সমকালীন প্রসঙ্গ-তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির উত্থান কি সম্ভব? by আবু সাঈদ খান

যখন আওয়ামী লীগের বিপরীতে বিএনপির কথা ভাবা হয়, তখন সামনে ভেসে ওঠে হাওয়া ভবনের স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি, ১০ ট্রাক অস্ত্র, ২১ আগস্টের বোমা হামলা ইত্যাদি ঘটনা। এ পরিস্থিতিতে জনগণ কিংকর্তব্যবিমূঢ়। নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা কী হবে_ সেটি বড় বিতর্ক।


কিন্তু নির্বাচনী ব্যবস্থার সুরাহা হলেই কি পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে? কোন দলকে ভোট দেবে জনগণ? জ্বলন্ত উনুন, না ফুটন্ত কড়াই; কোনটাতে ঝাঁপ দেবে এটাই যেন বেছে নেওয়ার বিষয়। এমন পরিস্থিতিতে এসে যায় বিকল্প ভাবনা প্রসঙ্গ


দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন দুই পরাশক্তির আধিপত্য। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পালাক্রমে দেশ শাসন করছে। অন্যান্য কিছু দল দুই দলের সঙ্গে ঐক্য গড়েছে। তবে কয়েকটি বাম দল শাসকশ্রেণীর বিপরীতে থাকলেও তাদের ভূমিকা কার্যত দৃশ্যমান নয়। এ প্রেক্ষাপটে জনগণ কখনও আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে বিএনপিকে আলিঙ্গন করেছে, আবার বিএনপি সরকারের ওপর ক্ষেপে আওয়ামী লীগকে সমর্থন জানিয়েছে। এভাবে দুই দলের মধ্যেই ক্ষমতার পালাবদল ঘটছে।
দুই দশকের অভিজ্ঞতা হচ্ছে_ রাজনীতি ক্রমশ বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে। রাজনীতিকে পুঁজি করে ক্ষমতার বরপুত্ররা নিজেদের ভাগ্য বদলিয়েছে। ক্ষমতাবাজি, দলবাজি, দখলবাজি চলেছে; জনস্বার্থ হয়েছে উপেক্ষিত, পদদলিত। এই নীতিহীন রাজনীতির খেলায় ত্যাগী-মেধাবীরা উভয় দল থেকে ছিটকে পড়েছেন। সেখানে জেঁকে বসেছে সুবিধাবাদী গোষ্ঠী। টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন বাগিয়ে এমপি-মন্ত্রী হয়ে টাকা কামাই করছেন অনেকে। সংসদ, জনস্বার্থ কোনো দিকেই তাদের খেয়াল নেই, আখের গোছানোর কাজেই তাদের মনোনিবেশ।
পেছনে ফিরতে চাই, ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে প্রথম দিকে আওয়ামী লীগ ছিল অত্যন্ত সংযত_ কল্যাণমুখী প্রবণতা ছিল লক্ষণীয়। কিন্তু তর সইল না। তিন বছরের মাথায় শুরু হলো আখের গোছানোর রাজনীতি। জনগণ ক্ষুব্ধ হয়ে বিএনপিকে আবার ক্ষমতায় আনল। কিন্তু তারা ঘটনাপ্রবাহ থেকে কোনো শিক্ষা নিল না। আওয়ামী লীগের চেয়ে দ্বিগুণ উৎসাহে আখের গোছানোর মাধ্যমে তারা মেয়াদ পার করেছে। চারদলীয় জোটের দুর্নীতি-স্বেচ্ছাচারিতায় জনগণ আওয়ামী লীগকে (মহাজোট) সমর্থন দিয়েছে। দলের নেতাকর্মীরা কি তা মনে রেখেছেন?
চারদলীয় জোটের বিদায়ের পেছনে ছিল নতুন প্রজন্ম, নারী, সংখ্যালঘু, আদিবাসীসহ ব্যাপক জনগণ। আজ তারা হতাশ। আওয়ামী লীগ যে স্বপ্ন দেখিয়েছিল, তা এখন ম্রিয়মাণ। এ নিবন্ধে ব্যাপক আলোচনার সুযোগ নেই। কেবল কয়েকটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উল্লেখ করতে চাই_ যা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও অগ্রাধিকার পেয়েছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে সরকার? দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া ক্রমেই লাফিয়ে চলেছে। রোজার আগেই চিনিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। একমাত্র চালের দামই সহনীয়। এ কৃতিত্ব কৃষকের। বিনিময়ে যে মূল্য সহায়তা দেওয়া উচিত ছিল, তা থেকে কৃষক বঞ্চিত।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। ইলিয়াস অপহরণ, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড, সৌদি কর্মকর্তার রহস্যজনক মৃত্যুসহ একের পর এক গুম, খুন, নারী নির্যাতন, আদিবাসীদের ওপর হামলা-নিপীড়ন, রাজপথে সাংবাদিক নির্যাতন ইত্যাদি জননিরাপত্তা পরিস্থিতিকে উদ্বেগজনক করে তুলেছে। দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠন অভিযোগ তুলেছে পুলিশ-র‌্যাবের বিরুদ্ধেও। জননিরাপত্তা, বন্দিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারার অভিযোগে জাতি বিব্রত।
বিদ্যুৎ সরবরাহে খানিকটা উন্নতি হয়েছে, তা স্বীকার্য। তবে কুইক রেন্টালে তেলের জোগান দিতে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়েছে। বিদ্যুতের দাম বেড়েছে কয়েক দফা। অভিযোগ উঠেছে অনিয়ম-দুর্নীতিরও। কেবল এ ক্ষেত্রে নয়, মন্ত্রী-এমপিদের দুর্নীতি এখন বহুল আলোচিত। পদ্মা সেতুর দুর্নীতি নিয়ে কথা উঠেছে। অভিযোগ এনেছে খোদ বিশ্বব্যাংক। সরকার বলছে মিথ্যা কথা। কিন্তু জনমনে প্রশ্ন, ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে পদ্মা সেতু কানাডিয়ান পরামর্শক এসএনসি লাভালিনকে অভিযুক্ত করেছে সে দেশের কর্তৃপক্ষ। আর সেই ঘুষ যাদের হস্তগত হওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল, তাদের পূতঃপবিত্র বলছে বাংলাদেশ সরকার। বিষয়টি কি জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্য? সংশ্লিষ্ট সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের গায়ে যে কলঙ্ক-কালিমা লেপটে ছিল, তা এখন সরকারের গাত্র স্পর্শ করেছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে পদ্মা সেতু প্রকল্প।
বিদ্যুৎ, গ্যাস সংকটে নতুন উদ্যোগ, বিনিয়োগ ও শিল্পায়নের গতি স্লথ। উন্নম্নয়নের ধারাবাহিতা বাধাগ্রস্ত। অনিশ্চিত কর্মহীন লাখ লাখ তরুণের ভবিষ্যৎ। কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ছে না। সংকুচিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারও। সে সঙ্গে আছে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবার সুযোগে অপ্রতুলতা। সেগুলো সামাল দিতে সরকার পদক্ষেপ নেবে, পার্লামেন্টে সরকার ও বিরোধী দল একযোগে দেশ ও জনগণ নিয়ে ভাববে_ প্রত্যাশিত হলেও সেদিকে ভ্রূক্ষেপ নেই কারও। সরকার আর বিরোধী দল ক্ষমতায় থাকা আর যাওয়ার নীতিহীন খেলায় মত্ত। পুলিশি দমন-পীড়ন, হরতাল-ঘেরাওসহ ক্ষমতা প্রদর্শনের খেলায় দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত। শান্তি-শৃঙ্খলা ব্যাহত। জনগণ অতিষ্ঠ।
মহাজোট সরকারের ব্যর্থতা, অপশাসন, দুর্নীতিতে ক্ষুব্ধ জনগণ কি এবার বিরোধী দলকে আলিঙ্গন করবে? না, বিরোধী দলের ভূমিকায় জনগণ একইভাবে আশাহত। জনগণ তাদের সংসদে দেখতে চেয়েছিল, তারা বিনা যুক্তিতে সংসদ বর্জন করে চলেছেন। সংসদের বেতন-ভাতা, সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছেন, সংসদে যাচ্ছেন না। বলা হচ্ছে, কথা বলার সুযোগ নেই। কিন্তু প্রমাণিত সত্য, কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে। না দেওয়া হলে সাময়িক বয়কট যৌক্তিক, কিন্তু লাগাতার বর্জন কেন? বিরোধী দল সরকারের গঠনমূলক প্রস্তাব নিয়ে সংসদে হাজির হচ্ছে না। ফলে সংসদে এখন কার্যত সরকারদলীয়।
নির্বাচনকালীন সরকার পদ্ধতি নিয়েই কেবল বিরোধী দল ব্যস্ত। সেটি গুরুত্বপূর্ণ। তবে অন্যান্য ক্ষেত্রেও জনগণ তাদের সুচিন্তিত প্রস্তাবনা প্রত্যাশা করে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যে দল বিরোধী দল হিসেবে ব্যর্থ, সেই দল কি ক্ষমতায় এসে সফল হবে? সে বিশ্বাস কি করা যায়? তার চেয়ে বড় কথা, যখন আওয়ামী লীগের বিপরীতে বিএনপির কথা ভাবা হয়, তখন সামনে ভেসে ওঠে হাওয়া ভবনের স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি, ১০ ট্রাক অস্ত্র, ২১ আগস্টের বোমা হামলা ইত্যাদি ঘটনা।
এ পরিস্থিতিতে জনগণ কিংকর্তব্যবিমূঢ়। নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা কী হবে_ সেটি বড় বিতর্ক। কিন্তু নির্বাচনী ব্যবস্থার সুরাহা হলেই কি পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে? কোন দলকে ভোট দেবে জনগণ? জ্বলন্ত উনুন, না ফুটন্ত কড়াই; কোনটাতে ঝাঁপ দেবে এটাই যেন বেছে নেওয়ার বিষয়। এমন পরিস্থিতিতে এসে যায় বিকল্প ভাবনা প্রসঙ্গ।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে দ্বিদলীয় ব্যবস্থায় তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি আগমনের সুযোগ সীমিত। অনাকাঙ্ক্ষিত হলেও অনির্বাচিত নেপথ্য শক্তির হস্তক্ষেপের আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। জনমনে হতাশা বাসা বাঁধলে তা ১/১১'র মতো বা যে কোনো অগণতান্ত্রিক তৃতীয় শক্তির আগমনে সহায়ক হয়। নিরুপায় জনগণ হাঁফ ছেড়ে বাঁচতে এমন ব্যবস্থার প্রতি সাময়িক সমর্থনও দিতে পারে। তবে অচিরেই রুখে দাঁড়ায়, প্রতিবাদ জানায়_ অতীতে এর প্রমাণ মিলেছে একাধিকবার।
সেই অভিজ্ঞতার আলোকে সচেতন জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন চিন্তা অঙ্কুরিত হয়েছে যে, তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির উত্থান কি ঘটতে পারে না? বলাবাহুল্য, সে শক্তি যদি কোনো নেপথ্যের শক্তির আজ্ঞাবহ হয়, তবে তা হবে গণতন্ত্রের জন্য সমূহ বিপদ। তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তিকে হতে হবে জনগণের মাঝ থেকে উঠে আসা রাজনৈতিক দল বা জোট।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দ্বিদলীয় ব্যবস্থা সর্বদাই ছিল, তা নয়। স্বাধীনতার আগেও ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের বিপরীতে আওয়ামী লীগ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (মোজাফ্ফর)সহ আরও ছোট ছোট দল ছিল। '৭০-এর ভোটযুদ্ধে আওয়ামী লীগ এককভাবে জয়ী হলেও অন্য দলগুলোর সাংগঠনিক ভিত্তি কম শক্তিশালী ছিল না। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এ দলগুলোর সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল মুজিবনগর সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
স্বাধীনতা-উত্তরকালে অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঐক্যে শামিল হলে ভাসানী, ন্যাপ, ইউপিপি, জাগমুই এবং নবগঠিত জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল প্রচণ্ড প্রতাপের সঙ্গে রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় ছিল। জিয়া, এরশাদের শাসনামলে আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে বিভিন্ন বাম দল এবং ইসলামী দলগুলো কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী লড়াইয়ে বাম দলগুলোর ভূমিকা ছিল অগ্রণী। তখন রাজনীতি দুই ধারায় বিভক্ত হয়নি। ১৯৯১ সালে নির্বাচনী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দুটি দল প্রাধান্য বিস্তার করে। এর পেছনে একদল বুদ্ধিজীবীর সমর্থন ছিল, দাতাগোষ্ঠী প্রতিনিধিদের পরামর্শ দিতেও শুনেছি। যুক্তরাষ্ট্রের উপমা দিয়ে বলা হয়েছে যে, দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে দুই দল থাকাই ভালো, রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকবে না। কিন্তু দুই দশক পর দেখা যাচ্ছে_ এতে অস্থিরতা কমেনি, গণতন্ত্রের বিকাশে সহায়ক হয়নি। উপরন্তু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া হুমকির মুখে পড়েছে। আজ জনগণ উপলব্ধি করছে, দুই দলের বাইরে রাজনৈতিক শক্তির উপস্থিতি থাকলে দেশ ও জনগণ এই দুই দলের কাছে জিম্মি থাকত না। বরং রাজনৈতিক
প্রক্রিয়া থাকত স্থিতিশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ। এ বোধ থেকে জনগণ তৃতীয় শক্তির কথা ভাবছে। তাই তৃতীয় শক্তির আকাঙ্ক্ষা গণআকাঙ্ক্ষারই প্রতিধ্বনি।
বলা আবশ্যক, প্রচলিত সুবিধাবাদী ধারার কোনো রাজনৈতিক শক্তি যদি তৃতীয় বিকল্প হিসেবে স্থান লাভ করে, তাহলে তা
দ্বিদলীয় যন্ত্রণাকেই বাড়িয়ে তুলবে। সঙ্গত কারণেই তৃতীয় শক্তি হবে আদর্শবাদী রাজনীতির ধারক।
অতীতে রাজনীতিতে ত্যাগ ও আদর্শের দৃষ্টান্ত রেখে গেছে অগি্নযুগের বিপ্লবী, স্বদেশী আন্দোলন এবং কমিউনিস্ট পার্টির নেতাকর্মীরা। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ত্যাগী পুরুষ হিসেবে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নাম এসে যায়। শেরেবাংলা আবুল কাসেম ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাসিম ছিলেন রাজনীতির জন্য নিবেদিত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ত্যাগ ও সততার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। মণি সিংহ, খোকা রায়, অমল সেন প্রমুখ কমিউনিস্ট নেতা ছিলেন সর্বস্ব ত্যাগী। এ প্রসঙ্গে অসুস্থ জননেতা নির্মল সেন, আবদুল মতিনের নাম বলতেই হয়। এ নেতাদের আদর্শকে সামনে রেখেই ত্যাগ ও আদর্শের রাজনীতির ধারা গড়ে উঠতে পারে। তবে তা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে_ অন্য কোনো পথে নয়।
এটি বিবেচ্য, আজ সুবিধাবাদী ধারার বিপরীতে প্রয়োজন বাম গণতান্ত্রিক ধারার রাজনীতি। সে ক্ষেত্রে বাম দলগুলোর ব্যর্থতা আকাশছোঁয়া। স্বৈরাচারী এরশাদবিরোধী আন্দোলন এবং পরবর্তী সময়ে ৫ দল, বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট এবং ১১ দল বিকল্প নেতৃত্ব গড়ে তোলার চেষ্টা করে এখন পরিশ্রান্ত। তাদের অনেকেই ভিন্নপথের যাত্রী।
বলাবাহুল্য, বৃহত্তর বাম গণতান্ত্রিক আন্দোলনের স্থলে কেবল বাম ঐক্য রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ করতে পারবে না। তাই দুই দলের বিকল্প গড়ে তুলতে হলে সব বাম দল-উপদল, সত্যিকারের গণতান্ত্রিক দলগুলোকে এক মিছিলে আসতে হবে। মিলতে হবে, মেলাতে হবে_ জনস্বার্থ-জাতীয় স্বার্থ, পরিবেশ রক্ষাসহ আদিবাসী, সংখ্যালঘু অধিকার, নারী অধিকার, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার সব নাগরিক আন্দোলনে। সমাজের অভ্যন্তরে সৃষ্ট এসব আন্দোলন এক মোহনায় মিলিত হওয়ার মধ্য দিয়ে নতুন রাজনৈতিক শক্তি জন্ম নিতে পারে_ যার চালিকাশক্তি হবে নতুন প্রজন্ম, মুক্তিযুদ্ধ ও সমাজ প্রগতির চেতনায় লালিত তারুণ্য।

আবু সাঈদ খান : সাংবাদিক
ask_bangla71@yahoo.com
www.abusayeedkhan.com
 

No comments

Powered by Blogger.