গোটা পরিবারই একসঙ্গে!

রাজপথে প্রায়ই চোখে পড়ে এক মোটরসাইকেলে চড়ে এক পরিবারের সবাই যাতায়াত করছেন। ঝুঁকি জেনেও এক মোটরসাইকেলে বাবা-মা তাদের ছোট ছোট শিশুকে নিয়ে এমন বিপজ্জনকভাবে চলাচল করছেন। শিশুর বয়স দুই থেকে তিন বছর হলে তাকে মোটরসাইকেলের একদম সামনে বসানো হয়। মাঝখানে এর চাইতে বয়সে বড় শিশুটিকে বসিয়ে বাবা-মা আগে-পিছে বসেন।


কখনও বা সামনে একটু বড় শিশুটিকে রেখে কোলে ছোট্ট আর একটি শিশুকে নিয়ে প্রায়ই গোটা পরিবারকে ব্যস্ত রাস্তায় চলাচল করতে দেখা যায়। এসব ক্ষেত্রে চালকের আসনে বসা বাবা শুধু হেলমেট পরে থাকেন। বাকিরা থাকেন একেবারে অরক্ষিত অবস্থায়। আবার কোনও বাবা পরেনও না। একটু অসাবধানতা অথবা অন্য বাহনের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে যে কোনো সময়ে ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। এমন একজন মোটরসাইকেল যাত্রী রামপুরা বনশ্রীর চাকরিজীবী মোঃ হেলাল উদ্দিন। সময় পেলে প্রায়ই তিনি পরিবারসহ মোটরসাইকেল নিয়ে যাতায়াত করেন। তিনি বলেন, হ্যাঁ জানি। এ ধরনের যাতায়াত ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু সময়মতো যাতায়াতের জন্য এ ছাড়া উপায় নেই। ট্রাফিক জ্যামের মধ্যে সামান্য জায়গা পেলে অনায়াসে মোটরসাইকেল চালানো সম্ভব। ঢাকা শহরে পরিবহনের অনেক সংকট। আবার বাসগুলোতে ভিড় থাকে বেশি। শুধু মোটরসাইকেলে স্বল্প সময়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়া সম্ভব। তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে মোটরসাইকেলে যাতায়াত করি। এ সম্পর্কে রাসেল স্কয়ারে কর্ত্যব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্ট মোঃ সাজ্জাদ কবির বলেন, এক পরিবারের সবাইকে এক মোটরসাইকেলে দেখা যায়। যদিও এ ধরনের চালনায় নিষেধাজ্ঞা আছে, কিন্তু কেউই তা মানে না। আমরা তাদের সতর্ক করে দিই এবং মাঝেমধ্যে মানবিক বিবেচনায় কেস দিই না। তাদের সতর্ক করে দিয়েও কোনো লাভ হয় বলে মনে হয় না। তেজগাঁও থানার এসআই মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, বাইক চালকরা ট্রাফিক আইন যথাযথ পালন করেন না। হেলমেট ব্যবহার করেন না। দুই জনের বেশি বাইকে ওঠা নিষেধ থাকলেও তা মানেন না। ট্রাফিক পুলিশ মোঃ আনোয়ার বলেন, আমরা দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য দ্রুতগামী গাড়িগুলো থামিয়ে সতর্ক করার চেষ্টা করি। অনেক সময় কেস দিতে বাধ্য হই। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী এ ধরনের ট্রাফিক আইন অমান্য করলে সর্বোচ্চ আড়াই হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে রাসেল স্কয়ার সংলগ্ন রাস্তায় এক দম্পতি মোটরবাইক দুর্ঘটনায় রাস্তাতেই মারা যায়। ট্রাফিক আইন না মেনে দ্রুত রাস্তা ক্রস করার সময় ওই দুর্ঘটনা ঘটে। আমাদের সবারই উচিত ট্রাফিক আইন মেনে চলা। আমাদের মনে রাখতে হবে, সময়ের চেয়ে জীবন অনেক বেশি মূল্যবান।
ষ আখতার হোসেন রকি

No comments

Powered by Blogger.