রান্না হবে বাতাসে

তেলে ভাজা খাবার মজাদার হলেও তাতে আছে কোলেস্টেরলের ভয়। অ্যাসিডিটিও একটা সমস্যা। তবু রসনা যেন কোনো বাধা মানতে চায় না। মজার ব্যাপার হলো, এখন আর কোনো খাবার তেলে ভাজতে হবে না। বাতাসেই সব কাজ সারা যাবে। নিছক গল্প মনে হলেও এটিই এখন সত্য। সম্প্রতি ইলেকট্রনিকস কোম্পানি ফিলিপস 'এয়ার ফ্রায়ার' নামে একটি ফ্রায়িং মেশিন আবিষ্কার করেছে। এতে তেল ছাড়া সবকিছু ভাজা যাবে।


তেলের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হবে বাতাস! এতে খাবারের স্বাদ ও গুণ মোটেও নষ্ট হবে না এবং খাবার হবে স্বাস্থ্যসম্মত। পাওয়া যাবে ভিন্ন ধরনের স্বাদ। মেশিনটি চালিত হবে একটি গ্রিল ও পাখার সাহায্যে। এতেই খাবারটি চমৎকারভাবে সিদ্ধ হয়ে যাবে। খাবারে তেল ব্যবহারের কোনো দরকার হবে না।
তেলের ফ্যাট বা কোলেস্টেরলযুক্ত চর্বি শরীর মুটিয়ে যাওয়া, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগের সৃষ্টি করে। বিষয়টা মাথায় রেখেই ফিলিপস তেলবিহীন ভাজা খাবার রান্নার এ মেশিন তৈরির পরিকল্পনা করে। বহু গবেষণার পর বিস্ময়কর এ যন্ত্রটি আমেরিকা ও ইউরোপে গত বছর আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারজাত করা হয়। প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল, ব্যবহারকারীরা যাতে তেল ছাড়াই বার্গার, চিকেন, নাগেট, চিপস ইত্যাদি খাবার তৈরি করতে পারে। বর্তমানে যন্ত্রটি আরও উন্নত ও আকর্ষণীয় করে বাজারজাত করা হয়েছে। এতে নতুন করে জুড়ে দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত একটি বেকিং ট্রে। ফলে চিপস-বার্গার-নাগেট ছাড়াও কেক, পাউরুটি, বিস্কুটসহ অনেক কিছুই বানানো সম্ভব হবে অতি অল্প সময়ে।
মজার ব্যাপার হলো, একসঙ্গে দু'পদের খাবার এ মেশিনে রান্না করা সম্ভব। খাবার আলাদা করার জন্য এর ভেতরে আছে একটি 'সেপারেটর'। এটি মাঝখানে টেনে এনে দু'পাশের ঢাকনা বন্ধ করে সহজেই দুই ধরনের রান্না করা সম্ভব। তাছাড়া একটির গন্ধ অন্যটিতেও ছড়াবে না। বাজারে 'ডিপ ফ্যাট ফ্রায়ার' নামে যে ইলেকট্রনিকস মেশিনটি পাওয়া যায়, তাতে খাবারে চর্বি জাতীয় উপাদান থেকেই যায়। কিন্তু নতুন উদ্ভাবিত মেশিনটিতে রান্না করা খাবারে চর্বির পরিমাণ থাকবে একেবারেই কম।
ফিলিপসের মুখপাত্র মিলি কুইকেনডেনের মতে, উদ্ভাবিত এ মেশিনটি সাধারণ ফ্রায়ারের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। এটি ভাজাপোড়া বা রান্নার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। ব্যবহারকারীরা অনেক ধরনের রান্নায় এ মেশিনটি সহজেই ববহার করতে পারবে। ইংল্যান্ডের বাজারে মেশিনটির বর্তমান মূল্য ২১৫ পাউন্ড অর্থাৎ প্রায় ২৫ হাজার টাকা।
প্রদীপ সাহা

No comments

Powered by Blogger.