দেশে অবৈধ বিদেশি ফুটবলারের ছড়াছড়ি by রফিকুল ইসলাম
মৌসুম শুরুর আগে ঢাকায় আসেন ঝাঁকে ঝাঁকে বিদেশি ফুটবলার, যাদের বেশির ভাগই আফ্রিকান। ঢাকায় এখন বিদেশি ফুটবলারের হাটও বসে। এ ভবঘুরে বিদেশি ফুটবলারদের উদ্দেশ্য পেশাদার ফুটবল লীগে খেলা। অনেকে বিভিন্ন ক্লাবে খেলার সুযোগও পান। তাদের পরখ করতে সম্প্রতি ট্রায়ালের ব্যবস্থা করেছিল ব্রাদার্স। গত বছরও এভাবে হাট বসিয়ে বিদেশি ফুটবলার নির্বাচন করেছিল ক্লাবটি।
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য অনুশীলনরত জাতীয় ফুটবল দলও বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে এই ভবঘুরে আফ্রিকানদের বিপক্ষে। ট্যুরিস্ট ভিসায় আসা এসব বিদেশি ফুটবলার ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও মাসের পর মাস অবৈধভাবে অবস্থান করেন বাংলাদেশে। ঢাকার বাইরে খেপ খেলেন তারা। থাকেন গুলশান-বনানীর মতো অভিজাত এলাকায় অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া করে।
ভিসার মেয়াদ অতিক্রমের পর যেমন অবৈধভাবে অবস্থান করছেন অনেক বিদেশি ফুটবলার, তেমনি অনেকে ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েও অবৈধভাবে খেলছেন বাংলাদেশে। বিদেশি নাগরিকদের নিয়োগ দেওয়ায় সরকারের যে নীতিমালা তা অনুসরণ হয় না ফুটবলারদের ক্ষেত্রে। বিশেষ করে ওয়ার্ক পারমিট বাধ্যবাধকতা মানা হয় না সিংহভাগ বিদেশি খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রে। অথচ দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে কোনো বিদেশি নাগরিক সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করলে তার ওয়ার্ক পারমিট গ্রহণ বাধ্যতামূলক। ওয়ার্ক পারমিটের আবেদনের আগে বিনিয়োগ বোর্ডের সুপারিশক্রমে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মিশন থেকে যথাযথ শ্রেণীর ভিসাও সংগ্রহ করতে হবে; কিন্তু ঢাকায় খেলা বেশির ভাগ বিদেশি ফুটবলারের নিয়োগের ক্ষেত্রে এ আইন মানা হয় না। যে কারণে বিদেশি ফুটবলাররা লাখ লাখ টাকা আয় করলেও কোনো রাজস্ব পাচ্ছে না সরকার।
গত বাংলাদেশ লীগে অংশ নেওয়া ১২টি ক্লাবে বিদেশি ফুটবলার রেজিস্ট্রেশন হয়েছিল ৬১ জন। কিন্তু ওয়ার্ক পারমিট ছিল মাত্র ১৩ জন ফুটবলারের। বিনিয়োগ বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব দুই পর্ব মিলিয়ে আট বিদেশি ফুটবলার রেজিস্ট্রেশন করালেও ওয়ার্ক পারমিট ছিল মাত্র একজনের। রানার্সআপ মুক্তিযোদ্ধার পাঁচ বিদেশির মধ্যে চারজনের ওয়ার্ক পারমিট ছিল, আবাহনীও পাঁচ ফুটবলারের মধ্যে চারজনের ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম পালন করেছে। শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ছয় বিদেশির মধ্যে ওয়ার্ক পারমিট নিয়েছিল চারজনের। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিডেট, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, আরামবাগ, রহমতগঞ্জ, ফরাশগঞ্জ, ফেনী সকার, চট্টগ্রাম আবাহনী ও চট্টগ্রাম মোহামেডান নিয়োগে সরকারি নিয়ম অনুসরণ করেনি। বিনিয়োগ বোর্ড থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গত মৌসুমে বাংলাদেশ লীগে খেলা বিদেশি ফুটবলারের ৮০ ভাগেরই ছিল না বাংলাদেশ সরকারের ওয়ার্ক পারমিট।
বিদেশি খেলোয়াড়দের ওয়ার্ক পারমিট না নেওয়া প্রসঙ্গে বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী সদস্য (যুগ্ম সচিব) নাভাস চন্দ্র মণ্ডল বলেন, 'এ বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই। যারা আবেদন করেন যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে তাদের ওয়ার্ক পারমিটের ব্যবস্থা করে জানিয়ে দেওয়া হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। যারা আবেদন করে না, তাদের খবর তো আমাদের কাছে থাকে না। অবৈধভাবে অবস্থান করা এবং অবৈধভাবে কাজ করা বিদেশিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব তো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।' তবে তিনি জানিয়েছেন, গত মাসে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় এ বিষটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কোনো বিদেশিকে যেন ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া নিয়োগ দেওয়া না হয়, তা জানিয়ে বিভিন্ন সংগঠনকে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়। বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী সদস্য নাভাস চন্দ্র মণ্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, রফতানি প্রক্রিয়াকরণ কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি সভায় উপস্থিত ছিলেন।
বিদেশি ফুটবলার নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের নীতিমালা অনুসরণ না করা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সিনিয়র সহসভাপতি এবং পেশাদার ফুটবল লীগ কমিটির চেয়ারম্যান আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, 'অতীতেও বিদেশি ফুটবলার খেলেছেন এভাবে। তবে তখন পেশাদারিত্ব ছিল না। আমি মনে করি, আইন সবার জন্য সমান। বিদেশি ফুটবলার নিয়ে আসে ক্লাবগুলো। তাদেরই দায়িত্ব খেলোয়াড়দের ওয়ার্ক পারমিট করে দেওয়া। বিদেশি ফুটবলার নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার কোনো নির্দেশনা দিলে তা তো অনুসরণ করতেই হবে।'
কেবল বিদেশি ফুটবলারই নন, বিদেশি কোচরাও বাংলাদেশে কাজ করছেন সরকারের ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া। বিনিয়োগ বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে সার্বিয়ান কোচ জোরান দর্দভিচের পর আর কোনো বিদেশি কোচ ওয়ার্ক পারমিট নেননি।
ভিসার মেয়াদ অতিক্রমের পর যেমন অবৈধভাবে অবস্থান করছেন অনেক বিদেশি ফুটবলার, তেমনি অনেকে ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েও অবৈধভাবে খেলছেন বাংলাদেশে। বিদেশি নাগরিকদের নিয়োগ দেওয়ায় সরকারের যে নীতিমালা তা অনুসরণ হয় না ফুটবলারদের ক্ষেত্রে। বিশেষ করে ওয়ার্ক পারমিট বাধ্যবাধকতা মানা হয় না সিংহভাগ বিদেশি খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রে। অথচ দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে কোনো বিদেশি নাগরিক সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করলে তার ওয়ার্ক পারমিট গ্রহণ বাধ্যতামূলক। ওয়ার্ক পারমিটের আবেদনের আগে বিনিয়োগ বোর্ডের সুপারিশক্রমে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মিশন থেকে যথাযথ শ্রেণীর ভিসাও সংগ্রহ করতে হবে; কিন্তু ঢাকায় খেলা বেশির ভাগ বিদেশি ফুটবলারের নিয়োগের ক্ষেত্রে এ আইন মানা হয় না। যে কারণে বিদেশি ফুটবলাররা লাখ লাখ টাকা আয় করলেও কোনো রাজস্ব পাচ্ছে না সরকার।
গত বাংলাদেশ লীগে অংশ নেওয়া ১২টি ক্লাবে বিদেশি ফুটবলার রেজিস্ট্রেশন হয়েছিল ৬১ জন। কিন্তু ওয়ার্ক পারমিট ছিল মাত্র ১৩ জন ফুটবলারের। বিনিয়োগ বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব দুই পর্ব মিলিয়ে আট বিদেশি ফুটবলার রেজিস্ট্রেশন করালেও ওয়ার্ক পারমিট ছিল মাত্র একজনের। রানার্সআপ মুক্তিযোদ্ধার পাঁচ বিদেশির মধ্যে চারজনের ওয়ার্ক পারমিট ছিল, আবাহনীও পাঁচ ফুটবলারের মধ্যে চারজনের ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম পালন করেছে। শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ছয় বিদেশির মধ্যে ওয়ার্ক পারমিট নিয়েছিল চারজনের। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিডেট, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, আরামবাগ, রহমতগঞ্জ, ফরাশগঞ্জ, ফেনী সকার, চট্টগ্রাম আবাহনী ও চট্টগ্রাম মোহামেডান নিয়োগে সরকারি নিয়ম অনুসরণ করেনি। বিনিয়োগ বোর্ড থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গত মৌসুমে বাংলাদেশ লীগে খেলা বিদেশি ফুটবলারের ৮০ ভাগেরই ছিল না বাংলাদেশ সরকারের ওয়ার্ক পারমিট।
বিদেশি খেলোয়াড়দের ওয়ার্ক পারমিট না নেওয়া প্রসঙ্গে বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী সদস্য (যুগ্ম সচিব) নাভাস চন্দ্র মণ্ডল বলেন, 'এ বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই। যারা আবেদন করেন যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে তাদের ওয়ার্ক পারমিটের ব্যবস্থা করে জানিয়ে দেওয়া হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। যারা আবেদন করে না, তাদের খবর তো আমাদের কাছে থাকে না। অবৈধভাবে অবস্থান করা এবং অবৈধভাবে কাজ করা বিদেশিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব তো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।' তবে তিনি জানিয়েছেন, গত মাসে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় এ বিষটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কোনো বিদেশিকে যেন ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া নিয়োগ দেওয়া না হয়, তা জানিয়ে বিভিন্ন সংগঠনকে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়। বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী সদস্য নাভাস চন্দ্র মণ্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, রফতানি প্রক্রিয়াকরণ কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি সভায় উপস্থিত ছিলেন।
বিদেশি ফুটবলার নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের নীতিমালা অনুসরণ না করা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সিনিয়র সহসভাপতি এবং পেশাদার ফুটবল লীগ কমিটির চেয়ারম্যান আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, 'অতীতেও বিদেশি ফুটবলার খেলেছেন এভাবে। তবে তখন পেশাদারিত্ব ছিল না। আমি মনে করি, আইন সবার জন্য সমান। বিদেশি ফুটবলার নিয়ে আসে ক্লাবগুলো। তাদেরই দায়িত্ব খেলোয়াড়দের ওয়ার্ক পারমিট করে দেওয়া। বিদেশি ফুটবলার নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার কোনো নির্দেশনা দিলে তা তো অনুসরণ করতেই হবে।'
কেবল বিদেশি ফুটবলারই নন, বিদেশি কোচরাও বাংলাদেশে কাজ করছেন সরকারের ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া। বিনিয়োগ বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে সার্বিয়ান কোচ জোরান দর্দভিচের পর আর কোনো বিদেশি কোচ ওয়ার্ক পারমিট নেননি।
No comments