পদ্মা সেতু- রঙিন স্বপ্ন ধূসর
অবশেষে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক অধ্যায়ের অবসান ঘটল। সেতু প্রকল্পে ঋণ অনুমোদনের অনুরোধ প্রত্যাহার করে সরকারের তরফেই যবনিকা টানা হলো। বিশ্বব্যাংকও সরকারের অনুরোধ সঙ্গে সঙ্গে আমলে নিল।
অন্য উন্নয়ন সহযোগী জাইকা, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকও (এডিবি) জানিয়ে দিল, তারাও আর এ প্রকল্পে থাকছে না। সম্ভবত আইডিবিও অভিন্ন সিদ্ধান্ত নেবে। পদ্মা স্বপ্নের সেতু। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য এ সেতুর প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। বাস্তবায়িত হলে এ সেতু দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে অন্যান্য অংশের সড়ক ও রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশাল ভূমিকা রাখবে। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হলে সকলে আশায় বুক বেঁধেছিল। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগও সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ক্ষমতায় আসার পর মহাজোট সরকারের মুখ্য বিবেচনায় ছিল পদ্মা সেতু নির্মাণ। অনেক প্রস্তুতি, উদ্যোগ ও আশাবাদ সত্ত্বেও পদ্মা সেতু প্রকল্প এখন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। বিশ্বব্যাংকসহ অন্য উন্নয়ন সহযোগীদের বাদ দিয়ে সেতু প্রকল্পের কাজ শুরু করতে চাইলে সব কাজই নতুন করে শুরু করতে হবে। নিজস্ব ও বিকল্প অর্থায়নে সেতু বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। পদ্মা সেতু নির্মাণ এখন সরকারের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াল। পদ্মা সেতু নিয়ে অনিশ্চয়তায় শুধু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের নয়, সমগ্র জাতির উজ্জ্বল স্বপ্ন ধূসর হয়ে গেল। সেতু নির্মাণে অর্থায়ন নিয়ে বিশ্বব্যাংকের দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সরকার কিংবা বিশ্বব্যাংক কার দায় কতটা_ সেটা নিয়ে বিতর্ক হতেই পারে। পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংকের ভূমিকাও সব পর্যায়ে সন্তোষজনক ছিল না। তারা একের পর এক শর্ত জুড়ে দিয়েছে। সে শর্ত ছিল কখনও স্পষ্ট, কখনও অস্পষ্ট। সেতু প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংকের বিদায়ের পরও জনগণের আশা তিরোহিত হয়নি। তারা এখনও প্রত্যাশা করেন, যেভাবেই হোক সেতু নির্মিত হতে হবে। আর সেতুটি হবে পূর্ণাঙ্গ, বিকলাঙ্গ নয়।
বিশিষ্টজনদের অভিমত হলো, সরকারের তরফে ঋণ অনুমোদনের অনুরোধ প্রত্যাহার সুবিবেচনাপ্রসূত হয়নি। দুদকের মামলা ও অনুসন্ধান প্রক্রিয়ার সঙ্গে বিশ্বব্যাংক ও সরকারের মধ্যে আলোচনার মধ্য দিয়ে যেভাবে বিষয়টি এগোচ্ছিল, তার মাধ্যমেই সমস্যার সুরাহা হতে পারত। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণ সহজসাধ্য হবে না। তাতে দেশের অর্থনীতির ওপর চাপ পড়বে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন। এর ফলে বিদ্যমান অর্থনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। আমরা মনে করি, শুধু সড়ক সংযোগে পদ্মা সেতু কাঙ্ক্ষিত অবদান রাখতে পারবে না। মালয়েশিয়া, চীন ও ভারতের সহায়তায় সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেননা, এসব ক্ষেত্রে যে ঋণ পাওয়া যাবে তাতে বিশ্বব্যাংকের চেয়ে সুদের হার হবে বেশি। পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংক ও তার সহযোগী সংস্থাগুলোর ৮০ ভাগ অর্থ জোগান দেওয়ার কথা ছিল। তাদের অবর্তমানে এই অর্থ জোগানের সূত্র শুধু দেশীয় অর্থায়ন হতে পারে না। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে মিশ্র অর্থায়ন। অর্থ সংগ্রহে জনগণকে সম্পৃক্ত করলে যে অর্থ পাওয়া যাবে তার পরিমাণ খুব বেশি হবে না। সে ক্ষেত্রে বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প কাটছাঁট করে অর্থ সংগ্রহ করতে হতে পারে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজার থেকেও অর্থ সংগ্রহ সম্ভব। আমরা মনে করি, পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্ভাগ্যজনক অভিজ্ঞতা দুঃস্বপ্ন মনে করে সেতুটি নির্মাণে সরকার বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। এই সরকারের আমলেই সেতুর প্রাথমিক কাজ শুরু করা না গেলে মহাজোট সরকারের অঙ্গীকার অপূর্ণ থেকে যাবে।
বিশিষ্টজনদের অভিমত হলো, সরকারের তরফে ঋণ অনুমোদনের অনুরোধ প্রত্যাহার সুবিবেচনাপ্রসূত হয়নি। দুদকের মামলা ও অনুসন্ধান প্রক্রিয়ার সঙ্গে বিশ্বব্যাংক ও সরকারের মধ্যে আলোচনার মধ্য দিয়ে যেভাবে বিষয়টি এগোচ্ছিল, তার মাধ্যমেই সমস্যার সুরাহা হতে পারত। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণ সহজসাধ্য হবে না। তাতে দেশের অর্থনীতির ওপর চাপ পড়বে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন। এর ফলে বিদ্যমান অর্থনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। আমরা মনে করি, শুধু সড়ক সংযোগে পদ্মা সেতু কাঙ্ক্ষিত অবদান রাখতে পারবে না। মালয়েশিয়া, চীন ও ভারতের সহায়তায় সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেননা, এসব ক্ষেত্রে যে ঋণ পাওয়া যাবে তাতে বিশ্বব্যাংকের চেয়ে সুদের হার হবে বেশি। পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংক ও তার সহযোগী সংস্থাগুলোর ৮০ ভাগ অর্থ জোগান দেওয়ার কথা ছিল। তাদের অবর্তমানে এই অর্থ জোগানের সূত্র শুধু দেশীয় অর্থায়ন হতে পারে না। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে মিশ্র অর্থায়ন। অর্থ সংগ্রহে জনগণকে সম্পৃক্ত করলে যে অর্থ পাওয়া যাবে তার পরিমাণ খুব বেশি হবে না। সে ক্ষেত্রে বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প কাটছাঁট করে অর্থ সংগ্রহ করতে হতে পারে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজার থেকেও অর্থ সংগ্রহ সম্ভব। আমরা মনে করি, পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্ভাগ্যজনক অভিজ্ঞতা দুঃস্বপ্ন মনে করে সেতুটি নির্মাণে সরকার বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। এই সরকারের আমলেই সেতুর প্রাথমিক কাজ শুরু করা না গেলে মহাজোট সরকারের অঙ্গীকার অপূর্ণ থেকে যাবে।
No comments