পবিত্র কোরআনের আলো-মুসা (আ.)-এর সঙ্গে মোকাবিলায় জাদুকররা শোচনীয়ভাবে পরাজিত ও লাঞ্ছিত হয়
১১৫. ক্বা-লূ ইয়া-মূছা ইম্মা আন্ তুলকি্বইয়া ওয়া ইম্মা আন্ নাকূনা নাহ্নুল মুলক্বীন।১১৬. ক্বা-লা আলক্বূ; ফালাম্মা আলক্বাও ছাহারূ আ'ইউনান না-ছি ওয়াছ্তার্হাবূহুম ওয়া জা-ঊ বিছিহ্রিন আ'যীম। ১১৭. ওয়া আওহাইনা ইলা মূছা আন আলকি্ব আ'সা-কা; ফাইযা হিয়া তাল্ক্বাফু মা ইয়া'ফিকূন। ১১৮. ফাওয়াক্বাআ'ল হাক্কু ওয়াবাত্বালা মা কা-নূ ইয়া'মালূন। ১১৯. ফাগুলিবূ হুনা-লিকা ওয়ানক্বালাবূ সা-গিরীন।
[সুরা : আল-আ'রাফ, আয়াত : ১১৫-১১৯]
অনুবাদ
১১৫. জাদুকররা মুসা (আ.)-কে বলল, হে মুসা, আপনি চাইলে আপনার কৃতকৌশল আগে নিক্ষেপ করুন, নয়তো আমরা আমাদের কৃতকৌশল নিক্ষেপ করব।
১১৬. মুসা বললেন, তোমরাই নিক্ষেপ করো। সুতরাং যখন তারা তাদের কৃতকৌশল নিক্ষেপ করল, তখন দেখা গেল, তারা লোকদের দৃষ্টিশক্তির ওপর ইন্দ্রজাল বিস্তার করেছে। তারা মানুষদের আতঙ্কিত করল এবং বিরাট জাদু নিক্ষেপ করল।
১১৭. আর এদিকে আমি ওহির মাধ্যমে মুসাকে নির্দেশ করলাম, তুমি তোমার লাঠি নিক্ষেপ করো। তারপর তো এ ঘটনা ঘটল যে সেটি ওদের অর্থাৎ জাদুকরদের জিনিসগুলো গ্রাস করতে লাগল, যা তারা ভেল্কিবাজির মাধ্যমে সাজিয়েছিল।
১১৮. এভাবে সত্য সবার সামনে স্পষ্ট হয়ে গেল এবং তাদের সব কৃতকৌশল মিথ্যা প্রতিপন্ন হলো।
১১৯. তারা (জাদুকররা) সেখানে পরাজিত হলো এবং অপমানিত হয়ে ফিরে গেল।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলোর মাধ্যমে মুসা (আ.)-এর সঙ্গে ফেরাউনের জাদুকরদের যে মোকাবিলা হয়েছিল, তার বিবরণ দেওয়া হয়েছে। সেদিন ফেরাউনের জাদুকররা দারুণভাবে পর্যুদস্ত হয়েছিল। ফেরাউন ও তার সভাসদরা ভেবেছিল, মুসা বোধ হয় একজন দক্ষ জাদুকর। তাই তারা তাদের অনুগত জাদুকরদের দিয়ে তাঁর মোকাবিলা করার উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু কার্যস্থলে দেখা গেল, মুসা (আ.)-এর মুজিজার অজগর জাদুকরদের জাদুমন্ত্রের কৃতকৌশলে তৈরি করা সব কিছু খেয়ে ফেলছে এবং তছনছ করে দিচ্ছে। এখানে ঘটনাটির কিছুটা বিবরণ দেওয়া হয়েছে। মোকাবিলা শুরু হওয়ার আগে তাদের মধ্যে আলোচনা চলছিল কে আগে আক্রমণ করে। জাদুকররা মুসা (আ.)-কে আগে আক্রমণ করার আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু তিনি আগে আক্রমণে এলেন না। তিনি জাদুকরদের আগে আক্রমণ করার আহ্বান জানালেন। জাদুকররা মাঠে নেমে তাদের জাদুর মহড়া প্রদর্শন করতে লাগল। তারা ভয়ংকর সব জাদু ও ভেল্কিবাজি দেখাতে লাগল, যা দেখে দর্শকসাধারণ আতঙ্কিত হয়ে গেল। এমন অবস্থায় মুসা (আ.) আল্লাহর নির্দেশে তাঁর লাঠি মোকাবিলার জন্য মাঠে ছেড়ে দিলেন। তখনই সেই লাঠি অজগরের রূপ ধারণ করে জাদুকরদের তৈরি করা ভেল্কিবাজির সব কিছু গ্রাস করতে লাগল। কথিত আছে, অজগরটি এত বিরাট আকার ধারণ করেছিল যে এটা হাঁ করলে এক চোয়াল মাটিতে আর অন্য চোয়াল ফেরাউনের প্রাসাদের কার্নিশের ওপর উঠে যেত। এতে ফেরাউন ভীষণ ভয় পেয়ে গেল। দর্শনার্থী নগরবাসী তখন ভয় পেয়ে দিগ্বিদিক পালাতে শুরু করল। মুজিজার অজগর দর্শনার্থীদের প্রতি ধাওয়া করে ভয় দেখাল। ফেরাউন মুসা (আ.)-কে তার মুজিজা থামানোর অনুরোধ জানালেন। তিনি তখন মুসা (আ.)-এর প্রতি বিনীত হয়ে তাঁর লাঠি হাতে তুলে নেওয়ার জন্য কাকুতি-মিনতি করলেন। ফেরাউন তাঁর কাছে পরাজয় স্বীকার করলেন এবং তাঁর নবুয়তে বিশ্বাস স্থাপন করার আশ্বাসও দিলেন। মুসা (আ.) যখন অজগরটি ধরলেন, তখন সেটি আবার লাঠিতে পরিণত হয়ে গেল। পরবর্তী আয়াতগুলোতে এই কাহিনীসংক্রান্ত আরো কিছু বিবরণ ও তাৎপর্যপূর্ণ তথ্যাবলি উল্লেখ করা হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ
১১৫. জাদুকররা মুসা (আ.)-কে বলল, হে মুসা, আপনি চাইলে আপনার কৃতকৌশল আগে নিক্ষেপ করুন, নয়তো আমরা আমাদের কৃতকৌশল নিক্ষেপ করব।
১১৬. মুসা বললেন, তোমরাই নিক্ষেপ করো। সুতরাং যখন তারা তাদের কৃতকৌশল নিক্ষেপ করল, তখন দেখা গেল, তারা লোকদের দৃষ্টিশক্তির ওপর ইন্দ্রজাল বিস্তার করেছে। তারা মানুষদের আতঙ্কিত করল এবং বিরাট জাদু নিক্ষেপ করল।
১১৭. আর এদিকে আমি ওহির মাধ্যমে মুসাকে নির্দেশ করলাম, তুমি তোমার লাঠি নিক্ষেপ করো। তারপর তো এ ঘটনা ঘটল যে সেটি ওদের অর্থাৎ জাদুকরদের জিনিসগুলো গ্রাস করতে লাগল, যা তারা ভেল্কিবাজির মাধ্যমে সাজিয়েছিল।
১১৮. এভাবে সত্য সবার সামনে স্পষ্ট হয়ে গেল এবং তাদের সব কৃতকৌশল মিথ্যা প্রতিপন্ন হলো।
১১৯. তারা (জাদুকররা) সেখানে পরাজিত হলো এবং অপমানিত হয়ে ফিরে গেল।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলোর মাধ্যমে মুসা (আ.)-এর সঙ্গে ফেরাউনের জাদুকরদের যে মোকাবিলা হয়েছিল, তার বিবরণ দেওয়া হয়েছে। সেদিন ফেরাউনের জাদুকররা দারুণভাবে পর্যুদস্ত হয়েছিল। ফেরাউন ও তার সভাসদরা ভেবেছিল, মুসা বোধ হয় একজন দক্ষ জাদুকর। তাই তারা তাদের অনুগত জাদুকরদের দিয়ে তাঁর মোকাবিলা করার উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু কার্যস্থলে দেখা গেল, মুসা (আ.)-এর মুজিজার অজগর জাদুকরদের জাদুমন্ত্রের কৃতকৌশলে তৈরি করা সব কিছু খেয়ে ফেলছে এবং তছনছ করে দিচ্ছে। এখানে ঘটনাটির কিছুটা বিবরণ দেওয়া হয়েছে। মোকাবিলা শুরু হওয়ার আগে তাদের মধ্যে আলোচনা চলছিল কে আগে আক্রমণ করে। জাদুকররা মুসা (আ.)-কে আগে আক্রমণ করার আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু তিনি আগে আক্রমণে এলেন না। তিনি জাদুকরদের আগে আক্রমণ করার আহ্বান জানালেন। জাদুকররা মাঠে নেমে তাদের জাদুর মহড়া প্রদর্শন করতে লাগল। তারা ভয়ংকর সব জাদু ও ভেল্কিবাজি দেখাতে লাগল, যা দেখে দর্শকসাধারণ আতঙ্কিত হয়ে গেল। এমন অবস্থায় মুসা (আ.) আল্লাহর নির্দেশে তাঁর লাঠি মোকাবিলার জন্য মাঠে ছেড়ে দিলেন। তখনই সেই লাঠি অজগরের রূপ ধারণ করে জাদুকরদের তৈরি করা ভেল্কিবাজির সব কিছু গ্রাস করতে লাগল। কথিত আছে, অজগরটি এত বিরাট আকার ধারণ করেছিল যে এটা হাঁ করলে এক চোয়াল মাটিতে আর অন্য চোয়াল ফেরাউনের প্রাসাদের কার্নিশের ওপর উঠে যেত। এতে ফেরাউন ভীষণ ভয় পেয়ে গেল। দর্শনার্থী নগরবাসী তখন ভয় পেয়ে দিগ্বিদিক পালাতে শুরু করল। মুজিজার অজগর দর্শনার্থীদের প্রতি ধাওয়া করে ভয় দেখাল। ফেরাউন মুসা (আ.)-কে তার মুজিজা থামানোর অনুরোধ জানালেন। তিনি তখন মুসা (আ.)-এর প্রতি বিনীত হয়ে তাঁর লাঠি হাতে তুলে নেওয়ার জন্য কাকুতি-মিনতি করলেন। ফেরাউন তাঁর কাছে পরাজয় স্বীকার করলেন এবং তাঁর নবুয়তে বিশ্বাস স্থাপন করার আশ্বাসও দিলেন। মুসা (আ.) যখন অজগরটি ধরলেন, তখন সেটি আবার লাঠিতে পরিণত হয়ে গেল। পরবর্তী আয়াতগুলোতে এই কাহিনীসংক্রান্ত আরো কিছু বিবরণ ও তাৎপর্যপূর্ণ তথ্যাবলি উল্লেখ করা হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments