মিরসরাই ট্র্যাজেডি-অভিযোগপত্র পরিবর্তনের আবেদন করা হবে

ট্টগ্রামের মিরসরাই ট্র্যাজেডি মামলার অভিযোগপত্র পরিবর্তনের আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেলা পিপি আবুল হাশেম। এই মামলায় গতকাল মঙ্গলবার আরো পাঁচজনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে ২৯ জনের সাক্ষ্য নেওয়া সম্পন্ন হলো। বাকি দুজনের সাক্ষ্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার নেওয়া হবে। একই দিন অভিযোগপত্র পরিবর্তনের আবেদন করবেন পিপি। চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদা ইয়াছমিনের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।


মামলার ৩১ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। বাকি আছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ অন্য একজনের সাক্ষ্যগ্রহণ। এমতাবস্থায় অভিযোগপত্র পরিবর্তনের কারণ ব্যাখ্যা করে অ্যাডভোকেট আবুল হাশেম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মামলাটির অভিযোগপত্র দেওয়া দরকার ছিল দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায়। কিন্তু পুলিশ সেই ধারায় অভিযোগপত্র দেয়নি। এই কারণে অভিযোগপত্র পরিবর্তনের আবেদন জানানো হবে।'
অ্যাডভোকেট আবুল হাশেম বলেন, 'দণ্ডবিধি আইনের ৩০৪(খ) ধারায় বলা আছে, খুন বা হত্যা নহে_এই রকম কোনো অপরাধ সংঘটিত করলে এই ধারাটি লঙ্ঘন হবে। কিন্তু ট্রাকচালক মফিজের বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। এ কারণে তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারা প্রয়োগ করা যেত। কিন্তু পুলিশ তা করেনি। এ কারণে অভিযোগপত্র পরিবর্তনের আবেদন করা হবে।'
দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র না দেওয়া প্রসঙ্গে মিরসরাই থানার তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং বর্তমানে হাটহাজারী থানার ওসি (তদন্ত) অংসা থোঁয়াই গতকাল সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, 'তদন্তকালে আমার মনে হয়েছে, চালক মফিজ ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে এই দুর্ঘটনা ঘটাননি। কারণ, এ ঘটনায় তাঁর আপন ভাতিজাও মারা গেছে। এই কারণে অভিযোগপত্রে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।' চালক মফিজের বৈধ লাইসেন্স না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'গ্রেপ্তার হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে মফিজ দাবি করেছিলেন তাঁর বৈধ লাইসেন্স ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনার দিন ডোবায় লাইসেন্সটি হারিয়ে যায়।'
চট্টগ্রাম আদালতের একজন সিনিয়র আইনজীবী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মিরসরাই ট্র্যাজেডি মামলায় পুলিশ দণ্ডবিধির যে ধারায় অভিযোগপত্র দিয়েছে তাতে দোষী সাব্যস্ত হলে চালক মফিজের দুই বছরের সাজা হতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'পিপি এবং বাদী ইচ্ছা করলে মামলাটি পুনঃ তদন্ত বা অধিকতর তদন্তের জন্য আবেদন করতে পারেন।
গত ১১ জুলাই মিসরাইয়ে ট্রাক দুর্ঘটনায় অকালে ঝরে যায় ৪৪ জন স্কুলছাত্রের প্রাণ। ২০ সেপ্টেম্বর এ মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর অভিযোগ গঠন করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.