সংসদে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা-নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বাজেটে বরাদ্দ করা উন্নয়ন বাজেটের অর্থ দিয়ে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি দেশবাসীর দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করে বলেন, ‘বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে অতিদ্রুত সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করব। সময় নষ্ট করব না।
এ ছাড়া অর্থ সংগ্রহের জন্য সারচার্জ বসাব, বন্ড ছাড়ব। ২০১৫-১৬ সালের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারব।’
গতকাল রোববার জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। ঘণ্টাব্যাপী বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু নির্মাণের অর্থ সংগ্রহের উৎস তুলে ধরেন এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দেন। প্রধানমন্ত্রী সেতু নির্মাণকাজে দেরি করার জন্য বিশ্বব্যাংককে দায়ী করে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘চলতি বাজেটে ৫৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট বরাদ্দ আছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং এখান থেকে ২৪ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারি। এ জন্য একটু ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। এ টাকা দিয়ে কাজ শুরু করতে পারি। এ ছাড়া অর্থমন্ত্রী সেতুর জন্য বাজেটে আলাদা করে কিছু টাকা রেখেছিলেন।’ তিনি বলেন, বাজেট থেকে সেতু নির্মাণ করতে গেলে উন্নয়নকাজ কিছুটা কমাতে হবে। তবে সেতুটা হলে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। অর্থনীতি ও প্রবৃদ্ধিতে তা অবদান রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী সেতু নির্মাণের জন্য ২২ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা সংগ্রহের পরিকল্পনা তুলে ধরে বলেন, ‘৭৫০ মিলিয়ন ডলারের সভরিন বন্ড ছাড়া হবে। সারচার্জ আরোপ করা হবে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি কর্মসূচি বা পিপিপিতে তিন হাজার কোটি টাকা আছে। এ টাকা দিয়ে আমরা কাজ শুরু করতে পারি।’ তিনি জানান, মূল সেতু করতে ১৫ হাজার কোটি টাকা লাগবে। নদী শাসনে দরকার সাত হাজার ২০০ কোটি টাকা। জাজিরা সংযোগ সড়ক তৈরিতে এক হাজার ৩৫০ কোটি এবং মাওয়া সংযোগ সড়ক করতে লাগবে ৩১০ কোটি টাকা।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১২-১৩ অর্থবছরে তিন হাজার ১৯৮ কোটি টাকা, ২০১৩-১৪ সময়ে সাত হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সাত হাজার ৭৮৬ কোটি এবং ২০১৫-১৬ সময়ে লাগবে তিন হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে তিনি টেলিফোনে পাওয়া বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, ‘প্রবাসীরা কাজ শুরু করে দেওয়ার জন্য বলছেন। তাঁরা আরও বেশি করে টাকা পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন। এমনকি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা টিফিনের টাকা দিতেও রাজি। গরিব কৃষকেরাও টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। আমি দেশের মানুষের মধ্যে চেতনা দেখেছি। তাতে আমি আশাবাদী। যুদ্ধ করে যে জাতি দেশ স্বাধীন করেছে, তারা মাথা নত করতে জানে না।’ এ সময় সাংসদেরা তাঁদের বেতনের অংশ দেওয়ার কথা সমস্বরে জানান।
ক্ষতিপূরণ দাবি: বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন কমিটি কানাডিয়ান কোম্পানিকে বাছাই করে। বিশ্বব্যাংক তা অনুমোদন দেয়। পরে যখন তারা দুর্নীতির কথা ওঠাল, আমি বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টকে দরপত্র বাতিল করে নতুন করে দরপত্র আহ্বানের কথা বলি। অনুরোধ করি, সময় নষ্ট করবেন না। কাজ শুরু করেন। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, তাদের মনে কী ছিল জানি না, তারা দরপত্র বাতিল করেনি। কিন্তু দেড় বছর পর তারা অ্যাকশন নিল। আজ সামান্য ছুতো ধরে তারা দেশের সর্বনাশ করল। এটা মেনে নেওয়া যায় না। কোনো বাঙালি মেনে নিতে পারে না। সময় নষ্ট করে কেন তারা খরচ বাড়াল, তার জন্য তাদের কাছে জরিমানা চাওয়া উচিত।’
বিশ্বব্যাংকের নিরীক্ষা হওয়া উচিত: শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক একটা ব্যাংক, জানি না এ ব্যাংকের অডিট (নিরীক্ষা) হয় কি না। এ ব্যাংকে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের কার্যক্রম পরীক্ষা করা হয় কি না। সেখানে টাকাপয়সা কী হচ্ছে, তার হিসাব-নিকাশ চাওয়ার অধিকার আমাদের আছে। আমরা বিশ্বব্যাংকের অংশীদার। তাদের হিসাব-নিকাশ বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে। এটা আমাদের দাবি।’
কাজে বাধা দেবেন না: দেশীয় অর্থায়নে সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী উন্নয়ন-সহযোগীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের কাজে অহেতুক বাধা দেবেন না। উন্নয়নের পথ বাধাগ্রস্ত করবেন না।’ তিনি বলেন, রেল ও পাটশিল্পের দুরবস্থা কার জন্য, টিসিবি, বিএডিসি ও কৃষিতে ভর্তুকি দেওয়া যাবে না—এই কথা এক জায়গা থেকেই এসেছিল। আমরা তা মানিনি। গতবার তারা বলেছিল বিআরটিসি বন্ধ করে দিতে। আমি বলেছিলাম, মাথাব্যথার জন্য তো মাথা কাটতে পারি না। বিআরটিসি বন্ধ করে দিলে গরিব মানুষ চলাচল করবে কী করে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের তারা গিনিপিগ করে রাখতে চায়। জনগণের যেন ভিক্ষা করে খেতে হয়। আমরা এমন করে বাঁচতে চাই না। আমরা ঋণ নিই, সুদসহ অর্থ ফেরত দিই। ভিক্ষা নিই না। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও দান-খয়রাতে নয়। ত্যাগ-তিতিক্ষা করেই তা অর্জন করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির সম্ভাবনার কথা বলে ঋণচুক্তি বাতিল করল। তারা নিজেরাই চুক্তির মেয়াদ বাড়াল, আবার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তা বাতিল করে দেয়। যেখানে একটি পয়সাও খরচ হয়নি, সেখানে দুর্নীতির অভিযোগ আসে কী করে? মূলত বিএনপি সরকারের সময় যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে প্রকল্প বাতিল করে দেয়। আমরা ক্ষমতায় এসে তা পাওয়ার চেষ্টা করি।’ তিনি বলেন, ভূমি অধিগ্রহণে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা খরচ করলেও এ খাতে বিশ্বব্যাংকের ইন্টেগ্রিটি কর্মকর্তা তদন্ত করে এক পয়সাও দুর্নীতির অভিযোগ করতে পারেননি। যেখানে টাকা খরচ হলো সেখানে দুর্নীতি হলো না, আর যেখানে একটি পয়সাও খরচ হলো না, সেখানে তারা দুর্নীতির গন্ধ পেল। ঋণচুক্তি বাতিল করে দিল।
বিরোধী দল কর্তৃক দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন ক্ষমতায় আসি তখন মনপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করি কীভাবে মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন করা যায়, নিজের ভাগ্য গড়তে আসিনি। মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি। এটাই আমার চিন্তা।’ বিএনপির জনৈক নেতার বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি কেন দেশের টাকা বিদেশে পাঠাতে যাব। ’৬৯ সালে বিদেশে গেছি। ইচ্ছা করলে তখনই বিদেশে ঘরবাড়ি করতে পারতাম। গত বিএনপি সরকার ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার তন্নতন্ন করে খুঁজেও আমার বিরুদ্ধে কিছু পায়নি।’ তিনি বলেন, ‘বিরোধীদলীয় নেত্রী, তাঁর অর্থমন্ত্রী কালোটাকা সাদা করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে এফবিআই এসে সাক্ষী দিয়ে গেছে। তারা আবার বড় কথা বলে। নিজেরা চোর বলেই অন্যকে চোর ভাবে। বরং বিএনপির কোন নেতার বিদেশে বাড়ি আছে, টাকা আছে, সব তথ্য সংগ্রহ করেছি। তা প্রকাশ করব। টাকাও উদ্ধার করব।’
গতকাল রোববার জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। ঘণ্টাব্যাপী বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু নির্মাণের অর্থ সংগ্রহের উৎস তুলে ধরেন এবং সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দেন। প্রধানমন্ত্রী সেতু নির্মাণকাজে দেরি করার জন্য বিশ্বব্যাংককে দায়ী করে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘চলতি বাজেটে ৫৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট বরাদ্দ আছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং এখান থেকে ২৪ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারি। এ জন্য একটু ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। এ টাকা দিয়ে কাজ শুরু করতে পারি। এ ছাড়া অর্থমন্ত্রী সেতুর জন্য বাজেটে আলাদা করে কিছু টাকা রেখেছিলেন।’ তিনি বলেন, বাজেট থেকে সেতু নির্মাণ করতে গেলে উন্নয়নকাজ কিছুটা কমাতে হবে। তবে সেতুটা হলে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। অর্থনীতি ও প্রবৃদ্ধিতে তা অবদান রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী সেতু নির্মাণের জন্য ২২ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা সংগ্রহের পরিকল্পনা তুলে ধরে বলেন, ‘৭৫০ মিলিয়ন ডলারের সভরিন বন্ড ছাড়া হবে। সারচার্জ আরোপ করা হবে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি কর্মসূচি বা পিপিপিতে তিন হাজার কোটি টাকা আছে। এ টাকা দিয়ে আমরা কাজ শুরু করতে পারি।’ তিনি জানান, মূল সেতু করতে ১৫ হাজার কোটি টাকা লাগবে। নদী শাসনে দরকার সাত হাজার ২০০ কোটি টাকা। জাজিরা সংযোগ সড়ক তৈরিতে এক হাজার ৩৫০ কোটি এবং মাওয়া সংযোগ সড়ক করতে লাগবে ৩১০ কোটি টাকা।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১২-১৩ অর্থবছরে তিন হাজার ১৯৮ কোটি টাকা, ২০১৩-১৪ সময়ে সাত হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সাত হাজার ৭৮৬ কোটি এবং ২০১৫-১৬ সময়ে লাগবে তিন হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে তিনি টেলিফোনে পাওয়া বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, ‘প্রবাসীরা কাজ শুরু করে দেওয়ার জন্য বলছেন। তাঁরা আরও বেশি করে টাকা পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন। এমনকি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা টিফিনের টাকা দিতেও রাজি। গরিব কৃষকেরাও টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। আমি দেশের মানুষের মধ্যে চেতনা দেখেছি। তাতে আমি আশাবাদী। যুদ্ধ করে যে জাতি দেশ স্বাধীন করেছে, তারা মাথা নত করতে জানে না।’ এ সময় সাংসদেরা তাঁদের বেতনের অংশ দেওয়ার কথা সমস্বরে জানান।
ক্ষতিপূরণ দাবি: বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জামিলুর রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন কমিটি কানাডিয়ান কোম্পানিকে বাছাই করে। বিশ্বব্যাংক তা অনুমোদন দেয়। পরে যখন তারা দুর্নীতির কথা ওঠাল, আমি বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টকে দরপত্র বাতিল করে নতুন করে দরপত্র আহ্বানের কথা বলি। অনুরোধ করি, সময় নষ্ট করবেন না। কাজ শুরু করেন। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, তাদের মনে কী ছিল জানি না, তারা দরপত্র বাতিল করেনি। কিন্তু দেড় বছর পর তারা অ্যাকশন নিল। আজ সামান্য ছুতো ধরে তারা দেশের সর্বনাশ করল। এটা মেনে নেওয়া যায় না। কোনো বাঙালি মেনে নিতে পারে না। সময় নষ্ট করে কেন তারা খরচ বাড়াল, তার জন্য তাদের কাছে জরিমানা চাওয়া উচিত।’
বিশ্বব্যাংকের নিরীক্ষা হওয়া উচিত: শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক একটা ব্যাংক, জানি না এ ব্যাংকের অডিট (নিরীক্ষা) হয় কি না। এ ব্যাংকে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের কার্যক্রম পরীক্ষা করা হয় কি না। সেখানে টাকাপয়সা কী হচ্ছে, তার হিসাব-নিকাশ চাওয়ার অধিকার আমাদের আছে। আমরা বিশ্বব্যাংকের অংশীদার। তাদের হিসাব-নিকাশ বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে। এটা আমাদের দাবি।’
কাজে বাধা দেবেন না: দেশীয় অর্থায়নে সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী উন্নয়ন-সহযোগীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের কাজে অহেতুক বাধা দেবেন না। উন্নয়নের পথ বাধাগ্রস্ত করবেন না।’ তিনি বলেন, রেল ও পাটশিল্পের দুরবস্থা কার জন্য, টিসিবি, বিএডিসি ও কৃষিতে ভর্তুকি দেওয়া যাবে না—এই কথা এক জায়গা থেকেই এসেছিল। আমরা তা মানিনি। গতবার তারা বলেছিল বিআরটিসি বন্ধ করে দিতে। আমি বলেছিলাম, মাথাব্যথার জন্য তো মাথা কাটতে পারি না। বিআরটিসি বন্ধ করে দিলে গরিব মানুষ চলাচল করবে কী করে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের তারা গিনিপিগ করে রাখতে চায়। জনগণের যেন ভিক্ষা করে খেতে হয়। আমরা এমন করে বাঁচতে চাই না। আমরা ঋণ নিই, সুদসহ অর্থ ফেরত দিই। ভিক্ষা নিই না। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও দান-খয়রাতে নয়। ত্যাগ-তিতিক্ষা করেই তা অর্জন করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির সম্ভাবনার কথা বলে ঋণচুক্তি বাতিল করল। তারা নিজেরাই চুক্তির মেয়াদ বাড়াল, আবার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তা বাতিল করে দেয়। যেখানে একটি পয়সাও খরচ হয়নি, সেখানে দুর্নীতির অভিযোগ আসে কী করে? মূলত বিএনপি সরকারের সময় যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে প্রকল্প বাতিল করে দেয়। আমরা ক্ষমতায় এসে তা পাওয়ার চেষ্টা করি।’ তিনি বলেন, ভূমি অধিগ্রহণে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা খরচ করলেও এ খাতে বিশ্বব্যাংকের ইন্টেগ্রিটি কর্মকর্তা তদন্ত করে এক পয়সাও দুর্নীতির অভিযোগ করতে পারেননি। যেখানে টাকা খরচ হলো সেখানে দুর্নীতি হলো না, আর যেখানে একটি পয়সাও খরচ হলো না, সেখানে তারা দুর্নীতির গন্ধ পেল। ঋণচুক্তি বাতিল করে দিল।
বিরোধী দল কর্তৃক দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন ক্ষমতায় আসি তখন মনপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করি কীভাবে মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন করা যায়, নিজের ভাগ্য গড়তে আসিনি। মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি। এটাই আমার চিন্তা।’ বিএনপির জনৈক নেতার বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি কেন দেশের টাকা বিদেশে পাঠাতে যাব। ’৬৯ সালে বিদেশে গেছি। ইচ্ছা করলে তখনই বিদেশে ঘরবাড়ি করতে পারতাম। গত বিএনপি সরকার ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার তন্নতন্ন করে খুঁজেও আমার বিরুদ্ধে কিছু পায়নি।’ তিনি বলেন, ‘বিরোধীদলীয় নেত্রী, তাঁর অর্থমন্ত্রী কালোটাকা সাদা করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে এফবিআই এসে সাক্ষী দিয়ে গেছে। তারা আবার বড় কথা বলে। নিজেরা চোর বলেই অন্যকে চোর ভাবে। বরং বিএনপির কোন নেতার বিদেশে বাড়ি আছে, টাকা আছে, সব তথ্য সংগ্রহ করেছি। তা প্রকাশ করব। টাকাও উদ্ধার করব।’
No comments