আর কেউ যেন দেশকে নিয়ে খেলতে না পারে ॥ প্রধানমন্ত্রী-যুবলীগকে হতে হবে অতন্দ্র প্রহরী ॥ কংগ্রেস উদ্বোধন

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ভবিষ্যতে আর যেন কেউ বাংলাদেশকে নিয়ে নতুন খেলা খেলতে না পারে- সেজন্য গ্রামগঞ্জসহ সারাদেশে অতন্দ্র প্রহরীর মতো সজাগ ও সতর্ক থেকে কাজ করার জন্য যুবলীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।


বিএনপি-জামায়াত জোটের সময়ই দুর্নীতির কারণে বিশ্বব্যাংক ঋণ প্রদান স্থগিত রেখেছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের অতীত দুর্নীতি ও লুটপাটের বদনাম এখনও বাংলাদেশকে বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৫ সালেই তাদের সীমাহীন দুর্নীতির কারণে বিশ^ব্যাংক বিদ্যুত-জ্বালানি ও যোগাযোগ খাতে এ দেশে সব ধরনের ঋণ দেয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। সেই বদনাম এখনও দেশকে বহন করতে হচ্ছে। বৈরী আবহাওয়া ও মুষলধারার বৃষ্টি উপেক্ষা করে শনিবার আওয়ামী লীগের সর্ববৃহৎ সহযোগী যুব সংগঠন আওয়ামী যুবলীগের ষষ্ঠ জাতীয় কংগ্রেসের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে, তখনই এ দেশের মানুষের মধ্যে শান্তি ও স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্তু দেশের মানুষ শান্তিতে থাকলে কার মনে অশান্তি সৃষ্টি হয় এবং সে অশান্তির আগুনে দেশকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দিতে চানÑ সেটাও দেশবাসী জানে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হোক সেটাও তারা চান না। এজন্যই তারা দেশ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তিনি অশান্তি সৃষ্টির কৌশল মোকাবেলার জন্য যুবসমাজকে সতর্ক থাকারও আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট কখনই স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ^াস করে না। এ কারণেই তারা বার বার দেশকে ধ্বংসের পথে নিয়ে গেছে। যখনই তারা ক্ষমতায় আসে, তখনই এদেশ সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও জঙ্গীবাদের বদনাম কুড়ায়। ক্ষমতায় থেকে তারা নিজেদের ভাগ্য গড়ে, মুষ্টিমেয় গোষ্ঠী ছাড়া সাধারণ মানুষের ভাগ্যেরও কোন পরিবর্তন হয় না।
একইসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী কষ্টার্জিত গণতন্ত্র রক্ষায় সতর্ক থাকতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বার বার আঘাত এলেও অনেক সংগ্রাম ও কষ্টে এ গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। একে আর নস্যাত হতে দেয়া যাবে না। ভবিষ্যতে আর কেউ যেন জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি এবং বাংলাদেশকে নিয়ে নতুন খেলায় মাততে না পারেÑ তার জন্যও সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
“এসো হে যুবক গড়ি ঐক্য, করি শপথ, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গড়ব মোদের সোনালি ভবিষ্যত”Ñ এ মূল সেøাগানে প্রায় সাড়ে ৯ বছর পর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় যুবলীগের এই ষষ্ঠ কংগ্রেস (কাউন্সিল)। যুবলীগের এ কংগ্রেসকে ঘিরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র ও এর আশপাশের এলাকায় রীতিমতো উৎসবমুখর পরিবেশের সূচনা ঘটেছিল। সারাদেশ থেকে আগত প্রায় ৩০ হাজার নেতাকর্মীর মিলনমেলায় পরিণত হয়।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রাঙ্গণে দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল মঞ্চ ও প্যান্ডেল ছাড়াও আবহমান বাংলার গ্রামীণ চিত্রের সঙ্গে সমন্বয় রেখে নৌকা, হাঁস, প্রজাপতি, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ, কুটিরশিল্প, অস্থায়ী ফোয়ারা, ফুল ও রংবেরঙের বেলুন দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়। সংলগ্ন সড়কগুলোকেও বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার প্রতিকৃতিসহ নানা ধরনের ডিজিটাল ব্যানার, ফেস্টুন ও বেলুন দিয়ে সজ্জিত করা হয়। সারাদেশের হাজার হাজার নেতাকর্মী নানা সেøাগানে দিনভর কংগ্রেসস্থলকে মুখরিত করে রাখেন। প্রবল বর্ষণের মধ্যেও সমবেত এসব নেতাকর্মীর পাশাপাশি আমন্ত্রিত অতিথি ও মানুষের উপস্থিতিতে কংগ্রেসস্থল ছাড়িয়ে সংলগ্ন সড়কগুলোতেও ছিল উপচেপড়া ভিড়। সংগঠনের পদপ্রত্যাশীদের শোডাউনও ছিল দেখার মতো। কাকভেজা হয়েও দিনভর কংগ্রেসকে মুখরিত করে রাখে শত শত নেতাকর্মী। ফলে প্রবল বর্ষণও জমকালো এ কাউন্সিল অনুষ্ঠানের এতটুকু ব্যত্যয় ঘটাতে পারেনি। দুপুর পৌনে ১২টায় প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনস্থলে এসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দলের অন্যতম সহযোগী এ সংগঠনের কংগ্রেসের আনুষ্ঠানিক উ™ে^াধন করেন। এ সময় সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। ৭৭টি সাংগঠনিক জেলা ও জেলার মর্যাদাসম্পন্ন ১৫টি বৈদেশিক শাখার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরাও এ সময় আলাদাভাবে সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কংগ্রেসস্থলে এসে পৌঁছলে তুমুল করতালি, গগনবিদারী সেøাগান আর পুষ্পবর্ষণের মধ্য দিয়ে বরণ করে নেয়া হয় তাঁকে। এরপর শুরু হয় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানপর্ব। জনপ্রিয় আবৃত্তিকার ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেপথ্যে ধারাভাষ্যে ‘হৃদয়ে সুরনীণা শেখ হাসিনা’ শীর্ষক গান ও ধারাভাষ্যের সমন্বয়ে নৃত্য ও কোলাজ নৃত্যের মাধ্যমে দেশের ৪০ বছরের ইতিহাস তুলে ধরা হয়। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা এবং পরবর্তী সকল গণতান্ত্রিক ও স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার সংগ্রাম তুলে ধরা হয় কোলাজ নৃত্যের মাধ্যমে। এরপর সংগঠনের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে ফুলের তোড়া, কংগ্রেসের স্মারক ক্রেস্ট এবং সম্মেলন উপলক্ষে প্রকাশিত প্রকাশনা উপহার দেয়া হয়।
এরপর ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে কংগ্রেসের উ™ে^াধনী অধিবেশনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ষষ্ঠ কংগ্রেসে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান আমির হোসেন আমু এমপি, সভাপতিম-লীর সদস্য ও যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। কংগ্রেস পরিচালনা এবং যুবলীগের সাংগঠনিক রিপোর্ট উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ মির্জা আজম এমপি। শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন সংগঠনের দফতর সম্পাদক অধ্যাপক এবিএম আমজাদ হোসেন।
২০০৩ সালের ২৫ জানুয়ারি ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনের সর্বশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল। শনিবারের যুবলীগের কংগ্রেসে সংগঠনটির ৭৭টি সাংগঠনিক জেলা এবং জেলার মর্যাদাসম্পন্ন ১৫টি বিদেশী শাখার দুই হাজার ৬০১ কাউন্সিলর এবং প্রায় ২০ হাজার ডেলিগেটস অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া জাতীয় নেতৃবৃন্দ, মন্ত্রীবর্গ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিক এবং ভ্রাতৃপ্রতিম যুব সংগঠনের নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন। যুবলীগের কংগ্রেসে চীন, ফিলিস্তিন, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা, ভারত ও রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। প্রধান বিরোধী দল বিএনপির যুব সংগঠন যুবদলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও যুুবলীগের কংগ্রেসে কেউ উপস্থিত হননি। ১৯৭২ সালের ১১ নবেম্বর শেখ ফজলুল হক মনিকে চেয়ারম্যান ও নূরে আলম সিদ্দিকীকে সাধারণ সম্পাদক করে বঙ্গবন্ধু এ যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী জনগণের ভোট-ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে যুবলীগের সাহসী ও অগ্রণী ভূমিকা তুলে ধরে প্রতিটি গ্রামগঞ্জে ও পাড়া-মহল্লায় সংগঠনকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। গণতন্ত্র রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরীর মতো সতর্ক থাকতে নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, একজন নেতা হতে হলে প্রতিটি যুবলীগ কর্মীকেই বঙ্গবন্ধুর ত্যাগের আদর্শে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। দেশের মানুষের আস্থা ও ভালবাসা অর্জন করতে না পারলে সেই নেতৃত্ব দিয়ে দেশের কিছু হয় না। তাই মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে হবে। নিজে কী পেলাম তা নয়, দেশ ও জনগণকে কী দিলামÑ এ মনোভাব নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। যুবলীগ কর্মীদের মধ্য থেকেই যেন দেশের ভবিষ্যত নেতৃত্ব তৈরি হয়।
২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা এবং উন্নত-সমৃদ্ধ আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা (বিএনপি-জামায়াত) সমস্যা সৃষ্টি করে যায় আর আওয়ামী লীগ তার সমাধান করে। ক্ষমতায় থাকতে এবং না থাকতেও এ দেশের মানুষের কল্যাণ ও তাদের ভাগ্যের পরিবর্তনেই আওয়ামী লীগ কাজ করে। সরকারের সাড়ে তিন বছরের উন্নয়নের কাজের বিবরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে আর কোন সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও জঙ্গীবাদকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না। বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শান্তির দেশ। এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন ও তাদের মুখে হাসি ফোটানোকেই আমরা আমাদের কর্তব্য বলে মনে করি। যখনই ক্ষমতায় আসি, তখনই জনগণের জন্য কাজ করার চেষ্টা করে যাই। আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে জনগণ কখনও বিমুখ হয় না। কেননা জনগণের আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগ সব সময়ই সচেষ্ট থাকে। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট ৫ বছর এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছর এই সাত বছরে এক মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন করে যায়নি, বরং কমিয়েছে। বর্তমান সরকার মাত্র সাড়ে তিন বছরেই ৩ হাজার ৮শ’ মেগাওয়াট নতুন বিদ্যুত উৎপাদন করেছে। বিএনপি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে পরিত্যক্ত ঘোষিত গ্যাসকূপ থেকেই আমরা বিপুল পরিমাণ গ্যাস উত্তোলন করতে সক্ষম হয়েছি, অনুসন্ধান চালিয়ে আমরা তেলও পেয়েছি। তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুফল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। নির্বাচনী ইশতেহারে যে ওয়াদা ও ঘোষণা দিয়েছিলাম, তার চেয়েও বেশি উন্নয়ন কাজ আমরা করে যাচ্ছি। যুবসমাজের জন্য বর্তমান সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদেশের যুবসমাজই হচ্ছে আগামী দিনের ভবিষ্যত। এ যুবসমাজই আগামী দিনে এ দেশকে নেতৃত্ব দেবে। মাত্র সাড়ে তিন বছরে আমরা প্রায় ৭০ লাখ যুবকের কর্মস্থানের ব্যবস্থা করেছি, সাড়ে চার লাখ সরকারী চাকরি দিয়েছি। যুবকরা বিনা জামানতে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিয়ে নিজেদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে পারে সেজন্য পৃথক ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছি।
যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় বিরোধীদল ষড়যন্ত্র করছে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন। কিন্তু জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে যুদ্ধাপরাধীদের শুধু রক্ষাই করেননি, কারাগার থেকে ছেড়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রি, এমপি বানিয়ে পুনর্বাসিত করেছেন। আর তাঁর স্ত্রী খালেদা জিয়াও যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়ে তাদের গাড়িতে-বাড়িতে ত্রিশ লাখ রক্তে অর্জিত আমাদের জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিল। আমরা যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছি তখনই তারা নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে সতর্ক থাকারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
আমির হোসেন আমু যুবলীগের অতীত ঐতিহ্যের কথা স্মৃতিচারণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যুবলীগই প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা রেখেও যুবলীগ প্রমাণ করেছে তারা একটি আদর্শবাদী সংগঠন। সংগঠনের আগামী নেতৃত্বও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের কাজে নিজেদের আত্মনিয়োগ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, যুবলীগ আদর্শের সংগঠন। এতে কোন মাদকসেবী, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ ও সন্ত্রাসীদের স্থান যেন না হয় এবং সংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ যেন কোন অপকর্ম করতে না পারেÑ সেজন্য এর নেতাকর্মীদেরই সতর্ক থাকতে হবে।
কংগ্রেসের সাফল্য কামনা করে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ৩৯ বছর ৭ মাস আগে যুবলীগের প্রথম কংগ্রেসে ছাত্রলীগের প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর থাকার সুযোগ হয়েছিল। আজ ষষ্ঠ কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। এটা তাঁর জন্য অত্যন্ত আনন্দের।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, শেখ হাসিনা যুবসমাজের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। যুবসমাজও তেমনি শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশ গড়ার সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছে। শেখ হাসিনার নির্দেশে যুবলীগের নেতাকর্মীরা যে কোন ত্যাগ শিকারে প্রস্তুত।
এরপর বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে কংগ্রেসের দ্বিতীয় পর্বে কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। এতে সংগঠনের গঠনতন্ত্রের নানা সংশোধনী প্রস্তাব উপস্থাপন ও অনুমোদিত হয়। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সারাদেশের ৭৭টি সাংগঠনিক জেলা ও ১৫টি বৈদেশিক শাখার আড়াই হাজারেরও বেশি কাউন্সিলর এতে যোগ দিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.