মেয়র লোকমান হত্যাকাণ্ড-'এজাহারে নাম থাকলেই গ্রেপ্তার করা যায় না'-আসামি গ্রেপ্তার না হওয়া ও তদন্তে ধীরগতিতে ক্ষোভ by পারভেজ খান ও সুমন বর্মণ,
নরসিংদীবাসীর কাছে মঙ্গলবার হলো শোকের দিন, হারানোর দিন। কারণ এমনই এক মঙ্গলবারে নরসিংদীবাসী হারিয়েছে তাদের প্রিয় নেতা পৌর মেয়র লোকমান হোসেনকে। লোকমান হত্যাকাণ্ডের পর দেখতে দেখতে ক্যালেন্ডারের পাতায় পেরিয়ে গেছে তিনটি মঙ্গলবার। কিন্তু স্বজনহারা নরসিংদীবাসীর চোখের জল যেন নাড়া দিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসনকে। ঘটনার দীর্ঘ ২১ দিনে পুলিশ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করলেও এদের মধ্যে এজাহারভুক্ত
আসামি মাত্র একজন। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি তদারকি সত্ত্বেও একজন জনপ্রতিনিধি হত্যা মামলার তদন্তের এমন হাল দেখে হতাশ নরসিংদীবাসী। ঘটনা তদন্তে কচ্ছপগতি দেখে মামলার ভবিষ্যৎ নিয়েও তারা উদ্বিগ্ন।এদিকে মেয়র লোকমান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার কাজী মাসুদুর রহমান টিপ্পনকে আরো চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। প্রথম মেয়াদে ১০ দিনের রিমান্ড শেষে টিপ্পনকে গতকাল নরসিংদী জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাঁকে আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার অগ্রগতি নিয়ে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে গতকাল বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পুলিশ সুপার খন্দকার মুহিদউদ্দিন।
এজাহারভুক্ত আসামি গ্রেপ্তারে ধীরগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এজাহারে নাম থাকলেই গ্রেপ্তার করা যায় না। তদন্তে আসতে হয়। তদন্তে কার নাম এসেছে আমরা কিন্তু তা বলিনি। সবাই আমার তদন্তের মধ্যে রয়েছে। যে তদন্তের মধ্যে আসবে, তাকে আমরা গ্রেপ্তার করব।'
এ পর্যন্ত তদন্তে এজাহারভুক্ত মাত্র একজনের নাম এসেছে কি না_এমন প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার বলেন, 'আমি তো তা বলিনি।' তাহলে বাকিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না কেন_এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'আমি তো ঘোষণা দিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করব না।'
হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস উদ্ধারের খবর পুলিশ সূত্রেই পাওয়া। অথচ এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার পরস্পরবিরোধী তথ্য দেন। তিনি প্রথমে বলেন, মাইক্রোবাস উদ্ধার হয়নি। এর পরই তিনি বলেন, মাইক্রোবাস উদ্ধার হয়ে থাকলেও যাচাই করে দেখা হচ্ছে সেটি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার হয়েছে কি না। আর হলেও তা কতক্ষণ ব্যবহৃত হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, টিপ্পনকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবার রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
গত ১ নভেম্বর রাতে সন্ত্রাসীর গুলিতে প্রাণ হারান নরসিংদী পৌরসভার মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন। এই হত্যাকাণ্ডের পর দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার দায়ে পুলিশ সুপার ড. আক্কাছ উদ্দিন ভুঁইয়াকে প্রত্যাহার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বিজয় বসাককে বদলি এবং আরেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনামুল কবিরকে প্রত্যাহার করা হয়। মামলাটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে মনিটরিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নরসিংদীর পুলিশ সুপারের দায়িত্ব দেওয়া হয় খন্দকার মুহিদউদ্দিনকে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পান সুব্রত হাওলাদার।
এ ঘটনায় নিহত লোকমানের ছোট ভাই কামরুজ্জামান বাদী হয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর ছোট ভাই সালাহউদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। আসামিদের ১২ জনই ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ছয়জনকে। তারা হচ্ছে আশরাফ হোসেন সরকার, হাজি সেলিম, কাজী টিপ্পন, ফারুক, মাহফুজ ও শাহিন। অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে মাহফুজ, শাহিনসহ নাসির নামে আরেকজনকে।
স্থানীয়রা যা বললেন : লোকমান হত্যা মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে শহরের বাসাইল এলাকার বাসিন্দা কবির মিয়া বলেন, 'লোকমান ছিলেন জনগণের নেতা। তাঁর হাত ধরেই অবহেলিত নরসিংদী একটি সুন্দর নগরে পরিণত হয়েছে। আর সেই ব্যক্তিটিকে হত্যার পর পুলিশ শুধু তদন্তে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। গুটিকয়েক অখ্যাতকে গ্রেপ্তার করলেও এজাহারভুক্ত আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় আমরা মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত।'
জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, 'সরকারদলীয় আসামিদের ব্যাপারে পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করতে পারে না, এটাই বাংলাদেশের সংস্কৃতি। লোকমান হত্যা মামলাও এর বাইরে নয়। মামলার তদন্ত চলছে মন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী। তিনি ক্ষমতায় থাকলে এজাহারভুক্ত আসামি কেউ আর গ্রেপ্তার হবে না।' তিনি বলেন, 'লোকমানের স্মরণে বিভিন্ন শোকসভায় হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করায় কিছু লোক আমাকে হুমকি দিচ্ছেন। ভয় দেখাচ্ছেন জেলে ঢোকানোর।'
নরসিংদী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহিষাশুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, 'হত্যাকাণ্ডের ২১ দিনে পুলিশ কয়জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে জনগণ তা জানতে চায়। এজাহারভুক্ত একজন আসামি গ্রেপ্তার সাধারণ মানুষের কাছে কোনো স্বস্তির সংবাদ হতে পারে না। আমরা অনতিবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি করছি।'
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন ভুঁইয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমি লোকমান হত্যাকাণ্ডের একজন প্রত্যক্ষদর্শী। ইতিমধ্যে পুলিশ আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাই মামলার ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।'
লোকমান হোসেনের ভাই ও মামলার বাদী কামরুজ্জামান বলেন, 'পুলিশ শুধু আমাদের আশ্বাস দিচ্ছে মামলা সঠিক প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছে। দ্রুত একটি ভালো ফলাফল দিতে পারবে। কিন্তু ২১ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও এজাহারভুক্ত মাত্র একজন আসামি গ্রেপ্তার হওয়ায় আমরা তাদের আশ্বাসের প্রতিফলন পাচ্ছি না। শুনেছি, প্রধানমন্ত্রী মামলার তদারকি করছেন। তাই আমরা তাঁর দিকে তাকিয়ে আছি। পুলিশও আমাদের আশ্বস্ত করেছিল। আমরা চাই পুলিশ যেন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চলে, অন্য কারো নির্দেশে নয়।'
লোকমান হোসেনের স্ত্রী বুবলী বলেন, 'এমনি এক মঙ্গলবার (গতকাল) আমি আমার স্বামীকে হারিয়েছি। এরই মধ্যে তিনটি মঙ্গলবার চলে গেল। কিন্তু পুলিশ এখনো এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। পুলিশ কী করছে তা আমাদের অজানা। আমি কথা নয়, কাজ দেখতে চাই। আমার স্বামীকে যারা হত্যা করেছে, তাদের গ্রেপ্তার ও বিচার চাই।'
নিহত লোকমানের ভাই জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম নেওয়াজ বলেন, 'পুলিশের কথায় মনে হচ্ছে তারা মামলার তদন্ত নয়, আদালতের বিচারকাজটিও শেষ করে ফেলছে। অপরাধীদের বিচার করবে আদালত আর সে জন্য পুলিশের দায়িত্ব আসামিদের গ্রেপ্তার ও ঘটনার সঠিক তদন্ত করা।' তিনি আরো বলেন, 'ভাইয়ের (লোকমান) হত্যা মামলায় পুলিশের নাটকীয়তায় তাদের কাজ নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হচ্ছে। তাই পুলিশের উচিত সব আসামি গ্রেপ্তারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া। নইলে নরসিংদীর সব মানুষ তাদের প্রিয় নেতার ঘাতকদের গ্রেপ্তার দাবিতে স্টেডিয়ামে গণ-অনশন করবে।'
মামলার অগ্রগতি নিয়ে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে গতকাল বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পুলিশ সুপার খন্দকার মুহিদউদ্দিন।
এজাহারভুক্ত আসামি গ্রেপ্তারে ধীরগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এজাহারে নাম থাকলেই গ্রেপ্তার করা যায় না। তদন্তে আসতে হয়। তদন্তে কার নাম এসেছে আমরা কিন্তু তা বলিনি। সবাই আমার তদন্তের মধ্যে রয়েছে। যে তদন্তের মধ্যে আসবে, তাকে আমরা গ্রেপ্তার করব।'
এ পর্যন্ত তদন্তে এজাহারভুক্ত মাত্র একজনের নাম এসেছে কি না_এমন প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার বলেন, 'আমি তো তা বলিনি।' তাহলে বাকিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না কেন_এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'আমি তো ঘোষণা দিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করব না।'
হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস উদ্ধারের খবর পুলিশ সূত্রেই পাওয়া। অথচ এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার পরস্পরবিরোধী তথ্য দেন। তিনি প্রথমে বলেন, মাইক্রোবাস উদ্ধার হয়নি। এর পরই তিনি বলেন, মাইক্রোবাস উদ্ধার হয়ে থাকলেও যাচাই করে দেখা হচ্ছে সেটি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার হয়েছে কি না। আর হলেও তা কতক্ষণ ব্যবহৃত হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, টিপ্পনকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবার রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
গত ১ নভেম্বর রাতে সন্ত্রাসীর গুলিতে প্রাণ হারান নরসিংদী পৌরসভার মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন। এই হত্যাকাণ্ডের পর দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার দায়ে পুলিশ সুপার ড. আক্কাছ উদ্দিন ভুঁইয়াকে প্রত্যাহার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বিজয় বসাককে বদলি এবং আরেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনামুল কবিরকে প্রত্যাহার করা হয়। মামলাটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে মনিটরিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নরসিংদীর পুলিশ সুপারের দায়িত্ব দেওয়া হয় খন্দকার মুহিদউদ্দিনকে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পান সুব্রত হাওলাদার।
এ ঘটনায় নিহত লোকমানের ছোট ভাই কামরুজ্জামান বাদী হয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর ছোট ভাই সালাহউদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। আসামিদের ১২ জনই ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ছয়জনকে। তারা হচ্ছে আশরাফ হোসেন সরকার, হাজি সেলিম, কাজী টিপ্পন, ফারুক, মাহফুজ ও শাহিন। অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে মাহফুজ, শাহিনসহ নাসির নামে আরেকজনকে।
স্থানীয়রা যা বললেন : লোকমান হত্যা মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে শহরের বাসাইল এলাকার বাসিন্দা কবির মিয়া বলেন, 'লোকমান ছিলেন জনগণের নেতা। তাঁর হাত ধরেই অবহেলিত নরসিংদী একটি সুন্দর নগরে পরিণত হয়েছে। আর সেই ব্যক্তিটিকে হত্যার পর পুলিশ শুধু তদন্তে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। গুটিকয়েক অখ্যাতকে গ্রেপ্তার করলেও এজাহারভুক্ত আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় আমরা মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত।'
জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, 'সরকারদলীয় আসামিদের ব্যাপারে পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করতে পারে না, এটাই বাংলাদেশের সংস্কৃতি। লোকমান হত্যা মামলাও এর বাইরে নয়। মামলার তদন্ত চলছে মন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী। তিনি ক্ষমতায় থাকলে এজাহারভুক্ত আসামি কেউ আর গ্রেপ্তার হবে না।' তিনি বলেন, 'লোকমানের স্মরণে বিভিন্ন শোকসভায় হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করায় কিছু লোক আমাকে হুমকি দিচ্ছেন। ভয় দেখাচ্ছেন জেলে ঢোকানোর।'
নরসিংদী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহিষাশুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, 'হত্যাকাণ্ডের ২১ দিনে পুলিশ কয়জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে জনগণ তা জানতে চায়। এজাহারভুক্ত একজন আসামি গ্রেপ্তার সাধারণ মানুষের কাছে কোনো স্বস্তির সংবাদ হতে পারে না। আমরা অনতিবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি করছি।'
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন ভুঁইয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমি লোকমান হত্যাকাণ্ডের একজন প্রত্যক্ষদর্শী। ইতিমধ্যে পুলিশ আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাই মামলার ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারছি না।'
লোকমান হোসেনের ভাই ও মামলার বাদী কামরুজ্জামান বলেন, 'পুলিশ শুধু আমাদের আশ্বাস দিচ্ছে মামলা সঠিক প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছে। দ্রুত একটি ভালো ফলাফল দিতে পারবে। কিন্তু ২১ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও এজাহারভুক্ত মাত্র একজন আসামি গ্রেপ্তার হওয়ায় আমরা তাদের আশ্বাসের প্রতিফলন পাচ্ছি না। শুনেছি, প্রধানমন্ত্রী মামলার তদারকি করছেন। তাই আমরা তাঁর দিকে তাকিয়ে আছি। পুলিশও আমাদের আশ্বস্ত করেছিল। আমরা চাই পুলিশ যেন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চলে, অন্য কারো নির্দেশে নয়।'
লোকমান হোসেনের স্ত্রী বুবলী বলেন, 'এমনি এক মঙ্গলবার (গতকাল) আমি আমার স্বামীকে হারিয়েছি। এরই মধ্যে তিনটি মঙ্গলবার চলে গেল। কিন্তু পুলিশ এখনো এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। পুলিশ কী করছে তা আমাদের অজানা। আমি কথা নয়, কাজ দেখতে চাই। আমার স্বামীকে যারা হত্যা করেছে, তাদের গ্রেপ্তার ও বিচার চাই।'
নিহত লোকমানের ভাই জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম নেওয়াজ বলেন, 'পুলিশের কথায় মনে হচ্ছে তারা মামলার তদন্ত নয়, আদালতের বিচারকাজটিও শেষ করে ফেলছে। অপরাধীদের বিচার করবে আদালত আর সে জন্য পুলিশের দায়িত্ব আসামিদের গ্রেপ্তার ও ঘটনার সঠিক তদন্ত করা।' তিনি আরো বলেন, 'ভাইয়ের (লোকমান) হত্যা মামলায় পুলিশের নাটকীয়তায় তাদের কাজ নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হচ্ছে। তাই পুলিশের উচিত সব আসামি গ্রেপ্তারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া। নইলে নরসিংদীর সব মানুষ তাদের প্রিয় নেতার ঘাতকদের গ্রেপ্তার দাবিতে স্টেডিয়ামে গণ-অনশন করবে।'
No comments