রাজনীতি-গাজীপুর নির্বাচন ও একটি পর্যালোচনা by নুরুল ইসলাম বিএসসি
গাজীপুর নির্বাচন ও ১৪ দলীয় প্রার্থীর
পরাজয় নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলছেন। এটিকে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগাম
সংকেতও বলছেন অনেকে। আমি তাদের সঙ্গে একমত পোষণ করি না।
এ
জন্যই করি না যে, নির্বাচনে যেসব কৌশল থাকে ওই কৌশল প্রয়োগ না করার
কারণেই পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। প্রথমে বলি, জাহাঙ্গীরকে নির্বাচন থেকে সরে
যেতে বলা বাস্তবসম্মত হয়নি। জাহাঙ্গীর নির্বাচন করলে ত্রিমুখী লড়াইয়ে
মহাজোট প্রার্থী বেরিয়ে আসতেন সহজে।
জাহাঙ্গীরের চোখের পানি তার কর্মী-সমর্থকদের প্রভাবিত করেছে। এরা প্রতিশোধ নেওয়ার মানসে মান্নানকে ভোট দিয়েছেন। যেসব দলীয় নেতাকে ওখানে নির্বাচনী প্রচারণায় লাগানো হয়েছে, একজন ছাড়া বাকিদের কেউ চিনেন না। যারা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেছেন, এদের হাতে কোনো কর্মপরিকল্পনা ছিল না। শুধু খবরের শিরোনাম এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় নিজের ছবি দেখানোর জন্যই মাঠে ছিলেন। চট্টগ্রামের পরাজিত মেয়রের ওখানে কাজ কী? খামাকা জটলার সৃষ্টি ছাড়া কোনো কাজ হয়েছে কি? হয়নি। এরশাদ সাহেবের ভূমিকাও রহস্যজনক। পরস্পরবিরোধী কথা, একজনকে দোয়া অন্যজনকে সমর্থন দিয়ে নিজে কী অর্জন করলেন বোঝা মুশকিল। তবে ১৪ দলে থেকে ১৪ দলের বিপক্ষে কথা বলে তিনি আবারও প্রমাণ করলেন যে, তার চরিত্রের দৃঢ়তা নেই। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যা হারিয়েছে তার চেয়ে বেশি হারিয়েছে জাতীয় পার্টি। এরশাদ সাহেব এখন বলছেন, তিনি সমর্থন না দিলে ১৪ দলীয় প্রার্থী আরও বেশি ভোটে পরাজিত হতেন। অর্থাৎ সমর্থন
দিয়ে তিনি আওয়ামী লীগকে ঋণী করেছেন।
'শৈবাল দীঘিরে বলে উচ্চ করে শির
লিখে রাখ এক বিন্দু দিলেম শিশির।'
পাঠক বুঝে নেবেন আমার কথার মমার্থ। রনির একটি প্রতিবেদনে জেনেছি, নির্বাচনে প্রয়োজনীয় টাকা ব্যয় করতে ১৪ দলীয় প্রার্থী ব্যর্থ হয়েছেন। রনি আরও প্রশ্ন তুলেছেন, যারা সমুদ্রগামী মৎস্য আহরণের জাহাজ পেয়েছেন, যারা সরকারি সমর্থনে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে শুরু করে হাজারো সুযোগ পেয়েছিলেন, সামান্য সাহায্য করতেও এরা এগিয়ে আসেননি। প্রশ্ন জাগে, সরকার এদের সুযোগ-সুবিধাগুলো দিলেন কেন? দিয়ে জনসমাজের বিরাট ভাজনওবা হলো কেন?
যারা জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আগাম আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, এরা খামাকা আকাশ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন, পা উপরে দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ছাড়া অন্য দল, বিশেষ করে জাপা থাকবে। সুতরাং চতুর্মুখী নির্বাচন নিয়ে কথা বলার সময় এখনও আসেনি। নির্বাচন হলে এখনও গ্রামগঞ্জের মানুষ আওয়ামী লীগকেই বেঁছে নেবে। এরা জানে, গ্রামে শান্তিতে থাকতে হলে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই।
গণতন্ত্রের জয় অব্যাহত থাকুক, এটাই সবাই চায়। এ মুহূর্তে সুশীল সমাজ, টক শোর নেতারা যেভাবে উপস্থাপনা করছেন, আমাদের আশঙ্কা, গণতন্ত্রই নস্যাৎ হয়ে যাবে। বিএনপি একা ক্ষমতায় এলে, কারও আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু বিএনপির ঘাড়ে এখন জামায়াত ও হেফাজতিরা সওয়ারি। এরা দেশটিকে প্রগতির স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে চায়। এখানেই সবার আপত্তি। আল্লামা শফীর সাম্প্রতিক ঘোষণা অনেকে শুনে থাকবেন। মহিলাদের তেঁতুলের সঙ্গে তুলনা, তাদের পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করার পরামর্শ, ১৩ দফা দাবির পুনরাবৃত্তি এ দেশের মানুষের জন্য দুঃখজনক সংবাদ। এরা দেশটিকে আইয়ামে জাহিলিয়াতের দিকে নিয়ে যেতে চায়।
হেফাজতিরা গণহত্যার যে মিথ্যা প্রচারণায় নেমেছে, সুশীল সমাজ, প্রগতিশীল ব্যক্তিরা কি তা বিশ্বাস করেন? নিশ্চয়ই করেন না। যদি ২০০০-২৫০০ লোক মারা যেত, এদের লিস্ট, এদের নাম-ঠিকানা নিয়ে তাদের আত্মীয়স্বজন নিশ্চয়ই সোচ্চার হতেন। যদি ধরে নিই, এরা এতিম, এদের কেউ নেই, কিন্তু যে মাদ্রাসায় পড়ত ওখানে তো তাদের নাম-ঠিকানা আছে। কই কোনো মাদ্রাসা এখন পর্যন্ত নিখোঁজ কারও নাম-ঠিকানা প্রকাশ করেনি। কোরআন হাতে নিয়ে যারা মিথ্যাচার করছে, ক্ষমতা পেলে এরা যে এজিদ বাহিনীর মতো উল্লাসে মত্ত হবে, এর কোনো ভুল নেই। বিএনপি এদেরই নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়। বর্তমান সরকারের ভুলত্রুটি নেই বলছি না। কিন্তু ভুলের চেয়ে শুদ্ধ কাজ তো অনেক বেশি আছে। শুদ্ধ কাজগুলোর পরিবর্তে ভুলগুলোকেই বারবার জনসমক্ষে আনা হয়। এটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরিপন্থী ও উদ্দেশ্যমূলক। সরকার এ অপপ্রচারগুলো মোকাবেলা করার দায়িত্ব যাদের দিয়েছে, এদের নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন আছে। একটু রদবদল করলেই পরিস্থিতি ঘুরে যেতে পারে। এ মুহূর্তে নির্বাচন হলে কোন দল ক্ষমতায় যাবে এটা নির্ভর করবে দেশের জনগণের ওপর। জনগণকে সঠিক তথ্য দেওয়া সুশীল সমাজের কাজ। আগামীতে গণতন্ত্র টিকে থাকবে কি-না, দেশ আধুনিক পৃথিবীর স্রোতে থাকবে, না আলাদা হয়ে যাবে_ এটাও নির্ভর করছে ভোটারদের ওপর। ভোটার যা চায় তাই হবে আগামীতে। গাজীপুরের নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের সংকেত নয়, একথা কিন্তু দৃঢ়ভাবে বলা যায়।
সংসদ সদস্য
জাহাঙ্গীরের চোখের পানি তার কর্মী-সমর্থকদের প্রভাবিত করেছে। এরা প্রতিশোধ নেওয়ার মানসে মান্নানকে ভোট দিয়েছেন। যেসব দলীয় নেতাকে ওখানে নির্বাচনী প্রচারণায় লাগানো হয়েছে, একজন ছাড়া বাকিদের কেউ চিনেন না। যারা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেছেন, এদের হাতে কোনো কর্মপরিকল্পনা ছিল না। শুধু খবরের শিরোনাম এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় নিজের ছবি দেখানোর জন্যই মাঠে ছিলেন। চট্টগ্রামের পরাজিত মেয়রের ওখানে কাজ কী? খামাকা জটলার সৃষ্টি ছাড়া কোনো কাজ হয়েছে কি? হয়নি। এরশাদ সাহেবের ভূমিকাও রহস্যজনক। পরস্পরবিরোধী কথা, একজনকে দোয়া অন্যজনকে সমর্থন দিয়ে নিজে কী অর্জন করলেন বোঝা মুশকিল। তবে ১৪ দলে থেকে ১৪ দলের বিপক্ষে কথা বলে তিনি আবারও প্রমাণ করলেন যে, তার চরিত্রের দৃঢ়তা নেই। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যা হারিয়েছে তার চেয়ে বেশি হারিয়েছে জাতীয় পার্টি। এরশাদ সাহেব এখন বলছেন, তিনি সমর্থন না দিলে ১৪ দলীয় প্রার্থী আরও বেশি ভোটে পরাজিত হতেন। অর্থাৎ সমর্থন
দিয়ে তিনি আওয়ামী লীগকে ঋণী করেছেন।
'শৈবাল দীঘিরে বলে উচ্চ করে শির
লিখে রাখ এক বিন্দু দিলেম শিশির।'
পাঠক বুঝে নেবেন আমার কথার মমার্থ। রনির একটি প্রতিবেদনে জেনেছি, নির্বাচনে প্রয়োজনীয় টাকা ব্যয় করতে ১৪ দলীয় প্রার্থী ব্যর্থ হয়েছেন। রনি আরও প্রশ্ন তুলেছেন, যারা সমুদ্রগামী মৎস্য আহরণের জাহাজ পেয়েছেন, যারা সরকারি সমর্থনে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে শুরু করে হাজারো সুযোগ পেয়েছিলেন, সামান্য সাহায্য করতেও এরা এগিয়ে আসেননি। প্রশ্ন জাগে, সরকার এদের সুযোগ-সুবিধাগুলো দিলেন কেন? দিয়ে জনসমাজের বিরাট ভাজনওবা হলো কেন?
যারা জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আগাম আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, এরা খামাকা আকাশ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন, পা উপরে দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ছাড়া অন্য দল, বিশেষ করে জাপা থাকবে। সুতরাং চতুর্মুখী নির্বাচন নিয়ে কথা বলার সময় এখনও আসেনি। নির্বাচন হলে এখনও গ্রামগঞ্জের মানুষ আওয়ামী লীগকেই বেঁছে নেবে। এরা জানে, গ্রামে শান্তিতে থাকতে হলে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই।
গণতন্ত্রের জয় অব্যাহত থাকুক, এটাই সবাই চায়। এ মুহূর্তে সুশীল সমাজ, টক শোর নেতারা যেভাবে উপস্থাপনা করছেন, আমাদের আশঙ্কা, গণতন্ত্রই নস্যাৎ হয়ে যাবে। বিএনপি একা ক্ষমতায় এলে, কারও আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু বিএনপির ঘাড়ে এখন জামায়াত ও হেফাজতিরা সওয়ারি। এরা দেশটিকে প্রগতির স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে চায়। এখানেই সবার আপত্তি। আল্লামা শফীর সাম্প্রতিক ঘোষণা অনেকে শুনে থাকবেন। মহিলাদের তেঁতুলের সঙ্গে তুলনা, তাদের পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করার পরামর্শ, ১৩ দফা দাবির পুনরাবৃত্তি এ দেশের মানুষের জন্য দুঃখজনক সংবাদ। এরা দেশটিকে আইয়ামে জাহিলিয়াতের দিকে নিয়ে যেতে চায়।
হেফাজতিরা গণহত্যার যে মিথ্যা প্রচারণায় নেমেছে, সুশীল সমাজ, প্রগতিশীল ব্যক্তিরা কি তা বিশ্বাস করেন? নিশ্চয়ই করেন না। যদি ২০০০-২৫০০ লোক মারা যেত, এদের লিস্ট, এদের নাম-ঠিকানা নিয়ে তাদের আত্মীয়স্বজন নিশ্চয়ই সোচ্চার হতেন। যদি ধরে নিই, এরা এতিম, এদের কেউ নেই, কিন্তু যে মাদ্রাসায় পড়ত ওখানে তো তাদের নাম-ঠিকানা আছে। কই কোনো মাদ্রাসা এখন পর্যন্ত নিখোঁজ কারও নাম-ঠিকানা প্রকাশ করেনি। কোরআন হাতে নিয়ে যারা মিথ্যাচার করছে, ক্ষমতা পেলে এরা যে এজিদ বাহিনীর মতো উল্লাসে মত্ত হবে, এর কোনো ভুল নেই। বিএনপি এদেরই নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়। বর্তমান সরকারের ভুলত্রুটি নেই বলছি না। কিন্তু ভুলের চেয়ে শুদ্ধ কাজ তো অনেক বেশি আছে। শুদ্ধ কাজগুলোর পরিবর্তে ভুলগুলোকেই বারবার জনসমক্ষে আনা হয়। এটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরিপন্থী ও উদ্দেশ্যমূলক। সরকার এ অপপ্রচারগুলো মোকাবেলা করার দায়িত্ব যাদের দিয়েছে, এদের নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন আছে। একটু রদবদল করলেই পরিস্থিতি ঘুরে যেতে পারে। এ মুহূর্তে নির্বাচন হলে কোন দল ক্ষমতায় যাবে এটা নির্ভর করবে দেশের জনগণের ওপর। জনগণকে সঠিক তথ্য দেওয়া সুশীল সমাজের কাজ। আগামীতে গণতন্ত্র টিকে থাকবে কি-না, দেশ আধুনিক পৃথিবীর স্রোতে থাকবে, না আলাদা হয়ে যাবে_ এটাও নির্ভর করছে ভোটারদের ওপর। ভোটার যা চায় তাই হবে আগামীতে। গাজীপুরের নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের সংকেত নয়, একথা কিন্তু দৃঢ়ভাবে বলা যায়।
সংসদ সদস্য
No comments