ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব-দায়ীদের কঠোর শাস্তি দিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতির গ্রেফতারকে কেন্দ্র করে গত সোমবার তার সমর্থকরা সেখানে রেলপথ-সড়কপথ অবরোধের নামে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রেল যোগাযোগ কয়েক ঘণ্টা বিঘি্নত হয়। কয়েকটি ট্রেন আটকা পড়ে। বিক্ষোভকারীরা ঢাকা-সিলেট সড়ক যোগাযোগও কিছু সময় আটকে দিয়েছিল। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ ও অনিশ্চয়তার মধ্যে সময় অতিবাহিত করতে হয়।


অবরোধকারীদের পুলিশ হটিয়ে দিতে গেলে তারা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে কর্মকর্তাসহ অন্তত ১০ পুলিশ সদস্য আহত হন। আহত বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা চলি্লশেরও বেশি। বিক্ষোভকারীরা একটি এক্সপ্রেস ট্রেন লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। কিছুদিন আগে নরসিংদীতে পৌর মেয়র লোকমান হোসেন হত্যার বিরুদ্ধে সংঘটিত বিক্ষোভও এক সময় রুদ্রমূর্তি ধারণ করে গাড়ি, দোকানপাট ভাংচুর, সড়কপথ-রেলপথ অবরোধ ছাড়াও একটি ট্রেন পুরোপুরি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এভাবে সরকারি দলের কর্মী-সমর্থকরাই যদি জনগণের ভোগান্তির কারণ হয় এবং জাতীয় সম্পদ বিনষ্ট করে তাহলে নাগরিকরা নিরুপদ্রব চলাচলের নিরাপত্তা চাইবে কার কাছে? সরকারি দল-বিরোধী দল নির্বিশেষে রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব জনগণের সেবা করা, তাদের শান্তি বিনষ্ট করা নয়। অথচ আমাদের দেশে এর উল্টো সংস্কৃতির অধিষ্ঠান বেশ প্রকটভাবেই দেখা যায়। সরকারি দলের নেতাকর্মীরা নিহত-আহত বা নির্যাতনের শিকার হলে তার প্রতিবিধানের দাবি করতে হবে দলের কাছে এবং বিশেষভাবে তাদের দলীয় সরকারের কাছে। আন্তঃদলীয় কোন্দল নিরসনের দায়িত্বও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক নেতৃত্বের। অথচ দুটি ক্ষেত্রেই দেখা গেল সরকারদলীয় কর্মী-সমর্থক নিজেরাই আইন হাতে তুলে নিয়েছে। তাদের কাছে জনদুর্ভোগের বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক জেলা নেতা ও বিগত পৌর নির্বাচনে বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী মাহমুদুল হক ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করার ঘটনা কেন্দ্র করে যে ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তা সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতির লক্ষণ নয়। এ ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ঘটনা কারও কাম্য হতে পারে না এবং এর সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতেই হবে।

No comments

Powered by Blogger.