মন্ত্রিসভায় ব্রাদারহুডকেও রাখতে চাই
মন্ত্রিসভায় উদারপন্থীদের পাশাপাশি
মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতারাও থাকতে পারেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
হাজেম আল-বেবলাউয়ি। তিনি এখনো অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রিসভা গঠনের
চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্তর্বর্তী সরকারে অংশগ্রহণের বিষয়টি আগেই নাকচ
করেছে ব্রাদারহুড। গতকাল বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হাজেম
আল-বেবলাউয়ি বলেন, মন্ত্রিসভার সদস্য বাছাইয়ে দক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাকেই
প্রাধান্য দেবেন তিনি। বেবলাউয়ি বলেন, ‘মন্ত্রিসভা গঠনে আমি কোনো
রাজনৈতিক দলের দিকে তাকাব না...ব্রাদারহুডের ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস
পার্টির কারও নাম এলে এবং তিনি যোগ্য হলে মন্ত্রিসভার জন্য তাঁর নাম
বিবেচনা করা হবে।...আমি সরকার গঠনের ক্ষেত্রে দুটি বিষয়কে প্রাধান্য
দিচ্ছি। তা হলো দক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা।’ এদিকে আজ শুক্রবার জুমার নামাজের
পর কায়রোতে গণসমাবেশের ডাক দিয়েছে মুরসি-সমর্থক ইসলামপন্থীরা। সরকারে
অংশ নেওয়ার বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে তাহরির স্কয়ারে গণসমাবেশ করবে
ব্রাদারহুড। সংগঠনটির নেতা মোহাম্মদ বাদির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
জারির পর তাঁকে খুঁজছে পুলিশ। মিসরের বিচার বিভাগের অভিযোগ, বাদি ও
ব্রাদারহুডের জ্যেষ্ঠ নেতারা অভ্যুত্থানের পরের সহিংসতার ঘটনায় জড়িত।
ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মুরসির সমর্থকেরা গত বুধবার সন্ধ্যার পর নাসর শহরে
বিক্ষোভ করেন। তাঁরা বন্দী মুরসিকে জনসমক্ষে আনার দাবি জানান। বিক্ষোভে
অংশ নেওয়া মোহাম্মদ (৪৭) বলেন, ‘আমরা মুরসির জন্য এখানে হাজির হয়েছি। আমি
তাঁকে ভোট দিয়েছি। আমি জানতে চাই, তিনি কোথায় আছেন।’মিসরের পররাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বদর আবদেলাতি বুধবার জানান, মুরসির নিরাপত্তার কথা
বিবেচনা করে তাঁকে নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে
কোনো অভিযোগ আনা হয়নি। এদিকে মিসরের সার্বিক পরিস্থিতিতে দেশটিতে মার্কিন
সহায়তা পর্যালোচনা করে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
গত বুধবার পেন্টাগনের এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়,
মিসরে সহায়তা দেওয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও সংস্থাগুলোকে
বিষয়টি পর্যালোচনা করার নির্দেশে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। মিসর
যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বছরে দেড় শ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা পেয়ে
থাকে। এফ ১৬ দেওয়া হবে: গত বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স মার্কিন
কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানায়, মিসরের বর্তমান পরিস্থিতি সত্ত্বেও কয়েক
সপ্তাহের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র আগের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চারটি এফ-১৬ জঙ্গি
বিমান সরবরাহ করবে। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, আগামী
মাসে বিমানগুলো সরবরাহ করার সম্ভাবনা রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে
মার্কিন এক কর্মকর্তা জানান, মিসরের পরিস্থিতি যা-ই হোক, সেটা বিবেচনায়
নিয়ে বিমান সরবরাহের সময় পরিবর্তন করা হবে না। এফএওর শঙ্কা: জাতিসংঘের
কৃষি ও খাদ্য সংস্থা (এফএও) মিসরে সহিংসতা এবং বিদেশি মুদ্রার মজুতের
পরিমাণ সংকটজনক পর্যায়ে থাকার কারণে দেশটির খাদ্যনিরাপত্তা নিয়ে সংশয়
প্রকাশ করেছে। গতকাল এক প্রতিবেদনে এই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। রয়টার্স
ক্ষমতাচ্যুত সরকারের এক মন্ত্রীর বরাত দিয়ে জানায়, মিসরে মাত্র পাঁচ লাখ
টন গম মজুত রয়েছে, যা খাদ্যনিরাপত্তার ক্ষেত্রে ঝুঁকির আভাস বলে বিবেচনা
করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, বিশ্বের বৃহত্তম গম আমদানিকারক দেশ মিসর। এএফপি,
বিবিসি, রয়টার্স।
No comments