পিআইডির গাইড থেকে সহকারী সম্পাদকরা বাদঃ আমরা নিন্দা ও ধিক্কার জানাই
বর্তমান সরকারের হাত ধরে দিন বদলের পালা যে সত্যিই শুরু হয়ে গেছে, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রেস ইনফরমেশন ডিপার্টমেন্ট (পিআইডি)। পিআইডি প্রতি বছর আপডেট করে মূলত সাংবাদিকদের ব্যবহারের জন্য একটা টেলিফোন গাইড প্রকাশ করে; এ বছরও করেছে।
প্রধান তথ্য কর্মকর্তার ভিজিটিং কার্ড জুড়ে দিয়ে পিআইডির টেলিফোন গাইড-২০০৯ সম্প্রতি পাঠানো হয়েছে বিভিন্ন পত্রিকা অফিসে। সে সুবাদে আমার দেশ-এর ভাগেও জুটেছে কয়েকটা কপি। নতুন এই সংস্করণের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিকদের তালিকা থেকে উধাও হয়ে গেছে সহকারী সম্পাদকদের নাম। ব্যাপারটা অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি হলে ২/১টি ক্ষেত্রে এ বিচ্যুতি ঘটত। কিন্তু বইটির কোথাও কোনো সহকারী সম্পাদকের নাম না থাকায় এ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, অপকর্মটি করা হয়েছে ঠাণ্ডা মাথায়, ইচ্ছাকৃতভাবে। মিডিয়া সংক্রান্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানটির এই অভব্য আচরণের দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে। এর মধ্য দিয়ে যে মন্দ দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো তার কলঙ্ক বর্তমান সরকারকে তাড়া করতে থাকবে এ সরকার বিগত সরকারে পরিণত হওয়ার পরও।
সাংবাদিকতা পেশাগত বৈশিষ্ট্যের কারণে সমষ্টিগত তত্পরতা দাবি করে। সংবাদপত্রে সাংবাদিকরা বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত থাকেন। এই বিভাগগুলো ওয়াটার-টাইট কম্পার্টমেন্ট নয়, বরং পরস্পর নির্ভরশীল। সাংবাদিকতার যে শাখা সংবাদপত্রে সম্পাদকীয় মন্তব্য, কলাম লেখার দায়িত্বপ্রাপ্ত, সেটার পরিচয় হচ্ছে সম্পাদকীয় বিভাগ। সম্পাদকীয় বিভাগে সাধারণত পোড় খাওয়া সিনিয়র সাংবাদিকরা নিয়োগপ্রাপ্ত হন। এরাই হচ্ছেন পত্রিকার সহকারী সম্পাদক। সম্পাদকীয় লেখাই সহকারী সম্পাদকদের মূল কাজ। সম্পাদকীয় মন্তব্যের মধ্য দিয়ে যে কোনো পত্রিকার অবস্থান, দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্রের অনুসৃত নীতিমালারও প্রতিফলন ঘটে সম্পাদকীয় মন্তব্যের মাধ্যমে। এই কাজটি সহকারী সম্পাদকরা করেন সম্পাদকের নেতৃত্বে। সম্পাদক আর সহকারী সম্পাদকদের নিয়ে গড়ে ওঠে এডিটোরিয়াল ইনস্টিটিউশন। দুনিয়ার সব দেশে সংবাদপত্রের সম্পাদকীয়তে পরিবেশিত দিক-নির্দেশনা বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে থাকে। সে কারণে সহকারী সম্পাদকরা পেয়ে থাকেন মর্যাদার আসন। পিআইডি সে আসনটি কেড়ে নিতে উদ্যত হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পিআইডি বিষয়টি সম্পর্কে সম্যক অবহিত থাকার কথা। এর অন্যথা হলে সেটাকে তাদের অযোগ্যতা বলে ধরে নিতে হয়। তারপরও পিআইডি কেন এ ধৃষ্টতা দেখাল সেটাই হচ্ছে প্রশ্ন। মুখে যতই গণতন্ত্রের কথা বলা হোক, কর্তার ইচ্ছায় কর্মই হচ্ছে এদেশের সংস্কৃতি। পিআইডিকে ঘিরে যিনি এই অপকর্ম করিয়েছেন, সেই ‘কর্তা’র চেহারা পরিষ্কার হওয়া দরকার। তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছের মানুষ ছিলেন। মন্ত্রী হওয়ার আগে জাতীয় প্রেসক্লাবে তার অনেক সময় কেটেছে। তার আমলে পিআইডি সাংবাদিকদের খাতা থেকে সহকারী সম্পাদকদের নাম মুছে ফেলল—এ বাস্তবতা চোখে দেখেও মেনে নিতে কষ্ট হয়। জাতীয় রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষরা বলে থাকেন যে, বর্তমান সরকারের আচার-আচরণে একদলীয় বাকশালী মানসিকতার প্রকাশ ঘটতে শুরু করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে তত্কালীন সরকার বাকশাল কায়েমের চূড়ান্ত প্রস্তুতি হিসেবে সরকারি মালিকানার চারটি দৈনিক পত্রিকা রেখে বাকি সব পত্র-পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল। পিআইডির গাইডে সহকারী সম্পাদকের ‘নেই’ করে দিয়ে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার কিসের প্রস্তুতি নিচ্ছে আমরা জানি না। আমরা শুধু সরকারকে মনে রাখতে বলব, মন্দ কাজ অমঙ্গল ছাড়া আর কিছু ডেকে আনে না। আমরা পিআইডির এই অমার্জনীয় ধৃষ্টতাকে ধিক্কার জানাই।
সাংবাদিকতা পেশাগত বৈশিষ্ট্যের কারণে সমষ্টিগত তত্পরতা দাবি করে। সংবাদপত্রে সাংবাদিকরা বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত থাকেন। এই বিভাগগুলো ওয়াটার-টাইট কম্পার্টমেন্ট নয়, বরং পরস্পর নির্ভরশীল। সাংবাদিকতার যে শাখা সংবাদপত্রে সম্পাদকীয় মন্তব্য, কলাম লেখার দায়িত্বপ্রাপ্ত, সেটার পরিচয় হচ্ছে সম্পাদকীয় বিভাগ। সম্পাদকীয় বিভাগে সাধারণত পোড় খাওয়া সিনিয়র সাংবাদিকরা নিয়োগপ্রাপ্ত হন। এরাই হচ্ছেন পত্রিকার সহকারী সম্পাদক। সম্পাদকীয় লেখাই সহকারী সম্পাদকদের মূল কাজ। সম্পাদকীয় মন্তব্যের মধ্য দিয়ে যে কোনো পত্রিকার অবস্থান, দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্রের অনুসৃত নীতিমালারও প্রতিফলন ঘটে সম্পাদকীয় মন্তব্যের মাধ্যমে। এই কাজটি সহকারী সম্পাদকরা করেন সম্পাদকের নেতৃত্বে। সম্পাদক আর সহকারী সম্পাদকদের নিয়ে গড়ে ওঠে এডিটোরিয়াল ইনস্টিটিউশন। দুনিয়ার সব দেশে সংবাদপত্রের সম্পাদকীয়তে পরিবেশিত দিক-নির্দেশনা বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে থাকে। সে কারণে সহকারী সম্পাদকরা পেয়ে থাকেন মর্যাদার আসন। পিআইডি সে আসনটি কেড়ে নিতে উদ্যত হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পিআইডি বিষয়টি সম্পর্কে সম্যক অবহিত থাকার কথা। এর অন্যথা হলে সেটাকে তাদের অযোগ্যতা বলে ধরে নিতে হয়। তারপরও পিআইডি কেন এ ধৃষ্টতা দেখাল সেটাই হচ্ছে প্রশ্ন। মুখে যতই গণতন্ত্রের কথা বলা হোক, কর্তার ইচ্ছায় কর্মই হচ্ছে এদেশের সংস্কৃতি। পিআইডিকে ঘিরে যিনি এই অপকর্ম করিয়েছেন, সেই ‘কর্তা’র চেহারা পরিষ্কার হওয়া দরকার। তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছের মানুষ ছিলেন। মন্ত্রী হওয়ার আগে জাতীয় প্রেসক্লাবে তার অনেক সময় কেটেছে। তার আমলে পিআইডি সাংবাদিকদের খাতা থেকে সহকারী সম্পাদকদের নাম মুছে ফেলল—এ বাস্তবতা চোখে দেখেও মেনে নিতে কষ্ট হয়। জাতীয় রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষরা বলে থাকেন যে, বর্তমান সরকারের আচার-আচরণে একদলীয় বাকশালী মানসিকতার প্রকাশ ঘটতে শুরু করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে তত্কালীন সরকার বাকশাল কায়েমের চূড়ান্ত প্রস্তুতি হিসেবে সরকারি মালিকানার চারটি দৈনিক পত্রিকা রেখে বাকি সব পত্র-পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল। পিআইডির গাইডে সহকারী সম্পাদকের ‘নেই’ করে দিয়ে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার কিসের প্রস্তুতি নিচ্ছে আমরা জানি না। আমরা শুধু সরকারকে মনে রাখতে বলব, মন্দ কাজ অমঙ্গল ছাড়া আর কিছু ডেকে আনে না। আমরা পিআইডির এই অমার্জনীয় ধৃষ্টতাকে ধিক্কার জানাই।
No comments