পার্থে সবুজে অভিযান

র্বশেষ চারজন পেসার নিয়ে ভারত কবে টেস্ট খেলেছিল? ক্রিকেট রিপোর্টারদের এই পরিসংখ্যান ঘাঁটার একটা উপলক্ষ তৈরি করে দিলেন খোদ ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। পার্থের উইকেট এখনও যেভাবে সবুজ ঘাসের কার্পেটে ঢাকা, তাতে স্পিনাররা যে শুধুই বল ছুড়বেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কাজের কাজ তাতে কিছুই হবে না। তার চাইতে বরং একজন পেসার বেশি নিয়ে খেলাই ভালো। ধোনি এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।


আজ সকালে উইকেট দেখেই তবে সেরা একাদশ ঠিক করবেন। এর অর্থ, ১৯৯১-৯২ মৌসুমের পর এই প্রথম চারজন পেসার নিয়ে টেস্ট খেলতে নামছে ভারত! কিউরেটর ক্যামেরন সাদারল্যান্ডের কথা ধরে নিলে এটা মোটামুটি নিশ্চিত। এছাড়া মেলবোর্ন আর সিডনিতে হারের পর টেস্ট বাঁচাতে আজ চারজন পেসার নিয়েই মাঠে নামার সম্ভাবনা রয়েছে ভারতের। একই পরিকল্পনা করছে অস্ট্রেলিয়াও। পার্থের সবুজের সাম্রাজ্যে নাথান লিয়নকে দলে নিয়ে লাভ নেই। তার চেয়ে বরং মিচেল স্টার্ককে নিয়ে চারজন পেসার খেলানোর ইঙ্গিতই দিলেন অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক।
পার্থের ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (ওয়াকা) গ্রাউন্ডের কিউরেটর ক্যামেরন সাদারল্যান্ড আগে থেকেই জানিয়ে আসছেন, 'প্রচণ্ড গতি আর বাউন্সি উইকেটই তৈরি করা হয়েছে। পেসাররাই এখানে সুবিধা পাবেন বেশি।' গতিময় এই উইকেটে ৪ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের তৃতীয়টি শুরু হচ্ছে আজ। বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ৫টায় শুরু হয়ে যাবে অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ জয় কিংবা ভারতের সিরিজ বাঁচানোর মিশন।
১৯৯১-৯২ মৌসুমে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডেই সর্বশেষ চারজন পেসার খেলিয়েছিল ভারত। ওই টেস্টে কপিল দেব, মনোজ প্রভাকর এবং জাভাগাল শ্রীনাথের সঙ্গে নেওয়া হয়েছিল অভিষিক্ত সুব্রত ব্যানার্জিকে। অলরাউন্ডার রবি শাস্ত্রী ছিলেন একমাত্র স্পিনার। শেষ পর্যন্ত ওই টেস্ট ড্র হয়েছিল। এবার পার্থের ওয়াকা গ্রাউন্ডে ভারত চারজন পেসার খেলাবে কি-না এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। যদি খেলানো হয় তাহলে একটি মাত্র পরিবর্তন আসতে পারে দলে। জহির খান, ইশান্ত শর্মা আর উমেশ যাদবের সঙ্গে খেলতে পারেন বিনয় কুমার। সে ক্ষেত্রে বাদ পড়তে পারেন স্পিনার রবিচন্দ্র অশ্বিন। আর এমনটা হলে ম্যাচে স্পিনার হিসেবে বিরেন্দর শেবাগের হাতেই বল তুলে দিতে পারেন ধোনি। চার বছর আগে পার্থেই গিলক্রিস্টসহ দুটি উইকেট পেয়েছিলেন পার্টটাইম এই স্পিনার। মেলবোর্ন আর সিডনিতে ভারতের ৪০ উইকেটের ৩৭টিই পেয়েছিলেন অসি পেসাররা। এ কারণেও চার পেসার খেলানোর পরিকল্পনা করছে ভারত। আর যদি চার পেসার খেলানো না হয় তাহলে দলে কোনো পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা নেই। অফ ফর্মে থাকা ভিভিএস লক্ষ্মণকে তো কখনোই বাদ দেওয়া হবে না। অফ ফর্মে থাকা আরেক ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলিকেও বাদ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন অধিনায়ক ধোনি। ওয়াকা গ্রাউন্ডের সবুজ পিচে গত দু'তিন দিন টানা নেট প্র্যাকটিস করেছেন কোহলি। টিম সূত্র জানিয়েছে, তাকে বাদ দেওয়া হবে না।
চার বছর আগে সিডনিতে বিখ্যাত মাঙ্কিগেট কেলেঙ্কারি টেস্টের পর সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল পার্থেই। ২-০-তে পিছিয়ে থাকার পর এখানে এসেই সম্মানজনক একটি জয় পেয়েছিল ভারত। তবে এবার উইকেটের যে অবস্থা তাতে ভারতীয় শিবিরে আশার আলো জ্বলছেই না। তার চেয়ে বরং ২-০-তে এগিয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়া আছে বেশ ফুরফুরে মেজাজে। তাদের পেসাররা আছেন দারুণ ফর্মে। মিডল অর্ডারে তিন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান পন্টিং, ক্লার্ক আর হাসি ফিরেছেন ফর্মে। যদিও টপ অর্ডার নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে। ওয়ার্নার, কাওয়ান আর শন মার্শ সিডনিতেও ভারতীয় পেসার জহির খানের সামনে ঝরা পাতার মতো উড়ে গিয়েছিলেন। তবুও মাইকেল ক্লার্ক, রিকি পন্টিং আর মাইক হাসি আত্মবিশ্বাসী এই টেস্টেই ভারতকে হারিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করে নেবেন। ওয়াকা আবার মাইক হাসির হোম গ্রাউন্ড। দারুণ সাফল্য রয়েছে তার এই মাঠে। ব্যাটিংয়ে এই ত্রয়ীর সঙ্গে অসিদের শক্তি হিসেবে থাকছে পেস ত্রয়ী রায়ান হ্যারিস, পিটার সিডল এবং বেন হিলফেনহাস। নাথান লিয়নের স্থানে মিচেল স্টার্ককে খেলানো হলে অসি পেস তুণে যোগ হবে আরও একটি তীর। তাতে বিপদ বাড়বে ভারতেরই।

No comments

Powered by Blogger.