চার্জ গঠন :বিচার শুরু by ফিরোজ শিবলী,
বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করা হয়েছে। ১৯৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯(এ) ও ১৯৪৭ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫(বি) ধারায় অস্ত্র আটক ও চোরাচালান মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার মহানগর দায়রা জজ এসএম মজিবুর রহমানের আদালতে এ চার্জ গঠন করা হয়। এর মধ্যদিয়ে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরু হলো। আদালত আগামী ২৯ নভেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন। এ দুটি মামলায় সাক্ষী রাখা হয়েছে ২৬৫ জনকে। এদের মধ্যে ২০ সাক্ষী ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। বাবর ও নিজামী ছাড়া অপর আসামিরা হলেন_ এনএসআইর সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুর রহিম, ডিজিএফআইর তৎকালীন পরিচালক
(অব.) মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা সিইউএফএলের সাবেক এমডি মহসিন তালুকদার, সাবেক মহাব্যবস্থাপক এনামুল হক, এনএসআইর সাবেক পরিচালক (অব.) উইং কমান্ডার সাহাবুদ্দিন, উপপরিচালক (অব.) মেজর লিয়াকত হোসেন, ফিল্ড অফিসার আকবর হোসেন খান, ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ূয়া ও সাবেক শিল্প সচিব নুরুল আমিন। চার্জ গঠনের সময় নয় আসামি উপস্থিত থাকলেও পরেশ বড়ূয়া ও নুরুল আমিন পলাতক রয়েছেন।
অস্ত্র আটক মামলায় ৫০ এবং চোরাচালান মামলায় ৫২ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। দুটি মামলার সম্পূরক চার্জশিটে বাবর, নিজামীসহ ১১ জনকে নতুন আসামি করা হয়। এর আগে অস্ত্র আটক মামলায় ৩৮ এবং চোরাচালান মামলায় ৪১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছিল সিআইডি। মামলা দুটিতে ৩১ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। ২০০৭ সালে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মামলা দুটি অধিকতর তদন্তের আবেদন জানানো হলে সাড়ে তিন বছর তদন্তের পর সিআইডি বাবর, নিজামীসহ ১১ জনকে আসামি করে সম্পূরক চার্জশিট দেয় সিআইডি।
এদিকে মামলা দুটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ধার্য তারিখে সাক্ষীদের হাজির করতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের কেঁৗসুলি কামাল উদ্দিন। তিনি সমকালকে বলেন, 'মামলায় অনেক সাক্ষী ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা অস্ত্র খালাসের সময় রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। তাই তাদের সাক্ষ্যের ওপর মামলার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। সাক্ষী আসতে বিলম্ব হলে মামলা নিষ্পত্তিতে বিঘ্ন হবে। তাই সাক্ষীরা যাতে বিদেশে অবস্থানসহ দেশে পলাতক থাকতে না পারে সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করা হবে।'
আদালত সূত্র জানায়, অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য নিজামী, বাবরসহ ১১ আসামিকে গতকাল সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। সোমবার মুলতবি হওয়া শুনানি শুরু হয়। আসামি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুর রহিম, মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন ও উইং কমান্ডার (অব) সাহাবউদ্দিনের আইনজীবী তাদের নির্দোষ দাবি করে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন জানান। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের কেঁৗসুলি মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন আহাম্মদ আসামি বাবর, নিজামীসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে তদন্তে উঠে আসা অভিযোগ ও তথ্য প্রমাণ আদালতে তুলে ধরেন। পিপি কামাল আদালতকে বলেন, 'রাজনৈতিক হয়রানি নয়, আসামিরা নিজেদের স্বার্থ হাসিল এবং উলফার জন্য অস্ত্রগুলো এনেছে। যা অনেক আসামির ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উঠে এসেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং জাতির জন্য এ মামলায় জড়িত আসামিদের বিচারের আওতায় আনা উচিত। আসামি পক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে সময়ক্ষেপণ করে মামলা নিষ্পত্তিতে বিলম্ব করছে। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে রাষ্ট্রপক্ষের কাছে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ রয়েছে। আদালতের কাছে সাক্ষীদের উপস্থাপন করে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারবে রাষ্ট্রপক্ষ।' পিপির বক্তব্য শেষ হওয়ার পর বিকেল ৫টায় বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আটক ও চোরাচালান মামলায় অভিযোগ গঠন করেন। এ সময় বিচারক আসামিদের কোনো বক্তব্য আছে কি-না জানতে চান। জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী প্রথমে দাঁড়িয়ে নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করেন। নিজামীর সঙ্গে রেজ্জাকুল হায়দার, আকবর হোসেন, এনামুল হকসহ অপর আসামিরা নিজেদের সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করেন। আদালত এর পরপরই আগামী ২৯ নভেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন। এ সময় আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাদের কাছে মামলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই দাবি করে জানুয়ারি মাসে তারিখ দেওয়ার আবেদন করেন। আদালত তাতে সায় না দিলে আইনজীবীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দাবি করে সময় দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ ও মফিজুল হক ভঁূইয়া সমকালকে বলেন, 'আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের কোনো উপাদান না থাকলেও অভিযোগ গঠন করা হয়েছে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে।'
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন আহমেদ সমকালকে জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণে রাষ্ট্রপক্ষের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। সাক্ষীদের উপস্থাপন করা হলে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হবে।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল নগরীর সিইউএফএল জেটিঘাটে ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান ধরা পড়ে। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া অস্ত্র আটক ও চোরাচালান মামলায় বাবরসহ ১১ জনকে নতুন আসামি করে গত ২৬ জুন সম্পূরক চার্জশিট দেয় সিআইডি।
(অব.) মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা সিইউএফএলের সাবেক এমডি মহসিন তালুকদার, সাবেক মহাব্যবস্থাপক এনামুল হক, এনএসআইর সাবেক পরিচালক (অব.) উইং কমান্ডার সাহাবুদ্দিন, উপপরিচালক (অব.) মেজর লিয়াকত হোসেন, ফিল্ড অফিসার আকবর হোসেন খান, ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ূয়া ও সাবেক শিল্প সচিব নুরুল আমিন। চার্জ গঠনের সময় নয় আসামি উপস্থিত থাকলেও পরেশ বড়ূয়া ও নুরুল আমিন পলাতক রয়েছেন।
অস্ত্র আটক মামলায় ৫০ এবং চোরাচালান মামলায় ৫২ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। দুটি মামলার সম্পূরক চার্জশিটে বাবর, নিজামীসহ ১১ জনকে নতুন আসামি করা হয়। এর আগে অস্ত্র আটক মামলায় ৩৮ এবং চোরাচালান মামলায় ৪১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছিল সিআইডি। মামলা দুটিতে ৩১ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। ২০০৭ সালে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মামলা দুটি অধিকতর তদন্তের আবেদন জানানো হলে সাড়ে তিন বছর তদন্তের পর সিআইডি বাবর, নিজামীসহ ১১ জনকে আসামি করে সম্পূরক চার্জশিট দেয় সিআইডি।
এদিকে মামলা দুটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ধার্য তারিখে সাক্ষীদের হাজির করতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের কেঁৗসুলি কামাল উদ্দিন। তিনি সমকালকে বলেন, 'মামলায় অনেক সাক্ষী ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা অস্ত্র খালাসের সময় রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। তাই তাদের সাক্ষ্যের ওপর মামলার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। সাক্ষী আসতে বিলম্ব হলে মামলা নিষ্পত্তিতে বিঘ্ন হবে। তাই সাক্ষীরা যাতে বিদেশে অবস্থানসহ দেশে পলাতক থাকতে না পারে সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করা হবে।'
আদালত সূত্র জানায়, অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য নিজামী, বাবরসহ ১১ আসামিকে গতকাল সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। সোমবার মুলতবি হওয়া শুনানি শুরু হয়। আসামি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুর রহিম, মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন ও উইং কমান্ডার (অব) সাহাবউদ্দিনের আইনজীবী তাদের নির্দোষ দাবি করে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন জানান। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের কেঁৗসুলি মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন আহাম্মদ আসামি বাবর, নিজামীসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে তদন্তে উঠে আসা অভিযোগ ও তথ্য প্রমাণ আদালতে তুলে ধরেন। পিপি কামাল আদালতকে বলেন, 'রাজনৈতিক হয়রানি নয়, আসামিরা নিজেদের স্বার্থ হাসিল এবং উলফার জন্য অস্ত্রগুলো এনেছে। যা অনেক আসামির ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উঠে এসেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং জাতির জন্য এ মামলায় জড়িত আসামিদের বিচারের আওতায় আনা উচিত। আসামি পক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে সময়ক্ষেপণ করে মামলা নিষ্পত্তিতে বিলম্ব করছে। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে রাষ্ট্রপক্ষের কাছে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ রয়েছে। আদালতের কাছে সাক্ষীদের উপস্থাপন করে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারবে রাষ্ট্রপক্ষ।' পিপির বক্তব্য শেষ হওয়ার পর বিকেল ৫টায় বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আটক ও চোরাচালান মামলায় অভিযোগ গঠন করেন। এ সময় বিচারক আসামিদের কোনো বক্তব্য আছে কি-না জানতে চান। জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী প্রথমে দাঁড়িয়ে নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করেন। নিজামীর সঙ্গে রেজ্জাকুল হায়দার, আকবর হোসেন, এনামুল হকসহ অপর আসামিরা নিজেদের সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করেন। আদালত এর পরপরই আগামী ২৯ নভেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন। এ সময় আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাদের কাছে মামলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই দাবি করে জানুয়ারি মাসে তারিখ দেওয়ার আবেদন করেন। আদালত তাতে সায় না দিলে আইনজীবীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দাবি করে সময় দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ ও মফিজুল হক ভঁূইয়া সমকালকে বলেন, 'আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের কোনো উপাদান না থাকলেও অভিযোগ গঠন করা হয়েছে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে।'
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন আহমেদ সমকালকে জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণে রাষ্ট্রপক্ষের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। সাক্ষীদের উপস্থাপন করা হলে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হবে।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল নগরীর সিইউএফএল জেটিঘাটে ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান ধরা পড়ে। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া অস্ত্র আটক ও চোরাচালান মামলায় বাবরসহ ১১ জনকে নতুন আসামি করে গত ২৬ জুন সম্পূরক চার্জশিট দেয় সিআইডি।
No comments