সরল গরল-বিদেশি হাতে পিলখানা প্রতিবেদন ও মন্ত্রীদের প্রত্যাখ্যান by মিজানুর রহমান খান
নিউইয়র্কভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এবারের আলোচিত প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের রাষ্ট্রযন্ত্র ও গণমাধ্যমের ব্যর্থতার একটি প্রামাণ্য দলিল বলে প্রতীয়মান হতে পারে। সরকার জনগণের কাছে যা গোপন রেখেছে, দেশের গণমাধ্যম যা উদ্ঘাটন করতে পারেনি, সেটা যেন করে দিয়েছে বিদেশি সংস্থা।
আর আমাদের মন্ত্রীরা বুঝে না-বুঝে কেবল র্যাব ভেঙে দেওয়ার বিরুদ্ধে গেল গেল বলে শোরগোল তুললেন। পুরোটাই যেন সত্য আড়ালের চেষ্টা।
২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহসংশ্লিষ্ট ঘটনাবলির কারণ খতিয়ে দেখতে অতিরিক্ত সচিব আনিস-উজ-জামানের নেতৃত্বে কমিশন হয়েছিল। র্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক এর সদস্য ছিলেন। এর নাম নাকি ছিল গভর্নমেন্ট ইনভেস্টিগেশন কমিশন। এর একটি সারসংক্ষেপ সরকার প্রকাশ করেছিল। অন্য কমিটি সেনাবাহিনীর ২০ সদস্যকে নিয়ে গঠিত। এর প্রতিবেদনের নামকরণ ‘একটি মতামত’ বলে দাবি করেছে ওয়াচ। তবে সেনা তদন্ত আদালতের প্রতিবেদনের বরাতে প্রথম আলোসহ পত্রপত্রিকায় ২০১০ সালে এ বিষয়ক কিছু খবর ছাপা হয়েছিল। ওয়াচের দাবির সঙ্গে ওই সব খবরের কিছু গরমিল স্পষ্ট। তবে ওয়াচের মতো পত্রপত্রিকার কাছেও এসব প্রতিবেদন আসে অজ্ঞাতনামা সূত্রে। এখন ওয়াচ জাতির সামনে এ দুটি অপ্রকাশিত কিংবা গোপনীয় প্রতিবেদন থেকে উদ্ধৃতি সঠিকভাবে দিয়েছে কি না, সেটা বিশ্বাসযোগ্যভাবে যাচাইয়ের জন্য অবিলম্বে এর পূর্ণাঙ্গ ও আনুষ্ঠানিক প্রকাশ কাম্য।
এখন আমাদের কাছে খুব উদ্ভট ঠেকছে যে সরকারি কর্তৃপক্ষগুলো আসলে কী প্রত্যাখ্যান করছে। আমাদের দুটি মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং অধিকার, এ কাজে ওয়াচকে শুধু সহযোগিতা দিয়েছে। আমাদের জাতীয় জীবনের এক মর্মস্পর্শী বিয়োগান্ত অধ্যায়, যেখানে আমরা ৩৩ ঘণ্টার ব্যবধানে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হারিয়েছি, যে জন্য আমরা জাতীয় শোক পালন করেছি, এ রকমের একটি ঘটনায় বাংলাদেশি কোনো সংস্থা ঘটনা ঘটে যাওয়ার তিন বছর পরও একটি পূর্ণাঙ্গ ও বিস্তারিত লিখিত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারেনি। অথচ র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক এম সোহায়েলের কথায়, আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং অধিকার হলো ভুঁইফোড় মানবাধিকার সংগঠন। এর আগে আমরা রাজনীতিকদের দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে চিন্তিত হতে দেখেছি। কিন্তু এবার দেখলাম র্যাব মুখপাত্রও পিছিয়ে থাকতে চান না!
আমাদের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর ওই অসহায়ত্ব স্মরণ করিয়ে দিয়েছে ওয়াচ প্রতিবেদনের একটি মন্তব্য। যেখানে বলা হয়েছে, ‘শেখ হাসিনার সরকার, যারা অত্যাচারের ব্যাপারে জনগণের কাছে একটি “শূন্য সহিষ্ণুতার” নীতি দাবি করে, তারাও নির্যাতন চলতে দিয়েছে, তা অনিচ্ছাকৃতভাবে বা সুরক্ষা বাহিনীর সাথে বিবাদে যেতে অসমর্থ হওয়ার কারণে।’
পিলখানা বিদ্রোহের ওপর এ পর্যন্ত প্রকাশিত একমাত্র আন্তর্জাতিক এবং পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনটি রুদ্ধশ্বাসে পাঠের শুরুতে ভাবছিলাম, এই বুঝি রহস্যের ঘোমটা খুলে গেল। কিন্তু তা খোলেনি। বরং আমাকে হতাশ করে ওয়াচ বলেছে, ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ পিলখানায় কী ঘটেছিল, তা হয়তো কখনোই জানা যাবে না। ওয়াচ প্রতিবেদন আসলে বিচারিক প্রক্রিয়ার ত্রুটি-বিচ্যুতি এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ওপর পরিচালিত ভয়ংকর নির্যাতনের কয়েকটি ঘটনার বিস্তারিত বিবরণই শুধু মৌলিকভাবে হাজির করেছে। বিদ্রোহের কারণ ও পরিকল্পনা বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের বা পত্রিকান্তরে প্রকাশিত চিন্তাভাবনার বাইরে একটি নতুন তথ্য বা ভাবনাও তারা হাজির করেনি। বরং সংবেদনশীল জায়গাগুলোতে প্রতিবেদনটি বোধগম্য কারণেই কৈ-এর তেলে কৈ ভেজেছে। সুতরাং, আমাদের সরকারি সংস্থাগুলো যে দৃষ্টিভঙ্গি ও ভাষায় তুড়ি মেরে ওয়াচের ৫৭ পৃষ্ঠার পুরো প্রতিবেদনটি উড়িয়ে দিচ্ছে, তা যতটা না অগ্রহণযোগ্য, তার চেয়ে বেশি অপ্রাসঙ্গিক ও অযাচিত। মনে হচ্ছে পদ্মা সেতুর দুর্নীতির মতো এটাও ক্ষমতাসীন দলের প্রত্যাখ্যানপ্রবণতা সূত্রে গাঁথা।
ওয়াচের বক্তব্য ধরে বলি, সরকারি কমিশন ও সেনা রিপোর্ট একটি বিষয়ে একমত হয়েছে যে পিলখানার বিদ্রোহ দৃশ্যত অভ্যন্তরীণ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশজনিত হলেও এর পেছনে রয়েছে বিদেশি হাত। সেনাবাহিনীকে দুর্বল করা, সীমান্ত অস্থিতিশীল করা এবং বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা এ ষড়যন্ত্রের ‘চূড়ান্ত’ লক্ষ্য। এফবিআই এর তদন্তে নেমেও লক্ষ করে যে সরকারি বাহিনীগুলো পিলখানায় বিদেশি হাত শনাক্ত করতে বেশি উদ্গ্রীব, অভ্যন্তরীণ কারণ খতিয়ে দেখতে নয়। যদিও উভয় প্রতিবেদনের কোথাও ‘বিদেশি হাতের’ সপক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ উল্লেখ করা হয়নি বলে ওয়াচ প্রতিবেদনের দাবি।
পিলখানায় আরও রক্তপাত এড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শান্তি মিশন এবং সেনাবাহিনীর প্রস্তাবিত কমান্ডো হামলার মধ্যে কোনটি সঠিক ছিল, সে বিষয়ে ওয়াচের মন্তব্য নেই। তবে প্রধানমন্ত্রী যে উপায়ে বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণ করেছেন, তাকে তারা সাংবাদিক সম্মেলনে সমর্থন করেছে।
ওয়াচের মতে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম হস্তক্ষেপকেও সেনা রিপোর্ট অনভিজ্ঞ বলেছে। এসব বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হওয়া উচিত। সেটা কাউকে অহেতুক খাটো করার বা ওপরে তোলার জন্য নয়। জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কৌশল পুনর্বিন্যাসের জন্য এটা জরুরি।
পিলখানার বিদ্রোহের মতো ঘটনা অভাবনীয় হলেও, রাষ্ট্রীয় বাহিনী এবং বিদ্যমান আইনি কাঠামো এ ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার কথা। দেশকে বহিঃশত্রু থেকে রক্ষার জন্য আমরা বছর বছর প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়িয়ে চলেছি। লোকবল ও অস্ত্রশস্ত্র বাড়ছেই। কিন্তু অভ্যন্তরীণ গোলযোগ মোকাবিলায় আমরা কি আমাদের সুরক্ষা বাহিনীর কাছ থেকে প্রত্যাশিত নৈপুণ্য পেয়েছি? কুলদীপ নায়ার লিখেছেন, বাংলাদেশে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের অভ্যুত্থান সম্পর্কে ‘র’ ঘুণাক্ষরেও টেরটি পায়নি। রুষ্ট ইন্দিরাপুত্র সঞ্জয় গান্ধী এরপর ‘র’-এর নামকরণ ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং’-এর পরিবর্তে ‘রিলেটিভস অব ওয়াইভস অ্যাসোসিয়েশন’ রেখেছিলেন। আমাদের ডিজিএফআই বা এনএসআই এতজন মেধাবী অফিসারের বিপদ আঁচ করতে পারল না। এখন ওয়াচ প্রতিবেদন থেকে আমরা জানছি, সুরক্ষা বাহিনী ষোলোআনা দায় অন্যের কাঁধে চাপাচ্ছে।
আমরা এখানে সরকারি ও সেনা রিপোর্টের মধ্যে গোয়েন্দা ব্যর্থতা প্রশ্নে একটি মৌলিক তফাত লক্ষ করি। সেনা রিপোর্টে গোয়েন্দা ব্যর্থতাকে অস্বীকার করার চেষ্টা করা হয়েছে। অবশ্য ২০১০ সালের গোড়ায় প্রথম আলো রিপোর্ট করেছে যে, সরকারি ও সেনা উভয় প্রতিবেদনেই গোয়েন্দাদের তুলোধুনো করা হয়েছে। এখন ওয়াচ বলছে, সরকারি রিপোর্ট ডিজিএফআই ও র্যাবসহ দেশের বিভিন্ন সুরক্ষা বাহিনীর ‘সহযোগিতার ঘাটতি’ সম্পর্কে আলোকপাত করেছে। সরকারি কমিশন বলেছে, ‘নিরাপত্তা বাহিনীর তদন্তকারী শাখাগুলোর কাছ থেকে সহযোগিতার ঘাটতির কারণে ঘটনাগুলো এবং এর কারণ ও পরিণামগুলোর একটি যথাযথ নিরীক্ষণ অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল।’ কী সাংঘাতিক পর্যবেক্ষণ!
এত বড় একটি জাতীয় দুর্যোগের বিষয়ে সরকার কমিশন গঠন করল, অথচ তারা কাঠামোগতভাবে অসহায় ছিল। পিলখানার বিদ্রোহের ঘটনা থেকে আমাদের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো কী শিক্ষা গ্রহণ করেছে, তা স্পষ্ট নয়। এত বড় একটি ঘটনার পরও এ দেশের নাগরিক সমাজও পদ্ধতিগতভাবে তাদের কোনো কিছু করণীয় আছে বলে প্রমাণ দিতে পারেনি। জাতীয় সংসদের কমিটিও নীরব দর্শক। আর সরকার সৃষ্ট কমিশনের রিপোর্টের বিবরণও আজ আমাদের সতর্কতার সঙ্গে শুনতে হচ্ছে বিদেশি সংস্থার কাছ থেকে। সরকারি রিপোর্ট বলছে, তারা একজন পরিচিত অস্ত্র চোরাচালানকারীর দেখা পেয়েছিল। কিন্তু তাদের কথায় ‘সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের কাছ থেকে সত্য উদ্ঘাটনের জন্য উপযুক্ত উপকরণ, প্রযুক্তি এবং কৌশল কমিশনের জানা ছিল না। সে জন্য কমিশনের কাছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা বা উপস্থিত কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বা প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’ র্যাবের মহাপরিচালক স্বয়ং এ কমিশনে ছিলেন। এখন র্যাবের মুখপাত্র বলছেন, র্যাবের কারণে ‘অস্ত্র ব্যবসায়ী’ ও সন্ত্রাসীরা ভীত এবং ক্ষুব্ধ। তাহলে প্রশ্ন ওঠে, এই আলোচ্য অস্ত্র ব্যবসায়ী কেমন আছেন?
সরকারি রিপোর্ট পিলখানা বিদ্রোহের আগাম অনুমান না করতে পারার জন্য আমাদের সামরিক ও অসামরিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কঠোর সমালোচনা করেছে বলেও ওয়াচের দাবি। বিদ্রোহের মাত্র কয়েক দিন আগেই ‘বিদ্রোহীরা’ অসন্তোষ প্রকাশ করে লিফলেট বিতরণ করেছিল। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো প্রধানমন্ত্রীর পরিদর্শনের আগে বিশদ সুরক্ষার কাজ সম্পন্ন করেনি। এ প্রসঙ্গে সরকারি রিপোর্ট কিন্তু একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছে। ওয়াচের প্রতিবেদন অনুযায়ী তারা বলেছে, ‘সুরক্ষা সংস্থাগুলো এই কাজটি যে করেনি, তাতে এই জনপ্রিয় বিশ্বাসটিকে জোরালো করেছে যে নতুন সরকারকে উৎখাত করার জন্য সেনাবাহিনীই এই বিদ্রোহটির পরিকল্পনা করেছিল।’
সেনা অফিসাররা কেন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উচ্চপদস্থ হিসেবে বহাল থাকছেন? একজন সাবেক বিডিআর মহাপরিচালকের যুক্তি, সেনাবাহিনী তাদের পুলিশের মতো দুর্নীতিগ্রস্ত দেখতে চায় না। এখন সেনা রিপোর্ট যদি বলে, বিডিআর দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছিল, তাহলে তার দায় নেবে কে? সেনা রিপোর্ট ডাল-ভাত কর্মসূচি সম্পর্কে বলেছে, ‘বিডিআর জওয়ানরা দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল, এটি থেকে তারা টাকা বানাচ্ছিল, সেনা কমান্ড এসব জেনে যাওয়ায় এবং ডাল-ভাত কর্মসূচি সমাপ্ত করায় জওয়ানরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিল।’ সেনা রিপোর্টে আরও অকপট দাবি, ‘অপারেশন ডাল-ভাতের ব্যাপারে এবং সাধারণভাবে সেনা অফিসারদের সততা ও কর্তব্যপরায়ণতার জন্য বিডিআর জওয়ানরা দুর্নীতি করার কম সুযোগ পাচ্ছিল এবং এর ফল হিসেবে তাদের ক্ষোভের পরিমাণ বেড়ে একটি বিশাল মাত্রায় পৌঁছে গিয়েছিল।’
কিন্তু সেটা তো এক দিনে হয়নি। পিলখানার বিদ্রোহের পূর্বাভাস ছিল লিফলেট। সেনা রিপোর্ট কোনো রাখঢাক না রেখেই বলেছে, বিদ্রোহীদের অভিযোগ মিথ্যা ও মনগড়া ছিল। কিন্তু যে বিষয়টি একেবারেই বোধগম্য নয় সেটা হলো, সেনা রিপোর্ট বলেছে, বিদ্রোহের আগে তাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় ব্যবস্থা না নেওয়ার জন্য সরকারকে দোষী করা এবং এমনকি এটাও বলা যে বিডিআর সৈনিকদের যারা অপারেশন ডাল-ভাত থেকে বেআইনিভাবে লাভবান হয়েছিল, তাদেরকে যথেষ্ট কড়া শাস্তি প্রদান করা হয়নি।’
আমরা আশা করব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি যাতে উটপাখি না হয়। সরকার ওয়াচের গোটা প্রতিবেদনকে বলেছে, এটা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের অংশ। তারা প্রতিবেদন প্রত্যাহার করতে বলেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন র্যাবের জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমন কার্যকলাপকে ধন্যবাদ ও বাহবা দিয়েছেন। যে কারও ভালো কাজকে আমরাও বাহবা দিই। কিন্তু পিলখানার দুই রিপোর্ট বিষয়ে যে বক্তব্য ওয়াচ দাবি করেছে, সে বিষয়ে আমরা সরকারের কাছ থেকে ফুৎকার নয়, নির্দিষ্ট বক্তব্য চাই। আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ ভবিষ্যতে এ ধরনের ভিত্তিহীন প্রতিবেদন প্রকাশ না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। আইন প্রতিমন্ত্রী আরেকটু এগিয়ে। তাঁর দাবি, ‘এতে সত্যতার লেশমাত্রও নেই’।
তাহলে সত্যের লেশ কোথায়? তথ্য অসত্য হলে ওয়াচের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক।
mrkhanbd@gmail.com
২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহসংশ্লিষ্ট ঘটনাবলির কারণ খতিয়ে দেখতে অতিরিক্ত সচিব আনিস-উজ-জামানের নেতৃত্বে কমিশন হয়েছিল। র্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক এর সদস্য ছিলেন। এর নাম নাকি ছিল গভর্নমেন্ট ইনভেস্টিগেশন কমিশন। এর একটি সারসংক্ষেপ সরকার প্রকাশ করেছিল। অন্য কমিটি সেনাবাহিনীর ২০ সদস্যকে নিয়ে গঠিত। এর প্রতিবেদনের নামকরণ ‘একটি মতামত’ বলে দাবি করেছে ওয়াচ। তবে সেনা তদন্ত আদালতের প্রতিবেদনের বরাতে প্রথম আলোসহ পত্রপত্রিকায় ২০১০ সালে এ বিষয়ক কিছু খবর ছাপা হয়েছিল। ওয়াচের দাবির সঙ্গে ওই সব খবরের কিছু গরমিল স্পষ্ট। তবে ওয়াচের মতো পত্রপত্রিকার কাছেও এসব প্রতিবেদন আসে অজ্ঞাতনামা সূত্রে। এখন ওয়াচ জাতির সামনে এ দুটি অপ্রকাশিত কিংবা গোপনীয় প্রতিবেদন থেকে উদ্ধৃতি সঠিকভাবে দিয়েছে কি না, সেটা বিশ্বাসযোগ্যভাবে যাচাইয়ের জন্য অবিলম্বে এর পূর্ণাঙ্গ ও আনুষ্ঠানিক প্রকাশ কাম্য।
এখন আমাদের কাছে খুব উদ্ভট ঠেকছে যে সরকারি কর্তৃপক্ষগুলো আসলে কী প্রত্যাখ্যান করছে। আমাদের দুটি মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং অধিকার, এ কাজে ওয়াচকে শুধু সহযোগিতা দিয়েছে। আমাদের জাতীয় জীবনের এক মর্মস্পর্শী বিয়োগান্ত অধ্যায়, যেখানে আমরা ৩৩ ঘণ্টার ব্যবধানে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাকে হারিয়েছি, যে জন্য আমরা জাতীয় শোক পালন করেছি, এ রকমের একটি ঘটনায় বাংলাদেশি কোনো সংস্থা ঘটনা ঘটে যাওয়ার তিন বছর পরও একটি পূর্ণাঙ্গ ও বিস্তারিত লিখিত প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারেনি। অথচ র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক এম সোহায়েলের কথায়, আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং অধিকার হলো ভুঁইফোড় মানবাধিকার সংগঠন। এর আগে আমরা রাজনীতিকদের দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে চিন্তিত হতে দেখেছি। কিন্তু এবার দেখলাম র্যাব মুখপাত্রও পিছিয়ে থাকতে চান না!
আমাদের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর ওই অসহায়ত্ব স্মরণ করিয়ে দিয়েছে ওয়াচ প্রতিবেদনের একটি মন্তব্য। যেখানে বলা হয়েছে, ‘শেখ হাসিনার সরকার, যারা অত্যাচারের ব্যাপারে জনগণের কাছে একটি “শূন্য সহিষ্ণুতার” নীতি দাবি করে, তারাও নির্যাতন চলতে দিয়েছে, তা অনিচ্ছাকৃতভাবে বা সুরক্ষা বাহিনীর সাথে বিবাদে যেতে অসমর্থ হওয়ার কারণে।’
পিলখানা বিদ্রোহের ওপর এ পর্যন্ত প্রকাশিত একমাত্র আন্তর্জাতিক এবং পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনটি রুদ্ধশ্বাসে পাঠের শুরুতে ভাবছিলাম, এই বুঝি রহস্যের ঘোমটা খুলে গেল। কিন্তু তা খোলেনি। বরং আমাকে হতাশ করে ওয়াচ বলেছে, ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ পিলখানায় কী ঘটেছিল, তা হয়তো কখনোই জানা যাবে না। ওয়াচ প্রতিবেদন আসলে বিচারিক প্রক্রিয়ার ত্রুটি-বিচ্যুতি এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ওপর পরিচালিত ভয়ংকর নির্যাতনের কয়েকটি ঘটনার বিস্তারিত বিবরণই শুধু মৌলিকভাবে হাজির করেছে। বিদ্রোহের কারণ ও পরিকল্পনা বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের বা পত্রিকান্তরে প্রকাশিত চিন্তাভাবনার বাইরে একটি নতুন তথ্য বা ভাবনাও তারা হাজির করেনি। বরং সংবেদনশীল জায়গাগুলোতে প্রতিবেদনটি বোধগম্য কারণেই কৈ-এর তেলে কৈ ভেজেছে। সুতরাং, আমাদের সরকারি সংস্থাগুলো যে দৃষ্টিভঙ্গি ও ভাষায় তুড়ি মেরে ওয়াচের ৫৭ পৃষ্ঠার পুরো প্রতিবেদনটি উড়িয়ে দিচ্ছে, তা যতটা না অগ্রহণযোগ্য, তার চেয়ে বেশি অপ্রাসঙ্গিক ও অযাচিত। মনে হচ্ছে পদ্মা সেতুর দুর্নীতির মতো এটাও ক্ষমতাসীন দলের প্রত্যাখ্যানপ্রবণতা সূত্রে গাঁথা।
ওয়াচের বক্তব্য ধরে বলি, সরকারি কমিশন ও সেনা রিপোর্ট একটি বিষয়ে একমত হয়েছে যে পিলখানার বিদ্রোহ দৃশ্যত অভ্যন্তরীণ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশজনিত হলেও এর পেছনে রয়েছে বিদেশি হাত। সেনাবাহিনীকে দুর্বল করা, সীমান্ত অস্থিতিশীল করা এবং বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা এ ষড়যন্ত্রের ‘চূড়ান্ত’ লক্ষ্য। এফবিআই এর তদন্তে নেমেও লক্ষ করে যে সরকারি বাহিনীগুলো পিলখানায় বিদেশি হাত শনাক্ত করতে বেশি উদ্গ্রীব, অভ্যন্তরীণ কারণ খতিয়ে দেখতে নয়। যদিও উভয় প্রতিবেদনের কোথাও ‘বিদেশি হাতের’ সপক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ উল্লেখ করা হয়নি বলে ওয়াচ প্রতিবেদনের দাবি।
পিলখানায় আরও রক্তপাত এড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শান্তি মিশন এবং সেনাবাহিনীর প্রস্তাবিত কমান্ডো হামলার মধ্যে কোনটি সঠিক ছিল, সে বিষয়ে ওয়াচের মন্তব্য নেই। তবে প্রধানমন্ত্রী যে উপায়ে বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণ করেছেন, তাকে তারা সাংবাদিক সম্মেলনে সমর্থন করেছে।
ওয়াচের মতে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম হস্তক্ষেপকেও সেনা রিপোর্ট অনভিজ্ঞ বলেছে। এসব বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হওয়া উচিত। সেটা কাউকে অহেতুক খাটো করার বা ওপরে তোলার জন্য নয়। জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কৌশল পুনর্বিন্যাসের জন্য এটা জরুরি।
পিলখানার বিদ্রোহের মতো ঘটনা অভাবনীয় হলেও, রাষ্ট্রীয় বাহিনী এবং বিদ্যমান আইনি কাঠামো এ ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার কথা। দেশকে বহিঃশত্রু থেকে রক্ষার জন্য আমরা বছর বছর প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়িয়ে চলেছি। লোকবল ও অস্ত্রশস্ত্র বাড়ছেই। কিন্তু অভ্যন্তরীণ গোলযোগ মোকাবিলায় আমরা কি আমাদের সুরক্ষা বাহিনীর কাছ থেকে প্রত্যাশিত নৈপুণ্য পেয়েছি? কুলদীপ নায়ার লিখেছেন, বাংলাদেশে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের অভ্যুত্থান সম্পর্কে ‘র’ ঘুণাক্ষরেও টেরটি পায়নি। রুষ্ট ইন্দিরাপুত্র সঞ্জয় গান্ধী এরপর ‘র’-এর নামকরণ ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং’-এর পরিবর্তে ‘রিলেটিভস অব ওয়াইভস অ্যাসোসিয়েশন’ রেখেছিলেন। আমাদের ডিজিএফআই বা এনএসআই এতজন মেধাবী অফিসারের বিপদ আঁচ করতে পারল না। এখন ওয়াচ প্রতিবেদন থেকে আমরা জানছি, সুরক্ষা বাহিনী ষোলোআনা দায় অন্যের কাঁধে চাপাচ্ছে।
আমরা এখানে সরকারি ও সেনা রিপোর্টের মধ্যে গোয়েন্দা ব্যর্থতা প্রশ্নে একটি মৌলিক তফাত লক্ষ করি। সেনা রিপোর্টে গোয়েন্দা ব্যর্থতাকে অস্বীকার করার চেষ্টা করা হয়েছে। অবশ্য ২০১০ সালের গোড়ায় প্রথম আলো রিপোর্ট করেছে যে, সরকারি ও সেনা উভয় প্রতিবেদনেই গোয়েন্দাদের তুলোধুনো করা হয়েছে। এখন ওয়াচ বলছে, সরকারি রিপোর্ট ডিজিএফআই ও র্যাবসহ দেশের বিভিন্ন সুরক্ষা বাহিনীর ‘সহযোগিতার ঘাটতি’ সম্পর্কে আলোকপাত করেছে। সরকারি কমিশন বলেছে, ‘নিরাপত্তা বাহিনীর তদন্তকারী শাখাগুলোর কাছ থেকে সহযোগিতার ঘাটতির কারণে ঘটনাগুলো এবং এর কারণ ও পরিণামগুলোর একটি যথাযথ নিরীক্ষণ অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল।’ কী সাংঘাতিক পর্যবেক্ষণ!
এত বড় একটি জাতীয় দুর্যোগের বিষয়ে সরকার কমিশন গঠন করল, অথচ তারা কাঠামোগতভাবে অসহায় ছিল। পিলখানার বিদ্রোহের ঘটনা থেকে আমাদের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো কী শিক্ষা গ্রহণ করেছে, তা স্পষ্ট নয়। এত বড় একটি ঘটনার পরও এ দেশের নাগরিক সমাজও পদ্ধতিগতভাবে তাদের কোনো কিছু করণীয় আছে বলে প্রমাণ দিতে পারেনি। জাতীয় সংসদের কমিটিও নীরব দর্শক। আর সরকার সৃষ্ট কমিশনের রিপোর্টের বিবরণও আজ আমাদের সতর্কতার সঙ্গে শুনতে হচ্ছে বিদেশি সংস্থার কাছ থেকে। সরকারি রিপোর্ট বলছে, তারা একজন পরিচিত অস্ত্র চোরাচালানকারীর দেখা পেয়েছিল। কিন্তু তাদের কথায় ‘সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের কাছ থেকে সত্য উদ্ঘাটনের জন্য উপযুক্ত উপকরণ, প্রযুক্তি এবং কৌশল কমিশনের জানা ছিল না। সে জন্য কমিশনের কাছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা বা উপস্থিত কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বা প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’ র্যাবের মহাপরিচালক স্বয়ং এ কমিশনে ছিলেন। এখন র্যাবের মুখপাত্র বলছেন, র্যাবের কারণে ‘অস্ত্র ব্যবসায়ী’ ও সন্ত্রাসীরা ভীত এবং ক্ষুব্ধ। তাহলে প্রশ্ন ওঠে, এই আলোচ্য অস্ত্র ব্যবসায়ী কেমন আছেন?
সরকারি রিপোর্ট পিলখানা বিদ্রোহের আগাম অনুমান না করতে পারার জন্য আমাদের সামরিক ও অসামরিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কঠোর সমালোচনা করেছে বলেও ওয়াচের দাবি। বিদ্রোহের মাত্র কয়েক দিন আগেই ‘বিদ্রোহীরা’ অসন্তোষ প্রকাশ করে লিফলেট বিতরণ করেছিল। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো প্রধানমন্ত্রীর পরিদর্শনের আগে বিশদ সুরক্ষার কাজ সম্পন্ন করেনি। এ প্রসঙ্গে সরকারি রিপোর্ট কিন্তু একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছে। ওয়াচের প্রতিবেদন অনুযায়ী তারা বলেছে, ‘সুরক্ষা সংস্থাগুলো এই কাজটি যে করেনি, তাতে এই জনপ্রিয় বিশ্বাসটিকে জোরালো করেছে যে নতুন সরকারকে উৎখাত করার জন্য সেনাবাহিনীই এই বিদ্রোহটির পরিকল্পনা করেছিল।’
সেনা অফিসাররা কেন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উচ্চপদস্থ হিসেবে বহাল থাকছেন? একজন সাবেক বিডিআর মহাপরিচালকের যুক্তি, সেনাবাহিনী তাদের পুলিশের মতো দুর্নীতিগ্রস্ত দেখতে চায় না। এখন সেনা রিপোর্ট যদি বলে, বিডিআর দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছিল, তাহলে তার দায় নেবে কে? সেনা রিপোর্ট ডাল-ভাত কর্মসূচি সম্পর্কে বলেছে, ‘বিডিআর জওয়ানরা দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল, এটি থেকে তারা টাকা বানাচ্ছিল, সেনা কমান্ড এসব জেনে যাওয়ায় এবং ডাল-ভাত কর্মসূচি সমাপ্ত করায় জওয়ানরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিল।’ সেনা রিপোর্টে আরও অকপট দাবি, ‘অপারেশন ডাল-ভাতের ব্যাপারে এবং সাধারণভাবে সেনা অফিসারদের সততা ও কর্তব্যপরায়ণতার জন্য বিডিআর জওয়ানরা দুর্নীতি করার কম সুযোগ পাচ্ছিল এবং এর ফল হিসেবে তাদের ক্ষোভের পরিমাণ বেড়ে একটি বিশাল মাত্রায় পৌঁছে গিয়েছিল।’
কিন্তু সেটা তো এক দিনে হয়নি। পিলখানার বিদ্রোহের পূর্বাভাস ছিল লিফলেট। সেনা রিপোর্ট কোনো রাখঢাক না রেখেই বলেছে, বিদ্রোহীদের অভিযোগ মিথ্যা ও মনগড়া ছিল। কিন্তু যে বিষয়টি একেবারেই বোধগম্য নয় সেটা হলো, সেনা রিপোর্ট বলেছে, বিদ্রোহের আগে তাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় ব্যবস্থা না নেওয়ার জন্য সরকারকে দোষী করা এবং এমনকি এটাও বলা যে বিডিআর সৈনিকদের যারা অপারেশন ডাল-ভাত থেকে বেআইনিভাবে লাভবান হয়েছিল, তাদেরকে যথেষ্ট কড়া শাস্তি প্রদান করা হয়নি।’
আমরা আশা করব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি যাতে উটপাখি না হয়। সরকার ওয়াচের গোটা প্রতিবেদনকে বলেছে, এটা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের অংশ। তারা প্রতিবেদন প্রত্যাহার করতে বলেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন র্যাবের জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমন কার্যকলাপকে ধন্যবাদ ও বাহবা দিয়েছেন। যে কারও ভালো কাজকে আমরাও বাহবা দিই। কিন্তু পিলখানার দুই রিপোর্ট বিষয়ে যে বক্তব্য ওয়াচ দাবি করেছে, সে বিষয়ে আমরা সরকারের কাছ থেকে ফুৎকার নয়, নির্দিষ্ট বক্তব্য চাই। আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ ভবিষ্যতে এ ধরনের ভিত্তিহীন প্রতিবেদন প্রকাশ না করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। আইন প্রতিমন্ত্রী আরেকটু এগিয়ে। তাঁর দাবি, ‘এতে সত্যতার লেশমাত্রও নেই’।
তাহলে সত্যের লেশ কোথায়? তথ্য অসত্য হলে ওয়াচের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক।
mrkhanbd@gmail.com
No comments