বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ) বিল সংসদে পাস-বাঘ বা হাতি হত্যার সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছর কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড

বাঘ বা হাতি হত্যার জন্য সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ) বিল-২০১২ গতকাল রোববার জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বিলটি উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।


পাসের আগে বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী-প্রস্তাব নাকচ হয়।
এ আইনে মোট এক হাজার ৩০৭টি প্রাণী ও উদ্ভিদকে সংরক্ষিত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আইনের ৩৬ ধারা অনুযায়ী, বাঘ বা হাতি হত্যা করলে সর্বনিম্ন দুই বছর এবং সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হবে। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটলে সর্বোচ্চ ১২ বছরের কারাদণ্ড ও ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড হবে। ৩৭ ধারা অনুযায়ী, চিতা বাঘ, লাম চিতা, উল্লুক, সাম্বার হরিণ, কুমির, ঘড়িয়াল, তিমি বা ডলফিন হত্যা করলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড অথবা তিন লাখ টাকা জরিমানা হবে। ৩৮ ধারা অনুযায়ী, পাখি বা পরিযায়ী পাখি হত্যা করলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা হবে।
আইনে আরও বলা হয়েছে, লাইসেন্স ছাড়া কোনো ব্যক্তি কারও কাছ থেকে বন্য প্রাণী, বন্য প্রাণীর কোনো অংশ, মাংস, ট্রফি বা কোনো দ্রব্য কিনলে সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকার জরিমানা হবে। এতে আরও বলা হয়েছে, সরকারি বন, বনের অংশ, সরকারি ভূমি, জলাভূমি বা যেকোনো নির্দিষ্ট এলাকাকে গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা যাবে। অভয়ারণ্যে কেউ চাষাবাদ, শিল্পকারখানা স্থাপন, উদ্ভিদ আহরণ ও ধ্বংস এবং অগ্নিসংযোগ করতে পারবে না। এ-সম্পর্কিত বিধিনিষেধ কেউ লঙ্ঘন করলে দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছর: সব ধরনের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছর করে গতকাল ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক (অবসর গ্রহণ) (বিশেষ বিধান) বিল-২০১২’ সংসদে পাস হয়। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বিলটি উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
মূল্য সংযোজন কর বিল উত্থাপন: করযোগ্য সরবরাহ এবং আমদানির ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন করের (মূসক) হার ১৫ শতাংশ রেখে গতকাল সংসদে মূল্য সংযোজন কর বিল-২০১২ উত্থাপিত হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিলটি উত্থাপন করেন। পরে বিলটি এক মাসের মধ্যে যাচাই করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।
এ ছাড়া গতকাল সংসদে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিল-২০১২ উত্থাপন করেন খাদ্য ও দুর্যোগব্যবস্থাপনামন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। পরে বিলটি পরীক্ষা করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য খাদ্য ও দুর্যোগব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।

No comments

Powered by Blogger.