বিজ্ঞাপনে প্রভাবিত তরুণ প্রজন্ম by শামিমা আক্তার রিমা
জয় কখনও বন্ধুদের সঙ্গে ঢাকার বাইরে ঘুরতে যায়নি। কিন্তু সম্প্রতি জয় তার বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে এলো কক্সবাজার। এই প্রথম সে তার বাবা-মা ছাড়া ঢাকার বাইরে বেড়াতে যাবার সুযোগ পেল। মনের আনন্দে ঘুরে বেড়িয়েছে, ইচ্ছে মতো দাপাদাপি করেছে সমুদ্রের নোনা জলে।
ফিরে আসার পর থেকেই বাড়িতে এবং বন্ধুরা সবাই বলছে, তুই কালো হয়ে গেছিস। শ্যাম বর্ণের জয়ের কানে কথাটা ফিরে ফিরে লাগছে। যখন কলেজের প্রিয় বান্ধবীটিও বলে উঠল, ‘তোমাকে কালো দেখাচ্ছে’ তখন জয় আর থাকতে পারছে না। সেই বিকেলেই সে চলে গেল বসুন্ধরা সিটিতে। বসুন্ধরা সিটির নিচ তলায় সারি সারি প্রসাধনীর দোকান, তেমনি একটি দোকানে গিয়ে দোকানদারকে জিজ্ঞাসা করল, ভাই ত্বকের রোদে পোড়া কালো ভাব তোলার একটা ভাল ক্রিম দিন তো। আগেই সে বিজ্ঞাপনের মাধ্যেমে জানতে পেরেছিল ছেলেদের বিভিন্ন প্রসাধনসামগ্রীর কথা। সঙ্গে সঙ্গে দোকানদার কয়েক রকমের প্রসাধনসাম=গ্রী বের করে দিলেন। সময়টাই যেন গোলমেলের। কি কাজে, কি ভাবনায়। এই কিছু কাল আগেও ছেলেদের এই রকম সরাসরি প্রসাধনীর ব্যবহারটি শোনা যেত না। সভ্যতার বদৌলতে পণ্য নির্মাতারা এগিয়ে গেছে বহু দূর। বিজ্ঞাপনের প্রভাবে আরও বিস্তার লাভ করেছে তরুণ মনে। এই সময়ের তারুণ্যের মনে বাস করেছে বিজ্ঞাপন-শাসিত কল্পিত রঙিন জগতে, সেই জগতে এক একটা রঙিন ফানুস তৈরি হচ্ছে, তা যেমনি প্রসাধন ব্যবহারে, তেমনি প্রসাধনসামগ্রীর মডেল হওয়ার ভাবনায়। সেই ফানুসে কাজ করতে থাকে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের মডেলরা। তা থেকে বাদ যায় না সুস্মিতা, ঐশ্বরিয়া কিংবা শাহরুখ। প্রচারমাধ্যমগুলো। সুনিপূনভাবে তুলে ধরছে বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী। সে প্রভাবেই বাস্তবে বাস করেও কিশোর-কিশোরীদের ভাবনায় রঙিন সব স্বপ্ন তৈরি হচ্ছে। শিশু বয়স থেকে মায়েরা টিভিতে প্রচারিত বিজ্ঞাপন দেখিয়ে বাচ্চদের খাওয়ানোর অভ্যাস গড়ে তোলেন। আবার কিছু কিছু বাবা-মাকে তার ছেলেমেয়েদের তারকাদের সঙ্গে তুলনা করতে শোনা যায়। যেমন প্রায়ই বলে থাকেন আমার মেয়েটির গালে টোল পড়ে। বড় হয়ে প্রীতি জিনতার মতো হবে। বাবা মা জানে না, কিশোরী মনে তখন থেকেই স্বপ্নের বীজ বপন শুরু হয়। নিজের অজান্তেই আয়নায় দাঁড়িয়ে নিজেকে আবিষ্কার করে অন্য রকমভাবে, চাল-চলনে আসে অনুকরণীয় প্রচেষ্টা।
আজ বাংলাদেশের দূর গাঁয়ে অল্প বয়সী কিশোরীটিও জানে কোন কোম্পানির ক্রিম মাখলে মাত্র সাত দিনে গায়ের রঙ ফর্সা হয়ে যাবে। ছুটে চলা নিয়মিত তার পেছনে। বিজ্ঞাপনের দূরন্ত বিস্তারের ফলে স্কুলগামী তরুণীরা ছুটে চলছে হাল ফ্যাশন ডিজাইনে ও সৌন্দর্য চর্চায়। যেন রাতারাতি তাকে পৌঁছে যেতে হবে বিশ্ব সুন্দরীর কাছাকাছি। কোনভাবে টেলিভিশনে বা দেশীয় কোন পত্রিকায় কোন পণ্যের মডেল হতে পারলে দেশসুদ্ধ মানুষ তাকে চিনে ফেলবে। তার ফলে সাক্ষাৎকার প্রচার হবে। এই ভাবনায় বিভোর থাকে সারাটি মন। সেই ভাবনা থেকেই অল্প বয়সী মেয়েরা ছুটে যাচ্ছে পাড়ার মোড়ে গড়ে ওঠা বিউটি পার্লারে। কচি নরম তুলতুলে ত্বকে করছে মেকআপ। প্রসাধনীর আঘাতে আঘাতে হারিয়ে যাচ্ছে ত্বকের স্বাভাবিক সৌর্ন্দয ও লাবণ্য। ছেলেরাও পিছিয়ে নেই। সেলুনে গিয়ে ফেসিয়াল করে আসছে, চুলে করছে ডাই, অনেকক্ষণ ধরে জেল লাগিয়ে চুল ঠিক করে নিচ্ছে। একটু যারা মুটিয়ে গেছে, খাওয়ার প্রতি তাদের প্রচ- ভয়। কোন চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই শুরু করে দিচ্ছে ডায়েটিং। তাতে করে খুব দ্রুতই অসুখ হয়ে মেজাজ হয় খিটখিটের। অসুস্থতার কারণে লেখাপড়ার পিছিয়ে পড়ছে। প্রতিনিয়তই বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়, ম্যাগাজিনের পাতায় থাকছে রূপচর্চার নানা কায়দা-কানুন। এর প্রায় সবটাই কোন না কোনভাবে প্রয়োগ করে দেখতে হচ্ছে। হেলায় পার হচ্ছে তারুণ্যের ক্যারিয়ার ও পড়ালেখার মূল্যবান সময়। প্রতিটি কাজেরই নির্দিষ্ট কিছু সময় আছে। কেবল নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু প্রসাধনী ছাড়া প্রাপ্তবয়স প্রাপ্তির আগে কখনই কোন ধরনের মেকআপ বা প্রসাধনী ব্যবহার করা ঠিক না।
আজকের যে সুস্মিতা কিংবা শাহরুখ মাথা উঁচু করে সবার মনে ঠাঁই করে নিয়েছে। সে কোন অসাধারণ পরিবার থেকেই এসেছে। ক্যারিয়ারে মডেলিংয়ের ভাবনা যে কাউকে প্রাণবন্ত করে তুলতে পারে। তার জন্য ভিত্তিপ্রস্তত তৈরি করা শুরু করা যেতে পারে অন্য কোন ভাবে। নিজেকে গড়ার সঠিক উপায় হচ্ছে মেধায় নিজেকে প্রকাশ করা। বাহিক্য চাকচিক্যের চেয়ে নিজস্ব স্বকীয়তা, ব্যক্তিত্বশীল হওয়া জরুরী বেশি। শুধু রূপ থাকলেই হবে না, রূপের ওপর থাকতে হবে মেধার প্রলেপ। তবেই পাওয়া যাবে সফলতা। সময় চলে যায় দ্রুতগতিতে। তাই সময়ের কাজটি সময় থাকতে করতে হবে। কসমেটিকের প্রলেপ কিছুদিন পরে দিলেও চলবে, কিন্তু পড়ালেখার ভিত্তিটা যে এখনই তৈরি করে নিতে হবে। তারুণ্যের স্বপ্নের দুয়ার খুলে দিতে পরিবার থেকেও সাহায্যে করতে হবে। বোঝাতে হবে আপনার দৈহিক গঠন ও পরিচ্ছন্ন রুচিশীল করে গড়ে ওঠার পথ তৈরি হচ্ছে। আপনি এক সময় তা বুঝতে পারবেন। তাদের মূল্যবোধ ও চিন্তা-ভাবনার ভিত্তি তৈরিতে পত্রপত্রিকাগুলোতে ক্যরিয়ার ও লেখাপড়া সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পরিমাণ বাড়ানো যেতে হবে।
আজ বাংলাদেশের দূর গাঁয়ে অল্প বয়সী কিশোরীটিও জানে কোন কোম্পানির ক্রিম মাখলে মাত্র সাত দিনে গায়ের রঙ ফর্সা হয়ে যাবে। ছুটে চলা নিয়মিত তার পেছনে। বিজ্ঞাপনের দূরন্ত বিস্তারের ফলে স্কুলগামী তরুণীরা ছুটে চলছে হাল ফ্যাশন ডিজাইনে ও সৌন্দর্য চর্চায়। যেন রাতারাতি তাকে পৌঁছে যেতে হবে বিশ্ব সুন্দরীর কাছাকাছি। কোনভাবে টেলিভিশনে বা দেশীয় কোন পত্রিকায় কোন পণ্যের মডেল হতে পারলে দেশসুদ্ধ মানুষ তাকে চিনে ফেলবে। তার ফলে সাক্ষাৎকার প্রচার হবে। এই ভাবনায় বিভোর থাকে সারাটি মন। সেই ভাবনা থেকেই অল্প বয়সী মেয়েরা ছুটে যাচ্ছে পাড়ার মোড়ে গড়ে ওঠা বিউটি পার্লারে। কচি নরম তুলতুলে ত্বকে করছে মেকআপ। প্রসাধনীর আঘাতে আঘাতে হারিয়ে যাচ্ছে ত্বকের স্বাভাবিক সৌর্ন্দয ও লাবণ্য। ছেলেরাও পিছিয়ে নেই। সেলুনে গিয়ে ফেসিয়াল করে আসছে, চুলে করছে ডাই, অনেকক্ষণ ধরে জেল লাগিয়ে চুল ঠিক করে নিচ্ছে। একটু যারা মুটিয়ে গেছে, খাওয়ার প্রতি তাদের প্রচ- ভয়। কোন চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই শুরু করে দিচ্ছে ডায়েটিং। তাতে করে খুব দ্রুতই অসুখ হয়ে মেজাজ হয় খিটখিটের। অসুস্থতার কারণে লেখাপড়ার পিছিয়ে পড়ছে। প্রতিনিয়তই বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়, ম্যাগাজিনের পাতায় থাকছে রূপচর্চার নানা কায়দা-কানুন। এর প্রায় সবটাই কোন না কোনভাবে প্রয়োগ করে দেখতে হচ্ছে। হেলায় পার হচ্ছে তারুণ্যের ক্যারিয়ার ও পড়ালেখার মূল্যবান সময়। প্রতিটি কাজেরই নির্দিষ্ট কিছু সময় আছে। কেবল নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু প্রসাধনী ছাড়া প্রাপ্তবয়স প্রাপ্তির আগে কখনই কোন ধরনের মেকআপ বা প্রসাধনী ব্যবহার করা ঠিক না।
আজকের যে সুস্মিতা কিংবা শাহরুখ মাথা উঁচু করে সবার মনে ঠাঁই করে নিয়েছে। সে কোন অসাধারণ পরিবার থেকেই এসেছে। ক্যারিয়ারে মডেলিংয়ের ভাবনা যে কাউকে প্রাণবন্ত করে তুলতে পারে। তার জন্য ভিত্তিপ্রস্তত তৈরি করা শুরু করা যেতে পারে অন্য কোন ভাবে। নিজেকে গড়ার সঠিক উপায় হচ্ছে মেধায় নিজেকে প্রকাশ করা। বাহিক্য চাকচিক্যের চেয়ে নিজস্ব স্বকীয়তা, ব্যক্তিত্বশীল হওয়া জরুরী বেশি। শুধু রূপ থাকলেই হবে না, রূপের ওপর থাকতে হবে মেধার প্রলেপ। তবেই পাওয়া যাবে সফলতা। সময় চলে যায় দ্রুতগতিতে। তাই সময়ের কাজটি সময় থাকতে করতে হবে। কসমেটিকের প্রলেপ কিছুদিন পরে দিলেও চলবে, কিন্তু পড়ালেখার ভিত্তিটা যে এখনই তৈরি করে নিতে হবে। তারুণ্যের স্বপ্নের দুয়ার খুলে দিতে পরিবার থেকেও সাহায্যে করতে হবে। বোঝাতে হবে আপনার দৈহিক গঠন ও পরিচ্ছন্ন রুচিশীল করে গড়ে ওঠার পথ তৈরি হচ্ছে। আপনি এক সময় তা বুঝতে পারবেন। তাদের মূল্যবোধ ও চিন্তা-ভাবনার ভিত্তি তৈরিতে পত্রপত্রিকাগুলোতে ক্যরিয়ার ও লেখাপড়া সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পরিমাণ বাড়ানো যেতে হবে।
No comments