ঢাকা ঘোষণা পাঠ-শেষ হলো দক্ষিণ এশিয়া সোশ্যাল ফোরাম সম্মেলন

পাঁচ দফা অঙ্গীকার-সংবলিত 'ঢাকা ঘোষণা'র মধ্য দিয়ে শেষ হলো দক্ষিণ এশিয়া সোশ্যাল ফোরাম বাংলাদেশ-২০১১। গতকাল মঙ্গলবার শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভে সমাপনী অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি প্রতিনিধি ও দক্ষিণ এশিয়ার মানবাধিকার নেতা ও বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ ঘোষণার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। ঢাকা ঘোষণা পাঠ করেন ওয়ার্ল্ড সোশ্যাল ফোরাম প্রতিনিধি অমিত সেন।


ঘোষণায় জনগণের সুনির্দিষ্ট চাহিদা অনুযায়ী তাদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতার মূল অর্থাৎ কর্তৃত্বশীলতা, প্রাতিষ্ঠানিকতা ও প্রভাব বিস্তারের অভিসন্ধির বিরুদ্ধে প্রচেষ্টাকে বৃহত্তর আঙ্গিকে বিস্তৃত করা, নিপীড়ন ও শোষণমূলক চেতনার শোষণনির্ভর তত্ত্ব, প্রাতিষ্ঠানিক চর্চা ও কর্মকাণ্ডের মুখোশ উন্মোচন অব্যাহত রাখা, বিদ্যমান অসাম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে নিবেদিতপ্রাণ স্থানীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ব্যক্তি ও সংগঠনগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ততা বিনির্মাণ, বিশ্বব্যাপী সমমনা কর্মীদের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদবিরোধী সংগ্রামের অভিজ্ঞতা বিনিময় করা ও একে-অপরের লড়াইয়ের সহমর্মী হওয়া এবং নতুন ও কার্যকরী তত্ত্ব ও অভিজ্ঞতার আলোকে সংগ্রাম অব্যাহত রাখার প্রত্যয়ের উল্লেখ করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও দক্ষিণ এশিয়া সোশ্যাল ফোরাম (এসএএসএফ) ২০১১-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সমাপনী অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান, পাকিস্তানের প্রতিনিধি ফারুক তারিক, শাকিলা নাজ, ফিলিপাইনের লিদি ন্যাকপিল, ব্রাজিলের চিকো হোয়াইটেকার, নেপালের ড. কেশব খাড়কা, ফিলিস্তিনের আহমদ জারদার, ভারতের বিনোদ রায়না প্রমুখ।
আয়োজক সূত্র জানায়, গত পাঁচ দিনের এ আয়োজনে ১৩টি প্লেনারি, অর্ধশতাধিক সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, কর্মশালা, মেলা, যুব ফোরাম, শোভাযাত্রা, গান, পথনাটক, চিত্র ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনীসহ নানা বর্ণাঢ্য পর্ব ছিল। আন্তর্জাতিক মানবাধিকারকর্মী, উন্নয়নকর্মী, রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ, সমাজতাত্তি্বক, নানা পেশাজীবী, অপেশাজীবী ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল এ আয়োজনে।
এর আগে সমাপনী দিনের সকালে সিনেট ভবন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় 'অভিন্ন পানিবণ্টন, আঞ্চলিক সহযোগিতা ও সাম্যতা' শীর্ষক প্লেনারি। মুহাম্মদ হিলালউদ্দিনের সঞ্চালনায় ও অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমানের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এ কে এম মাসুদ আলী। প্রবন্ধে তিনি প্রকৃতি প্রদত্ত পানির বাণিজ্যিকীকরণের সমালোচনা করেন এবং পানির ওপর ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে আঞ্চলিক সহযোগিতামূলক মনোভাবের ওপর জোর দেন।
এ ফোরামে দেশের বাইরে থেকে ৭২৪ জন, দেশের দুই হাজার ৫৫৫ জন এবং দেশের বাইরে থেকে ১৮১টি সংস্থা, দেশের ৪৩৭টি সংস্থা অংশগ্রহণ করে।
প্রসঙ্গত আগামী ২৩ নভেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে চলবে ওয়ার্ল্ড সোশ্যাল ফোরামের ইন্টারন্যাশন্যাল কাউন্সিল।

No comments

Powered by Blogger.