লোকসভার বর্ষাকালীন অধিবেশন নিয়ে যত জল্পনা-কল্পনা
কংগ্রেস সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশন ডাকবে, নাকি সংসদ ভেঙে দিয়ে শীতকালে অকাল নির্বাচনের পথে হাঁটবে? রাজধানীতে রাজনীতির অলিন্দে এই মুহূর্তের বড় জল্পনা এটাই। জল্পনার প্রধান কারণ, জুলাই মাসের এক-তৃতীয়াংশ কেটে গেলেও সংসদের অধিবেশন ডাকার কোনো লক্ষণ এখনো দেখা যাচ্ছে না। এই জল্পনার পালে আরও বাতাস লাগে অধিকাংশ দলের দাবি অগ্রাহ্য করে কেন্দ্রীয় সরকার খাদ্য সুরক্ষা অধ্যাদেশ জারি করায়। ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সভাপতি রাজনাথ সিং এবং লোকসভার বিরোধী নেত্রী সুষমা স্বরাজ সরাসরি বলেছেন, তাঁদের সন্দেহ, সরকার শীতকালীন ভোটের দিকেই এগোচ্ছে। সে জন্যই খাদ্য সুরক্ষা অর্ডিন্যান্স জারি নিয়ে এত জেদাজেদি। এ কথা ঠিক যে, খাদ্য সুরক্ষা বিল অনায়াসেই বর্ষাকালীন অধিবেশনে পেশ করা যেত। ইউপিএ জোটের মধ্য থেকেও সে বিষয়ে চাপ ছিল। কৃষিমন্ত্রী শারদ পাওয়ার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনিসহ কয়েকজন মন্ত্রী বরাবরই সংসদকে এড়িয়ে অধ্যাদেশ জারির বিরুদ্ধে ছিলেন। কিন্তু সোনিয়া গান্ধী, অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম এবং সংসদীয় মন্ত্রী কমলনাথের উদ্যোগে অধ্যাদেশ জারির পক্ষেই সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয়ে বিজেপি সংসদীয় বোর্ডের মুখপাত্র অনন্ত কুমার বলেছেন, ‘কংগ্রেসের অভিযোগ, বিরোধীরা সংসদ চালাতে দেয়নি বলে তারা অধ্যাদেশ জারিতে বাধ্য হলো। কিন্তু আমরাই তো সংসদে বিল পেশের দাবি জানিয়েছি। কংগ্রেস তা গ্রাহ্য করল না। কারণ, তাদের রাজনৈতিক লক্ষ্যই হলো, এই অধ্যাদেশকে হাতিয়ার করে ভোটে চলে যাওয়া।’ কংগ্রেসের রাজনৈতিক সচিব আহমেদ প্যাটেল অবশ্য এ অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছেন। সাধারণত জুলাই মাসেই চার অথবা পাঁচ সপ্তাহের জন্য লোকসভার অধিবেশন ডাকা হয়। অবশ্য বিভিন্ন কারণে তার ব্যতিক্রমও ঘটে। তবে এবার কেন পেছানো হচ্ছে, তার কোনো যুক্তিগ্রাহ্য কারণ সরকার দেখাতে পারছে না। বলাবলি হচ্ছে, অধ্যাদেশ অনুমোদন করতে প্রয়োজনীয় সমর্থনের বিষয়ে অনিশ্চয়তাই এর পেছনের কারণ। আর এর ভিত্তিতেই বিজেপি তার রাজনৈতিক ব্যাখ্যা দিচ্ছে। রাজনাথ সিংয়ের কথায়, ‘কংগ্রেস ভাবছে, সংসদে অধ্যাদেশ পাস হলে সেটা হাতিয়ার করে তারা সদর্থক ভোট প্রচারে এগোবে, না হলে বিরোধীদের দোষ দিয়ে ভোটারদের মুখোমুখি হবে।’ এখন পর্যন্ত অধিবেশনের তারিখ নিয়ে সরকারের টালবাহানা অব্যাহত।
No comments