বাড়তি ভাড়ার চাপ যাত্রীর ঘাড়েই by মিঠুন চৌধুরী
নগরে সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য চলছেই। সরকার-নির্ধারিত ভাড়া কিংবামিটারপদ্ধতি—কোনো কিছুই মানেন না অটোরিকশার চালকেরা। যাত্রীদের অনেকটা জিম্মি দশা। বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিষয়টি স্বীকারও করে নিয়েছেন অটোরিকশাচালক ও মালিক সমিতির নেতারা।
কিন্তু যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায়ের জন্য চালক ও মালিকেরা দোষ চাপাচ্ছেন একে অন্যের ঘাড়ে। আর মাঝখানে বাড়তি ভাড়ার চাপ পড়ে যাত্রীর ঘাড়েই।
চালক ও মালিকেরা বলছেন, মিটারে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল না করার পেছনে ‘যুক্তিসংগত’ কারণ রয়েছে। তাঁদের মতে নিম্নমানের মিটার সংযোজন ও নতুন ভাড়া নির্ধারণের পর দফায় দফায় জ্বালানির দাম বাড়ানো হলে কোনোভাবেই মিটারে অটোরিকশা চলাচলের পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।
নগরের লালখান বাজার এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘লালখান বাজার থেকে আকবর শাহ মাজার গেট পর্যন্ত ভাড়া দাবি করে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। মিটারে চললে তা হওয়ার কথা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে অটোরিকশায় চলাচল করতে হয়। বেশি ভাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো কোনো চালক দুর্ব্যবহারও করেন।
একই অভিযোগ মাদারবাড়ি এলাকার গৃহিণী নাজমা আকতারের। তিনি বলেন, ‘মহিলা যাত্রী দেখলে এমনিতেই বেশি ভাড়া দাবি করে। তার ওপর রাতের বেলা বা আবহাওয়া খারাপ থাকলে চালকেরা ইচ্ছামতো ভাড়া নেয়।’
নগরের হালিশহর এলাকার বাসিন্দা সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মো. জাহাঙ্গীর (চট্ট মেট্রো-খ, ১২-৩৩২১) জানান, গাড়ির দৈনিক জমা ৫৭০ টাকা। এ ছাড়া ২৫০ টাকার মতো গ্যাস প্রয়োজন হয়। সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত গাড়ি চালানো যায়। সব খরচ বাদ দিয়ে দিনে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মতো আয় হয়।
মিটারে চলাচলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মিটার তো লাগানোর পরপরই নষ্ট হয়ে গেছে। গ্যাসের দাম বেড়েছে কয়েকবার। সব জিনিসের দাম বাড়তি। কীভাবে মিটারে যাব?’
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ৪ নভেম্বর সিএনজিচালিত অটোরিকশার নতুন ভাড়াসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ওই সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রথম কিলোমিটার ২৫ টাকা ও পরের প্রতি কিলোমিটার সাত টাকা করে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। এ সময় মালিকদের দৈনিক জমা আগের ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নতুন ভাড়া কার্যকর করার কথা ছিল। কিন্তু নতুন মিটার ও নতুন ভাড়া সংযোজন (ক্যালিব্রেশন) করতে দেরি হওয়ায় তা কয়েক দফা পিছিয়ে গত বছরের ২৭ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে মিটারে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল শুরু হয়। মিটারে চলাচল না করায় ওই সময় প্রায় এক হাজার খানেক সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে জরিমানা করে ট্রাফিক বিভাগ।
চট্টগ্রাম মহানগর অটোরিকশা, অটো টেম্পো ও সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক কল্যাণ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনো কোনো চালক যাত্রীদের জিম্মি করে ভাড়া আদায় করে এটা স্বীকার করছি। কিন্তু মালিকেরাও কোনো নিয়ম মানেন না। আধা বেলা গাড়ি চালালেও ৬০০ টাকা জমা দিতে হয়। পুলিশ অহেতুক নানা রকম মামলা দেয়। এতেও চালকদের খরচ বেড়ে যায়। এসব খরচ ভাড়া থেকে মেটাতে হয়।’
মিটারে অটোরিকশা চলাচলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মিটারে ভাড়া নির্ধারণের সপ্তাহ খানেক পর গ্যাসের দাম বাড়ে। সরকারের দুর্বলতার কারণেই মিটার চালু করা সম্ভব হয়নি। আগে মালিকদের জন্য আলাদা আইন করতে হবে। তারপর চালক ও মালিকেরা যাতে আইন মানে তা নিশ্চিত করতে হবে।’
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হায়দার আজম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘চালকেরা বাড়াবাড়ি করছে এটা সত্য। তাঁরা বেশি ভাড়া আদায় করলেও আমরা এখনো সরকার- নির্ধারিত জমাই নিচ্ছি। আধা বেলার জন্য গাড়ি ভাড়ায় দিয়ে পুরো ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।’ অটোরিকশায় মিটার-পদ্ধতি চালুর আহ্বান জানিয়ে হায়দার আজম বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুসারে লাগানো নিম্নমানের মিটারগুলোর কোনো অস্তিত্বই এখন নেই। ভালো মানের মিটার দিয়ে ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করে মিটার-পদ্ধতি চালু করা যায়।’
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার এস এম তানভীর আরাফাত প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিটারে চলাচল ও ভাড়া নির্ধারণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে উদ্যোগ নেওয়া হবে। ভাড়া নির্ধারণের পর জ্বালানির দাম বাড়লে ভাড়া আদায়ের পদ্ধতি কী হবে, সেটাও সবার মতামতের ভিত্তিতে ঠিক করা হবে।’
চালক ও মালিকেরা বলছেন, মিটারে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল না করার পেছনে ‘যুক্তিসংগত’ কারণ রয়েছে। তাঁদের মতে নিম্নমানের মিটার সংযোজন ও নতুন ভাড়া নির্ধারণের পর দফায় দফায় জ্বালানির দাম বাড়ানো হলে কোনোভাবেই মিটারে অটোরিকশা চলাচলের পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।
নগরের লালখান বাজার এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘লালখান বাজার থেকে আকবর শাহ মাজার গেট পর্যন্ত ভাড়া দাবি করে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। মিটারে চললে তা হওয়ার কথা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে অটোরিকশায় চলাচল করতে হয়। বেশি ভাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো কোনো চালক দুর্ব্যবহারও করেন।
একই অভিযোগ মাদারবাড়ি এলাকার গৃহিণী নাজমা আকতারের। তিনি বলেন, ‘মহিলা যাত্রী দেখলে এমনিতেই বেশি ভাড়া দাবি করে। তার ওপর রাতের বেলা বা আবহাওয়া খারাপ থাকলে চালকেরা ইচ্ছামতো ভাড়া নেয়।’
নগরের হালিশহর এলাকার বাসিন্দা সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মো. জাহাঙ্গীর (চট্ট মেট্রো-খ, ১২-৩৩২১) জানান, গাড়ির দৈনিক জমা ৫৭০ টাকা। এ ছাড়া ২৫০ টাকার মতো গ্যাস প্রয়োজন হয়। সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত গাড়ি চালানো যায়। সব খরচ বাদ দিয়ে দিনে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকার মতো আয় হয়।
মিটারে চলাচলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মিটার তো লাগানোর পরপরই নষ্ট হয়ে গেছে। গ্যাসের দাম বেড়েছে কয়েকবার। সব জিনিসের দাম বাড়তি। কীভাবে মিটারে যাব?’
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ৪ নভেম্বর সিএনজিচালিত অটোরিকশার নতুন ভাড়াসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ওই সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রথম কিলোমিটার ২৫ টাকা ও পরের প্রতি কিলোমিটার সাত টাকা করে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। এ সময় মালিকদের দৈনিক জমা আগের ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নতুন ভাড়া কার্যকর করার কথা ছিল। কিন্তু নতুন মিটার ও নতুন ভাড়া সংযোজন (ক্যালিব্রেশন) করতে দেরি হওয়ায় তা কয়েক দফা পিছিয়ে গত বছরের ২৭ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে মিটারে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল শুরু হয়। মিটারে চলাচল না করায় ওই সময় প্রায় এক হাজার খানেক সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে জরিমানা করে ট্রাফিক বিভাগ।
চট্টগ্রাম মহানগর অটোরিকশা, অটো টেম্পো ও সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক কল্যাণ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনো কোনো চালক যাত্রীদের জিম্মি করে ভাড়া আদায় করে এটা স্বীকার করছি। কিন্তু মালিকেরাও কোনো নিয়ম মানেন না। আধা বেলা গাড়ি চালালেও ৬০০ টাকা জমা দিতে হয়। পুলিশ অহেতুক নানা রকম মামলা দেয়। এতেও চালকদের খরচ বেড়ে যায়। এসব খরচ ভাড়া থেকে মেটাতে হয়।’
মিটারে অটোরিকশা চলাচলের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মিটারে ভাড়া নির্ধারণের সপ্তাহ খানেক পর গ্যাসের দাম বাড়ে। সরকারের দুর্বলতার কারণেই মিটার চালু করা সম্ভব হয়নি। আগে মালিকদের জন্য আলাদা আইন করতে হবে। তারপর চালক ও মালিকেরা যাতে আইন মানে তা নিশ্চিত করতে হবে।’
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হায়দার আজম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘চালকেরা বাড়াবাড়ি করছে এটা সত্য। তাঁরা বেশি ভাড়া আদায় করলেও আমরা এখনো সরকার- নির্ধারিত জমাই নিচ্ছি। আধা বেলার জন্য গাড়ি ভাড়ায় দিয়ে পুরো ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।’ অটোরিকশায় মিটার-পদ্ধতি চালুর আহ্বান জানিয়ে হায়দার আজম বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুসারে লাগানো নিম্নমানের মিটারগুলোর কোনো অস্তিত্বই এখন নেই। ভালো মানের মিটার দিয়ে ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করে মিটার-পদ্ধতি চালু করা যায়।’
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার এস এম তানভীর আরাফাত প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিটারে চলাচল ও ভাড়া নির্ধারণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে উদ্যোগ নেওয়া হবে। ভাড়া নির্ধারণের পর জ্বালানির দাম বাড়লে ভাড়া আদায়ের পদ্ধতি কী হবে, সেটাও সবার মতামতের ভিত্তিতে ঠিক করা হবে।’
No comments