পবিত্র কোরআনের আলো-মুনাফিকরাই নানা অজুহাতে তাবুক অভিযানে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থেকেছে
৪৫. ইন্নামা ইয়াছ্তা'যিনুকাল্লাযীনা লা ইউ'মিনূনা বিল্লাহি ওয়ালইয়াওমিল্ আ-খিরি ওয়ার্তা-বাত্ ক্বুলূবুহুম ফাহুম্ ফী রাইবিহিম ইয়াতারাদ্দাদূন। ৪৬. ওয়া লাও আরা-দুল খুরূজা লাআআ'দ্দূ লাহূ উ'দ্দাতান ওয়ালাকিন্ কারিহাল্লা-হুম্ বিআ'-ছাহুম ফাছাব্বাত্বাহুম ওয়াক্বীলাক্ব্উ'দূ মাআ'ল ক্বা-য়ি'দীন।
৪৭. লাও খারাজূ ফীকুম্ মা যা-দূকুম্ ইল্লা খাবা-লান ওয়া লা আওদ্বাঊ' খিলা-লাকুম ইয়াবগূনাকুমুল্ ফিত্নাতা্; ওয়া ফীকুম্ ছাম্মাঊ'না লাহুম; ওয়াল্লা-হু আ'লীমুম্ বিয্যা-লিমীন।
৪৮. লাক্বাদিব্তাগুল্ ফিত্নাতা মিন্ ক্বাবলু ওয়া ক্বাল্লাবূ লাকাল্ উমূরা হাত্তা জা-আল্ হাক্কু ওয়া যাহারা আম্রুল্লা-হি ওয়া হুম কা-রিহূন। [সুরা : আত্ তাওবা, আয়াত : ৪৫-৪৮]
অনুবাদ : ৪৫. আপনার কাছে (যুদ্ধে যাওয়া থেকে) অব্যাহতি চাইতে আসে তো তারা, যারা আল্লাহর ওপর ও পরকালে বিশ্বাস রাখে না। আর তাদের অন্তরের ভেতর সন্দেহ, সুতরাং তারা সন্দেহের মধ্যেই ঘুরপাক খায়।
৪৬. যদি অভিযানে বের হওয়ার ইচ্ছা তাদের থাকতই, তাহলে এর জন্য কিছু না কিছু প্রস্তুতি তো থাকত। (এ কারণেই) আল্লাহ তাদের যাওয়াটা পছন্দ করলেন না। তাই তিনি তাদের আলস্যে পড়ে থাকতে দিলেন। (তাদের জন্য) বলে দেওয়া হলো, যারা অক্ষমতার কারণে বসে আছে, তোমরা তাদের সঙ্গে বসে থাকো।
৪৭. তারা তোমাদের সঙ্গে অভিযানে বের হলে তোমাদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা ছাড়া অন্য কিছুই যোগ করত না এবং তোমাদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ছোটাছুটি করা ছাড়া আর কিছুই করত না। আর তোমাদের মধ্যেও তো এমন (দুর্বল ইমানের লোক আছে) যারা তাদের কথা (গুরুত্বের সঙ্গে) শোনে। আল্লাহ জালিমদের সম্পর্কে ভালোভাবেই জানেন।
৪৮. (হে নবী!) তারা এর আগেও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল। আপনার ক্ষতিসাধন করার জন্য তারা কাজকর্মে উল্টাপাল্টা করেছিল। অবশেষে সত্য (প্রকাশ্যে) এলো, আল্লাহর ইচ্ছা বিজয়ী হলো, অথচ (এই বিজয়ে) তারা নাখোশ হলো।
ব্যাখ্যা : ৪৫ ও ৪৬ নম্বর আয়াতে এ বিষয়টা পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে যে তাবুকের যুদ্ধাভিযানে বের হওয়া থেকে যারা নানা অজুহাতে অব্যাহতি নিয়েছে, তাদের অনেকেই আসলে ভাঁওতাবাজির আশ্রয় নিয়েছে। তারা মিথ্যা অজুহাত দাঁড় করিয়েছে এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে অভিযানে বের হওয়া থেকে বিরত থেকেছে। তারা আসলে মুমিন নয়, বরং মুনাফিক, তারা ইমানের ব্যাপারে দোদুল্যমান। এর অন্যতম যুক্তি হলো ,তাদের মধ্যে অভিযানে বের হওয়ার কোনো প্রস্তুতিই ছিল না। কোনো রকম বস্তুগত বা মানসিক প্রস্তুতির আলামত তাদের মধ্যে দেখা যায়নি। মানুষের ওজর-অজুহাত কেবল তখনই গ্রহণযোগ্য হতে পারে, যখন নিজের পক্ষ থেকে দায়িত্ব পালনের পুরোপুরি চেষ্টা ও সাধ্যমতো প্রস্তুতি গ্রহণ করে। এরপর তার সামনে যদি এমন কোনো প্রতিবন্ধকতা এসে পড়ে, যে কারণে তার পক্ষে দায়িত্ব পালন কঠিন বা অসম্ভব হয়ে পড়ে, তখনই কেবল অজুহাতের গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্ন ওঠে। পক্ষান্তরে কোনো লোক যদি চেষ্টাই না করে এবং সাধ্যানুযায়ী প্রস্তুতি গ্রহণ থেকে বিরত থাকে, আর এ অবস্থায় বলে, আমি অক্ষম, আমার ওজর আছে, তাহলে তার এ কথা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এসব যুক্তিতে অবশ্যই মুনাফিকদের অজুহাতের অসারতা প্রমাণিত হয়। এ জন্যই তাবুক অভিযানে অংশগ্রহণের কারণে আল্লাহ তাদের কবুল করেননি। আর এটা প্রকৃত অর্থে মুসলমানদের কল্যাণের জন্যই হয়েছিল। কারণ এসব লোক অভিযানে অংশগ্রহণ করলে তারা সেখানে ভেতরে ভেতরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা ছাড়া আর কিছুই করত না।
৪৭ ও ৪৮ নম্বর আয়াতে এ বিষয়টি আরো স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। ৪৭ নম্বর আয়াতের বর্ণনায় যারা এদের কথা শোনে বলে উল্লেখ করা হয়েছে, তারা প্রধানত দুই ধরনের লোকই হতে পারে। এক. কিছু সরলপ্রাণ, তবে দুর্বলচিত্ত মুসলমান, যারা এদের স্বরূপ জানে না, তারা এদের কথায় বিভ্রান্ত হয়ে নানা নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করত। দুই. এরা মুনাফিকদেরই অংশ। এরা অভিযাত্রী দলের ভেতর লুকিয়ে থেকে বাইরের মুনাফিকদের কাছে তথ্য পাচার করত। ৪৮ নম্বর আয়াতে মুসলমানদের ইতিপূর্বেকার যুদ্ধ এবং বিজয়গুলোর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। মক্কা বিজয় ও হুনায়নের বিজয় এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এগুলোতে মুনাফিকরা মুসলমানদের সঙ্গে সঙ্গে থেকে তাদের পরাজয়ই কামনা করেছিল।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
৪৮. লাক্বাদিব্তাগুল্ ফিত্নাতা মিন্ ক্বাবলু ওয়া ক্বাল্লাবূ লাকাল্ উমূরা হাত্তা জা-আল্ হাক্কু ওয়া যাহারা আম্রুল্লা-হি ওয়া হুম কা-রিহূন। [সুরা : আত্ তাওবা, আয়াত : ৪৫-৪৮]
অনুবাদ : ৪৫. আপনার কাছে (যুদ্ধে যাওয়া থেকে) অব্যাহতি চাইতে আসে তো তারা, যারা আল্লাহর ওপর ও পরকালে বিশ্বাস রাখে না। আর তাদের অন্তরের ভেতর সন্দেহ, সুতরাং তারা সন্দেহের মধ্যেই ঘুরপাক খায়।
৪৬. যদি অভিযানে বের হওয়ার ইচ্ছা তাদের থাকতই, তাহলে এর জন্য কিছু না কিছু প্রস্তুতি তো থাকত। (এ কারণেই) আল্লাহ তাদের যাওয়াটা পছন্দ করলেন না। তাই তিনি তাদের আলস্যে পড়ে থাকতে দিলেন। (তাদের জন্য) বলে দেওয়া হলো, যারা অক্ষমতার কারণে বসে আছে, তোমরা তাদের সঙ্গে বসে থাকো।
৪৭. তারা তোমাদের সঙ্গে অভিযানে বের হলে তোমাদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা ছাড়া অন্য কিছুই যোগ করত না এবং তোমাদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ছোটাছুটি করা ছাড়া আর কিছুই করত না। আর তোমাদের মধ্যেও তো এমন (দুর্বল ইমানের লোক আছে) যারা তাদের কথা (গুরুত্বের সঙ্গে) শোনে। আল্লাহ জালিমদের সম্পর্কে ভালোভাবেই জানেন।
৪৮. (হে নবী!) তারা এর আগেও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল। আপনার ক্ষতিসাধন করার জন্য তারা কাজকর্মে উল্টাপাল্টা করেছিল। অবশেষে সত্য (প্রকাশ্যে) এলো, আল্লাহর ইচ্ছা বিজয়ী হলো, অথচ (এই বিজয়ে) তারা নাখোশ হলো।
ব্যাখ্যা : ৪৫ ও ৪৬ নম্বর আয়াতে এ বিষয়টা পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে যে তাবুকের যুদ্ধাভিযানে বের হওয়া থেকে যারা নানা অজুহাতে অব্যাহতি নিয়েছে, তাদের অনেকেই আসলে ভাঁওতাবাজির আশ্রয় নিয়েছে। তারা মিথ্যা অজুহাত দাঁড় করিয়েছে এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে অভিযানে বের হওয়া থেকে বিরত থেকেছে। তারা আসলে মুমিন নয়, বরং মুনাফিক, তারা ইমানের ব্যাপারে দোদুল্যমান। এর অন্যতম যুক্তি হলো ,তাদের মধ্যে অভিযানে বের হওয়ার কোনো প্রস্তুতিই ছিল না। কোনো রকম বস্তুগত বা মানসিক প্রস্তুতির আলামত তাদের মধ্যে দেখা যায়নি। মানুষের ওজর-অজুহাত কেবল তখনই গ্রহণযোগ্য হতে পারে, যখন নিজের পক্ষ থেকে দায়িত্ব পালনের পুরোপুরি চেষ্টা ও সাধ্যমতো প্রস্তুতি গ্রহণ করে। এরপর তার সামনে যদি এমন কোনো প্রতিবন্ধকতা এসে পড়ে, যে কারণে তার পক্ষে দায়িত্ব পালন কঠিন বা অসম্ভব হয়ে পড়ে, তখনই কেবল অজুহাতের গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্ন ওঠে। পক্ষান্তরে কোনো লোক যদি চেষ্টাই না করে এবং সাধ্যানুযায়ী প্রস্তুতি গ্রহণ থেকে বিরত থাকে, আর এ অবস্থায় বলে, আমি অক্ষম, আমার ওজর আছে, তাহলে তার এ কথা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এসব যুক্তিতে অবশ্যই মুনাফিকদের অজুহাতের অসারতা প্রমাণিত হয়। এ জন্যই তাবুক অভিযানে অংশগ্রহণের কারণে আল্লাহ তাদের কবুল করেননি। আর এটা প্রকৃত অর্থে মুসলমানদের কল্যাণের জন্যই হয়েছিল। কারণ এসব লোক অভিযানে অংশগ্রহণ করলে তারা সেখানে ভেতরে ভেতরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা ছাড়া আর কিছুই করত না।
৪৭ ও ৪৮ নম্বর আয়াতে এ বিষয়টি আরো স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। ৪৭ নম্বর আয়াতের বর্ণনায় যারা এদের কথা শোনে বলে উল্লেখ করা হয়েছে, তারা প্রধানত দুই ধরনের লোকই হতে পারে। এক. কিছু সরলপ্রাণ, তবে দুর্বলচিত্ত মুসলমান, যারা এদের স্বরূপ জানে না, তারা এদের কথায় বিভ্রান্ত হয়ে নানা নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করত। দুই. এরা মুনাফিকদেরই অংশ। এরা অভিযাত্রী দলের ভেতর লুকিয়ে থেকে বাইরের মুনাফিকদের কাছে তথ্য পাচার করত। ৪৮ নম্বর আয়াতে মুসলমানদের ইতিপূর্বেকার যুদ্ধ এবং বিজয়গুলোর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। মক্কা বিজয় ও হুনায়নের বিজয় এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এগুলোতে মুনাফিকরা মুসলমানদের সঙ্গে সঙ্গে থেকে তাদের পরাজয়ই কামনা করেছিল।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments