সংসদে প্রধানমন্ত্রী-চলতি অর্থবছরেই নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ শুরু হবে
চলতি অর্থবছরেই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। দেশবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, 'চলতি অর্থবছর থেকেই পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা হবে এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরের মধ্যে শেষ করা হবে। বাংলাদেশের মানুষ যুদ্ধ করে দেশ জয় করেছে, এ দেশের মানুষ কারোর কাছে মাথা নত করে না।
তাই দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, আমরাই পদ্মা সেতু নির্মাণ করব। আমরা কারোর কাছে যাব না। বাজেটে বরাদ্দ, সারচার্জ আরোপ ও বিদেশে বন্ড বিক্রি করে সংগৃহীত অর্থ থেকেই আমরা এই সেতু নির্মাণ করব।' উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'অহেতুক আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বাধা সৃষ্টি যেন তারা না করে।'
গতকাল রবিবার সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। বিশ্বব্যাংকের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সামান্য ছুতো ধরে দেশের সর্বনাশ করা- এটা মেনে নেওয়া যায় না। কী করে মেনে নেব! কোনোভাবেই তা মেনে নিতে পারি না।' তিনি বলেন, 'বিশ্বব্যাংক একটি ব্যাংক। এখানে নিয়মিত অডিট হয় কি না, অফিসাররা ঠিকমতো কাজ করেন কি না, তা জানি না। এটাও খতিয়ে দেখতে হবে। যেহেতু আমরা এর অংশীদার, তাই হিসাব চাওয়ার অধিকার আমাদের রয়েছে।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বিশ্বব্যাংক একটি পয়সাও ছাড় দেয়নি, সেখানে দুর্নীতির অভিযোগ আসে কোথা থেকে? এই সেতু নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণে আমরা প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছি। এখানে বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা অনেক খুঁজেও একটি পয়সার দুর্নীতি পেলেন না। যেখানে টাকা খরচ হলো, সেখানে একটি পয়সারও দুর্নীতি পেল না; আর যেখানে একটি পয়সাও ছাড় দেওয়া হয়নি, সেখানে দুর্নীতির গন্ধ খুঁজে পেল।' অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু নির্মাণে দেরি করিয়ে দেওয়ায় এখন নির্মাণকাজের খরচ বেড়ে গেল। এর জন্য ওই ব্যাংকের কাছে ক্ষতিপূরণ চাওয়া উচিত।
স্পিকার অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী পর্বে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বক্তব্য দেন একমাত্র স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ফজলুল আজিম। প্রধানমন্ত্রীর এক ঘণ্টার বেশি বক্তব্যের বেশির ভাগেই ছিল পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের ঋণচুক্তি স্থগিত করার বিষয়টি।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'এই সেতু নির্মাণে সারা দেশের মানুষের কাছ থেকে যে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি, তাতে আমি আশাবাদী, এই সেতু আমরা নির্মাণ করতে পারব। সারা দেশের মানুষের যে চেতনা দেখেছি, তাতে আমি আশাবাদী। একাত্তরের মতোই দেশের মানুষের কাছ থেকে যে সাহস পেয়েছি, সত্যিই আমি দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ।'
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, 'আমরা কারোর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করতে চাই না, বিশ্বব্যাংকই সম্পর্ক নষ্ট করতে এগিয়ে এসেছে। আমরা দেশকে এগিয়ে নিতে চাই, দেশের মানুষের উন্নয়ন করতে চাই। আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছি, কেউ আমাদের দান-খয়রাত করেনি। আমরা বিদেশ থেকে ঋণ নিই, সুদসহ ফেরত দিই। আমরা ভিক্ষা নিই না। ঋণ কিভাবে ব্যবহার করব, তা কারোর প্রেসক্রিপশনে নয়, নিজেরাই ঠিক করব।' তিনি বলেন, 'আমরা দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি, নিজেদের ভাগ্য গড়তে নয়।'
শেখ হাসিনা বলেন, 'অনেক সময় দাতাগোষ্ঠীর প্রেসক্রিপশন ধ্বংসাত্মক হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের দেশের জনগণকে গিনিপিগ করে রাখতে চায়, যাতে সব সময় তাদের কাছে হাত পেতে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে থাকি। দাতা সংস্থার প্রেসক্রিপশন নিলে মাত্র সাড়ে তিন বছরে সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে পারতাম না।' তিনি বলেন, 'পদ্মা সেতু নিয়ে কথিত দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত যাতে স্বচ্ছভাবে হতে পারে সে জন্য মন্ত্রী, সচিব ও প্রকল্প পরিচালককে সরিয়ে দিয়েছি। অতীতেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি, ভবিষ্যতেও কেউ দুর্নীতি করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'ইতিমধ্যে আমরা আলোচনা করে দেখেছি পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে আমাদের মোট ২২ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। এর মধ্যে সেতুর কাজ শুরু করতে চলতি অর্থবছরে লাগবে তিন হাজার ১৯৭ কোটি, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে লাগবে সাত হাজার ৮৬৮ কোটি, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সাত হাজার ৭৮৬ কোটি এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রয়োজন পড়বে তিন হাজার ৭৮০ কোটি টাকা।' তিনি বলেন, 'আমাদের ৫৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট রয়েছে। এখান থেকেও আমরা প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারব।'
প্রধানমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে গত কয়েক দিনে মোবাইল ফোনে দেশবাসীসহ প্রবাসীদের কথোপকথনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, 'দেশ-বিদেশ থেকে আমি এই সেতু নির্মাণে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। পদ্মা সেতু নির্মাণে ছোট ছাত্রছাত্রীরা তাদের টিফিন ও হাতখরচের টাকা দিতে চেয়েছে। প্রবাসীরা ফোন করে বলেছে, পদ্মা সেতু নির্মাণ শুরু করুন। আমরা আরো বেশি কাজ করে রেমিট্যান্স বাড়াব, যা টাকা লাগে আমরা দেব।'
বিরোধী দলের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, 'বিএনপির এক নেতা বলেছেন, কত টাকা বিদেশে রেখে আমি জনগণের কাছে ভোট চাইছি। আমি কেন দেশের টাকা বিদেশে রাখব। দেশের জন্য ও জনগণের কল্যাণে ক্ষমতায় এসেছি, ব্যক্তিগত ভাগ্য গড়তে নয়। বিএনপি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমি দেশে-বিদেশে কোথায় কী রেখেছি, তা তন্নতন্ন করে খুঁজে দেখেও কিছু পায়নি।'
গতকাল রবিবার সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। বিশ্বব্যাংকের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সামান্য ছুতো ধরে দেশের সর্বনাশ করা- এটা মেনে নেওয়া যায় না। কী করে মেনে নেব! কোনোভাবেই তা মেনে নিতে পারি না।' তিনি বলেন, 'বিশ্বব্যাংক একটি ব্যাংক। এখানে নিয়মিত অডিট হয় কি না, অফিসাররা ঠিকমতো কাজ করেন কি না, তা জানি না। এটাও খতিয়ে দেখতে হবে। যেহেতু আমরা এর অংশীদার, তাই হিসাব চাওয়ার অধিকার আমাদের রয়েছে।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বিশ্বব্যাংক একটি পয়সাও ছাড় দেয়নি, সেখানে দুর্নীতির অভিযোগ আসে কোথা থেকে? এই সেতু নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণে আমরা প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছি। এখানে বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তারা অনেক খুঁজেও একটি পয়সার দুর্নীতি পেলেন না। যেখানে টাকা খরচ হলো, সেখানে একটি পয়সারও দুর্নীতি পেল না; আর যেখানে একটি পয়সাও ছাড় দেওয়া হয়নি, সেখানে দুর্নীতির গন্ধ খুঁজে পেল।' অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু নির্মাণে দেরি করিয়ে দেওয়ায় এখন নির্মাণকাজের খরচ বেড়ে গেল। এর জন্য ওই ব্যাংকের কাছে ক্ষতিপূরণ চাওয়া উচিত।
স্পিকার অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী পর্বে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বক্তব্য দেন একমাত্র স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ফজলুল আজিম। প্রধানমন্ত্রীর এক ঘণ্টার বেশি বক্তব্যের বেশির ভাগেই ছিল পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের ঋণচুক্তি স্থগিত করার বিষয়টি।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'এই সেতু নির্মাণে সারা দেশের মানুষের কাছ থেকে যে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি, তাতে আমি আশাবাদী, এই সেতু আমরা নির্মাণ করতে পারব। সারা দেশের মানুষের যে চেতনা দেখেছি, তাতে আমি আশাবাদী। একাত্তরের মতোই দেশের মানুষের কাছ থেকে যে সাহস পেয়েছি, সত্যিই আমি দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ।'
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, 'আমরা কারোর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করতে চাই না, বিশ্বব্যাংকই সম্পর্ক নষ্ট করতে এগিয়ে এসেছে। আমরা দেশকে এগিয়ে নিতে চাই, দেশের মানুষের উন্নয়ন করতে চাই। আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছি, কেউ আমাদের দান-খয়রাত করেনি। আমরা বিদেশ থেকে ঋণ নিই, সুদসহ ফেরত দিই। আমরা ভিক্ষা নিই না। ঋণ কিভাবে ব্যবহার করব, তা কারোর প্রেসক্রিপশনে নয়, নিজেরাই ঠিক করব।' তিনি বলেন, 'আমরা দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি, নিজেদের ভাগ্য গড়তে নয়।'
শেখ হাসিনা বলেন, 'অনেক সময় দাতাগোষ্ঠীর প্রেসক্রিপশন ধ্বংসাত্মক হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের দেশের জনগণকে গিনিপিগ করে রাখতে চায়, যাতে সব সময় তাদের কাছে হাত পেতে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে থাকি। দাতা সংস্থার প্রেসক্রিপশন নিলে মাত্র সাড়ে তিন বছরে সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে পারতাম না।' তিনি বলেন, 'পদ্মা সেতু নিয়ে কথিত দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত যাতে স্বচ্ছভাবে হতে পারে সে জন্য মন্ত্রী, সচিব ও প্রকল্প পরিচালককে সরিয়ে দিয়েছি। অতীতেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি, ভবিষ্যতেও কেউ দুর্নীতি করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'ইতিমধ্যে আমরা আলোচনা করে দেখেছি পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে আমাদের মোট ২২ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। এর মধ্যে সেতুর কাজ শুরু করতে চলতি অর্থবছরে লাগবে তিন হাজার ১৯৭ কোটি, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে লাগবে সাত হাজার ৮৬৮ কোটি, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সাত হাজার ৭৮৬ কোটি এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রয়োজন পড়বে তিন হাজার ৭৮০ কোটি টাকা।' তিনি বলেন, 'আমাদের ৫৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট রয়েছে। এখান থেকেও আমরা প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারব।'
প্রধানমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে গত কয়েক দিনে মোবাইল ফোনে দেশবাসীসহ প্রবাসীদের কথোপকথনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, 'দেশ-বিদেশ থেকে আমি এই সেতু নির্মাণে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। পদ্মা সেতু নির্মাণে ছোট ছাত্রছাত্রীরা তাদের টিফিন ও হাতখরচের টাকা দিতে চেয়েছে। প্রবাসীরা ফোন করে বলেছে, পদ্মা সেতু নির্মাণ শুরু করুন। আমরা আরো বেশি কাজ করে রেমিট্যান্স বাড়াব, যা টাকা লাগে আমরা দেব।'
বিরোধী দলের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, 'বিএনপির এক নেতা বলেছেন, কত টাকা বিদেশে রেখে আমি জনগণের কাছে ভোট চাইছি। আমি কেন দেশের টাকা বিদেশে রাখব। দেশের জন্য ও জনগণের কল্যাণে ক্ষমতায় এসেছি, ব্যক্তিগত ভাগ্য গড়তে নয়। বিএনপি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমি দেশে-বিদেশে কোথায় কী রেখেছি, তা তন্নতন্ন করে খুঁজে দেখেও কিছু পায়নি।'
No comments