পবিত্র কোরআনের আলো-মানুষ ও শয়তান পরস্পরের শত্রু হয়ে পৃথিবীতে এসেছে
২১. ওয়া ক্বা-ছামাহুমা- ইন্নী লাকুমা- লামিনান্ না-সিহীন। ২২. ফাদাল্লা-হুমা বিগুরূর; ফালাম্মা যা-ক্বাশ্ শাজারাতা বাদাত্ লাহুমা ছাওআ-তুহুমা ওয়া ত্বাফিক্বা ইয়াখ্সিফা-নি আ'লাইহিমা মিন ওয়ারাকি্বল জান্নাহ্; ওয়া না-দা-হুমা রাব্বুহুমা আলাম আনহাকুমা আ'ন তিলকুমাশ্ শাজারাতি ওয়া আক্বুল্ লাকুমা ইন্নাশ্ শাইত্বা-না লাকুমা আদুউ্যম্ মুবীন। ২৩. ক্বা-লা রাব্বানা যালামনা আনফুছানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা লানাকূনান্না মিনাল খা-ছিরীন।
২৪. ক্বা-লাহ্বিত্বু বা'দ্বুকুম লিবা'দ্বিন আ'দুউ্যন ওয়া লাকুম ফিল আরদ্বি মুছতাক্বারুন ওয়া মাতা-উ'ন ইলা- হীন। [সুরা : আল-আ'রাফ, আয়াত : ২১_২৪] অনুবাদ ২১. সে তাদের দুজনের (আদম ও হাওয়া) সামনে কসম খেয়ে বলল, 'বিশ্বাস করো, আমি তোমাদের দুজনের শুভাকাঙ্ক্ষী।'
২২. এভাবে সে এদের দুজনকেই প্রতারণার জালে আটকে নিচে নামিয়ে দিল। যখন তারা সে গাছের (ফলের) স্বাদ গ্রহণ করল তখন তাদের উভয়ের লজ্জা স্থান উন্মোচিত হয়ে গেল পরস্পরের কাছে। এরপর তারা বাগানের কিছু পাতা জোড়া দিয়ে নিজেদের শরীরে জড়াতে লাগল। তখন তাদের প্রভু তাদের ডেকে বললেন, 'আমি কি তোমাদের এ গাছের ব্যাপারে নিষেধ করিনি এবং তোমাদের বলিনি, শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু?'
২৩. তখন তারা দুজনেই বলল, 'হে প্রভু, আমরা নিজেদের ওপর জুলুম করে ফেলেছি। তুমি যদি আমাদের ক্ষমা না করো এবং তাদের প্রতি দয়া না করো, তবে আমরা চরম ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে শামিল হয়ে যাব।'
২৪. আল্লাহ (আদম-হাওয়া ও শয়তানকে) বললেন, 'তোমরা সবাই এখান থেকে নেমে যাও। তোমরা (মানুষ ও শয়তান) একে অপরের শত্রু। পৃথিবীতে তোমাদের জন্য আবাসভূমি রয়েছে এবং নির্দিষ্টকালের জীবন যাপনের জন্য জীবনসামগ্রীও রয়েছে।'
ব্যাখ্যা
এই আয়াতগুলো আগের আয়াতের ধারাবাহিকতায়ই এসেছে। শয়তান আদম-হাওয়া (আ.)-কে নিষিদ্ধ গাছের ফল খাওয়ানোর জন্য নানাভাবে প্ররোচিত করছিল। ২১ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, সে তাদের সামনে কসম খেয়ে বলছিল যে, সে তাদের একান্ত শুভানুধ্যায়ী, তাদের ভালোর জন্যই সে তাদের এ পরামর্শ দিচ্ছে। ২২ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে, আদম-হাওয়া শয়তানের ফাঁদে পা দেওয়ার পর তাঁদের কী পরিণতি হয়েছিল সে কথা। এই আয়াতে প্রতারণার মাধ্যমে নিচে নামিয়ে দেওয়ার অর্থ হতে পারে আল্লাহ তাদের মর্যাদার যে উঁচু স্থানে রেখেছিলেন তা থেকে নিচে নামিয়ে দেওয়া; অর্থাৎ সম্মানহানি ঘটানো, আরেকটা অর্থ হতে পারে জান্নাত থেকে দুনিয়ায় নামিয়ে দেওয়া। এই আয়াতের বর্ণনায় এটাও বোঝা গেল, উলঙ্গ না থাকা ও সতর ঢাকা মানুষের স্বভাব ধর্ম। এ কারণেই জান্নাতি পোশাক অপসৃত হওয়া মাত্রই তারা সম্ভাব্য যেকোনো উপায়ে সতর ঢাকতে চেষ্টা করলেন। ২৩ নম্বর আয়াতটি একটি মোনাজাত। এটাই ক্ষমা প্রার্থনার সেই বাক্য, সে সম্পর্কে সুরা বাকারার (২:৩৭) বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালাই তাদের এটা শিক্ষা দিয়েছিলেন। আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক শিখিয়ে দেওয়া এই বাক্যের মাধ্যমে তওবা করলে তা কবুল হওয়ার বেশি আশা করা যায়। আল্লাহ একদিকে যেমন শয়তানকে অবকাশ দিয়ে মানুষকে বিপথগামী করার সুযোগ দিয়েছেন, তেমনি তিনি মানুষকে তওবা ও ইস্তিগফারও শিক্ষা দিয়েছেন। কাজেই শয়তানের ধোঁকায় পড়ে কেউ কোনো গুনাহ করে ফেললে তার উচিত সঙ্গে সঙ্গে তওবা করে ফেলা। অর্থাৎ সে তার কৃত ভুলের জন্য লজ্জিত হবে ও ভবিষ্যতে আর না করার অঙ্গীকার করবে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
২২. এভাবে সে এদের দুজনকেই প্রতারণার জালে আটকে নিচে নামিয়ে দিল। যখন তারা সে গাছের (ফলের) স্বাদ গ্রহণ করল তখন তাদের উভয়ের লজ্জা স্থান উন্মোচিত হয়ে গেল পরস্পরের কাছে। এরপর তারা বাগানের কিছু পাতা জোড়া দিয়ে নিজেদের শরীরে জড়াতে লাগল। তখন তাদের প্রভু তাদের ডেকে বললেন, 'আমি কি তোমাদের এ গাছের ব্যাপারে নিষেধ করিনি এবং তোমাদের বলিনি, শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু?'
২৩. তখন তারা দুজনেই বলল, 'হে প্রভু, আমরা নিজেদের ওপর জুলুম করে ফেলেছি। তুমি যদি আমাদের ক্ষমা না করো এবং তাদের প্রতি দয়া না করো, তবে আমরা চরম ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে শামিল হয়ে যাব।'
২৪. আল্লাহ (আদম-হাওয়া ও শয়তানকে) বললেন, 'তোমরা সবাই এখান থেকে নেমে যাও। তোমরা (মানুষ ও শয়তান) একে অপরের শত্রু। পৃথিবীতে তোমাদের জন্য আবাসভূমি রয়েছে এবং নির্দিষ্টকালের জীবন যাপনের জন্য জীবনসামগ্রীও রয়েছে।'
ব্যাখ্যা
এই আয়াতগুলো আগের আয়াতের ধারাবাহিকতায়ই এসেছে। শয়তান আদম-হাওয়া (আ.)-কে নিষিদ্ধ গাছের ফল খাওয়ানোর জন্য নানাভাবে প্ররোচিত করছিল। ২১ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, সে তাদের সামনে কসম খেয়ে বলছিল যে, সে তাদের একান্ত শুভানুধ্যায়ী, তাদের ভালোর জন্যই সে তাদের এ পরামর্শ দিচ্ছে। ২২ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে, আদম-হাওয়া শয়তানের ফাঁদে পা দেওয়ার পর তাঁদের কী পরিণতি হয়েছিল সে কথা। এই আয়াতে প্রতারণার মাধ্যমে নিচে নামিয়ে দেওয়ার অর্থ হতে পারে আল্লাহ তাদের মর্যাদার যে উঁচু স্থানে রেখেছিলেন তা থেকে নিচে নামিয়ে দেওয়া; অর্থাৎ সম্মানহানি ঘটানো, আরেকটা অর্থ হতে পারে জান্নাত থেকে দুনিয়ায় নামিয়ে দেওয়া। এই আয়াতের বর্ণনায় এটাও বোঝা গেল, উলঙ্গ না থাকা ও সতর ঢাকা মানুষের স্বভাব ধর্ম। এ কারণেই জান্নাতি পোশাক অপসৃত হওয়া মাত্রই তারা সম্ভাব্য যেকোনো উপায়ে সতর ঢাকতে চেষ্টা করলেন। ২৩ নম্বর আয়াতটি একটি মোনাজাত। এটাই ক্ষমা প্রার্থনার সেই বাক্য, সে সম্পর্কে সুরা বাকারার (২:৩৭) বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালাই তাদের এটা শিক্ষা দিয়েছিলেন। আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক শিখিয়ে দেওয়া এই বাক্যের মাধ্যমে তওবা করলে তা কবুল হওয়ার বেশি আশা করা যায়। আল্লাহ একদিকে যেমন শয়তানকে অবকাশ দিয়ে মানুষকে বিপথগামী করার সুযোগ দিয়েছেন, তেমনি তিনি মানুষকে তওবা ও ইস্তিগফারও শিক্ষা দিয়েছেন। কাজেই শয়তানের ধোঁকায় পড়ে কেউ কোনো গুনাহ করে ফেললে তার উচিত সঙ্গে সঙ্গে তওবা করে ফেলা। অর্থাৎ সে তার কৃত ভুলের জন্য লজ্জিত হবে ও ভবিষ্যতে আর না করার অঙ্গীকার করবে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments