গোশত বণ্টনে সচেতনতা by মাসউদুল কাদির

দেখতে দেখতেই কোরবানি আমাদের দুয়ারে এসে কড়া নাড়ছে। গরুর হাট জমে উঠেছে সারাদেশে। যারা খুব যতন করে গরুটাকে মোটাতাজা করে তোলেন তার ভাগ্যে সে গরুর গোশত জোটে না। গরুর মালিক হলেও তিনি লাভের জন্য বিক্রি করে দেন। কিনে নেন অন্য কোনো এক ব্যক্তি। পরিবারের প্রায় সদস্যই গরুর হাটে কোরবানির পশু কেনার জন্য ছুটে যান। সেটা আনন্দও বটে। আর যে শুধুই গরুর পেছনে পরিশ্রম করে সে দিনমজুর, যাকে শ্রমিক বলা চলে_


গরু যতই মোটাতাজা হোক তার বেতন বাড়ে না। তিনি বার্ষিক বেতনে শ্রম দিয়ে যান। এই শহর বা গ্রাম এলাকায় এ রকম শ্রমিকের অভাব নেই। এসব শ্রমিকের পরিশ্রমের ভিতে বসেই সমাজের ধনবান ব্যক্তিটি আরাম-আয়েশ করার সুযোগ পান।
কেউ হয়তো বলবেন, কোরবানির গোশত খাওয়াটা আসল কথা নয়। ত্যাগটাই বড়। তাছাড়া কোরবানির গোশত তো আর আল্লাহর কাছে পেঁৗছে না। পেঁৗছে কেবল তাকওয়া। কোরআনের ভাষ্যও এমনই। কথা ঠিক আছে। বাস্তবতা হলো, মুসলিম পরিবারে ঈদুল আজহার নামাজের পাশাপাশি পশু কোরবানিও পুণ্যের ও আনন্দের কাজ। পশু কোরবানির আনন্দ ও ইবাদতের কাজটা সবাই করতে পারে না। এ ছাড়া এই কোরবানি সেসব লোকের ওপরই ওয়াজিব, যাদের সামর্থ্য আছে। আমি সামর্থ্যবান বন্ধুদেরই বলছি, ইচ্ছা করলে আমরা পারি, অন্তত নিজের গ্রাম এলাকায় একটি কোরবানি দিতে। শুধু একটি বা দুটি অংশও গ্রামে দিতে পারি। এটা নিজের পরিচয়ের মধ্য থেকেই হতে পারে। দেশের দরিদ্র এলাকায় বা সিডর আক্রান্ত এলাকাগুলোতে এসব কোরবানি দেওয়া যেতে পারে। অভাবী মানুষের আনন্দে আমিও শামিল হতে পারি একটি কোরবানি গ্রাম এলাকায় দিয়ে।
সামর্থ্যবানরা প্রতিবেলাতেই গোশত খান। কোরবানির গোশতের জন্য অবশ্যই অতটা তারা কেউই লালায়িত নন। তাই ফ্রিজাব না করে দুস্থ ও অসহায়দের মধ্যে বণ্টন করাই অনেক আনন্দের। অবশ্যই এটা শহরে নয়, গ্রামে। গ্রামের সাধারণ মানুষেরা কোনো দিন হাদিয়ার গোশত বিক্রি করেন না। তারা সন্তানদের নিয়েই তা খান। আর শহরে এক শ্রেণীর গরিব লোকেরা কোরবানির গোশত সংগ্রহ করে তারা নির্লজ্জভাবে রাস্তাতেই বিক্রির জন্য
বসে যান।
ঈদ আনন্দে সবার মুখে হাসির ফোটাতে সামর্থ্যবানরা এ রকম উদ্যোগ গ্রহণ করলে কিছুটা হলেও সমাজে স্বস্তি ফিরে আসবে। ফিরে আসবে আমার দরিদ্র বন্ধুর মুখে এক চিলতে হাসি।
mkadir1983@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.