উৎসব-নবান্নের মেলায় শিকড়ের টান by নওশাদ জামিল
হেমন্তের হালকা কুয়াশা কেটে যাচ্ছিল ধীরে ধীরে। চারদিকে তখন স্নিগ্ধ রোদ। নরম মিষ্টি একটা স্পর্শ বুলিয়ে রোদের মিহি কণা ছড়িয়ে পড়ছে বকুলের ডালপালা ছুঁয়ে। গাছটির নিচেই সাজানো মঞ্চ। তাতে ফুল-লতাপাতার কাজ, গ্রামীণ আবহ। পহেলা অগ্রহায়ণে বকুলতলায় ওই কুয়াশা মোড়ানো ভোর থেকেই জড়ো হতে শুরু করে লোকজন। এ সময়ই কৃষক কাস্তে হাতে মাঠে যায় ধান কাটতে। উৎসবও শুরু হয়ে গেল ঠিক এই আমেজে।
নরম রোদের ওই আলোকচ্ছটায় মঞ্চ থেকে ভেসে এল দোতারা, ঢোল ও বাঁশির ঐকতান। তাতে লোকজ সুর। যন্ত্রসংগীতের রেশ না কাটতেই সংগীত, আবৃত্তি ও নৃত্যের মোহনীয় রূপে মুখর হয়ে ওঠে বাঙালির প্রাণের এ উৎসব।
জাতীয় নবান্নোৎসব উদ্যাপন পর্ষদের আয়োজনে গতকাল মঙ্গলবার নবান্নের এ উৎসব বসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলায়। 'এসো মিলি সবে নবান্নের উৎসবে' স্লোগানে এর উদ্বোধন করেন প্রবীণ সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ফয়েজ আহমদ।
বেহালা, ঢোল, দোতারা আর বাঁশির সুরমূর্ছনা দিয়ে উৎসবের সূচনা। এরই মাঝে ধ্বনিত হলো লায়লা আফরোজের কণ্ঠে আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর কবিতা। কবিতার দোলায়িত ছন্দের রেশ কাটার আগেই সম্মেলক গীত হলো 'আমার সকল কথা' গান। এই কথামালার গানের পরে পরিবেশিত হলো রবীন্দ্রসংগীত 'আজি নূতন রতনে ভুবন যতনে'। গাইলেন আজিজুর রহমান তুহিন। গান শেষে মঞ্চে ছড়িয়ে পড়ল নূপুরের ঝংকার। 'ওপারে ওই ধানের খেতে হলদে রংয়ের ছোপ লেগেছে' পরিবেশন করেন স্পন্দনের নৃত্যশিল্পীরা। এরপর লোকসংগীতের আমেজ ছড়িয়ে দিলেন আবু বকর সিদ্দিক। এরপর 'কনকচাঁপা ধান' গানটিতে নেচে উঠলেন নৃত্যমের শিল্পীরা। নাচের পর এবার গানের সুরে ধানের কথা। 'হেই সামালো ধান হো' সম্মেলক গাইলেন উদীচীর শিল্পীরা। সমবেত পরিবেশনার পর একক কণ্ঠে গীত হলো সলিল চৌধুরীর গান 'তুমি মানো বা না মানো'। এবার নাচের মাঝে
হেমন্ত ঋতুর বন্দনার পালা। 'হেমন্তে কোন বসন্তের বাণী' গানের তালে নূপুরের ঝংকার তুললেন নৃত্যনন্দনের একঝাঁক শিল্পী। রূপু খানের গাওয়া লোকসংগীতে বর্ণিত হলো নবান্নের উৎসবে বন্ধুকে না পাওয়ার বেদনার আর্তি। তিনি গাইলেন 'বন্ধুয়া বিনে নবান্নের দিনে'। এর পর ছিল ওস্তাদ মমতাজ আলী সংগীত একাডেমীর শিল্পীদের সম্মেলক পরিবেশনা 'ও মাইঝা ভাই সাইঝা ভাই কই গেলা রে'। 'ফসলের সোনা মাঠে নদীর রুপালি ঘাটে' গেয়ে শোনান সন্দীপন। হঠাৎ করেই গানের মাঝে ফিরে এল কবিতার ছন্দ। রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দের 'অবসরের গান' কবিতাটি পাঠ করেন বাকশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্মেলক কণ্ঠে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সমবেত পরিবেশনায় গীত হয় 'আয় রে ভাই কাটি ধান'। 'কোথায় সোনার ধান' গানের সঙ্গে নাচ করেন নৃত্যভূমির শিল্পীরা। নাচ শেষে বাংলার শেকড়ের গান ভাওয়াইয়ার মাঝে উঠে আসে নবান্নের পিঠা খাওয়ার উৎসবময়তার কথা। উদাত্ত কণ্ঠে সফিউল আলম রাজা গাইলেন 'মনটা মোর পিঠা খাবার চায়'। মাটির গান ভাওয়াইয়ার পরিবেশনা শেষে মঞ্চে নূপুরের নিক্কণ ছড়ালেন ভাবনার নৃত্যশিল্পীরা। 'সোহাগ চাঁদ বদনি বালা নাচো তো দেখি' গানের সুরে ছিল তাঁদের পরিবেশনা।
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে চারুকলায় যন্ত্রসংগীতের আয়োজন করা হয়। সেখানে তবলায় ছিলেন তুলসী সাহা, ঢোলে মো. সোবহান, বাঁশিতে আবদুল কাদের, দোতারা নির্মল কুমার দাশ এবং হারমোনিয়ামে রবিনস চৌধুরী।
স্মৃতিকথনে গ্রামীণ জীবন
উৎসবে অতিথি ও প্রবীণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের কথায় উঠে আসে গ্রামীণ জীবনের টুকরো টুকরো দৃশ্য। গ্রামের মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে যাওয়া ধুলোওড়া মেঠোপথ। দুই পাশে বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত। বেশির ভাগই হলদে বর্ণ। হাওয়ায় সোনালি ধানের সুবাস। সকাল থেকেই কৃষক-গিনি্নর ব্যস্ততা। এমনটাই নবান্নের রূপ। সকাল থেকে কৃষকের কাজ ধান কাটা। বাড়ির উঠানে সেগুলো স্তূপ করে রাখা, মাড়াই করা। এরপর গোলাভর্তি করে নিজের শ্রমের ঘামের ফসলটুকু ঘরে তোলা। এসবের পুরোপুরি না হলেও এমন কিছু স্বাদ পেল যান্ত্রিক শহর ঢাকার মানুষ।
উৎসব উপলক্ষে গোটা বকুলতলা চত্বর সাজানোও হয় গ্রামীণ আদলে। সেখানে ছিল বাঙালিয়ানার ছাপ। ছেলেদের পরনে ছিল পাজামা-পাঞ্জাবি। মেয়েদের পরনে এক প্যাঁচে পরা একরঙা বা চেকের তাঁতের শাড়ি। পালাগানের আসরের মতো করে মাদুর বিছিয়ে মঞ্চের সামনে আসন তৈরি করা হয়েছিল বসার জন্য।
পিঠা-পুলির স্বাদ
নবান্নোৎসব_তাতে খই, মুড়ি-মুড়কি থাকবে না, তা কী করে হয়! নবান্ন মানে কি শুধুই গোলাভরা ধান? নবান্নের সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা ধরনের পার্বণ। গাঁয়ের বধূর শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসা। তাকে ঘিরে নানা আয়োজন, বিশেষ করে পিঠার উৎসব। নানা ধরনের পিঠা-পুলি তৈরি হয়। আর এসব তৈরিতে সহযোগিতায় এগিয়ে আসে পাড়া-প্রতিবেশীরা। সেই ধরনের পিঠা-পুলির স্বাদ মানুষ আবার পেল নবান্নোৎসবে। উৎসব উদ্যাপন পর্ষদের পক্ষ থেকে উপস্থিত শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে খই আর মুড়ি-মুড়কি, পিঠা-পুলি বিলিয়ে যেন ছড়িয়ে দেওয়া হয় উৎসবের অনাবিল আনন্দ।
কৃষকের মুক্তিই জাতির মুক্তি
নবান্নকথনে বক্তারা বলেন, বিপন্ন কৃষি ও কৃষকের পাশে দাঁড়াতে হবে সবাইকে। নবান্নের পুনর্জাগরণের মধ্য দিয়ে কৃষকদেরও নতুন করে বাঁচার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে তুলতে হবে। কেননা কৃষক বাঁচলেই দেশ বাঁচবে। কৃষকের মুক্তিই জাতির মুক্তি।'
সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ বলেন, 'কৃষিকে ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে আমাদের সংস্কৃতি। তাই কৃষকের সঙ্গে মধ্যবিত্তের যোগসূত্র স্থাপনে এই নবান্নোৎসব অপরিসীম ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।'
এ সময় আরো বক্তব্য দেন নবান্নোৎসব উদ্যাপন পর্ষদের আহ্বায়ক শাহরিয়ার সালাম, চারুকলা অনুষদের ডিন শিল্পী মতলুব আলী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের ইতি টানা হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে। শোভাযাত্রাটি বকুলতলা থেকে টিএসসির সড়ক দ্বীপ ঘুরে আবার চারুকলায় এসে শেষ হয়। উৎসবের দ্বিতীয় পর্বে ছিল শিশু-কিশোরদের উন্মুক্ত চিত্রাঙ্কন ও প্রদর্শনী। এরপর দুপুর ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ঢাকঢোল, বাউলগান, লাঠিখেলা, নৃত্য ও সংগীতের মনোমুঙ্কর পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় নবান্ন উৎসব।
এবারের উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে প্রয়াত ভাষাসৈনিক ও শিল্পী ইমদাদ হোসেনকে। এ ছাড়া চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ, সাংবাদিক মিশুক মুনীর, শিল্পী মোহাম্মদ কিবরিয়া, ফটোসাংবাদিক রশীদ তালুকদারসহ সম্প্রতি মারা যাওয়া দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করা হয়।
জাতীয় নবান্নোৎসব উদ্যাপন পর্ষদের আয়োজনে গতকাল মঙ্গলবার নবান্নের এ উৎসব বসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলায়। 'এসো মিলি সবে নবান্নের উৎসবে' স্লোগানে এর উদ্বোধন করেন প্রবীণ সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ফয়েজ আহমদ।
বেহালা, ঢোল, দোতারা আর বাঁশির সুরমূর্ছনা দিয়ে উৎসবের সূচনা। এরই মাঝে ধ্বনিত হলো লায়লা আফরোজের কণ্ঠে আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর কবিতা। কবিতার দোলায়িত ছন্দের রেশ কাটার আগেই সম্মেলক গীত হলো 'আমার সকল কথা' গান। এই কথামালার গানের পরে পরিবেশিত হলো রবীন্দ্রসংগীত 'আজি নূতন রতনে ভুবন যতনে'। গাইলেন আজিজুর রহমান তুহিন। গান শেষে মঞ্চে ছড়িয়ে পড়ল নূপুরের ঝংকার। 'ওপারে ওই ধানের খেতে হলদে রংয়ের ছোপ লেগেছে' পরিবেশন করেন স্পন্দনের নৃত্যশিল্পীরা। এরপর লোকসংগীতের আমেজ ছড়িয়ে দিলেন আবু বকর সিদ্দিক। এরপর 'কনকচাঁপা ধান' গানটিতে নেচে উঠলেন নৃত্যমের শিল্পীরা। নাচের পর এবার গানের সুরে ধানের কথা। 'হেই সামালো ধান হো' সম্মেলক গাইলেন উদীচীর শিল্পীরা। সমবেত পরিবেশনার পর একক কণ্ঠে গীত হলো সলিল চৌধুরীর গান 'তুমি মানো বা না মানো'। এবার নাচের মাঝে
হেমন্ত ঋতুর বন্দনার পালা। 'হেমন্তে কোন বসন্তের বাণী' গানের তালে নূপুরের ঝংকার তুললেন নৃত্যনন্দনের একঝাঁক শিল্পী। রূপু খানের গাওয়া লোকসংগীতে বর্ণিত হলো নবান্নের উৎসবে বন্ধুকে না পাওয়ার বেদনার আর্তি। তিনি গাইলেন 'বন্ধুয়া বিনে নবান্নের দিনে'। এর পর ছিল ওস্তাদ মমতাজ আলী সংগীত একাডেমীর শিল্পীদের সম্মেলক পরিবেশনা 'ও মাইঝা ভাই সাইঝা ভাই কই গেলা রে'। 'ফসলের সোনা মাঠে নদীর রুপালি ঘাটে' গেয়ে শোনান সন্দীপন। হঠাৎ করেই গানের মাঝে ফিরে এল কবিতার ছন্দ। রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দের 'অবসরের গান' কবিতাটি পাঠ করেন বাকশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্মেলক কণ্ঠে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সমবেত পরিবেশনায় গীত হয় 'আয় রে ভাই কাটি ধান'। 'কোথায় সোনার ধান' গানের সঙ্গে নাচ করেন নৃত্যভূমির শিল্পীরা। নাচ শেষে বাংলার শেকড়ের গান ভাওয়াইয়ার মাঝে উঠে আসে নবান্নের পিঠা খাওয়ার উৎসবময়তার কথা। উদাত্ত কণ্ঠে সফিউল আলম রাজা গাইলেন 'মনটা মোর পিঠা খাবার চায়'। মাটির গান ভাওয়াইয়ার পরিবেশনা শেষে মঞ্চে নূপুরের নিক্কণ ছড়ালেন ভাবনার নৃত্যশিল্পীরা। 'সোহাগ চাঁদ বদনি বালা নাচো তো দেখি' গানের সুরে ছিল তাঁদের পরিবেশনা।
আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে চারুকলায় যন্ত্রসংগীতের আয়োজন করা হয়। সেখানে তবলায় ছিলেন তুলসী সাহা, ঢোলে মো. সোবহান, বাঁশিতে আবদুল কাদের, দোতারা নির্মল কুমার দাশ এবং হারমোনিয়ামে রবিনস চৌধুরী।
স্মৃতিকথনে গ্রামীণ জীবন
উৎসবে অতিথি ও প্রবীণ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের কথায় উঠে আসে গ্রামীণ জীবনের টুকরো টুকরো দৃশ্য। গ্রামের মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে যাওয়া ধুলোওড়া মেঠোপথ। দুই পাশে বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত। বেশির ভাগই হলদে বর্ণ। হাওয়ায় সোনালি ধানের সুবাস। সকাল থেকেই কৃষক-গিনি্নর ব্যস্ততা। এমনটাই নবান্নের রূপ। সকাল থেকে কৃষকের কাজ ধান কাটা। বাড়ির উঠানে সেগুলো স্তূপ করে রাখা, মাড়াই করা। এরপর গোলাভর্তি করে নিজের শ্রমের ঘামের ফসলটুকু ঘরে তোলা। এসবের পুরোপুরি না হলেও এমন কিছু স্বাদ পেল যান্ত্রিক শহর ঢাকার মানুষ।
উৎসব উপলক্ষে গোটা বকুলতলা চত্বর সাজানোও হয় গ্রামীণ আদলে। সেখানে ছিল বাঙালিয়ানার ছাপ। ছেলেদের পরনে ছিল পাজামা-পাঞ্জাবি। মেয়েদের পরনে এক প্যাঁচে পরা একরঙা বা চেকের তাঁতের শাড়ি। পালাগানের আসরের মতো করে মাদুর বিছিয়ে মঞ্চের সামনে আসন তৈরি করা হয়েছিল বসার জন্য।
পিঠা-পুলির স্বাদ
নবান্নোৎসব_তাতে খই, মুড়ি-মুড়কি থাকবে না, তা কী করে হয়! নবান্ন মানে কি শুধুই গোলাভরা ধান? নবান্নের সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা ধরনের পার্বণ। গাঁয়ের বধূর শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসা। তাকে ঘিরে নানা আয়োজন, বিশেষ করে পিঠার উৎসব। নানা ধরনের পিঠা-পুলি তৈরি হয়। আর এসব তৈরিতে সহযোগিতায় এগিয়ে আসে পাড়া-প্রতিবেশীরা। সেই ধরনের পিঠা-পুলির স্বাদ মানুষ আবার পেল নবান্নোৎসবে। উৎসব উদ্যাপন পর্ষদের পক্ষ থেকে উপস্থিত শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে খই আর মুড়ি-মুড়কি, পিঠা-পুলি বিলিয়ে যেন ছড়িয়ে দেওয়া হয় উৎসবের অনাবিল আনন্দ।
কৃষকের মুক্তিই জাতির মুক্তি
নবান্নকথনে বক্তারা বলেন, বিপন্ন কৃষি ও কৃষকের পাশে দাঁড়াতে হবে সবাইকে। নবান্নের পুনর্জাগরণের মধ্য দিয়ে কৃষকদেরও নতুন করে বাঁচার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে তুলতে হবে। কেননা কৃষক বাঁচলেই দেশ বাঁচবে। কৃষকের মুক্তিই জাতির মুক্তি।'
সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ বলেন, 'কৃষিকে ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে আমাদের সংস্কৃতি। তাই কৃষকের সঙ্গে মধ্যবিত্তের যোগসূত্র স্থাপনে এই নবান্নোৎসব অপরিসীম ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।'
এ সময় আরো বক্তব্য দেন নবান্নোৎসব উদ্যাপন পর্ষদের আহ্বায়ক শাহরিয়ার সালাম, চারুকলা অনুষদের ডিন শিল্পী মতলুব আলী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের ইতি টানা হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে। শোভাযাত্রাটি বকুলতলা থেকে টিএসসির সড়ক দ্বীপ ঘুরে আবার চারুকলায় এসে শেষ হয়। উৎসবের দ্বিতীয় পর্বে ছিল শিশু-কিশোরদের উন্মুক্ত চিত্রাঙ্কন ও প্রদর্শনী। এরপর দুপুর ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ঢাকঢোল, বাউলগান, লাঠিখেলা, নৃত্য ও সংগীতের মনোমুঙ্কর পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় নবান্ন উৎসব।
এবারের উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে প্রয়াত ভাষাসৈনিক ও শিল্পী ইমদাদ হোসেনকে। এ ছাড়া চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ, সাংবাদিক মিশুক মুনীর, শিল্পী মোহাম্মদ কিবরিয়া, ফটোসাংবাদিক রশীদ তালুকদারসহ সম্প্রতি মারা যাওয়া দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করা হয়।
No comments