তরুণ উদ্যোক্তা- সৃষ্টির প্রেরণায় ভবিষ্যতের পথে by আশরাফ উল্লাহ
তাঁরা চার বন্ধু—ইব্রাহিম, ইশরাত, পার্থ ও আরাফাত। পড়ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএতে। ক্লাসের ফাঁকে আড্ডা হওয়াই চাই। তবে এই আড্ডা শুধুই হইহুল্লোড়ে সীমাবদ্ধ নয়। নিজেদের মধ্যে বিনিময় করেন নানা আইডিয়া। কোনো নতুন আইডিয়া মাথায় এলে শুরু হয় আলোচনা, তথ্য নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি।
চেষ্টা থাকে খেটেখুঁটে দাঁড় করানো। পরিশ্রমের স্বীকৃতিও মিলেছে কয়েকবার। পুরস্কার জিতেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় পর্যায়ে। কিন্তু তাতে কি মন ভরে?
পা বাড়ালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে। অংশ নিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রতিযোগিতায়। এসেই জয় করলেন। তাঁদের কলাগাছের ছাল থেকে সুতা তৈরির স্বপ্নের প্রকল্প জিতে নেয় দ্বিতীয় পুরস্কার।
‘পরিবেশবান্ধব ও ব্যবসাসফল কিছু করার চিন্তা ঘুুরপাক খাচ্ছিল আমাদের মাথায়। শেষে পথ বাতলে দিল আমার গ্রামের বাড়ির পাহাড়ি কলাগাছ! বন্ধুদের বললাম আইডিয়ার কথা—কলাগাছের ছাল থেকে হবে সুতা। বিষয়টি মনে ধরল অন্য তিনজনেরও। তবে কলাগাছের ছাল থেকে সুতা উৎপাদনের বিষয়টি সম্পর্কে আমার আগে থেকে কিছুটা ধারণা ছিল। ব্যস, বিস্তারিত জানতে শুরু হয়ে গেল ইন্টারনেটে চষে বেড়ানো। লেগে গেলাম কাজে।’ এভাবেই প্রকল্প তৈরির শুরুর কথা বলছিলেন দলনেতা ইব্রাহিম খলিল চৌধুরী।
চার তরুণের বাড়ি চট্টগ্রামেই। ইব্রাহিম খলিল চৌধুরীর রাঙ্গুনিয়ার রানীরহাটে, কাজী ইশরাত জাহানের চন্দনাইশের জোয়ারায়, পার্থ সারথি চৌধুরীর হাটহাজারীর বালুচরায় ও আরাফাত হুসাইনের নগরের ষোলশহরে। সবাই কলেজজীবন কাটিয়েছেন নগরেই। এইচএসসি শেষ করে ভর্তি হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্নাতক শেষ বর্ষের পরীক্ষা দিয়ে এখন ফলাফলের অপেক্ষায় আছেন।
এতসব কিছু থাকতে কলাগাছের প্রকল্প কেন? কাজী ইশরাত জাহান জানান, এখন প্রাকৃতিক তন্তু থেকে সুতা তৈরির ওপর ঝুঁকছে বিশ্ব। এ প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছে ফিলিপাইন। ভারতে ইতিমধ্যে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে শুরু হয়েছে কলাগাছের ছাল থেকে সুতা উৎপাদন। স্থায়িত্বের দিক থেকে কলাগাছের ছালের তন্তু অন্য প্রাকৃতিক তন্তু থেকে শক্ত। তা ছাড়া, বাংলাদেশে এর সম্ভাবনা প্রচুর। কারণ, পার্বত্য এলাকায় পাহাড়ি কলাগাছ সহজলভ্য। পাহাড়ে অনেক কলাগাছ আছে, যেগুলো এমনিতেই জন্মায়, আবার মরেও যায়। কোনো ফল দেয় না। এসব কলাগাছ হবে তাঁদের কাঁচামাল। আর এতে পাহাড়ি এলাকায়ও ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
প্রকল্প প্রস্তাবনায় তাঁরা উল্লেখ করেন, কলাগাছের ছাল থেকে কাপড় বানানোর তন্তু, দড়ি, শৌখিন জিনিসপত্র এবং তাঁবু বানানোর জন্য উৎকৃষ্ট মানের সুতা বানানো যায়। এ ছাড়া প্রাকৃতিক তন্তুর মধ্যে এটিই সবচেয়ে শক্ত, এর আর্দ্রতা ধরে রাখা এবং ত্যাগ করার ক্ষমতা চমৎকার। কৃত্রিম তন্তুর বিকল্প হিসেবে এটি ব্যবহার করা যায়। এ সুতা রাসায়নিক দ্রব্যমুক্ত, দীর্ঘস্থায়ী। এই প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৯০ লাখ টাকা। কারখানার জন্য যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হবে ভারত থেকে। আগামী বছরের শুরুতে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মগাছড়িতে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু করবেন তাঁরা।
ইব্রাহিম বলেন, ‘এটি আমাদের স্বপ্নের প্রকল্প। আগামী ডিসেম্বরের আগে আমাদের স্নাতকোত্তর পরীক্ষা শেষ হবে। এরপর পুরোদমে কাজে নেমে যাব। আমরা চাই, আমাদের দেখাদেখি অন্য তরুণেরাও এগিয়ে আসুক। তাদের মেধা দেশের কাজে লাগাক।’
এদিকে আরেকটি সুখবর এই চার তরুণকে আরও উজ্জীবিত করে। আগামী ৭ থেকে ১২ মার্চ ভারতের হায়দরাবাদে ইন্ডিয়ান স্কুল অব বিজনেসে (আইএসবি) ‘গ্লোবাল সোশ্যাল ভেনচার কনভেনশনে (জিএসসিবি) যোগ দিতে যাচ্ছেন তাঁরা। বিশ্বের ১৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮০টি দল এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আবেদন করেছিল। নির্বাচিত হয় ১৫টি দল। এর মধ্যে তাঁদের দলও রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে শুধু তাঁরাই যাচ্ছেন। সেখানেও তাঁরা লড়বেন নিজেদের ভাবনাপ্রসূত পরিকল্পনা নিয়ে।
পা বাড়ালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে। অংশ নিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রতিযোগিতায়। এসেই জয় করলেন। তাঁদের কলাগাছের ছাল থেকে সুতা তৈরির স্বপ্নের প্রকল্প জিতে নেয় দ্বিতীয় পুরস্কার।
‘পরিবেশবান্ধব ও ব্যবসাসফল কিছু করার চিন্তা ঘুুরপাক খাচ্ছিল আমাদের মাথায়। শেষে পথ বাতলে দিল আমার গ্রামের বাড়ির পাহাড়ি কলাগাছ! বন্ধুদের বললাম আইডিয়ার কথা—কলাগাছের ছাল থেকে হবে সুতা। বিষয়টি মনে ধরল অন্য তিনজনেরও। তবে কলাগাছের ছাল থেকে সুতা উৎপাদনের বিষয়টি সম্পর্কে আমার আগে থেকে কিছুটা ধারণা ছিল। ব্যস, বিস্তারিত জানতে শুরু হয়ে গেল ইন্টারনেটে চষে বেড়ানো। লেগে গেলাম কাজে।’ এভাবেই প্রকল্প তৈরির শুরুর কথা বলছিলেন দলনেতা ইব্রাহিম খলিল চৌধুরী।
চার তরুণের বাড়ি চট্টগ্রামেই। ইব্রাহিম খলিল চৌধুরীর রাঙ্গুনিয়ার রানীরহাটে, কাজী ইশরাত জাহানের চন্দনাইশের জোয়ারায়, পার্থ সারথি চৌধুরীর হাটহাজারীর বালুচরায় ও আরাফাত হুসাইনের নগরের ষোলশহরে। সবাই কলেজজীবন কাটিয়েছেন নগরেই। এইচএসসি শেষ করে ভর্তি হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্নাতক শেষ বর্ষের পরীক্ষা দিয়ে এখন ফলাফলের অপেক্ষায় আছেন।
এতসব কিছু থাকতে কলাগাছের প্রকল্প কেন? কাজী ইশরাত জাহান জানান, এখন প্রাকৃতিক তন্তু থেকে সুতা তৈরির ওপর ঝুঁকছে বিশ্ব। এ প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছে ফিলিপাইন। ভারতে ইতিমধ্যে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে শুরু হয়েছে কলাগাছের ছাল থেকে সুতা উৎপাদন। স্থায়িত্বের দিক থেকে কলাগাছের ছালের তন্তু অন্য প্রাকৃতিক তন্তু থেকে শক্ত। তা ছাড়া, বাংলাদেশে এর সম্ভাবনা প্রচুর। কারণ, পার্বত্য এলাকায় পাহাড়ি কলাগাছ সহজলভ্য। পাহাড়ে অনেক কলাগাছ আছে, যেগুলো এমনিতেই জন্মায়, আবার মরেও যায়। কোনো ফল দেয় না। এসব কলাগাছ হবে তাঁদের কাঁচামাল। আর এতে পাহাড়ি এলাকায়ও ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
প্রকল্প প্রস্তাবনায় তাঁরা উল্লেখ করেন, কলাগাছের ছাল থেকে কাপড় বানানোর তন্তু, দড়ি, শৌখিন জিনিসপত্র এবং তাঁবু বানানোর জন্য উৎকৃষ্ট মানের সুতা বানানো যায়। এ ছাড়া প্রাকৃতিক তন্তুর মধ্যে এটিই সবচেয়ে শক্ত, এর আর্দ্রতা ধরে রাখা এবং ত্যাগ করার ক্ষমতা চমৎকার। কৃত্রিম তন্তুর বিকল্প হিসেবে এটি ব্যবহার করা যায়। এ সুতা রাসায়নিক দ্রব্যমুক্ত, দীর্ঘস্থায়ী। এই প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৯০ লাখ টাকা। কারখানার জন্য যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হবে ভারত থেকে। আগামী বছরের শুরুতে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মগাছড়িতে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু করবেন তাঁরা।
ইব্রাহিম বলেন, ‘এটি আমাদের স্বপ্নের প্রকল্প। আগামী ডিসেম্বরের আগে আমাদের স্নাতকোত্তর পরীক্ষা শেষ হবে। এরপর পুরোদমে কাজে নেমে যাব। আমরা চাই, আমাদের দেখাদেখি অন্য তরুণেরাও এগিয়ে আসুক। তাদের মেধা দেশের কাজে লাগাক।’
এদিকে আরেকটি সুখবর এই চার তরুণকে আরও উজ্জীবিত করে। আগামী ৭ থেকে ১২ মার্চ ভারতের হায়দরাবাদে ইন্ডিয়ান স্কুল অব বিজনেসে (আইএসবি) ‘গ্লোবাল সোশ্যাল ভেনচার কনভেনশনে (জিএসসিবি) যোগ দিতে যাচ্ছেন তাঁরা। বিশ্বের ১৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮০টি দল এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আবেদন করেছিল। নির্বাচিত হয় ১৫টি দল। এর মধ্যে তাঁদের দলও রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে শুধু তাঁরাই যাচ্ছেন। সেখানেও তাঁরা লড়বেন নিজেদের ভাবনাপ্রসূত পরিকল্পনা নিয়ে।
No comments