'ব্যাটার বুকের পাটা আছে' by সুভাষ সাহা
বঙ্গ-ভাষায় 'বুকের পাটা আছে' বলে তিনটি শব্দের একটি বাক্যবন্ধনী আছে। সাধারণত কোনো অপ্রত্যাশিত বা অসম সাহসী কোনো কাজ করে ফেললে এ ধরনের বাক্যবন্ধনী প্রয়োগ করা হয়।
বলা হচ্ছে, মোশাররফ মানে_ আমাদের অতিপরিচিত পাকিস্তানি সাবেক স্বৈরশাসক জেনারেল মোশাররফও সেনাপ্রধান থাকার সময় একটি কাজ করে নিজের বুকের পাটা যে অনেক বড় তার প্রমাণ দিয়েছেন। আর এ ধরনের 'বুকের পাটাওয়ালা' সাহসীদেরই সবাই কুর্নিশ জানাতে পারে বিনা বাক্যব্যয়ে। জেনারেল মোশাররফ কারগিল যুদ্ধ শুরু করিয়ে দিয়ে তখন যে নওয়াজ শরীফের নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকারকে চিৎপটাং করে দিয়েছিলেন সেসব তো এখন মিলিটারি ক্যুর রগরগে ইতিহাস। দেশের ক্ষতি হলেও কিন্তু কারগিল নাটকের এই বিয়োগান্ত এপিসোড মঞ্চস্থ করার মাধ্যমে মোশাররফ সাহেব এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনী লাভবান হয়েছিল। ওই যুদ্ধে তখন সেনাপ্রধান হিসেবে তিনি বীরের মর্যাদায় ভূষিত হয়েছিলেন পাকিস্তানিদের কাছে। আর প্রকৃত নায়করা কারগিলের পাহাড়ে শেষ শয্যা নিয়ে লোকচক্ষুর অন্তরালে অজ্ঞাত হিসেবেই থেকে গেলেন। এখন বলা হচ্ছে, জেনারেল ভারতীয় ভূখণ্ডেও এক রাত কাটিয়ে ছিলেন। পাকিস্তানিদের চোখে ফিকে হয়ে যাওয়া তার বীরত্বের চেহারাকে ফের বার্নিশ করে উজ্জ্বল করার মতলবে এহেন গল্প ফাঁদা হচ্ছে না তো! কাশ্মীরের কারগিলে ইসলামী মুজাহিদিন পরিচয়ের আড়ালে কার্যত পাকিস্তানের নিয়মিত সেনাবাহিনীর সদস্যদের পাঠিয়ে নিয়ন্ত্রণ রেখা অমান্য করার দায় পড়েছে পাকিস্তানের ওপর। এখন আবার পাকিস্তান সেনাবাহিনী প্রধান থাকাকালে মোশাররফ ভারতীয় ভূখণ্ডে এক রাত কাটিয়ে সহি-সালামতে বীরদর্পে নিজ দেশের ভূখণ্ডে পা রাখতে সক্ষম হয়েছেন_ এটা কত বড় বীরের পক্ষে সম্ভব বলুন তো! আগেরবার না হয় তাকে হিরো এবং নওয়াজকে জিরো বানিয়ে ক্ষমতাসহ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাটাই হাইজ্যাক করা হয়েছিল। এবার মোশাররফের ইমেজে ফের বীরত্বের লেবাস চড়িয়ে কী হাসিল করার মতলব করা হচ্ছে!
এ ধরনের এপিসোডে করুণ রসের ছোঁয়া থাকে। এই দেখুন না, পঁচাত্তর সালে যখন বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হলো তখন হত্যাকারীরা কি নিজেরা বুক ফুলিয়ে ইতিহাসের জঘন্যতম কাজকে তাদের বীরত্বের স্মারক বলে প্রকাশ্যে নর্তন-কুর্দন করেনি! সেদিনের প্রচারণা যে কতটা মিথ্যা ছিল বাঙালিকে সেটা বুঝতে অনেক সময় লেগেছিল। ইতিমধ্যে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে যায়। মোশতাক, জিয়া, এরশাদ পেরিয়ে তবেই না আমরা আবার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফেরার পথ পেলাম। আর সংবিধান কাটাছেঁড়া করে এর মূলমন্ত্রগুলোই পাল্টে ফেলা হলো। পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বনকারী হলো দেশের প্রধানমন্ত্রী। যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে শোভা পেল বাঙালির রক্তে রঞ্জিত পতাকা। দেশকে আবার পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নেওয়ার কলঙ্কজনক ইতিহাসের সাক্ষী হতে হলো এখানকার মানুষকে। সে তমসাচ্ছন্ন সময়ের কালিমা এখনও লেপ্টে আছে সর্বত্র। তাই এসব জেনারেলের গায়ে যখন বীরের তকমা লাগিয়ে ধোপদুরস্ত করার পাঠ চলে তখন খটকা লাগে বৈকি! পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সময় মোশাররফের ইমেজে রঙ চড়ানো হচ্ছে কেন? পাকিস্তানের রাজনীতিতে কি আরও কিছুদিন একটি 'গেজ' হিসেবে তাকে রেখে দিতে চায় তার দেশি-বিদেশি বন্ধু ও সেনাবাহিনী?
এ ধরনের এপিসোডে করুণ রসের ছোঁয়া থাকে। এই দেখুন না, পঁচাত্তর সালে যখন বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হলো তখন হত্যাকারীরা কি নিজেরা বুক ফুলিয়ে ইতিহাসের জঘন্যতম কাজকে তাদের বীরত্বের স্মারক বলে প্রকাশ্যে নর্তন-কুর্দন করেনি! সেদিনের প্রচারণা যে কতটা মিথ্যা ছিল বাঙালিকে সেটা বুঝতে অনেক সময় লেগেছিল। ইতিমধ্যে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে যায়। মোশতাক, জিয়া, এরশাদ পেরিয়ে তবেই না আমরা আবার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফেরার পথ পেলাম। আর সংবিধান কাটাছেঁড়া করে এর মূলমন্ত্রগুলোই পাল্টে ফেলা হলো। পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বনকারী হলো দেশের প্রধানমন্ত্রী। যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে শোভা পেল বাঙালির রক্তে রঞ্জিত পতাকা। দেশকে আবার পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নেওয়ার কলঙ্কজনক ইতিহাসের সাক্ষী হতে হলো এখানকার মানুষকে। সে তমসাচ্ছন্ন সময়ের কালিমা এখনও লেপ্টে আছে সর্বত্র। তাই এসব জেনারেলের গায়ে যখন বীরের তকমা লাগিয়ে ধোপদুরস্ত করার পাঠ চলে তখন খটকা লাগে বৈকি! পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সময় মোশাররফের ইমেজে রঙ চড়ানো হচ্ছে কেন? পাকিস্তানের রাজনীতিতে কি আরও কিছুদিন একটি 'গেজ' হিসেবে তাকে রেখে দিতে চায় তার দেশি-বিদেশি বন্ধু ও সেনাবাহিনী?
No comments