রমজানে কোরআন তেলাওয়াত by মুফতি এনায়েতুল্লাহ
রোজার অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর
নৈকট্য অর্জন। তাই আমাদের উচিত হলো এ মাসে বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগি করা।
রোজা পালন ও নামাজ আদায়ের পাশাপাশি কোরআন তেলাওয়াতে মনোযোগী হওয়া।
রমজান
কোরআন নাজিলের মাস। এ জন্য রমজান মাসে কোরআন তেলাওয়াত ও অনুশীলনের ফজিলত
অপরিসীম। ঐচ্ছিক ইবাদতগুলোর মধ্যে কোরআন তেলাওয়াত সর্বোৎকৃষ্ট। রমজানে
কোরআন তেলাওয়াতের ফজিলত সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন,
'তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোরআন শিক্ষা করে এবং অপরকে তা শিক্ষা দেয়, সেই
সর্বোত্তম।'-বুখারি
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজে রমজান মাসে কোরআন তেলাওয়াত করতেন। প্রতি রমজানে ফেরেশতা হজরত জিবরাইল (আ.) বারবার হজরত রাসূলুল্লাহর (সা.) কাছে কোরআন (শোনাতেন) পুনরাবৃত্তি করতেন। এ সম্পর্কে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, 'রমজান মাসের প্রতি রাতে হজরত জিবরাইল (আ.) হজরত রাসূলুল্লাহর (সা.) খেদমতে হাজির হতেন এবং তারা উভয়ই কোরআনে কারিম তেলাওয়াত করে একে অপরকে শোনাতেন।'-বুখারি
আমরা জানি, কোরআনে কারিম হলো সব ধরনের জ্ঞান-বিজ্ঞানের ভাণ্ডার। তাই জ্ঞানার্জনের জন্য অর্থ বুঝে কোরআন তেলাওয়াত করা দরকার। হাদিসে নববীতে আছে, 'যদি কেউ আল্লাহতায়ালার সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছা পোষণ করে, তাহলে সে যেন কোরআন তেলাওয়াত করে।' হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, 'যে ব্যক্তি কোরআনের একটি অক্ষর পাঠ করে, সে একটি নেকি পায়, আর প্রতিটি নেকি ১০টি নেকির সমান।'-তিরমিজি
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) অন্যত্র আরও বলেছেন, 'অন্তরের কলুষতা পরিষ্কার করার উপায় হলো বেশি বেশি মৃত্যুকে স্মরণ করা এবং কোরআন তেলাওয়াত করা।'-মিশকাত
কোরআনে কারিম রমজান মাসের 'লাইলাতুল কদর'-এ অবতীর্ণ হয়। কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার শুরু থেকে কিয়ামত অবধি অপরিবর্তিত ও পূর্ণাঙ্গ সুসংরক্ষিত থাকা কোরআনে কারিমের এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। কোরআন হেদায়েতপ্রাপ্তির আলোকবর্তিকা। যে যত বেশি কোরআনের আলোয় আলোকিত হবে, সে তত বেশি সফলকাম হবে।
রমজান মাসের সঙ্গে কোরআনে কারিমের একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এ জন্য ওলামায়ে কেরাম, বুজুর্গানে দ্বীন এবং পীর-মাশায়েখরা এ মাসে অধিক পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করতেন। ইসলামের তৃতীয় খলিফা হজরত ওসমান (রা.) প্রতিদিন একবার কোরআন খতম দিতেন। উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়েশা (রা.) রমজানে সুবহে সাদিকের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত কোরআন তেলাওয়াত করতেন। হজরত ইমাম আবু হানিফা (রহ.) দিনে এক খতম, রাতে এক খতম, তারাবি নামাজে এক খতম আর আউয়াবিন নামাজে এক খতম_ এভাবে প্রতি রমজানে ৬২ খতম কোরআন তেলাওয়াত করতেন।
আমাদের পূর্ববর্তী বুজুর্গদের আমলই হলো আমাদের ইবাদত-বন্দেগির মাপকাঠি। সেই মাপকাঠির আলোকে রমজানে সঠিক ও বিশুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াতে অভ্যস্ত হতে হবে। কোরআন তেলাওয়াত, মুখস্থ ও এর আলোকে জীবন গড়ার ফজিলত সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, 'যে ব্যক্তি কোরআন তেলাওয়াত করে এবং তদনুসারে আমল করে, কিয়ামতের দিন তার পিতা-মাতাকে এমন এক উজ্জ্বল মুকুট পরানো হবে, যা দুনিয়ায় কোনো ঘরের মধ্যে অবস্থানরত সূর্যালোকের চেয়ে অধিক উজ্জ্বলতর হবে।'-আবু দাউদ
অতএব, কোরআনে কারিমের অন্তর্নিহিত মর্মবাণী বুঝতে রমজানে কোরআন তেলাওয়াত অন্যান্য মাসের চেয়ে বাড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন। মূলত, কোরআন শুধু রমজানেই নয়, সারা বছরই নিয়মিত তেলাওয়াত করা উচিত। তারপরও রমজানে তেলাওয়াতের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় এ কারণে যে, রমজানের যে কোনো ধরনের ইবাদত-বন্দেগিতে অন্য সময়ের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি নেকি হাসিল হয়। তাই রমজান মাসে রোজাদার মুমিন বান্দারা কোরআন তেলাওয়াতে বেশি মনোযোগী হয়ে থাকেন।
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় কোরআন শিক্ষার তেমন কোনো সুযোগ নেই। ফলে কোরআন শিখতে হয় পারিবারিক উদ্যোগে, অনেকটা দায়সারাভাবে। মুসলমান জাতি হিসেবে এটা আমাদের জন্য খুব সুখকর চিত্র নয়। এরপরও আশার কথা হলো, বাংলাদেশের প্রত্যেক মুসলমানই কোরআনের কিছু পরিমাণ তেলাওয়াতে সক্ষম। যদিও সবার পক্ষে কোরআন হিফ্জ করা সম্ভব নয়, তথাপি সাধ্যমতো গুরুত্বপূর্ণ সূরাগুলো বা সূরার অংশবিশেষ অর্থ বুঝে সহি-শুদ্ধভাবে মুখস্থ করার চেষ্টা করা সবার কর্তব্য। কারণ, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, 'রোজা ও কোরআন কিয়ামতের দিন মানুষের জন্য সুপারিশ করবে।'
সঁভঃরধহধবঃ@মসধরষ.পড়স
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজে রমজান মাসে কোরআন তেলাওয়াত করতেন। প্রতি রমজানে ফেরেশতা হজরত জিবরাইল (আ.) বারবার হজরত রাসূলুল্লাহর (সা.) কাছে কোরআন (শোনাতেন) পুনরাবৃত্তি করতেন। এ সম্পর্কে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, 'রমজান মাসের প্রতি রাতে হজরত জিবরাইল (আ.) হজরত রাসূলুল্লাহর (সা.) খেদমতে হাজির হতেন এবং তারা উভয়ই কোরআনে কারিম তেলাওয়াত করে একে অপরকে শোনাতেন।'-বুখারি
আমরা জানি, কোরআনে কারিম হলো সব ধরনের জ্ঞান-বিজ্ঞানের ভাণ্ডার। তাই জ্ঞানার্জনের জন্য অর্থ বুঝে কোরআন তেলাওয়াত করা দরকার। হাদিসে নববীতে আছে, 'যদি কেউ আল্লাহতায়ালার সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছা পোষণ করে, তাহলে সে যেন কোরআন তেলাওয়াত করে।' হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, 'যে ব্যক্তি কোরআনের একটি অক্ষর পাঠ করে, সে একটি নেকি পায়, আর প্রতিটি নেকি ১০টি নেকির সমান।'-তিরমিজি
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) অন্যত্র আরও বলেছেন, 'অন্তরের কলুষতা পরিষ্কার করার উপায় হলো বেশি বেশি মৃত্যুকে স্মরণ করা এবং কোরআন তেলাওয়াত করা।'-মিশকাত
কোরআনে কারিম রমজান মাসের 'লাইলাতুল কদর'-এ অবতীর্ণ হয়। কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার শুরু থেকে কিয়ামত অবধি অপরিবর্তিত ও পূর্ণাঙ্গ সুসংরক্ষিত থাকা কোরআনে কারিমের এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। কোরআন হেদায়েতপ্রাপ্তির আলোকবর্তিকা। যে যত বেশি কোরআনের আলোয় আলোকিত হবে, সে তত বেশি সফলকাম হবে।
রমজান মাসের সঙ্গে কোরআনে কারিমের একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এ জন্য ওলামায়ে কেরাম, বুজুর্গানে দ্বীন এবং পীর-মাশায়েখরা এ মাসে অধিক পরিমাণে কোরআন তেলাওয়াত করতেন। ইসলামের তৃতীয় খলিফা হজরত ওসমান (রা.) প্রতিদিন একবার কোরআন খতম দিতেন। উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়েশা (রা.) রমজানে সুবহে সাদিকের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত কোরআন তেলাওয়াত করতেন। হজরত ইমাম আবু হানিফা (রহ.) দিনে এক খতম, রাতে এক খতম, তারাবি নামাজে এক খতম আর আউয়াবিন নামাজে এক খতম_ এভাবে প্রতি রমজানে ৬২ খতম কোরআন তেলাওয়াত করতেন।
আমাদের পূর্ববর্তী বুজুর্গদের আমলই হলো আমাদের ইবাদত-বন্দেগির মাপকাঠি। সেই মাপকাঠির আলোকে রমজানে সঠিক ও বিশুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াতে অভ্যস্ত হতে হবে। কোরআন তেলাওয়াত, মুখস্থ ও এর আলোকে জীবন গড়ার ফজিলত সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, 'যে ব্যক্তি কোরআন তেলাওয়াত করে এবং তদনুসারে আমল করে, কিয়ামতের দিন তার পিতা-মাতাকে এমন এক উজ্জ্বল মুকুট পরানো হবে, যা দুনিয়ায় কোনো ঘরের মধ্যে অবস্থানরত সূর্যালোকের চেয়ে অধিক উজ্জ্বলতর হবে।'-আবু দাউদ
অতএব, কোরআনে কারিমের অন্তর্নিহিত মর্মবাণী বুঝতে রমজানে কোরআন তেলাওয়াত অন্যান্য মাসের চেয়ে বাড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন। মূলত, কোরআন শুধু রমজানেই নয়, সারা বছরই নিয়মিত তেলাওয়াত করা উচিত। তারপরও রমজানে তেলাওয়াতের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় এ কারণে যে, রমজানের যে কোনো ধরনের ইবাদত-বন্দেগিতে অন্য সময়ের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি নেকি হাসিল হয়। তাই রমজান মাসে রোজাদার মুমিন বান্দারা কোরআন তেলাওয়াতে বেশি মনোযোগী হয়ে থাকেন।
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় কোরআন শিক্ষার তেমন কোনো সুযোগ নেই। ফলে কোরআন শিখতে হয় পারিবারিক উদ্যোগে, অনেকটা দায়সারাভাবে। মুসলমান জাতি হিসেবে এটা আমাদের জন্য খুব সুখকর চিত্র নয়। এরপরও আশার কথা হলো, বাংলাদেশের প্রত্যেক মুসলমানই কোরআনের কিছু পরিমাণ তেলাওয়াতে সক্ষম। যদিও সবার পক্ষে কোরআন হিফ্জ করা সম্ভব নয়, তথাপি সাধ্যমতো গুরুত্বপূর্ণ সূরাগুলো বা সূরার অংশবিশেষ অর্থ বুঝে সহি-শুদ্ধভাবে মুখস্থ করার চেষ্টা করা সবার কর্তব্য। কারণ, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, 'রোজা ও কোরআন কিয়ামতের দিন মানুষের জন্য সুপারিশ করবে।'
সঁভঃরধহধবঃ@মসধরষ.পড়স
No comments