমতলী উড়ালসেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফসারুল আমীন।
সূত্র মতে, উড়ালসেতুর নির্মাণকাজ শুরুর আগে প্রকল্প এলাকার মাটির পরীক্ষা ও ভারবহন ক্ষমতা (পাইলিং লোড) পরীক্ষা করা হবে। এ জন্য নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তারপর মূল কাজে হাত দেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে কদমতলী জংশন উড়ালসেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক ও সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আহমদ মঈনুদ্দিন বলেন, ‘সেতু নির্মাণের আগে প্রকল্প এলাকার মাটির সহনশীলতা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। বিভিন্ন পরীক্ষার পর প্রায় এক মাস অপেক্ষা করতে হবে ফলাফল পর্যবেক্ষণের জন্য। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আমরা কাজে নামতে পারব।’
জানা যায়, যানজট ও শব্দদূষণ কমিয়ে আনা, ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং দেওয়ানহাট সেতুর বিকল্প হিসেবে কদমতলী উড়ালসেতু নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। কারণ, প্রায় মেয়াদোত্তীর্ণ দেওয়ানহাট সেতুটি যেকোনো সময়ে ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এটি মূলত মাঝারি ওজনের (পাঁচ টন) যানবাহন চলাচলের জন্য তৈরি করা হয়। কিন্তু পরবর্তী সময় এ সেতু দিয়ে প্রায় ৪০-৫০ টন ওজনের পণ্যবাহী ট্রাক ও কনটেইনার ক্যারিয়ার চলাচল করছে।
এ ব্যাপারে প্রকৌশলী আহমদ মঈনুদ্দিন বলেন, ‘আমরা সাধারণত একটি সেতুর স্থায়িত্ব ৯০ থেকে ১০০ বছর বলে ধরে নিই। সেই হিসাবে দেওয়ানহাট সেতুর বয়স ইতিমধ্যে ৩৭ বছর পেরিয়ে গেছে। আর এটা যখন তৈরি হয়েছিল, তখন এত যানবাহন চলাচলের কথা ভাবা হয়নি। কিন্তু বর্তমানে বন্দরের অবকাঠামো ও পরিধি বাড়ায় ওই এলাকায় যানবাহনের সংখ্যা অনেক গুণ বেড়ে গেছে। এর ধকল সহ্য করার মতো অবস্থা দেওয়ানহাট সেতুর নেই। দেওয়ানহাট সেতুটি বর্তমানে বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল (সিইপিজেড), চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টমস ও পতেঙ্গা সৈকতের সঙ্গে সংযুক্ত। কদমতলী উড়ালসেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলে এর মাধ্যমে নিউমার্কেট থেকে আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকা ও ডিটি রোডে চলাচলরত পরিবহনগুলো অনেক কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে। এতে যানজটে সময় নষ্ট হবে না বলে ধারণা করা হয়।
কদমতলী উড়ালসেতুর নির্মাণ কাজ নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ করা যাবে বলে উল্লেখ করে প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আহমদ মঈনুদ্দিন বলেন, ‘আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা।’ তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।

No comments

Powered by Blogger.