আ’লীগ ক্ষমতায় এলে উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যায়ঃ প্রধানমন্ত্রী- যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে পারবেন না বিরোধীদলীয় নেতা by মুহাম্মদ আবদুল মজিদ ও শফিউল আযম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাবনা এডওয়ার্ড
কলেজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় আগামী নির্বাচনে পাবনার
পাঁচটি আসনেই নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘আওয়ামী
লীগ মতায় এলে দেশে উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যায়।
আর বিএনপি-জামায়াত জোট
মতায় এলে দেশে লুটপাট হয়। বিরোধীদলীয় নেতাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন,
‘আপনি দুর্নীতি, লুটপাট করে টাকা বানিয়েছেন। জরিমানা দিয়ে তা সাদা
করেছেন। আপনার ছেলে সিঙ্গাপুরে মানিলন্ডারিং করে টাকা পাঠিয়েছে। আমরা তা
ফিরিয়ে এনেছি। আপনার ছেলেকে দুর্নীতিতে, সন্ত্রাসবাদে, বোমাবাজিতে ডিগ্রি
দিয়েছেন। আপনার ছেলেকে মানুষ বানাননি। কাজেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের
অভিযান অব্যাহত থাকবে’।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পাবনার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। রেললাইন, প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা মেডিক্যাল কলেজ, বনমালী ইনস্টিটিউট, বেড়া ৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্লান্ট, পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজসহ বিভিন্ন উন্নয়ন হয়েছে। আগামীতে পাবনার রূপপুরে পারমাণবিক কেন্দ্রের কাজ শিগগিরই শুরু করা হবে।’
শানিবার বিকেলে পাবনার এডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধে যারা পাকিস্তানের দোসর ছিল, যারা আমার মা-বোনের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে, গণহত্যা চালিয়েছে, জাতির পিতা তাদের বিচার করেন। কিন্তু ১৫ আগস্টের পর জেনারেল জিয়া মতায় এসে সব বিচারকাজ বন্ধ করে দেয়। সব বন্দীকে মুক্ত করে দেয়। তাদেরকে মন্ত্রী বানায়, রাজনৈতিক মতায় বসায়। অর্ডিন্যান্স জারি করে সংবিধান সংশোধন করে তাদের রাজনৈতিক সুবিধা ভোগের সুযোগ করে দেয়। পরাজিত শক্তিকে পুনর্বাসিত করে রক্তের সাথে বেঈমানি করেছে জিয়া সরকার। অবৈধভাবে মতা দখল করে এ দেশের মানুষের স্বার্থ নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে।’
৩০ মিনিটের এ বক্তব্যে শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘আমরা কথা দিয়েছিলাম, আমরা নির্বাচনী ওয়াদা দিয়েছিলাম যে, সরকার গঠন করতে পারলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আমরা করব। ওই আল-বদর রাজাকার, বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের বিচার আবার বাংলার মাটিতে হবে। তিনি বলেন, আপনারা ভোট দিয়েছেন এ জন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আবার বাংলার মাটিতে শুরু হয়েছে। কিন্তু খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে, বাসে আগুন দিয়ে যাত্রীদের মারা হচ্ছে। তিনি বিরোধীদলীয় নেতাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনি যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে পারবেন না, তাদের বিচার এ বাংলার মাটিতেই কার্যকর হবে।’ আজ দেশবাসী শান্তিতে বসবাস করতে পারছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমরা বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড় করাতে সম হয়েছি।’
পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর সভাপতিত্বে জনসভায় অন্যদের বক্তব্য রাখেনÑ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খোন্দকার, আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস, রেলমন্ত্রী মজিবুল হক, বস্ত্রমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম ফারুক খোন্দকার প্রিন্স, প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মির্জা খন্দকার প্রিন্স, পাবনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন, জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি এম সাইদুল হক চুন্নু, সিরাজগঞ্জ-৭ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর সাকিব জয়, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেজাউর রহিম লাল, সহসভাপতি আলহাজ আবদুল হামিদ মাস্টার, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ মোশাররফ হোসেন, সদর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক সোহেল হাসান শাহীন, আওয়ামী লীগ নেতা তসলিম হাসান সুমন প্রমুখ।
এর আগে জনসভায় পাবনার আওয়ামী লীগের প্রবীণ ও প্রাক্তন তিনজন সংসদ সদস্য মো: ওয়াজউদ্দিন খান, অ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেন, অ্যাডভোকেট গোলাম হাসনাইনকে দলের প থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
এর আগে বেড়া থেকে হেলিকপ্টারে করে ১টা ৪০ মিনিটে পাবনা সার্কিট হাউজে এসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। বেড়া পৌর সদরের বৃশালিখা এলাকায় নবনির্মিত ৭০ মেগাওয়াট উৎপাদন মতাসম্পন্ন পিকিং পাওয়ার প্লান্ট ও বেড়া পৌরসভার নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন।
বেলা সাড়ে ৩টায় সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে জনসভাস্থল থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে আরো ১১টি উন্নয়ন কাজ উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।
সিরাজগঞ্জের পিকিং পাওয়ার প্লান্টটি ১০০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হবে : সিরাজগঞ্জ ও উল্লাপাড়া সংবাদদাতা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে যাতে এগিয়ে যেতে পারে সেই ল্য নিয়ে বর্তমান সরকার এগিয়ে যাচ্ছে। দেশবাসীর অনেক প্রত্যাশিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ চলছে। দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করছে। বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী সয়দাবাদে ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্লান্ট উদ্বোধন কালে বলেন, এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পর্যায়ক্রমে ১০০০ মেগাওয়াট মতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রে উন্নীত করা হবে।
শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তে সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদে ১০ একর জমির ওপর প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্লান্ট বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন এবং একই স্থানে আপগ্রেডেশন অব সিরাজগঞ্জ ১৫০ মেগাওয়াট গ্যাস টারবাইন পাওয়ার প্লান্ট টু ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্টের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রী সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় করতোয়া নদীর ওপর ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৪৭ দশমিক ২৯৫ মিটার দীর্ঘ সোনাতলা সড়ক সেতুর উদ্বোধন করেন।
উভয় স্থানে প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য, সাবেক স্বরাষ্ট্র, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস এমপি, পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এমপি, স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডা: আ ফ ম রুহুল হক এমপি, যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি, প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসনবিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) এনামুল হক এমপি, আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সংসদ সদস্য চয়ন ইসলাম, শফিকুল ইসলাম শফি, ইঞ্জিনিয়ার তানভীর শাকিল জয়, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা: হাবিবে মিল্লাত মুন্নাসহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগের পদস্থ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লাপাড়াবাসী হতাশ
উল্লাপাড়া থেকে (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার সোনতলায় উল্লাপাড়া-বেলকুচি সড়কে করতোয়া নদীর ওপর ৫৪.৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর উদ্বোধন শেষে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আবার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছি, সংবিধান সংশোধন করে গণতন্ত্র শক্তিশালী করা হয়েছে। আর্থসামাজিক উন্নয়ন করে মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করেছি, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করেছি।
আমি গোপালগঞ্জের মেয়ে হয়ে সিরাজগঞ্জের উন্নয়নের কাজ করছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলব ওয়াদা দিয়েছিলাম তাই প্রত্যেক ইউনিয়নে তথ্য সেবাকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার প্রতিশ্র“তি চান। তিনি বলেন, নৌকা আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, উন্নয়ন এনে দিয়েছে।
এ দিকে উল্লাপাড়া সলঙ্গা থানাকে উপজেলা করণ, উল্লাপাড়ায় স্টেডিয়াম নির্মাণসহ আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে স্থানীয় এমপি শফিকুল ইসলাম একাধিক দাবি-দাওয়া উত্থাপন করলেও প্রধানমন্ত্রী তার চার মিনিটের ভাষণে সব দাবি-দাওয়া উপেতি হওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেত্রীবৃন্দসহ উল্লাপাড়াবাসী হতাশ।
সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী ডা: খ ম রুহুল হক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসনবিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, স্থানীয় এমপি শফিকুল ইসলাম ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পাবনার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। রেললাইন, প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা মেডিক্যাল কলেজ, বনমালী ইনস্টিটিউট, বেড়া ৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্লান্ট, পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজসহ বিভিন্ন উন্নয়ন হয়েছে। আগামীতে পাবনার রূপপুরে পারমাণবিক কেন্দ্রের কাজ শিগগিরই শুরু করা হবে।’
শানিবার বিকেলে পাবনার এডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধে যারা পাকিস্তানের দোসর ছিল, যারা আমার মা-বোনের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে, গণহত্যা চালিয়েছে, জাতির পিতা তাদের বিচার করেন। কিন্তু ১৫ আগস্টের পর জেনারেল জিয়া মতায় এসে সব বিচারকাজ বন্ধ করে দেয়। সব বন্দীকে মুক্ত করে দেয়। তাদেরকে মন্ত্রী বানায়, রাজনৈতিক মতায় বসায়। অর্ডিন্যান্স জারি করে সংবিধান সংশোধন করে তাদের রাজনৈতিক সুবিধা ভোগের সুযোগ করে দেয়। পরাজিত শক্তিকে পুনর্বাসিত করে রক্তের সাথে বেঈমানি করেছে জিয়া সরকার। অবৈধভাবে মতা দখল করে এ দেশের মানুষের স্বার্থ নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে।’
৩০ মিনিটের এ বক্তব্যে শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘আমরা কথা দিয়েছিলাম, আমরা নির্বাচনী ওয়াদা দিয়েছিলাম যে, সরকার গঠন করতে পারলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আমরা করব। ওই আল-বদর রাজাকার, বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের বিচার আবার বাংলার মাটিতে হবে। তিনি বলেন, আপনারা ভোট দিয়েছেন এ জন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আবার বাংলার মাটিতে শুরু হয়েছে। কিন্তু খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে, বাসে আগুন দিয়ে যাত্রীদের মারা হচ্ছে। তিনি বিরোধীদলীয় নেতাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনি যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে পারবেন না, তাদের বিচার এ বাংলার মাটিতেই কার্যকর হবে।’ আজ দেশবাসী শান্তিতে বসবাস করতে পারছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমরা বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড় করাতে সম হয়েছি।’
পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর সভাপতিত্বে জনসভায় অন্যদের বক্তব্য রাখেনÑ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খোন্দকার, আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস, রেলমন্ত্রী মজিবুল হক, বস্ত্রমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম ফারুক খোন্দকার প্রিন্স, প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মির্জা খন্দকার প্রিন্স, পাবনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন, জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি এম সাইদুল হক চুন্নু, সিরাজগঞ্জ-৭ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর সাকিব জয়, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেজাউর রহিম লাল, সহসভাপতি আলহাজ আবদুল হামিদ মাস্টার, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ মোশাররফ হোসেন, সদর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক সোহেল হাসান শাহীন, আওয়ামী লীগ নেতা তসলিম হাসান সুমন প্রমুখ।
এর আগে জনসভায় পাবনার আওয়ামী লীগের প্রবীণ ও প্রাক্তন তিনজন সংসদ সদস্য মো: ওয়াজউদ্দিন খান, অ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেন, অ্যাডভোকেট গোলাম হাসনাইনকে দলের প থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
এর আগে বেড়া থেকে হেলিকপ্টারে করে ১টা ৪০ মিনিটে পাবনা সার্কিট হাউজে এসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। বেড়া পৌর সদরের বৃশালিখা এলাকায় নবনির্মিত ৭০ মেগাওয়াট উৎপাদন মতাসম্পন্ন পিকিং পাওয়ার প্লান্ট ও বেড়া পৌরসভার নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন।
বেলা সাড়ে ৩টায় সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে জনসভাস্থল থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে আরো ১১টি উন্নয়ন কাজ উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।
সিরাজগঞ্জের পিকিং পাওয়ার প্লান্টটি ১০০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হবে : সিরাজগঞ্জ ও উল্লাপাড়া সংবাদদাতা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে যাতে এগিয়ে যেতে পারে সেই ল্য নিয়ে বর্তমান সরকার এগিয়ে যাচ্ছে। দেশবাসীর অনেক প্রত্যাশিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ চলছে। দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করছে। বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী সয়দাবাদে ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্লান্ট উদ্বোধন কালে বলেন, এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পর্যায়ক্রমে ১০০০ মেগাওয়াট মতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রে উন্নীত করা হবে।
শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তে সিরাজগঞ্জের সয়দাবাদে ১০ একর জমির ওপর প্রায় ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্লান্ট বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন এবং একই স্থানে আপগ্রেডেশন অব সিরাজগঞ্জ ১৫০ মেগাওয়াট গ্যাস টারবাইন পাওয়ার প্লান্ট টু ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্টের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রী সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় করতোয়া নদীর ওপর ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৪৭ দশমিক ২৯৫ মিটার দীর্ঘ সোনাতলা সড়ক সেতুর উদ্বোধন করেন।
উভয় স্থানে প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য, সাবেক স্বরাষ্ট্র, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস এমপি, পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এমপি, স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডা: আ ফ ম রুহুল হক এমপি, যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি, প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসনবিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) এনামুল হক এমপি, আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সংসদ সদস্য চয়ন ইসলাম, শফিকুল ইসলাম শফি, ইঞ্জিনিয়ার তানভীর শাকিল জয়, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা: হাবিবে মিল্লাত মুন্নাসহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগের পদস্থ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লাপাড়াবাসী হতাশ
উল্লাপাড়া থেকে (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার সোনতলায় উল্লাপাড়া-বেলকুচি সড়কে করতোয়া নদীর ওপর ৫৪.৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর উদ্বোধন শেষে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আবার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছি, সংবিধান সংশোধন করে গণতন্ত্র শক্তিশালী করা হয়েছে। আর্থসামাজিক উন্নয়ন করে মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করেছি, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করেছি।
আমি গোপালগঞ্জের মেয়ে হয়ে সিরাজগঞ্জের উন্নয়নের কাজ করছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলব ওয়াদা দিয়েছিলাম তাই প্রত্যেক ইউনিয়নে তথ্য সেবাকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার প্রতিশ্র“তি চান। তিনি বলেন, নৌকা আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, উন্নয়ন এনে দিয়েছে।
এ দিকে উল্লাপাড়া সলঙ্গা থানাকে উপজেলা করণ, উল্লাপাড়ায় স্টেডিয়াম নির্মাণসহ আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে স্থানীয় এমপি শফিকুল ইসলাম একাধিক দাবি-দাওয়া উত্থাপন করলেও প্রধানমন্ত্রী তার চার মিনিটের ভাষণে সব দাবি-দাওয়া উপেতি হওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেত্রীবৃন্দসহ উল্লাপাড়াবাসী হতাশ।
সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী ডা: খ ম রুহুল হক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রশাসনবিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, স্থানীয় এমপি শফিকুল ইসলাম ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।
No comments