রহস্যে ঢাকা সুপ্তির স্বেচ্ছাবন্দিত্ব-স্বামী আশরাফকে খুঁজছে পুলিশ by রাব্বী রহমান
রাজধানীর সেগুনবাগিচা থেকে উদ্ধার হওয়া আজমেরী সুপ্তি জেসি ও তাঁর সন্তানের স্বেচ্ছাবন্দিত্বের বিষয়ে পুলিশ এখনো রহস্যাচ্ছন্ন। তেজগাঁওয়ে পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনে সুপ্তি আগের মতোই আচরণ করছেন; তাঁর কথাবার্তা অসংলগ্ন। ঢাকায় তাঁর স্বামীর বড় ভাই ও কয়েকজন আত্মীয়ের খোঁজ পাওয়া গেছে। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনে গিয়ে দেখা যায়, সুপ্তি তাঁর শিশু সন্তানকে নিয়ে পায়চারী করছেন। শিশুটিকে ঘরের ভেতর নিতে চাইলেও সে যেতে চাইছিল না। সুপ্তির সঙ্গে কথা বলার ব্যবস্থা করে দেয় পুলিশ। তাঁর সঙ্গে কথা হয়।
৩৫ বছর বয়সী সুপ্তি বলেন, ১৯৭৭ সালে আমেরিকার নিউ জার্সিতে তাঁর জন্ম। ১৯৯০ সালে তিনি মা-বাবার সঙ্গে বাংলাদেশে আসেন। সে সময় বিমানবন্দরে পরিচয় হয় আশরাফ গুড্ডুর সঙ্গে। ১৯৯৩ সালে চট্টগ্রামে কাজী অফিসে তাঁরা বিয়ে করেন। সংসার পাতেন ঢাকার শাজাহানপুরের আমতলীতে। ছয়-সাত বছর আগে থাকতেন শান্তিনগরের একটি বাসায়। সর্বশেষ সেগুনবাগিচায় বাসা নেন। এ সময়ের মধ্যে তিনবার গর্ভধারণ করলেও প্রতিবারই সন্তান মারা যায় তাঁর। বর্তমানে সঙ্গে থাকা শিশু সন্তানটিকে তিনি হাসপাতাল থেকে কিনে এনেছেন বলে দাবি করেন।
সুপ্তি জানান, তাঁর স্বামীর সঙ্গে প্রথম ১২ বছরের সংসারজীবনে কোনো সমস্যা ছিল না। সমস্যা দেখা দেয় পরে। পুরান ঢাকার আবুল হাসনাত রোডে তিন কাঠা সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে পান আশরাফ; সেটি বিক্রি করে এক কোটি ৩৪ লাখ টাকা পান। এ টাকা তিনি সুপ্তির নামে একটি ব্যাংকে স্থায়ী আমানত হিসেবে রেখে দেন। এরপর থেকে তাঁকে হত্যার চেষ্টা চলছে বলে সুপ্তির দাবি।
সুপ্তি আরো জানান, তাঁকে কম্পিউটার ও সফটওয়ারের মাধ্যমে রে দিয়ে হত্যার চেষ্টা চলছে বলে মনে করেন তিনি। চেয়ারে বসলে তাঁর ব্যাকবোনে রে-এর তাপ লাগে। ওঠার সময় অনেক ব্যথা অনুভব করেন তিনি।
তাই তিনি কোনো কিছু ব্যবহার করেন না।
সুপ্তির স্বামীকে মাদকাসক্ত করে কিছু লোক এ রকম করছে বলে জানান তিনি। স্বামী কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁর পাসপোর্ট ও ম্যারিজ সার্টিফিকেটসহ তাঁর স্বামীকে অপহরণ করা হয়েছে। কে এমন করছে বা কারা তাঁকে হত্যা করতে চায় প্রশ্ন করলে তিনি অসংলগ্ন উত্তর দেন। মা-বাবার পরিচয় জানতে চাইলে তাঁদের হত্যা করা হবে বলে নাম-ঠিকানা বলতে চাননি তিনি।
ছয়-সাত বছর আগে সুপ্তিরা শান্তিনগরের একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাঁর সে সময়কার এক প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সুপ্তি ও তাঁর স্বামী তাঁদের পাশের বাসায় ভাড়া থাকতেন। সচ্ছল ছিলেন তখন থেকেই। নিজেকে খ্রিস্টান এবং আমেরিকায় জন্ম হয়েছে দাবি করতেন সুপ্তি। ২০০৪ সালে সুপ্তি সড়ক দুর্ঘটনায় একবার গুরুতর আহত হন। এরপর থেকেই সন্দেহপ্রবণ হয়ে ওঠেন তিনি। তাঁর মধ্যে একটা পরিবর্তন লক্ষ করেন তাঁরা।
এদিকে সুপ্তিদের সেগুনবাগিচার ফ্ল্যাটের মালিক নাসিমা হক কালের কণ্ঠকে জানান, কয়েক মাস আগে সুপ্তির স্বামী আশরাফ ফ্ল্যাটের সামনে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। আশরাফকে দেখার জন্য বড় ভাই আরশাদ সেখানে যান। তখন আরশাদের ফোন নম্বর ও বাসার ঠিকানা তিনি রাখেন। ধানমণ্ডিতে একটি ফ্ল্যাটে থাকেন আরশাদ। ঠিকানাটি তিনি পুলিশের কাছে দিয়েছেন। গত ঈদের সময় আশরাফকে খোঁজ করতে তিনি তাঁর গাড়িচালক ইকবালকে ওই ফ্ল্যাটে পাঠান। সেখানে না পেয়ে তিনি পুরান ঢাকায় জেলখানার সামনে সুপ্তির শ্বশুরবাড়িতে ইকবালকে পাঠান। সেখানে নান্না নামের সুপ্তির শ্বশুরকে সবাই চেনেন বলে জানান তিনি। কিন্তু সেখানে কাউকে না পেয়ে ধানমণ্ডিতে সুপ্তির ভাশুর আরশাদের সঙ্গে দেখা করেন ইকবাল। ইকবালের ফোনে আরশাদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়। আরশাদ তাঁকে বলেন, 'ওকে ঘাড় ধরে রাস্তায় নামিয়ে দেন। ওর জন্য কোথাও যাব না আমি।'
নাসিমা হক জানান, আশরাফের খবর জানতে চাইলে আরশাদ বলেন, 'মোবাইল ফোনে আশরাফের সঙ্গে কথা হয়েছে, সে ইন্ডিয়ায় গেছে।' আরশাদ তাঁকে জানান, সুপ্তির নামে এসআইবিএলের শান্তিনগর ব্রাঞ্চে এক কোটি ৩৪ লাখ টাকা স্থায়ী আমানত করেছেন তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে। সুপ্তির জন্য তাঁর ভাই আজ অসুস্থ।
এ ব্যাপারে জানতে আরশাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছে বেশ কয়েকবার। কিন্তু তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
পুলিশ হেফাজতে সুপ্তিকে কাউন্সেলিং করেছেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের কাউন্সেলর ড. রেহেনা বেগম। তিনি গতকাল জানান, খোঁজ নিয়ে জেনেছেন সুপ্তি আগের চেয়ে একটু ভালো আছেন।
সেগুনবাগিচার ফ্ল্যাটের কেয়ারটেকার মুজিবর ও নিরাপত্তাকর্মী সবুজ জানান, গত এক মাসে সুপ্তিকে কখনো বাসা থেকে বেরোতে দেখেছেন বলে কেউ মনে করতে পারছেন না। বাচ্চার কান্না শুনে পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা প্রায় সময়ই খাবার দিয়ে যেতেন। অন্য পড়শিরাও দিতেন।
পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের উপকমিশনার শামীমা বেগম কালের কণ্ঠকে বলেন, সুপ্তির কথাবার্তা এখনো অসংলগ্ন। তাঁর দুলাভাই রিয়াজ উদ্দিন ও ভাশুর আরশাদের খোঁজ পাওয়া গেছে। তাঁরা আজ এখানে আসবেন।
উল্লেখ্য, কেউ মেরে ফেলতে পারে এ ভয়ে এক মাস ধরে স্বেচ্ছায় বন্দি ছিলেন আজমেরী সুপ্তি জেসি। এ অবস্থা থেকে গত রবিবার বিকেলে সন্তানসহ তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ।
৩৫ বছর বয়সী সুপ্তি বলেন, ১৯৭৭ সালে আমেরিকার নিউ জার্সিতে তাঁর জন্ম। ১৯৯০ সালে তিনি মা-বাবার সঙ্গে বাংলাদেশে আসেন। সে সময় বিমানবন্দরে পরিচয় হয় আশরাফ গুড্ডুর সঙ্গে। ১৯৯৩ সালে চট্টগ্রামে কাজী অফিসে তাঁরা বিয়ে করেন। সংসার পাতেন ঢাকার শাজাহানপুরের আমতলীতে। ছয়-সাত বছর আগে থাকতেন শান্তিনগরের একটি বাসায়। সর্বশেষ সেগুনবাগিচায় বাসা নেন। এ সময়ের মধ্যে তিনবার গর্ভধারণ করলেও প্রতিবারই সন্তান মারা যায় তাঁর। বর্তমানে সঙ্গে থাকা শিশু সন্তানটিকে তিনি হাসপাতাল থেকে কিনে এনেছেন বলে দাবি করেন।
সুপ্তি জানান, তাঁর স্বামীর সঙ্গে প্রথম ১২ বছরের সংসারজীবনে কোনো সমস্যা ছিল না। সমস্যা দেখা দেয় পরে। পুরান ঢাকার আবুল হাসনাত রোডে তিন কাঠা সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে পান আশরাফ; সেটি বিক্রি করে এক কোটি ৩৪ লাখ টাকা পান। এ টাকা তিনি সুপ্তির নামে একটি ব্যাংকে স্থায়ী আমানত হিসেবে রেখে দেন। এরপর থেকে তাঁকে হত্যার চেষ্টা চলছে বলে সুপ্তির দাবি।
সুপ্তি আরো জানান, তাঁকে কম্পিউটার ও সফটওয়ারের মাধ্যমে রে দিয়ে হত্যার চেষ্টা চলছে বলে মনে করেন তিনি। চেয়ারে বসলে তাঁর ব্যাকবোনে রে-এর তাপ লাগে। ওঠার সময় অনেক ব্যথা অনুভব করেন তিনি।
তাই তিনি কোনো কিছু ব্যবহার করেন না।
সুপ্তির স্বামীকে মাদকাসক্ত করে কিছু লোক এ রকম করছে বলে জানান তিনি। স্বামী কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁর পাসপোর্ট ও ম্যারিজ সার্টিফিকেটসহ তাঁর স্বামীকে অপহরণ করা হয়েছে। কে এমন করছে বা কারা তাঁকে হত্যা করতে চায় প্রশ্ন করলে তিনি অসংলগ্ন উত্তর দেন। মা-বাবার পরিচয় জানতে চাইলে তাঁদের হত্যা করা হবে বলে নাম-ঠিকানা বলতে চাননি তিনি।
ছয়-সাত বছর আগে সুপ্তিরা শান্তিনগরের একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাঁর সে সময়কার এক প্রতিবেশীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সুপ্তি ও তাঁর স্বামী তাঁদের পাশের বাসায় ভাড়া থাকতেন। সচ্ছল ছিলেন তখন থেকেই। নিজেকে খ্রিস্টান এবং আমেরিকায় জন্ম হয়েছে দাবি করতেন সুপ্তি। ২০০৪ সালে সুপ্তি সড়ক দুর্ঘটনায় একবার গুরুতর আহত হন। এরপর থেকেই সন্দেহপ্রবণ হয়ে ওঠেন তিনি। তাঁর মধ্যে একটা পরিবর্তন লক্ষ করেন তাঁরা।
এদিকে সুপ্তিদের সেগুনবাগিচার ফ্ল্যাটের মালিক নাসিমা হক কালের কণ্ঠকে জানান, কয়েক মাস আগে সুপ্তির স্বামী আশরাফ ফ্ল্যাটের সামনে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। আশরাফকে দেখার জন্য বড় ভাই আরশাদ সেখানে যান। তখন আরশাদের ফোন নম্বর ও বাসার ঠিকানা তিনি রাখেন। ধানমণ্ডিতে একটি ফ্ল্যাটে থাকেন আরশাদ। ঠিকানাটি তিনি পুলিশের কাছে দিয়েছেন। গত ঈদের সময় আশরাফকে খোঁজ করতে তিনি তাঁর গাড়িচালক ইকবালকে ওই ফ্ল্যাটে পাঠান। সেখানে না পেয়ে তিনি পুরান ঢাকায় জেলখানার সামনে সুপ্তির শ্বশুরবাড়িতে ইকবালকে পাঠান। সেখানে নান্না নামের সুপ্তির শ্বশুরকে সবাই চেনেন বলে জানান তিনি। কিন্তু সেখানে কাউকে না পেয়ে ধানমণ্ডিতে সুপ্তির ভাশুর আরশাদের সঙ্গে দেখা করেন ইকবাল। ইকবালের ফোনে আরশাদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়। আরশাদ তাঁকে বলেন, 'ওকে ঘাড় ধরে রাস্তায় নামিয়ে দেন। ওর জন্য কোথাও যাব না আমি।'
নাসিমা হক জানান, আশরাফের খবর জানতে চাইলে আরশাদ বলেন, 'মোবাইল ফোনে আশরাফের সঙ্গে কথা হয়েছে, সে ইন্ডিয়ায় গেছে।' আরশাদ তাঁকে জানান, সুপ্তির নামে এসআইবিএলের শান্তিনগর ব্রাঞ্চে এক কোটি ৩৪ লাখ টাকা স্থায়ী আমানত করেছেন তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে। সুপ্তির জন্য তাঁর ভাই আজ অসুস্থ।
এ ব্যাপারে জানতে আরশাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছে বেশ কয়েকবার। কিন্তু তাঁর মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
পুলিশ হেফাজতে সুপ্তিকে কাউন্সেলিং করেছেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের কাউন্সেলর ড. রেহেনা বেগম। তিনি গতকাল জানান, খোঁজ নিয়ে জেনেছেন সুপ্তি আগের চেয়ে একটু ভালো আছেন।
সেগুনবাগিচার ফ্ল্যাটের কেয়ারটেকার মুজিবর ও নিরাপত্তাকর্মী সবুজ জানান, গত এক মাসে সুপ্তিকে কখনো বাসা থেকে বেরোতে দেখেছেন বলে কেউ মনে করতে পারছেন না। বাচ্চার কান্না শুনে পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা প্রায় সময়ই খাবার দিয়ে যেতেন। অন্য পড়শিরাও দিতেন।
পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের উপকমিশনার শামীমা বেগম কালের কণ্ঠকে বলেন, সুপ্তির কথাবার্তা এখনো অসংলগ্ন। তাঁর দুলাভাই রিয়াজ উদ্দিন ও ভাশুর আরশাদের খোঁজ পাওয়া গেছে। তাঁরা আজ এখানে আসবেন।
উল্লেখ্য, কেউ মেরে ফেলতে পারে এ ভয়ে এক মাস ধরে স্বেচ্ছায় বন্দি ছিলেন আজমেরী সুপ্তি জেসি। এ অবস্থা থেকে গত রবিবার বিকেলে সন্তানসহ তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ।
No comments