কথা বলুন সাবধানে by আনোয়ার হোসেন
দেয়ালেরও কান আছে, কথা বলুন সাবধানে_ এমন সাবধানী বাক্য অনেক স্থানে লেখা থাকে। চায়ের দোকানে বেশি থাকে। দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করলে এমন বাণী বেশি করে প্রচার করা হয়। গোয়েন্দাদের ব্যাপারে এটা বিশেষভাবে প্রয়োগ করা হয়। উইকিলিকস যেসব তথ্য ফাঁস করছে, তাতে অনেক লোক বিব্রত হতেই পারে।
আরও কতজনের জন্য কত যে বিড়ম্বনা অপেক্ষা করছে, কে জানে। তবে আমরা এটা জানি, বাংলাদেশে এমন অনেক রাজনৈতিক নেতা, প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তা কিংবা শীর্ষ ব্যবসায়ী রয়েছেন, যারা মার্কিন দূতাবাসের কোনো কর্মকর্তার দাওয়াত পেলে ধন্য হয়ে যান। তারা প্রাণ খুলে কথা বলেন। পানীয় পেলে কেউ কেউ একেবারে দিলখোলা হয়ে পড়েন। কিন্তু ঘুণাক্ষরেও মনে হয় না যে আমেরিকা কারও বন্ধু হলে তার শত্রুর আর দরকার হয় না। আমেরিকান দূতাবাসের কর্মকর্তা এমনকি খোদ রাষ্ট্রদূত পর্যন্ত নানা জনকে ডেকে মিষ্টিমধুর কথা শোনান। খানাপিনাও যে হয়ে থাকে তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু মূল লক্ষ্য থাকে পেটের কথা বের করা। কোন খবর কার কাছ থেকে ভালোভাবে পাওয়া যাবে সেটা তাদের জানা। প্রধানমন্ত্রীর অন্দরমহলের খবর জানতে চাওয়া হয় এমন একজনের কাছে যিনি এ মহলে যখন-তখন প্রবেশ করার অধিকার বা ক্ষমতা রাখেন। বিরোধী দলের নেতার ক্ষেত্রেও একই কথা। খালেদা জিয়া যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন তার মুখ্য সচিবকে ডেকে হাঁড়ির অনেক খবর জেনে নিয়েছে মার্কিন দূতাবাস। তিনি হয়তো সে সময় নিজেকে ধন্য মনে করেছেন। কিন্তু তা যে ঢাকা-ওয়াশিংটন-উইকিলিকস হয়ে ফের বাংলাদেশের সংবাদপত্রে প্রকাশ হবে, সেটা কে কবে ভাবতে পেরেছিল? প্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নতির কারণেই এমনটি ঘটছে তাতে সন্দেহ নেই। আমরা থট রিডিংয়ের কথা শুনি। আপনি-আমি কী ভাবছি সেটা যন্ত্র বলে দিতে পারবে। কবে এ প্রযুক্তি আয়ত্তে আসবে, সেটা অজানা। তবে উইকিলিকস অনেকটা সে ধরনের কাজই করছে। আপনি না জেনে আপনার নিকটজন এমনকি বস সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের কাউকে এমন কথা জানাচ্ছেন যা শেষ পর্যন্ত আপনার এবং আপনার বস উভয়ের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে।
শুধু কি যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এমন কাণ্ড করে চলেছে? মোটেই তা নয়। আরও অনেক দূতাবাস বাংলাদেশে গোয়েন্দাগিরি করছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসেরও একই কাজ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে একটি বিষয় মনে রাখতে হয় : চুরি যত খুশি করো, ধরা পড়লে চলবে না। কিন্তু উইকিলিকসের মতো কারও কল্যাণে সেটা ফাঁস হয়ে যেতেই পারে। অতএব সাবধান। আপনি যাকে পরম বন্ধু মনে করে পানীয় হাতে নিয়ে মন খুলে কিছু কথা বলে ফেলেছেন, তিনি কিন্তু ইতিমধ্যেই আপনাকে বিপদে ফেলে দিয়েছেন। কিংবা বলা যায়, আপনি নিজেই নিজের বিপদ ডেকে এনেছেন। এখন কেবল দোয়া-দরুদ পড়তে থাকুন যাতে আপনার বেফাঁস মন্তব্য প্রকাশ হয়ে না পড়ে। এটা ফাঁস হলে দল বিপদে পড়তে পারে। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে। আপনার নিজের অবস্থানও নাজুক হয়ে পড়তে পারে। কিন্তু কথা তো বলে দিয়েছেন। তা আর ফেরত নেওয়া যাবে না। অনেক সময় মুখ বন্ধ করার জন্য ঘুষ দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে সে সুযোগও রয়েছে বলে মনে হয় না। বাংলাদেশের সংবাদপত্রের মুখ বন্ধ করবেন, এরও উপায় নেই। এখন অনেক সংবাদপত্র এবং তারা মোটামুটি স্বাধীন। সবচেয়ে মজার ঘটনা হচ্ছে, সরকার ও বিরোধী পক্ষ সবাই এখন তটস্থ_ এরপর আর কী আছে। থলিতে কী কী আছে সেটা কেউ কি বলে দিতে পারেন?
শুধু কি যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এমন কাণ্ড করে চলেছে? মোটেই তা নয়। আরও অনেক দূতাবাস বাংলাদেশে গোয়েন্দাগিরি করছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসেরও একই কাজ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে একটি বিষয় মনে রাখতে হয় : চুরি যত খুশি করো, ধরা পড়লে চলবে না। কিন্তু উইকিলিকসের মতো কারও কল্যাণে সেটা ফাঁস হয়ে যেতেই পারে। অতএব সাবধান। আপনি যাকে পরম বন্ধু মনে করে পানীয় হাতে নিয়ে মন খুলে কিছু কথা বলে ফেলেছেন, তিনি কিন্তু ইতিমধ্যেই আপনাকে বিপদে ফেলে দিয়েছেন। কিংবা বলা যায়, আপনি নিজেই নিজের বিপদ ডেকে এনেছেন। এখন কেবল দোয়া-দরুদ পড়তে থাকুন যাতে আপনার বেফাঁস মন্তব্য প্রকাশ হয়ে না পড়ে। এটা ফাঁস হলে দল বিপদে পড়তে পারে। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে। আপনার নিজের অবস্থানও নাজুক হয়ে পড়তে পারে। কিন্তু কথা তো বলে দিয়েছেন। তা আর ফেরত নেওয়া যাবে না। অনেক সময় মুখ বন্ধ করার জন্য ঘুষ দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে সে সুযোগও রয়েছে বলে মনে হয় না। বাংলাদেশের সংবাদপত্রের মুখ বন্ধ করবেন, এরও উপায় নেই। এখন অনেক সংবাদপত্র এবং তারা মোটামুটি স্বাধীন। সবচেয়ে মজার ঘটনা হচ্ছে, সরকার ও বিরোধী পক্ষ সবাই এখন তটস্থ_ এরপর আর কী আছে। থলিতে কী কী আছে সেটা কেউ কি বলে দিতে পারেন?
No comments