কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণে বড় ধরনের অগ্রগতি-কর্মসংস্থান বাড়লেও বেকারত্ব কমেনি by জাহাঙ্গীর শাহ
গত কয়েক বছরে দেশে কর্মসংস্থান বাড়লেও বেকার মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে। ফলে বেকারত্বের হার বেড়েছে। ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত দেশে ৬৭ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। কিন্তু এ সময়ের শেষে, অর্থাৎ ২০১০ সালে দেশে বেকারত্বের হার বেড়ে সাড়ে ৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০০৬ সালে এ হার ছিল ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ।
তবে এই সময়কালে কর্মক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে নারীর অংশগ্রহণের হারটিও বেড়েছে। অর্থাৎ শ্রমশক্তিতে নিয়োজিত নারীদের মধ্যে বেকারত্ব কিছুটা কমেছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিচালিত ২০১০ সালের শ্রমশক্তি সমীক্ষার প্রাথমিক ফলাফলে এমন চিত্র উঠে এসেছে। শিগগিরই সমীক্ষাটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।
শ্রমশক্তি সমীক্ষা ২০০৫-০৬ অনুযায়ী, সে সময় দেশে বেকার লোকের সংখ্যা ছিল ২১ লাখ। আর ২০১০ সালের সমীক্ষায় তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখে। অর্থাৎ আলোচ্য সময়ে নতুনভাবে পাঁচ লাখ মানুষ বেকার হয়েছে।
তবে এই সময়কালে নারী বেকারত্বের হার ৭ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ৫ দশমিক ৮০ শতাংশে। আর পুরুষদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৪০ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪ দশমিক ১০ শতাংশ।
২০১০ সাল পর্যন্ত বিভিন্নভাবে কাজের মধ্যে রয়েছে বা কর্মরত আছে পাঁচ কোটি ৪১ লাখ লোক। আর ২০০৬ সাল পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল চার কোটি ৭৪ লাখ। পাঁচ বছরে নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে ৬৭ লাখ। তবে অর্থনৈতিকভাবে সক্রিয় আছে, এমন লোকের সংখ্যা ২০১০ সাল নাগাদ পাঁচ কোটি ৬৭ লাখ।
দেশের শ্রমশক্তির ক্ষেত্রে ইতিবাচক একটি অগ্রগতি হলো কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি। ২০০৬ সাল পর্যন্ত কর্মরত নারী ছিলেন এক কোটি ১৩ লাখ। ২০১০ সালে এসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৬২ লাখ। চার বছরের ব্যবধানে প্রায় অর্ধকোটি নারী কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করেছেন।
তবে সে তুলনায় পুরুষের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের হার বেশ কম। ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রায় তিন কোটি ৭৯ লাখ পুরুষ কর্মক্ষেত্রে রয়েছেন। ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিন কোটি ৬০ লাখ পুরুষ কর্মক্ষেত্রে ছিলেন। চার বছরে মাত্র ১৮ লাখ পুরুষ নতুন করে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করেছেন।
যোগাযোগ করা হলে পরিসংখ্যান বিভাগের সচিব রীতি ইব্রাহীম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সমীক্ষাটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এরই মধ্যে তা প্রকাশের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, গত কয়েক বছরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ায় নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। তবে বেকারত্বের হারও বেড়েছে।
শ্রমশক্তির বিভাজন
শ্রমশক্তি সমীক্ষার সময় স্বনিয়োজিত কর্মী, চাকরিদাতা, চাকরিজীবী, মজুরিবিহীন গৃহকর্মী, দিনমজুর প্রভৃতি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে।
এতে দেখা যায়, ২০১০ সাল নাগাদ দেশে দুই কোটি ২০ লাখ স্বনিয়োজিত কর্মী রয়েছেন। অর্থাৎ এঁরা নিজেরাই নিজেদের শ্রমক্ষেত্র তৈরি করেছেন। ২০০৬ সাল পর্যন্ত এমন কর্মীর সংখ্যা ছিল এক কোটি ৯৯ লাখ।
আর দেশের চাকরিদাতা, অর্থাৎ উদ্যোক্তা রয়েছেন এক লাখ, যাঁরা নিজেরা কাজ করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান করেছেন। ২০০৬ সালেও এমন উদ্যোক্তার সংখ্যা এক লাখ ছিল। সে হিসেবে নতুন চাকরিদাতা যোগ হয়নি।
আলোচ্য সময়ে ২৮ লাখ ব্যক্তি চাকরি পেয়েছেন। ২০১০ সাল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি চাকরি করেন, এমন ব্যক্তি রয়েছেন ৯৪ লাখ। ২০০৬ সালে এ সংখ্যা ছিল ৬৬ লাখ।
আর এখন এক কোটি ছয় লাখ দিনমজুরিভিত্তিক শ্রমিক রয়েছেন। ২০০৬ সালে এমন দিনমজুরের সংখ্যা ছিল ৮৬ লাখ। গত চার বছরে ২০ লাখ নতুন দিনমজুর পেশায় এসেছেন।
গৃহস্থালির কর্মকাণ্ড
সমীক্ষা অনুসারে, সারা দেশে এক কোটি ১৮ লাখ নারী-পুরুষ গৃহস্থালির কাজ করেন। এর মধ্যে গ্রামীণ এলাকায় প্রায় ৯৭ লাখ নারী-পুরুষ এমন কাজ করে থাকেন।
শ্রমের মজুরি না দেওয়ায় তাঁদের শ্রমশক্তি হিসেবে বিবেচনা করা যাচ্ছে না। এ দেশের প্রতি পরিবারের নারীরা মজুরি ছাড়াই গৃহস্থালির কাজ করে থাকেন। সামাজিক প্রেক্ষাপটের কারণে তাঁদের শ্রমের মজুরি দেওয়া হয় না। তাঁদের আনুষ্ঠানিক কোনো স্বীকৃতও নেই।
সমীক্ষা অনুযায়ী, এমন কর্মকাণ্ডে প্রায় ৯১ লাখ নারী জড়িত। আর পুরুষ রয়েছেন ২৭ লাখ। যথারীতি গ্রামাঞ্চলে প্রায় বিনা মজুরিতে ৭৪ লাখ নারী গৃহস্থালির কাজ করেন।
এ প্রসঙ্গে পরিসংখ্যান বিভাগের সচিব রীতি ইব্রাহীম বলেন, গৃহস্থালির কাজ করেন, এমন ব্যক্তিকে শ্রমশক্তির বিবেচনায় আনা হয় না।
যুবশক্তি
দেশের কর্মক্ষেত্রে মূল শক্তি হিসেবে কাজ করছে বিশাল তরুণ প্রজন্ম। মোট শ্রমশক্তির প্রায় অর্ধেক হলো ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণ প্রজন্ম। কাজের মধ্যে রয়েছেন দুই কোটি নয় লাখ, এমন তরুণ-তরুণী।
২০১০ সাল পর্যন্ত গত চার বছরে নতুন শ্রমশক্তিতে যোগ হয়েছে ৩১ লাখ তরুণ-তরুণী। তবে আশঙ্কার বিষয়, এই বয়সভিত্তিক যুবশক্তিতে পুরুষের অংশগ্রহণ কমেছে। ২০০৬ সাল পর্যন্ত এক কোটি ৩২ লাখ তরুণ শ্রমবাজারে ছিল। ২০১০ সালে এসে শ্রমবাজারে তরুণের সংখ্যা কমে এক কোটি ৩১ লাখে নেমেছে।
তবে তরুণীদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ বেড়েছে। ২০০৬ সাল পর্যন্ত ৪৬ লাখ তরুণী শ্রমবাজারে ছিল। আর ২০১০ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮ লাখ। আলোচ্য সময়ে তরুণীদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের হার প্রায় ৭০ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে, দেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় তিন কোটি ৮৯ লাখ ব্যক্তি এখনো শ্রমশক্তির বাইরে রয়ে গেছেন। আগের সমীক্ষায় দেখা গেছে, এ শ্রমশক্তির বাইরে তিন কোটি ৫১ লাখ ব্যক্তি ছিল।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিচালিত ২০১০ সালের শ্রমশক্তি সমীক্ষার প্রাথমিক ফলাফলে এমন চিত্র উঠে এসেছে। শিগগিরই সমীক্ষাটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।
শ্রমশক্তি সমীক্ষা ২০০৫-০৬ অনুযায়ী, সে সময় দেশে বেকার লোকের সংখ্যা ছিল ২১ লাখ। আর ২০১০ সালের সমীক্ষায় তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখে। অর্থাৎ আলোচ্য সময়ে নতুনভাবে পাঁচ লাখ মানুষ বেকার হয়েছে।
তবে এই সময়কালে নারী বেকারত্বের হার ৭ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ৫ দশমিক ৮০ শতাংশে। আর পুরুষদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৪০ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪ দশমিক ১০ শতাংশ।
২০১০ সাল পর্যন্ত বিভিন্নভাবে কাজের মধ্যে রয়েছে বা কর্মরত আছে পাঁচ কোটি ৪১ লাখ লোক। আর ২০০৬ সাল পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল চার কোটি ৭৪ লাখ। পাঁচ বছরে নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে ৬৭ লাখ। তবে অর্থনৈতিকভাবে সক্রিয় আছে, এমন লোকের সংখ্যা ২০১০ সাল নাগাদ পাঁচ কোটি ৬৭ লাখ।
দেশের শ্রমশক্তির ক্ষেত্রে ইতিবাচক একটি অগ্রগতি হলো কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি। ২০০৬ সাল পর্যন্ত কর্মরত নারী ছিলেন এক কোটি ১৩ লাখ। ২০১০ সালে এসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৬২ লাখ। চার বছরের ব্যবধানে প্রায় অর্ধকোটি নারী কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করেছেন।
তবে সে তুলনায় পুরুষের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের হার বেশ কম। ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রায় তিন কোটি ৭৯ লাখ পুরুষ কর্মক্ষেত্রে রয়েছেন। ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিন কোটি ৬০ লাখ পুরুষ কর্মক্ষেত্রে ছিলেন। চার বছরে মাত্র ১৮ লাখ পুরুষ নতুন করে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করেছেন।
যোগাযোগ করা হলে পরিসংখ্যান বিভাগের সচিব রীতি ইব্রাহীম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সমীক্ষাটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এরই মধ্যে তা প্রকাশের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, গত কয়েক বছরে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ায় নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। তবে বেকারত্বের হারও বেড়েছে।
শ্রমশক্তির বিভাজন
শ্রমশক্তি সমীক্ষার সময় স্বনিয়োজিত কর্মী, চাকরিদাতা, চাকরিজীবী, মজুরিবিহীন গৃহকর্মী, দিনমজুর প্রভৃতি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে।
এতে দেখা যায়, ২০১০ সাল নাগাদ দেশে দুই কোটি ২০ লাখ স্বনিয়োজিত কর্মী রয়েছেন। অর্থাৎ এঁরা নিজেরাই নিজেদের শ্রমক্ষেত্র তৈরি করেছেন। ২০০৬ সাল পর্যন্ত এমন কর্মীর সংখ্যা ছিল এক কোটি ৯৯ লাখ।
আর দেশের চাকরিদাতা, অর্থাৎ উদ্যোক্তা রয়েছেন এক লাখ, যাঁরা নিজেরা কাজ করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান করেছেন। ২০০৬ সালেও এমন উদ্যোক্তার সংখ্যা এক লাখ ছিল। সে হিসেবে নতুন চাকরিদাতা যোগ হয়নি।
আলোচ্য সময়ে ২৮ লাখ ব্যক্তি চাকরি পেয়েছেন। ২০১০ সাল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি চাকরি করেন, এমন ব্যক্তি রয়েছেন ৯৪ লাখ। ২০০৬ সালে এ সংখ্যা ছিল ৬৬ লাখ।
আর এখন এক কোটি ছয় লাখ দিনমজুরিভিত্তিক শ্রমিক রয়েছেন। ২০০৬ সালে এমন দিনমজুরের সংখ্যা ছিল ৮৬ লাখ। গত চার বছরে ২০ লাখ নতুন দিনমজুর পেশায় এসেছেন।
গৃহস্থালির কর্মকাণ্ড
সমীক্ষা অনুসারে, সারা দেশে এক কোটি ১৮ লাখ নারী-পুরুষ গৃহস্থালির কাজ করেন। এর মধ্যে গ্রামীণ এলাকায় প্রায় ৯৭ লাখ নারী-পুরুষ এমন কাজ করে থাকেন।
শ্রমের মজুরি না দেওয়ায় তাঁদের শ্রমশক্তি হিসেবে বিবেচনা করা যাচ্ছে না। এ দেশের প্রতি পরিবারের নারীরা মজুরি ছাড়াই গৃহস্থালির কাজ করে থাকেন। সামাজিক প্রেক্ষাপটের কারণে তাঁদের শ্রমের মজুরি দেওয়া হয় না। তাঁদের আনুষ্ঠানিক কোনো স্বীকৃতও নেই।
সমীক্ষা অনুযায়ী, এমন কর্মকাণ্ডে প্রায় ৯১ লাখ নারী জড়িত। আর পুরুষ রয়েছেন ২৭ লাখ। যথারীতি গ্রামাঞ্চলে প্রায় বিনা মজুরিতে ৭৪ লাখ নারী গৃহস্থালির কাজ করেন।
এ প্রসঙ্গে পরিসংখ্যান বিভাগের সচিব রীতি ইব্রাহীম বলেন, গৃহস্থালির কাজ করেন, এমন ব্যক্তিকে শ্রমশক্তির বিবেচনায় আনা হয় না।
যুবশক্তি
দেশের কর্মক্ষেত্রে মূল শক্তি হিসেবে কাজ করছে বিশাল তরুণ প্রজন্ম। মোট শ্রমশক্তির প্রায় অর্ধেক হলো ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণ প্রজন্ম। কাজের মধ্যে রয়েছেন দুই কোটি নয় লাখ, এমন তরুণ-তরুণী।
২০১০ সাল পর্যন্ত গত চার বছরে নতুন শ্রমশক্তিতে যোগ হয়েছে ৩১ লাখ তরুণ-তরুণী। তবে আশঙ্কার বিষয়, এই বয়সভিত্তিক যুবশক্তিতে পুরুষের অংশগ্রহণ কমেছে। ২০০৬ সাল পর্যন্ত এক কোটি ৩২ লাখ তরুণ শ্রমবাজারে ছিল। ২০১০ সালে এসে শ্রমবাজারে তরুণের সংখ্যা কমে এক কোটি ৩১ লাখে নেমেছে।
তবে তরুণীদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ বেড়েছে। ২০০৬ সাল পর্যন্ত ৪৬ লাখ তরুণী শ্রমবাজারে ছিল। আর ২০১০ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৮ লাখ। আলোচ্য সময়ে তরুণীদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের হার প্রায় ৭০ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে, দেশের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় তিন কোটি ৮৯ লাখ ব্যক্তি এখনো শ্রমশক্তির বাইরে রয়ে গেছেন। আগের সমীক্ষায় দেখা গেছে, এ শ্রমশক্তির বাইরে তিন কোটি ৫১ লাখ ব্যক্তি ছিল।
No comments