ইরানের ওপর নতুন অবরোধ যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটেন কানাডার

রানের বিরুদ্ধে নতুন করে অবরোধ আরোপের ঘোষণা দিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার এ ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও কানাডা। অবরোধের বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তেহরান। রাশিয়া বলেছে, এ অবরোধ 'অবৈধ ও অর্থহীন'।যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো জানিয়েছে, এ মাসের শুরুর দিকে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) ইরান প্রসঙ্গে যে প্রতিবেদনটি দিয়েছে, তার
পরিপ্রেক্ষিতে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির ব্যাপারে কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বলেন, এ অবরোধ ইরানকে তার পরমাণু কর্মসূচি বন্ধে 'তীব্র চাপের মধ্যে ফেলবে'। ব্রিটেন জানিয়েছে, ইরানের ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক বন্ধ করে দিয়েছে তারা। কানাডাও ইরানের পেট্রোকেমিক্যাল, তেল ও গ্যাস খাতে কোনো পণ্য রপ্তানি করবে না। এর মাধ্যমে কার্যত ইরানের সঙ্গে সব ধরনের লেনদেন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে তারা। অবরোধের প্রতি ফ্রান্সও সমর্থন জানিয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত সোমবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হিলারি বলেন, এ অবরোধের লক্ষ্য হবে ইরানের পেট্রলজাত পণ্য, তেল ও গ্যাস শিল্প। তিনি বলেন, 'আমাদের বার্তা স্পষ্ট। ইরান যদি তাদের অনমনীয় মনোভাব অব্যাহত রাখে, তাহলে তাদের ওপর চাপ আরো বাড়বে এবং আরো একা হয়ে পড়বে তারা। আজ এমনই কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।' সংবাদ সম্মেলন অর্থমন্ত্রী টিমোথি গেইথনারও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলোর উচিত ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যে সতর্ক হওয়া। কেননা এর মাধ্যমে ইরানের পরমাণু প্রকল্পকে সহায়তা করা হতে পারে। পরে এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, 'ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ পুরো ব্যাংকিং খাতই ব্যবসা করার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ইরান যত দিন এ ভয়াবহ পথে থাকবে, যুক্তরাষ্ট্র ও এর সহযোগীরাও তত দিন ইরানের ওপর চাপ বৃদ্ধি এবং দেশটিকে নিঃসঙ্গ করতে নানা পদক্ষেপ নেবে।'
অবরোধ বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ইরান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রামিন মেহমানপারাস্ত বলেন, এ অবরোধ ইরানের বিরুদ্ধে 'প্রচারণা ও মনস্তাত্তি্বক লড়াই' ছাড়া আর কিছুই নয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের সঙ্গে বাণিজ্য সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। কাজেই এ অবরোধ ইরানের ওপর তেমন প্রভাব ফেলবে না।
রাশিয়ার দৃষ্টিতে এ অবরোধ 'অগ্রহণযোগ্য ও আন্তর্জাতিক আইন পরিপন্থী'। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে 'বাড়াবাড়ি' হিসেবে উল্লেখ করে।
জাতিসংঘ ইতিমধ্যেই ইরানের ওপর চার দফা অবরোধ আরোপ করেছে। তবে এবার আইএইএর প্রতিবেদন প্রকাশের পরও রাশিয়া ও চীনের বিরোধিতার কারণে এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি নিরাপত্তা পরিষদ। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.