বীরাঙ্গনা ৭১ ॥ সামরিক অফিসাররা মেয়েদের সম্মিলিতভাবে ধর্ষণ করত by মুনতাসীর মামুন
শহরে, গ্রামেগঞ্জে সবখানে সুপরিকল্পিতভাবে
পাকিস্তানীরা ধর্ষণ করেছে। কিন্তু বিষয়টি শুধুমাত্র একক ধর্ষণ বা গণধর্ষণে
সীমাবদ্ধ থাকেনি। ক্যাম্পে যেসব নারীকে আটক করে রাখা হয়েছে তাদের ওপর যে
অত্যাচার করা হয়েছে সেটি মানুষ মানুষের ওপর করতে পারে তা অবিশ্বাস্য।
এই অত্যাচার ছিল প্রতিশোধ গ্রহণের একটি দিক। অন্যদিকে ছিল তাদের মানসিক
গড়নের বৈশিষ্ট্য। হয়ত পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণই দেয়া হয় এভাবে।
নারীরা অত্যাচার বা ধর্ষণের কথা কখনও বলতে চান না। বলা সম্ভবও নয়। কিন্তু গত ৪০ বছরে বিভিন্ন বয়ানে যে চিত্র উঠে আসে তার বর্ণনা বেশি দেয়া সম্ভব নয়। পড়াও সম্ভব নয়।
স্বাধীনতার দলিলপত্রে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে কর্মরত সুইপার রাবেয়া খাতুন যে জবানবন্দী দিয়েছিলেন তাতে অত্যাচারের একটি রূপরেখা পাওয়া যায়
‘ক্যান্টিনের কামরা থেকে বন্দুকের নলের মুখে আমাকেও বের করে আনা হয়, আমাকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়া হয় এবং আমার ওপর প্রকাশ্যে পাশবিক অত্যাচার করছিল আর কুকুরের মতো অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছিল। আমার ওপর উপর্যুপরি পাশবিক অত্যাচার করতে করতে যখন আমাকে একেবারে মেরে ফেলে দেয়ার উপক্রম হয়, তখন আমার বাঁচবার আর কোনো উপায় না দেখে আমি আমার প্রাণ বাঁচাবার জন্য ওদের নিকট কাতর মিনতি জানাচ্ছিলাম। আমি হাউমাউ করে কাঁদছিলাম, আর বলছিলাম আমাকে মেরো না, আমি সুইপার, আমাকে মেরে ফেললে তোমাদের পায়খানা ও নর্দমা পরিষ্কার করার আর কেউ থাকবে না, তোমাদের পায়ে পড়ি তোমরা আমাকে মেরো না....
তখনও আমার ওপর এক পাঞ্জাবী কুকুর, কুকুরের মতোই আমার কোমরের ওপর চড়াও হয়ে আমাকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করছিল। আমাকে এভাবে ধর্ষণ করতে করতে মেরে ফেলে দিলে রাজারবাগ পুলিশ লাইন পরিষ্কার করার জন্য আর কেউ থাকবে না, একথা ভেবে আমাকে এক পাঞ্জাবী সেনা ধমক দিয়ে বলতে থাকে, ঠিক হায় তোমকো ছোড় দিয়া যায়েগা জারা বাদ, তোম বাহার নাহি নেকলেগা, হারওয়াকত লাইন পার হাজির রাহেগা। এ কথা বলে আমাকে ছেড়ে দেয়।
পাঞ্জাবী সেনারা রাজাকার ও দালালদের সাহায্যে রাজধানীর স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকা এবং অভিজাত জনপদ থেকে বহু বাঙালী যুবতী মেয়ে, রূপসী মহিলা এবং সুন্দরী বালিকাদের জীপে, মিলিটারি ট্রাকে করে পুলিশ লাইনের বিভিন্ন ব্যারাকে জমায়েত করতে থাকে।
তাদের মধ্যে অধিকাংশ মেয়ের চোখ বেয়ে অঝোরে অশ্রু পড়ছিল। এর পরই আরম্ভ হয়ে গেল সেই বাঙালী নারীদের ওপর বীভৎস ধর্ষণ। লাইন থেকে পাঞ্জাবী সেনারা কুকুরের মতো জিভ চাটতে চাটতে ব্যারাকের মধ্যে উন্মুক্ত অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে প্রবেশ করতে লাগল। ওরা ব্যারাকে ব্যারাকে প্রবেশ করে প্রতিটি যুবতী, মহিলা ও বালিকার পরনের কাপড় খুলে একেবারে উলঙ্গ করে মাটিতে লাথি মেরে ফেলে দিয়ে বীভৎস ধর্ষণে লেগে গেল। কেউ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই সেই নিরীহ বালিকাদের ওপর ধর্ষণে লেগে গেল, উন্মক্ত পাঞ্জাবী সেনারা এই নিরীহ বাঙালী মেয়েদের শুধু মাত্র ধর্ষণ করেই ছেড়ে দেয় নাই আমি দেখলাম পাক সেনারা সেই মেয়েদের ওপর পাগলের মতো উঠে ধর্ষণ করছে আর ধারাল দাঁত বের করে বক্ষের স্তন ও গালের মাংস কামড়াতে কামড়াতে রক্তাক্ত করে দিচ্ছে, ওদের উদ্ধত ও উন্মক্ত কামড়ে অনেক কচি মেয়ের স্তনসহ বক্ষের মাংস উঠে আসছিল, মেয়েদের গাল, পেট, ঘাড়, বক্ষ, পিঠের ও কোমরের অংশ ওদের অবিরাম দংশনে রক্তাক্ত হয়ে গেল।
যে সকল বাঙালী যুবতী ওদের প্রমত্ত পাশবিকতার শিকার হতে অস্বীকার করল তৎক্ষণাৎ পাঞ্জাবী সেনারা ওদেরকে চুল ধরে টেনে এনে স্তন ছোঁ মেরে টেনে ছিঁড়ে ফেলে দিয়ে ওদের যোনি ও গুহ্যদ্বারের মধ্যে বন্দুকের নল, বেয়নেট ও ধারাল ছুরি ঢুকিয়ে দিয়ে সেই বীরাঙ্গনাদের পবিত্র দেহ ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছিল। অনেক পশু ছোট ছোট বালিকার ওপর পাশবিক অত্যাচার করে ওদের অসার রক্তাক্ত দেহ বাইরে এনে দুজনে দু’পা দু’দিকে টেনে ধরে চড়চড়িয়ে ছিঁড়ে ফেলে দিল... পাঞ্জাবীরা শ্মশানের লাশ ভক্ষণ করা যে কোনো কুকুরের মতো মদ খেয়ে সব সময় সেখানকার যার যে মেয়ে ইচ্ছা তাকেই ধরে ধর্ষণ করছিল।
শুধু সাধারণ পাঞ্জাবী সেনারাই এই বীভৎস পাশবিক অত্যাচারে যোগ দেয়নি, সকল উচ্চপদস্থ পাঞ্জাবী সামরিক অফিসারই মদ খেয়ে হিংস্র বাঘের মতো হয়ে দুই হাত বাঘের মতো নাচাতে নাচাতে সেই উলঙ্গ বালিকা, যুবতী ও বাঙালী মহিলাদের ওপর সারাক্ষণ পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ কাজে লিপ্ত থাকত। কোন মেয়ে, মহিলা ও যুবতীকে এক মুহূর্তের জন্য অবসর দেয়া হয়নি, ওদের উপর্যুপরি ধর্ষণ ও অবিরাম অত্যাচারে বহু কচি বালিকা সেখানেই রক্তাক্ত দেহে কাতরাতে কাতরাতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছে, পরের দিন এ সকল মেয়ের লাশ অন্যান্য মেয়েদের সম্মুখে ছুরি দিয়ে কেটে কুচি কুচি করে বস্তার মধ্যে ভরে বাইরে ফেলে দিত। এ সকল মহিলা, বালিকা ও যুবতীদের নির্মম পরিণতি দেখে অন্য মেয়েরা আরও ভীত ও সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ত এবং স্বেচ্ছায় পশুদের ইচ্ছার সম্মুখে আত্মসমর্পণ করত।
পদস্থ সামরিক অফিসাররা সেই মেয়েদের ওপর সম্মিলিতভাবে ধর্ষণ করতে করতে হঠাৎ একদিন তাকে ধরে ছুরি দিয়ে তার স্তন কেটে, পাছার মাংস কেটে, যোনি ও গুহ্যদ্বারের মধ্যে সম্পূর্ণ ছুরি চালিয়ে দিয়ে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে ওরা আনন্দ উপভোগ করত।
এরপর উলঙ্গ মেয়েদেরকে গরুর মতো লাথি মারতে মারতে, পশুর মতো পিটাতে পিটাতে ওপরে হেডকোয়ার্টারে দোতলা, তেতলা ও চার তলায় উলঙ্গ অবস্থায় দাঁড় করিয়ে রাখা হতো। পাঞ্জাবি সেনারা চলে যাওয়ার সময় মেয়েদের লাথি মেরে আবার কামরার ভিতর ঢুকিয়ে তালা বন্ধ করে চলে যেত। এরপর বহু যুবতী মেয়েকে হেডকোয়ার্টারের ওপর তলায় বারান্দার মোটা লোহার তারের ওপর চুলের সঙ্গে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয় প্রতিদিন পাঞ্জাবীরা সেখানে যাতায়াত করত ও সেই ঝুলন্ত উলঙ্গ যুবতীদের কেউ এসে তাদের উলঙ্গ দেহের কোমরের মাংস বেটন দিয়ে উন্মত্তভাবে আঘাত করতে থাকত, কেউ তাদের বক্ষের স্তন কেটে নিয়ে যেত, কেউ হাসতে হাসতে তাদের যোনিপথে লাঠি ঢুকিয়ে আনন্দ উপভোগ করত, কেউ ধারাল চাকু দিয়ে কোন যুবতীর পাছার মাংস আস্তে আস্তে কেটে আনন্দ করত, কেউ উঁচু চেয়ারে দাঁড়িয়ে উন্মুক্তবক্ষ মেয়েদের স্তনে মুখ লাগিয়ে ধারাল দাঁত দিয়ে স্তনের মাংস তুলে নিয়ে আনন্দ অট্টহাসি করত। কোন মেয়ে এসব অত্যাচারে কোন প্রকার চিৎকার করার চেষ্টা করলে তার যোনিপথ দিয়ে লোহার রড ঢুকিয়ে দিয়ে তাকে তৎক্ষণাৎ হত্যা করা হতো। প্রতিটি মেয়ের হাত বাঁধা ছিল, পিছনের দিকে শূন্যে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। অনেক সময় পাঞ্জাবী সেনারা সেখানে এসে এসে ঝুলন্ত উলঙ্গ মেয়েদের এলোপাতাড়ি বেদম প্রহার করে যেত।
প্রতিদিন এভাবে বিরামহীন প্রহারে মেয়েদের দেহের মাংস ফেটে রক্ত ঝরছিল, মেয়েদের কারো মুখের সম্মুখের দিকে দাঁত ছিল না, ঠোঁটের দুদিকের মাংস কামড়ে, টেনে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছিল, লাঠি ও লোহার রডের অবিরাম পিটুনিতে প্রতিটি মেয়ের আঙুল, হাতের তালু ভেঙ্গে, থেতলে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল। এসব অত্যাচারিত ও লাঞ্ছিত মহিলা ও মেয়েদের প্রস্রাব ও পায়খানা করার জন্য হাতের ও চুলের বাঁধন খুলে দেয়া হতো না এক মুহূর্তের জন্য। হেডকোয়ার্টারের ওপরতলার বারান্দায় এই ঝুলন্ত উলঙ্গ মেয়েরা হাত বাঁধা অবস্থায় লোহার তারে ঝুলে থেকে সেখানে প্রস্রাব পায়খানা করতÑআমি প্রতিদিন সেখানে গিয়ে এসব প্রস্রাব-পায়খানা পরিষ্কার করতাম।’
একই রকম বিবরণ দিয়েছেন রাজারবাগ পুলিশ লাইনের আর্মস এসআই, বিআরপি সুবেদার খলিলুর রহমান। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন সেনাবাহিনীর জীপে বা ট্রাকে করে অসহায় বালিকা ও নারীদের ধরে আনা হতো। ‘পাঞ্জাবী, বিহারি ও পশ্চিম পাকিস্তানী পুলিশ জিভ চাটতে চাটতে ট্রাকের সম্মুখে এসে মেয়েদের টেনেহেঁচড়ে নামিয়ে নিয়ে তৎক্ষণাৎ দেহের পোশাক-পরিচ্ছদ ও কাপড়চোপড় খুলে তাদেরকে সম্পূর্ণভাবে উলঙ্গ করে আমাদের চোখের সামনেই মাটিতে ফেলে কুকুরের মতো ধর্ষণ করত।... ( চলবে)
নারীরা অত্যাচার বা ধর্ষণের কথা কখনও বলতে চান না। বলা সম্ভবও নয়। কিন্তু গত ৪০ বছরে বিভিন্ন বয়ানে যে চিত্র উঠে আসে তার বর্ণনা বেশি দেয়া সম্ভব নয়। পড়াও সম্ভব নয়।
স্বাধীনতার দলিলপত্রে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে কর্মরত সুইপার রাবেয়া খাতুন যে জবানবন্দী দিয়েছিলেন তাতে অত্যাচারের একটি রূপরেখা পাওয়া যায়
‘ক্যান্টিনের কামরা থেকে বন্দুকের নলের মুখে আমাকেও বের করে আনা হয়, আমাকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়া হয় এবং আমার ওপর প্রকাশ্যে পাশবিক অত্যাচার করছিল আর কুকুরের মতো অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছিল। আমার ওপর উপর্যুপরি পাশবিক অত্যাচার করতে করতে যখন আমাকে একেবারে মেরে ফেলে দেয়ার উপক্রম হয়, তখন আমার বাঁচবার আর কোনো উপায় না দেখে আমি আমার প্রাণ বাঁচাবার জন্য ওদের নিকট কাতর মিনতি জানাচ্ছিলাম। আমি হাউমাউ করে কাঁদছিলাম, আর বলছিলাম আমাকে মেরো না, আমি সুইপার, আমাকে মেরে ফেললে তোমাদের পায়খানা ও নর্দমা পরিষ্কার করার আর কেউ থাকবে না, তোমাদের পায়ে পড়ি তোমরা আমাকে মেরো না....
তখনও আমার ওপর এক পাঞ্জাবী কুকুর, কুকুরের মতোই আমার কোমরের ওপর চড়াও হয়ে আমাকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করছিল। আমাকে এভাবে ধর্ষণ করতে করতে মেরে ফেলে দিলে রাজারবাগ পুলিশ লাইন পরিষ্কার করার জন্য আর কেউ থাকবে না, একথা ভেবে আমাকে এক পাঞ্জাবী সেনা ধমক দিয়ে বলতে থাকে, ঠিক হায় তোমকো ছোড় দিয়া যায়েগা জারা বাদ, তোম বাহার নাহি নেকলেগা, হারওয়াকত লাইন পার হাজির রাহেগা। এ কথা বলে আমাকে ছেড়ে দেয়।
পাঞ্জাবী সেনারা রাজাকার ও দালালদের সাহায্যে রাজধানীর স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকা এবং অভিজাত জনপদ থেকে বহু বাঙালী যুবতী মেয়ে, রূপসী মহিলা এবং সুন্দরী বালিকাদের জীপে, মিলিটারি ট্রাকে করে পুলিশ লাইনের বিভিন্ন ব্যারাকে জমায়েত করতে থাকে।
তাদের মধ্যে অধিকাংশ মেয়ের চোখ বেয়ে অঝোরে অশ্রু পড়ছিল। এর পরই আরম্ভ হয়ে গেল সেই বাঙালী নারীদের ওপর বীভৎস ধর্ষণ। লাইন থেকে পাঞ্জাবী সেনারা কুকুরের মতো জিভ চাটতে চাটতে ব্যারাকের মধ্যে উন্মুক্ত অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে প্রবেশ করতে লাগল। ওরা ব্যারাকে ব্যারাকে প্রবেশ করে প্রতিটি যুবতী, মহিলা ও বালিকার পরনের কাপড় খুলে একেবারে উলঙ্গ করে মাটিতে লাথি মেরে ফেলে দিয়ে বীভৎস ধর্ষণে লেগে গেল। কেউ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই সেই নিরীহ বালিকাদের ওপর ধর্ষণে লেগে গেল, উন্মক্ত পাঞ্জাবী সেনারা এই নিরীহ বাঙালী মেয়েদের শুধু মাত্র ধর্ষণ করেই ছেড়ে দেয় নাই আমি দেখলাম পাক সেনারা সেই মেয়েদের ওপর পাগলের মতো উঠে ধর্ষণ করছে আর ধারাল দাঁত বের করে বক্ষের স্তন ও গালের মাংস কামড়াতে কামড়াতে রক্তাক্ত করে দিচ্ছে, ওদের উদ্ধত ও উন্মক্ত কামড়ে অনেক কচি মেয়ের স্তনসহ বক্ষের মাংস উঠে আসছিল, মেয়েদের গাল, পেট, ঘাড়, বক্ষ, পিঠের ও কোমরের অংশ ওদের অবিরাম দংশনে রক্তাক্ত হয়ে গেল।
যে সকল বাঙালী যুবতী ওদের প্রমত্ত পাশবিকতার শিকার হতে অস্বীকার করল তৎক্ষণাৎ পাঞ্জাবী সেনারা ওদেরকে চুল ধরে টেনে এনে স্তন ছোঁ মেরে টেনে ছিঁড়ে ফেলে দিয়ে ওদের যোনি ও গুহ্যদ্বারের মধ্যে বন্দুকের নল, বেয়নেট ও ধারাল ছুরি ঢুকিয়ে দিয়ে সেই বীরাঙ্গনাদের পবিত্র দেহ ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছিল। অনেক পশু ছোট ছোট বালিকার ওপর পাশবিক অত্যাচার করে ওদের অসার রক্তাক্ত দেহ বাইরে এনে দুজনে দু’পা দু’দিকে টেনে ধরে চড়চড়িয়ে ছিঁড়ে ফেলে দিল... পাঞ্জাবীরা শ্মশানের লাশ ভক্ষণ করা যে কোনো কুকুরের মতো মদ খেয়ে সব সময় সেখানকার যার যে মেয়ে ইচ্ছা তাকেই ধরে ধর্ষণ করছিল।
শুধু সাধারণ পাঞ্জাবী সেনারাই এই বীভৎস পাশবিক অত্যাচারে যোগ দেয়নি, সকল উচ্চপদস্থ পাঞ্জাবী সামরিক অফিসারই মদ খেয়ে হিংস্র বাঘের মতো হয়ে দুই হাত বাঘের মতো নাচাতে নাচাতে সেই উলঙ্গ বালিকা, যুবতী ও বাঙালী মহিলাদের ওপর সারাক্ষণ পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ কাজে লিপ্ত থাকত। কোন মেয়ে, মহিলা ও যুবতীকে এক মুহূর্তের জন্য অবসর দেয়া হয়নি, ওদের উপর্যুপরি ধর্ষণ ও অবিরাম অত্যাচারে বহু কচি বালিকা সেখানেই রক্তাক্ত দেহে কাতরাতে কাতরাতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছে, পরের দিন এ সকল মেয়ের লাশ অন্যান্য মেয়েদের সম্মুখে ছুরি দিয়ে কেটে কুচি কুচি করে বস্তার মধ্যে ভরে বাইরে ফেলে দিত। এ সকল মহিলা, বালিকা ও যুবতীদের নির্মম পরিণতি দেখে অন্য মেয়েরা আরও ভীত ও সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ত এবং স্বেচ্ছায় পশুদের ইচ্ছার সম্মুখে আত্মসমর্পণ করত।
পদস্থ সামরিক অফিসাররা সেই মেয়েদের ওপর সম্মিলিতভাবে ধর্ষণ করতে করতে হঠাৎ একদিন তাকে ধরে ছুরি দিয়ে তার স্তন কেটে, পাছার মাংস কেটে, যোনি ও গুহ্যদ্বারের মধ্যে সম্পূর্ণ ছুরি চালিয়ে দিয়ে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে ওরা আনন্দ উপভোগ করত।
এরপর উলঙ্গ মেয়েদেরকে গরুর মতো লাথি মারতে মারতে, পশুর মতো পিটাতে পিটাতে ওপরে হেডকোয়ার্টারে দোতলা, তেতলা ও চার তলায় উলঙ্গ অবস্থায় দাঁড় করিয়ে রাখা হতো। পাঞ্জাবি সেনারা চলে যাওয়ার সময় মেয়েদের লাথি মেরে আবার কামরার ভিতর ঢুকিয়ে তালা বন্ধ করে চলে যেত। এরপর বহু যুবতী মেয়েকে হেডকোয়ার্টারের ওপর তলায় বারান্দার মোটা লোহার তারের ওপর চুলের সঙ্গে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয় প্রতিদিন পাঞ্জাবীরা সেখানে যাতায়াত করত ও সেই ঝুলন্ত উলঙ্গ যুবতীদের কেউ এসে তাদের উলঙ্গ দেহের কোমরের মাংস বেটন দিয়ে উন্মত্তভাবে আঘাত করতে থাকত, কেউ তাদের বক্ষের স্তন কেটে নিয়ে যেত, কেউ হাসতে হাসতে তাদের যোনিপথে লাঠি ঢুকিয়ে আনন্দ উপভোগ করত, কেউ ধারাল চাকু দিয়ে কোন যুবতীর পাছার মাংস আস্তে আস্তে কেটে আনন্দ করত, কেউ উঁচু চেয়ারে দাঁড়িয়ে উন্মুক্তবক্ষ মেয়েদের স্তনে মুখ লাগিয়ে ধারাল দাঁত দিয়ে স্তনের মাংস তুলে নিয়ে আনন্দ অট্টহাসি করত। কোন মেয়ে এসব অত্যাচারে কোন প্রকার চিৎকার করার চেষ্টা করলে তার যোনিপথ দিয়ে লোহার রড ঢুকিয়ে দিয়ে তাকে তৎক্ষণাৎ হত্যা করা হতো। প্রতিটি মেয়ের হাত বাঁধা ছিল, পিছনের দিকে শূন্যে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। অনেক সময় পাঞ্জাবী সেনারা সেখানে এসে এসে ঝুলন্ত উলঙ্গ মেয়েদের এলোপাতাড়ি বেদম প্রহার করে যেত।
প্রতিদিন এভাবে বিরামহীন প্রহারে মেয়েদের দেহের মাংস ফেটে রক্ত ঝরছিল, মেয়েদের কারো মুখের সম্মুখের দিকে দাঁত ছিল না, ঠোঁটের দুদিকের মাংস কামড়ে, টেনে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছিল, লাঠি ও লোহার রডের অবিরাম পিটুনিতে প্রতিটি মেয়ের আঙুল, হাতের তালু ভেঙ্গে, থেতলে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল। এসব অত্যাচারিত ও লাঞ্ছিত মহিলা ও মেয়েদের প্রস্রাব ও পায়খানা করার জন্য হাতের ও চুলের বাঁধন খুলে দেয়া হতো না এক মুহূর্তের জন্য। হেডকোয়ার্টারের ওপরতলার বারান্দায় এই ঝুলন্ত উলঙ্গ মেয়েরা হাত বাঁধা অবস্থায় লোহার তারে ঝুলে থেকে সেখানে প্রস্রাব পায়খানা করতÑআমি প্রতিদিন সেখানে গিয়ে এসব প্রস্রাব-পায়খানা পরিষ্কার করতাম।’
একই রকম বিবরণ দিয়েছেন রাজারবাগ পুলিশ লাইনের আর্মস এসআই, বিআরপি সুবেদার খলিলুর রহমান। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন সেনাবাহিনীর জীপে বা ট্রাকে করে অসহায় বালিকা ও নারীদের ধরে আনা হতো। ‘পাঞ্জাবী, বিহারি ও পশ্চিম পাকিস্তানী পুলিশ জিভ চাটতে চাটতে ট্রাকের সম্মুখে এসে মেয়েদের টেনেহেঁচড়ে নামিয়ে নিয়ে তৎক্ষণাৎ দেহের পোশাক-পরিচ্ছদ ও কাপড়চোপড় খুলে তাদেরকে সম্পূর্ণভাবে উলঙ্গ করে আমাদের চোখের সামনেই মাটিতে ফেলে কুকুরের মতো ধর্ষণ করত।... ( চলবে)
No comments