শেয়ারবাজারের অল্প স্বল্প গল্প by শওকত হোসেন
দুই ভাইয়ের গল্প দিয়ে লেখাটা শুরু করি। তারা খুবই গরিব। তাদের মা মুড়ি ভেজে মোয়া বানান, সেই মোয়া বাজারে বিক্রি করে সংসার চালান। একদিন মা অসুস্থ হয়ে পড়লেন, দুই ভাইকে ডেকে হাটে গিয়ে মোয়া বিক্রি করতে বললেন।
তারপর মা বলে দিলেন একটা মোয়া দুই টাকা করে বিক্রি করতে হবে। মা মোয়ার ব্যাগ বড় ভাইয়ের হাতে দিয়ে আরও দুই টাকা দিয়ে বললেন, ‘এটা হলো পথখরচ। রাস্তায় ক্ষুধা লাগলে কিছু কিনে খাস।’
তারপর মা বলে দিলেন একটা মোয়া দুই টাকা করে বিক্রি করতে হবে। মা মোয়ার ব্যাগ বড় ভাইয়ের হাতে দিয়ে আরও দুই টাকা দিয়ে বললেন, ‘এটা হলো পথখরচ। রাস্তায় ক্ষুধা লাগলে কিছু কিনে খাস।’
এক ব্যাগ মোয়া নিয়ে রওনা দিল দুই ভাই। পথে লাগল ক্ষুধা। বড় ভাই ছোট ভাইকে বলল, দুই টাকা আছে, এই টাকা অন্যকে দিয়ে কী হবে। তার চেয়ে তোমাকে আমি দেই, তুই আমাকে একটা মোয়া দাও।
ছোট ভাই একটা মোয়া দিল। দুই টাকা এখন ছোট ভাইয়ের কাছে। একটু পর সে বলল, ভাই, আপনাকে আমি দুই টাকা দেই, আমাকে একটা মোয়া দেন। বড় ভাই দিল একটা মোয়া।
তারা হাঁটছে। আবার লাগল ক্ষুধা। এবার বড় ভাই বলল, তোমাকে আমি দুই টাকা দেই, আমাকে একটা মোয়া দাও। ছোট ভাই দিল মোয়া, আর নিল দুই টাকা।
একটু পর, এবার ছোট ভাই বলল, ভাই, আমি এবার দুই টাকা দেই, আমাকে একটা মোয়া দেও। বড় ভাই দুই টাকা নিয়ে ছোটকে একটা মোয়া দিল।
এবার বড় ভাইয়ের পালা। সেই দুই টাকা ছোটটাকে দিয়ে আবার একটা মোয়া নিল।
এ রকম এ রকম করতে করতে দুই ভাই যখন বাজারে পৌঁছাল, তখন মোয়ার ব্যাগ পুরো খালি, আর হাতে কেবল দুই টাকা।
বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের অবস্থা দুই ভাইয়ের মতোই। বলা যায় অবস্থা খারাপও হয়। কেননা, দিন শেষে ওই দুই টাকাও হাতে থাকে না।
শেয়ারবাজারের ভাষায় এই দুই টাকা হলো ফেসভেলু। এর বাংলা হচ্ছে আপাত মূল্য বা অভিহিত মূল্য। আবার আঙ্কিক মূল্যও বলা যায়। কোনো বিক্রেতা যদি একটি দ্রব্যের প্রতি এককের জন্য পাঁচ টাকা দাম নির্ধারণ করে, কিন্তু বাজারের চাহিদার প্রভাবে তার দাম হয় ১০ টাকা, সে ক্ষেত্রে পাঁচ টাকা হবে আপাত বা অভিহিত মূল্য আর ১০ টাকা হবে বাজারমূল্য। শেয়ারবাজারের ক্ষেত্রে অভিহিত মূল্য হচ্ছে যে দামে শেয়ারটি বাজারে ছাড়া হয়েছে, সেই দামটি।
গল্পের দুই ভাই অভিহিত মূল্য ধরে রেখেছে ঠিকই, কিন্তু তাদের পক্ষে সেই দুই টাকা নিয়ে ঘরে ফেরা মুশকিল। কেননা, বাজারে যেতে হলে নিয়মকানুন জেনে ও মেনেই যেতে হয়। না জানলে প্রতি পদে বিপদ। আর বিপদ ঘটানোর জন্য একজন ভাই-ই যথেষ্ট। মনে রাখতে হবে শেয়ারবাজারজুড়ে আছে এ রকম অনেক ভাই। ভাই বলাটাই কিন্তু ভালো। সেই গল্পটা জানেন তো? বন্ধু বেছে নেওয়া যায়, কিন্তু ভাই অনিবার্য। সুতরাং একবার যদি আপনি শেয়ারবাজারে ঢুকে পড়েন, তাহলে অনিবার্য এ রকম ভাই অনেক পাবেন। আর যদি আপনি বুদ্ধিমান হন, নিয়মকানুন জেনে আসেন, তাহলে বেছে নেওয়ার সুযোগ অনেক পাবেন। তাতে লাভবানও হবেন।
বলছিলাম অভিহিত মূল্য নিয়ে। অবশ্য এটা নিয়ে শেখানোর কিছু নেই। অভিহিত মূল্য কাকে বলে সবাই জানেন। এটা তো সবাই জানি। কারণ, এখন তো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা প্রতিদিনই ক্যালকুলেটর নিয়ে হিসাব কষে দেখেন অভিহিত মূল্য কত কমল।
অভিহিত মূল্য কেবল যাঁরা প্রাইমারি শেয়ার কিনেছেন তাঁদের জন্য প্রযোজ্য। যাঁরা সেকেন্ডারি বাজার থেকে শেয়ার কেনেন, তাঁদের হিসাব আলাদা। যে যেভাবেই বিনিয়োগ করুন না কেন, বাজারের কিছু মৌলিক দিক অবশ্যই জানতে হবে। আর এই লেখার উদ্দেশ্য সেটাই। লেখা চলবে প্রতি সপ্তাহে।
ছোট ভাই একটা মোয়া দিল। দুই টাকা এখন ছোট ভাইয়ের কাছে। একটু পর সে বলল, ভাই, আপনাকে আমি দুই টাকা দেই, আমাকে একটা মোয়া দেন। বড় ভাই দিল একটা মোয়া।
তারা হাঁটছে। আবার লাগল ক্ষুধা। এবার বড় ভাই বলল, তোমাকে আমি দুই টাকা দেই, আমাকে একটা মোয়া দাও। ছোট ভাই দিল মোয়া, আর নিল দুই টাকা।
একটু পর, এবার ছোট ভাই বলল, ভাই, আমি এবার দুই টাকা দেই, আমাকে একটা মোয়া দেও। বড় ভাই দুই টাকা নিয়ে ছোটকে একটা মোয়া দিল।
এবার বড় ভাইয়ের পালা। সেই দুই টাকা ছোটটাকে দিয়ে আবার একটা মোয়া নিল।
এ রকম এ রকম করতে করতে দুই ভাই যখন বাজারে পৌঁছাল, তখন মোয়ার ব্যাগ পুরো খালি, আর হাতে কেবল দুই টাকা।
বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের অবস্থা দুই ভাইয়ের মতোই। বলা যায় অবস্থা খারাপও হয়। কেননা, দিন শেষে ওই দুই টাকাও হাতে থাকে না।
শেয়ারবাজারের ভাষায় এই দুই টাকা হলো ফেসভেলু। এর বাংলা হচ্ছে আপাত মূল্য বা অভিহিত মূল্য। আবার আঙ্কিক মূল্যও বলা যায়। কোনো বিক্রেতা যদি একটি দ্রব্যের প্রতি এককের জন্য পাঁচ টাকা দাম নির্ধারণ করে, কিন্তু বাজারের চাহিদার প্রভাবে তার দাম হয় ১০ টাকা, সে ক্ষেত্রে পাঁচ টাকা হবে আপাত বা অভিহিত মূল্য আর ১০ টাকা হবে বাজারমূল্য। শেয়ারবাজারের ক্ষেত্রে অভিহিত মূল্য হচ্ছে যে দামে শেয়ারটি বাজারে ছাড়া হয়েছে, সেই দামটি।
গল্পের দুই ভাই অভিহিত মূল্য ধরে রেখেছে ঠিকই, কিন্তু তাদের পক্ষে সেই দুই টাকা নিয়ে ঘরে ফেরা মুশকিল। কেননা, বাজারে যেতে হলে নিয়মকানুন জেনে ও মেনেই যেতে হয়। না জানলে প্রতি পদে বিপদ। আর বিপদ ঘটানোর জন্য একজন ভাই-ই যথেষ্ট। মনে রাখতে হবে শেয়ারবাজারজুড়ে আছে এ রকম অনেক ভাই। ভাই বলাটাই কিন্তু ভালো। সেই গল্পটা জানেন তো? বন্ধু বেছে নেওয়া যায়, কিন্তু ভাই অনিবার্য। সুতরাং একবার যদি আপনি শেয়ারবাজারে ঢুকে পড়েন, তাহলে অনিবার্য এ রকম ভাই অনেক পাবেন। আর যদি আপনি বুদ্ধিমান হন, নিয়মকানুন জেনে আসেন, তাহলে বেছে নেওয়ার সুযোগ অনেক পাবেন। তাতে লাভবানও হবেন।
বলছিলাম অভিহিত মূল্য নিয়ে। অবশ্য এটা নিয়ে শেখানোর কিছু নেই। অভিহিত মূল্য কাকে বলে সবাই জানেন। এটা তো সবাই জানি। কারণ, এখন তো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা প্রতিদিনই ক্যালকুলেটর নিয়ে হিসাব কষে দেখেন অভিহিত মূল্য কত কমল।
অভিহিত মূল্য কেবল যাঁরা প্রাইমারি শেয়ার কিনেছেন তাঁদের জন্য প্রযোজ্য। যাঁরা সেকেন্ডারি বাজার থেকে শেয়ার কেনেন, তাঁদের হিসাব আলাদা। যে যেভাবেই বিনিয়োগ করুন না কেন, বাজারের কিছু মৌলিক দিক অবশ্যই জানতে হবে। আর এই লেখার উদ্দেশ্য সেটাই। লেখা চলবে প্রতি সপ্তাহে।
No comments