গাদ্দাফির পতন-গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হোক লিবিয়ায়
টানা ৪২ বছরের শাসনের অবসান। জয় হলো মার্কিন যুদ্ধনীতির। প্রবল পরাক্রান্ত একনায়কের শেষ পরিণতি সীমাহীন লাঞ্ছনা, এমনকি মৃত্যুর পরও। নিজের জন্মশহর সার্তে বিদ্রোহীদের হাতে প্রাণ দিতে হলো মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে। পালাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পারেননি। ন্যাটো বাহিনীর কড়া নজরদারি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি তাঁর পক্ষে। ত্রিপোলির বাদশাহী প্রাসাদে চার দশক যাঁর বাস, তাঁকে শেষ পর্যন্ত আশ্রয় নিতে হয়েছিল একটি নালায়।
সেখান থেকে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে বের করে হত্যা করেছে বিদ্রোহীরা। মুয়াম্মার আল গাদ্দাফির মৃত্যুতে লিবিয়ায় একনায়কতন্ত্রের অবসান হলো। দীর্ঘ সময় ধরে তিনি শাসন করেছেন লিবিয়া। শেষ সময়ে বাঁচতে চেয়েছিলেন, বাঁচার আকুতি জানিয়েছিলেন, গুলি না করার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। গাদ্দাফির মৃত্যুর মধ্য দিয়ে যেমন লিবিয়ায় একনায়কতন্ত্রের অবসান, এর পাশাপাশি মার্কিন প্রশাসনের হিসাবে এটা একটা বড় পরিবর্তন।
গাদ্দাফির বিরুদ্ধে লিবিয়ায় আন্দোলন চলে আসছিল কয়েক মাস ধরেই। গত আগস্ট মাসে বিদ্রোহীরা দখল করে নেয় ত্রিপোলি। গাদ্দাফির প্রাসাদ বিদ্রোহীদের দখলে গেলেও গাদ্দাফিকে পাওয়া যায়নি। গা-ঢাকা দিয়েছিলেন তিনি। একের পর এক আশ্রয় পরিবর্তন করেছেন। নিজের অনুগত সেনাবাহিনীর একাংশ পক্ষ ত্যাগ করেছে। দাঁড়িয়েছে বিদ্রোহীদের পক্ষে। কিন্তু তিনি ভেঙে পড়েননি। বিদ্রোহকে চুরমার করে দেওয়ার ব্যাপারে বোধ হয় প্রবল আত্মবিশ্বাসী ছিলেন গাদ্দাফি। বিভিন্ন দেশের ভাড়াটে সৈন্যদের নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। সব প্রতিরোধ অনেকটা স্রোতের তোড়েই যেন ভেসে গেল। নিজ শহর ছেড়ে পালাতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত পারলেন না। প্রাণ দিতে হলো তাঁকে। গাদ্দাফির পতনের ব্যাপারে ন্যাটো মূল ভূমিকা পালন করলেও নেপথ্যে যে মার্কিন মদদ ছিল, এটা স্পষ্ট। আফগানিস্তান ও ইরাকের পর একটি বড় সাফল্য পেল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এটাও মানতে হবে, গাদ্দাফির মৃত্যুর মধ্য দিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হলো আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের প্রতি বিদ্রোহীদের সম্মান প্রদর্শনের ব্যাপারটি। গাদ্দাফির বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে মামলা শুরু করেছিলেন এই আদালত। জারি করা হয়েছিল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। কিন্তু আদালতের সেই আদেশের তোয়াক্কা করেনি বিদ্রোহীরা। রাস্তার পাশের নালায় আশ্রয় গ্রহণকারী একনায়ককে হত্যা করা হয়েছে।
রাজতন্ত্রকে হটিয়ে দেশের শাসনভার নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলেন একেবারে তরুণ বয়সে। সেই থেকে একটানা চার দশকের শাসন। এই সময়ে তাঁর একনায়ক হয়ে ওঠা। তাঁর বিরুদ্ধাচরণের শাস্তি ছিল ভয়ংকর। বেনগাজির এক কারাগারে ১২০০ বন্দিকে হত্যার অভিযোগ আছে। নিজ দেশকে তিনি বলেছিলেন 'জনগণের রাষ্ট্র'। কিন্তু তিনিই আবার গণতন্ত্র সম্পর্কে লিখেছেন, 'গণতন্ত্র একটি বিশাল ক্ষমতাশালী দলের একনায়কতন্ত্র।' অর্থাৎ নিজেকে একজন রাজনৈতিক দার্শনিক হিসেবেই ভাবতেন তিনি। এভাবে তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হতে পারে, এটা বোধ হয় তাঁর কল্পনারও অতীত ছিল। কোনোদিনই নিজ দেশ ছেড়ে পালাতে চাননি। বিদেশি হুমকির মুখে কোনোদিন নতি স্বীকার করেননি। এগুলোর পেছনে কি কাজ করেছে কোনো গোপন অহমিকা? হয়তো।
গাদ্দাফি-পরবর্তী লিবিয়ায় কী হবে? মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, 'লিবিয়ায় এ এক বিরাট পরিবর্তন।' সেই পরিবর্তনটা কী? কোনদিকে যাবে এবার লিবিয়া? বিদ্রোহী নেতারা লিবিয়ার পতাকা বদলে দিয়েছেন আগেই। বলেছেন, এবার দেশ গঠনের পালা। কিন্তু দেশের মানুষের হাতে এখন আগ্নেয়াস্ত্র। কোনো প্রশাসনিক কাঠামো আছে কি? এর পরও আমরা চাইব, লিবিয়ায় গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে। তবে লিবিয়ায় বসবাসকারী বাংলাদেশের নাগরিকদের সম্পর্কে ভাবতে হবে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে এনটিসিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এখন সেখানে বসবাসরত নাগরিকদের ব্যাপারে লিবিয়ায় বাংলাদেশের দূতাবাস ও সরকারকে বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে।
গাদ্দাফির বিরুদ্ধে লিবিয়ায় আন্দোলন চলে আসছিল কয়েক মাস ধরেই। গত আগস্ট মাসে বিদ্রোহীরা দখল করে নেয় ত্রিপোলি। গাদ্দাফির প্রাসাদ বিদ্রোহীদের দখলে গেলেও গাদ্দাফিকে পাওয়া যায়নি। গা-ঢাকা দিয়েছিলেন তিনি। একের পর এক আশ্রয় পরিবর্তন করেছেন। নিজের অনুগত সেনাবাহিনীর একাংশ পক্ষ ত্যাগ করেছে। দাঁড়িয়েছে বিদ্রোহীদের পক্ষে। কিন্তু তিনি ভেঙে পড়েননি। বিদ্রোহকে চুরমার করে দেওয়ার ব্যাপারে বোধ হয় প্রবল আত্মবিশ্বাসী ছিলেন গাদ্দাফি। বিভিন্ন দেশের ভাড়াটে সৈন্যদের নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। সব প্রতিরোধ অনেকটা স্রোতের তোড়েই যেন ভেসে গেল। নিজ শহর ছেড়ে পালাতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত পারলেন না। প্রাণ দিতে হলো তাঁকে। গাদ্দাফির পতনের ব্যাপারে ন্যাটো মূল ভূমিকা পালন করলেও নেপথ্যে যে মার্কিন মদদ ছিল, এটা স্পষ্ট। আফগানিস্তান ও ইরাকের পর একটি বড় সাফল্য পেল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এটাও মানতে হবে, গাদ্দাফির মৃত্যুর মধ্য দিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হলো আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের প্রতি বিদ্রোহীদের সম্মান প্রদর্শনের ব্যাপারটি। গাদ্দাফির বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে মামলা শুরু করেছিলেন এই আদালত। জারি করা হয়েছিল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। কিন্তু আদালতের সেই আদেশের তোয়াক্কা করেনি বিদ্রোহীরা। রাস্তার পাশের নালায় আশ্রয় গ্রহণকারী একনায়ককে হত্যা করা হয়েছে।
রাজতন্ত্রকে হটিয়ে দেশের শাসনভার নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলেন একেবারে তরুণ বয়সে। সেই থেকে একটানা চার দশকের শাসন। এই সময়ে তাঁর একনায়ক হয়ে ওঠা। তাঁর বিরুদ্ধাচরণের শাস্তি ছিল ভয়ংকর। বেনগাজির এক কারাগারে ১২০০ বন্দিকে হত্যার অভিযোগ আছে। নিজ দেশকে তিনি বলেছিলেন 'জনগণের রাষ্ট্র'। কিন্তু তিনিই আবার গণতন্ত্র সম্পর্কে লিখেছেন, 'গণতন্ত্র একটি বিশাল ক্ষমতাশালী দলের একনায়কতন্ত্র।' অর্থাৎ নিজেকে একজন রাজনৈতিক দার্শনিক হিসেবেই ভাবতেন তিনি। এভাবে তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হতে পারে, এটা বোধ হয় তাঁর কল্পনারও অতীত ছিল। কোনোদিনই নিজ দেশ ছেড়ে পালাতে চাননি। বিদেশি হুমকির মুখে কোনোদিন নতি স্বীকার করেননি। এগুলোর পেছনে কি কাজ করেছে কোনো গোপন অহমিকা? হয়তো।
গাদ্দাফি-পরবর্তী লিবিয়ায় কী হবে? মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, 'লিবিয়ায় এ এক বিরাট পরিবর্তন।' সেই পরিবর্তনটা কী? কোনদিকে যাবে এবার লিবিয়া? বিদ্রোহী নেতারা লিবিয়ার পতাকা বদলে দিয়েছেন আগেই। বলেছেন, এবার দেশ গঠনের পালা। কিন্তু দেশের মানুষের হাতে এখন আগ্নেয়াস্ত্র। কোনো প্রশাসনিক কাঠামো আছে কি? এর পরও আমরা চাইব, লিবিয়ায় গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে। তবে লিবিয়ায় বসবাসকারী বাংলাদেশের নাগরিকদের সম্পর্কে ভাবতে হবে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে এনটিসিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এখন সেখানে বসবাসরত নাগরিকদের ব্যাপারে লিবিয়ায় বাংলাদেশের দূতাবাস ও সরকারকে বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে।
No comments