ফিচার- আমাকে ধৌত করল by মুহাম্মদ ফরিদ হাসান

এক. প্রথম মোবাইল কিনে সপ্তাহ তিনেকের প্রচেষ্টায় অবশেষে কল দেওয়া শিখে যাকেতাকে কল দেওয়া শুরু করলাম। দিন পাঁচেকের মাথায় বুঝলাম, কল করে করে টাকার বারোটা বেজে গেছে! এক বন্ধু দারুণ একটা বুদ্ধি বাতলে দিল, যার নাম মিস্ড কল!
এবার আমাকে আর রুখে কে? খেতে, উঠতে-বসতে এবার বন্ধুবান্ধব সবাইকে মিস্ড কল দেওয়া শুরু করলাম। একদিন রেকর্ড গড়তে এক হাজার মিস্ড কল দিলাম। কিন্তু সেদিন বন্ধুবান্ধব সবাই কলব্যাক করে আমাকে সাবান ছাড়াই ধৌত করল! বাড়িওয়ালার মেয়ে তো আরও এক ডিগ্রি ওপরে! বলল, আমি নাকি পাবনা থেকে পালিয়ে আসা পাগল! দুই ঘণ্টার মধ্যে বাসা না ছাড়লে পুলিশ দিয়ে তাড়াবে বলে হুমকিও দিল! আমার অপরাধ, আমি নাকি তাকে এক দিনে ১৪৩টা মিসড কল দিয়েছি! অগত্যা বাসাটা ছেড়ে দিতে হলো।

দুই.
তিন্নির সঙ্গে আমার প্রেম তিন বছরের। মাঝে-মধ্যে ও আমাকে মিসড কল দেয়। সেদিন তিন্নিকে একটা মিস্ড কল দিলাম। খানিক পরে সে কলব্যাক করল। কল রিসিভ করে বললাম, কেমন আছ জানু? আজ আসবে না?
অন্য পাশ থেকে ঝাঁজালো রমণী কণ্ঠস্বর ভেসে এল—অ্যাই ছেলে! বাবা-মা ভদ্রতা শেখায়নি? বদমাশের ধাড়ি কোথাকার! ...এই নম্বরে যদি ফের মিসড কল দিস, তবে জুতিয়ে দেব! কথার ঘোর কাটতেই বুঝতে পারি, তিনি কে! এ নিয়ে ঝগড়া করে তিন্নির সঙ্গে আমার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়!

তিন.
বন্ধুসভার জন্য মিস্ড কলবিষয়ক ফিচার লিখছি। লেখার মাঝখানে আমার বন্ধু তৌফিককে মিসড কল দিলাম। বলে, কিরে মিস্ড কল দিলি যে? বললাম—মিস্ড কলের ওপর ফিচার লিখছি, কীভাবে লেখা যায় বল তো! তৌফিক খেপে যায়।
বলে, মিটিংয়ের জ্বালায় বাঁচি না, উনি আছেন মিস্ড কল নিয়ে! ব্যাটা তোর ফিচার বঙ্গোপসাগরের তলায় যাক, ফের যদি মিস্ড কল দিস, তবে আমার নাম...না!
 চাঁদপুর

No comments

Powered by Blogger.