গভীর ষড়যন্ত্র!

অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। পৃথিবীর অনেক উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় এখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা যথেষ্ট সক্রিয়। সংবাদপত্র ও প্রচার মাধ্যমগুলো অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করছে। তারপরও মাঝে মাঝে কোন কোন আন্তর্জাতিক সংস্থার অযৌক্তিক আচরণ নানা প্রশ্নের সৃষ্টি করে। যেমনটি এবারও হয়েছে।


নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’ (এইচআরডব্লিউ) প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে দেশব্যাপী সচেতন মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উল্লেখ্য, বুধবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ‘হিউম্যান রাইট ওয়াচ’ বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় অভিযুক্ত জওয়ানদের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তারা এ বিচারকে ‘গণবিচার’ বলে অভিহিত করে অবিলম্বে তা স্থগিতের দাবি জানিয়েছে। সেই সঙ্গে তারা এসব অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি স্বাধীন ও বিশেষ টাস্কফোর্স গঠনের দাবি জানিয়েছে। হিউম্যান রাইট ওয়াচ ইতোমধ্যে দোষী সাব্যস্ত জওয়ানদের নতুন করে বিচারের আহ্বান জানায়। আন্তর্জাতিক ‘মানবাধিকার সংস্থা’ এখানেই ক্ষান্ত হয়নি; তারা তাদের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র‌্যাবকে ভেঙ্গে দিয়ে পুলিশের মধ্যে একটি ‘অসামরিক ইউনিট’ বা নতুন সংস্থা গঠনের আহ্বান জানায়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যে বক্তব্য রেখেছে তা আপত্তিজনক। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোন আন্তর্জাতিক সংস্থা এভাবে বক্তব্য রাখতে পারে কি? অনেক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশে তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। ১৬ কোটি মানুষের এ ছোট দেশটিতে বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার অনেকেরই প্রশংসা অর্জন করেছে। ঠিক সেই মুহূর্তে বাংলাদেশকে ঘিরে কিছু ঘটনাপ্রবাহ অনেককেই হতবাক করেছে। বিশ্বব্যাংকের পদ্মা সেতু প্রকল্পের ঋণচুক্তি বাতিল করায় সরকার ও দেশবাসী ক্ষুব্ধ। আর ঠিক একই সময় ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’ বাংলাদেশ বিষয়ে তাদের এই আপত্তিকর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ইতোমধ্যে অনেকেই এই প্রতিবেদনকে গভীর ষড়যন্ত্রমূলক বলে বর্ণনা করেছেন। র‌্যাব বিষয়ে ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচের’ অভিযোগ ভিত্তিহীন। তারা বলেছে, বিডিআর বিদ্রোহে জড়িত সন্দেহে আটক ব্যক্তিদের নির্যাতন করেছে র‌্যাব। কিন্তু বিডিআর মামলার তদন্তভার কখনই র‌্যাবের ওপর ছিল নয়। তাই বিডিআরের কোন অভিযুক্তকে র‌্যাবের হেফাজতে নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। সুতরাং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনটি শুধু ভিত্তিহীন নয়; ষড়যন্ত্রমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
সারাবিশ্বে একটি আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ও গর্বিত জাতি হিসেবে বাংলাদেশকে তুলে ধরার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট সবার। দেশের অভ্যন্তরে কোন বিদেশী সংস্থা যাতে প্রতিবেদন প্রকাশ না করতে পারে সে বিষয়ে সরকারকে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.